ফেলে আসা আলো আঁধারির দিনগুলি – পর্ব ৪
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ০৫ মার্চ, ২০১৫, ০৯:৪৮:১০ রাত
পর্ব ৩
http://www.bd-today.net/blog/blogdetail/detail/6327/mbanu/62208#.VPh6beH26ac
সাড়া দেশব্যাপী সরকার তথা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অন্যায় অপশাসনের বিরুদ্ধে তখন সকলেই মুখিয়ে ছিল মুক্তির প্রতীক্ষায়। এমনি এক মুহূর্তে সভানেত্রীর আমেরিকায় প্রত্যাবর্তন ও সাংগঠনিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় অনন্যাপায় হয়ে আমার মায়ের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সম্মেলনে উপস্থিত কাউন্সিলরগণের বিশেষ অনুরোধে অবশেষে আমি সভানেত্রীর পদ গ্রহণে বাধ্য হলাম। চলমান অবস্থার প্রেক্ষিতে আমার জোর আপত্তি অগ্রাহ্য করে সাময়িকভাবে হলেও যেন আমি দায়িত্ব পদে বহাল থাকি উপস্থিত সভায় এমন দাবী উঠলো জোরালোভাবে। কার্যভার গ্রহণ করতঃ পরবর্তীতে কিছু যৌক্তিক দাবী সম্বলিত স্বারকলিপি যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করে সময়সীমা বেঁধে দেয়া হলো।
ধীরে ধীরে কর্মসূচীর চূড়ান্ত পর্যায়ে কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হতে লাগলো। ন্যায়ভিত্তিক তীব্র আন্দোলনে ক্রমেই জনসাধারণ এবং বিভিন্ন পেশাজীবী মহলের সম্পৃক্ততা, সক্রিয় সমর্থন এবং তাদের পক্ষ থেকে দাবী মেনে নেয়ার জোরালো দাবী চারিদিক মূখরিত করে তুললো যা আন্দোলনে নতুন মাত্রা সঞ্চারিত হলো। সকলের সার্বিক সহযোগিতা এবং আশ্বাস আন্দোলনকে করে তুললো দুর্বার প্রাণবন্ত ও অদমনীয় গতিশীল। যদিও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় তখন পর্যন্ত ছিল অনড়, অনমনীয় এবং নীরব দাবী মেনে না নেয়ার পক্ষে। আন্দোলন নস্যাৎ করার জন্য বিভিন্ন হয়রানীমূলক পদক্ষেপসহ বেশ কিছু কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে সরাসরি শাস্তিমূলক বদলী করা হলো। পাশাপাশি আন্দোলনের শক্তি ঐক্যকে ভেঙ্গে দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ বিভিন্নভাবে কিছু কিছু লোভী ব্যক্তিদের অনেক সুযোগ সুবিধা দেয়ার আশ্বাস সহ বহুমুখী প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলো। কিন্ত আন্দোলন কারীদের আপোষহীন মনোভাব লক্ষ্য করে সেসময়ে সুবিধাবাদীরা ঝুঁকি নিতে অস্বীকার করায় বৃহত্তর ঐক্যে ফাটল ধরাতে ব্যর্থ হলো।
উপরন্তু মিছিলে পুলিশি হামলা, একাধিক মিথ্যা মামলা এবং উপর্যুপরি সরকারী আক্রোশমূলক আচরণ উপেক্ষা করে দিনে দিনে বেগবান হতে লাগলো আন্দোলন। দেশজুড়ে উত্তাল আন্দোলনের এক পর্যায়ে জাতীয় নেতা শ্রদ্ধেয় আ স ব আব্দুর রবের মধ্যস্ততায় জাতীয় সংসদে এক প্রাথমিক দীর্ঘ আলোচনা অনুষ্ঠিত হলো। এরপর অপরিবর্তিত তুমুল আন্দোলন ও আপোষহীন সংগ্রামের পথে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে দফায় দফায় আলোচনা হওয়ার পর উভয়পক্ষের সম্মতিতে বেতন বৃদ্ধিসহ এক চুক্তিনামা স্বাক্ষরিত হলো। জাতীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক পত্রিকাসহ বিভিন্ন দেশ বিদেশের মিডিয়াতে আন্দোলনের আপোষহীন নেতৃত্বদান এবং ফলাফল সম্পর্কে ভূয়সী প্রশংসা করা হলো। রাতারাতি দেশ বিদেশব্যাপী আপোষহীন নেত্রীর পরিচিতিসহ শ্রদ্ধা, সন্মান আর খ্যাতি পেলাম সফল নেতৃত্বের।
আন্দোলন পরবর্তী সময়ে একে একে চুক্তির বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয়ে নিয়মিত দৌড় ঝাঁপ শুরু হলো। দ্রুত সময়ের ব্যবধানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি বাস্তবায়িত হলো। এরপর একদিন প্রস্তাব এলো তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে সরকারী দলের অঙ্গ সংগঠন হিসাবে সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করার। প্রস্তাবক এটাও বুঝিয়ে বললেন কোন বৃহৎ শক্তির ছায়ায় না এলে যেকোন সময় বড় ধরণের ঝড় আসতে পারে। তখন শুধুমাত্র সাংগঠনিক শক্তি দিয়ে সেগুলো মোকাবিলা করা দুরূহ হয়ে পড়বে আমার জন্য। হঠাৎ করে এ ধরণের আমন্ত্রণে অপ্রস্তুত হয়ে কিছুটা হতচকিত ও উদ্বিগ্ন হলাম। অজানা বিপদের আশঙ্কায় আবারো বড় ধাক্কা লাগলো আমার চিন্তা এবং চেতনায়। অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নিলাম যতই বিপদ আসুক কোন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় নিজেকে বন্দী করে নিজের মন মানসিকতা ও চিন্তাকে জলাঞ্জলি দেয়া আমার পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব নয়। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়ার পর শুরু হলো নতুন করে ষড়যন্ত্রের পালা।
প্রত্যেকটি জিলা শাখা সংগঠন থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত বেছে বেছে কিছু সুবিধাবাদী মুখ বের করে তাদেরকে দিয়ে বৃহত্তর ঐক্যে প্রাথমিক ফাটল ধরানোর চেষ্টা অব্যাহত থাকলো। নিজেদের মধ্যে কোন্দল ও বিভেদ প্রসারনের লক্ষ্যে কয়েকজন যড়যন্ত্রকারীকে শিখণ্ডী বানিয়ে তাদেরকে ব্যবহার করে সত্য বিবর্জিতভাবে অত্যন্ত গর্হিত ভাষায় লিফলেট বিতরণ, আপত্তিকর পোষ্টার সাঁটানোসহ নানারকম বানোয়াট কল্পকাহিনী তৈরি করে স্বগোত্রীয়রা সরকার সমীপে বিচারের দাবী তথা কুৎসিত কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে থাকলো। চলমান ঘটনায় কিছু কিছু অতি কাছের চেনা মানুষগুলোকে মনে হলো চির অচেনা আর কেবলিই মনে হতে লাগলো এযেন পরিকল্পিতভাবে সাজানো এক উত্তপ্ত উনুনে পরস্পর পরস্পরকে ছুঁড়ে ফেলার পাশবিক উন্মত্ততা। চলবে
বিষয়: বিবিধ
১৯৭৫ বার পঠিত, ৩৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভেচ্ছা রইলো।
আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভেচ্ছা রইলো আবারো।
অনেক শুভ কামনা আর ধন্যবাদ।
সুন্দর প্রেরণাময় অনুভূতি রেখে যাওয়ার জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভেচ্ছা রইলো।
আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভেচ্ছা রইলো।
আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভেচ্ছা রইলো।
তোমার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভেচ্ছা রইলো।
আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভেচ্ছা রইলো।
আন্দোলনকারীদের আন্দোলন চলমান রেখে দাবী আদায় করা যেমন জরুরী,আবার আন্দোলনের তীব্রতা হ্রাসের জন্য পারলে গরু মেরে জুতা দান করে শান্ত করা, না পারলে ভিতরে বাহিরে ষড়যন্ত্রের জাল বুনে আন্দোলন কে দূর্বল করে দেয়া আন্দোলন বিরোধীদের জন্য তেমনি জরুরী। সুতরাং বশ্যতা নয়, টিকে থাকার মাঝেই আন্দোলনের স্বার্থকতা। আশা করি দমে যান নি।
চলছে যখন আমিও চলি
প্রেরণার জন্য অনিঃশেষ দোয়া ও শুভকামনা রইলো।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আপনার মূল্যবান উপস্থিতি ও প্রেরণার জন্য অনিঃশেষ দোয়া ও শুভকামনা রইলো।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আপনার জন্য অনিঃশেষ দোয়া , শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা রইলো।
বোনের জন্য বেশী বেশী করে দোয়া করার জন্য বিশেষ অনুরোধ থাকলো ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন