ফেলে আসা আলো আঁধারির দিনগুলি –পর্ব ১
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৩:০১:২৬ দুপুর
অনেকগুলো মুক্তোদানা দিয়ে একটি মনোহরী নয়ন জুড়ানো মালা হয়। সেটি গলে পড়ে মেয়েরা স্বপ্নসাধ উপভোগ করে পরম তৃপ্তি ভরে। মানুষের জীবনটাও ঠিক তেমনি। একটি একটি করে অগণিত সুখ দুঃখের মুক্তার দানা দিয়ে গড়ে উঠে একটি পরিপূর্ণ জীবনের কথামালা। এই আলো আঁধারিতে ভরা মুক্তার দানাগুলোর নয়নাভিরাম দ্যুতি সারাজীবন বিচ্ছুরিত হতে থাকে মনের গহীনের একান্ত আপন দর্পণে। আর সেখানে মিশে থাকে হরেকরকম অজানা অনেক আলো আঁধারির কাব্য। সেগুলো কখনও আনন্দের বন্যায় ভাসিয়ে নিয়ে যায়, আবার কখনও বা অপ্রত্যাশিত শ্রাবণের প্লাবনে অঝোর ধারায় বর্ষায় জীবনের আঙিনায়। এই আনন্দ বেদনার মাঝেই মিশে থাকে অনেক অমূল্য শিক্ষা, আনন্দ, দুঃখ-কষ্ট, প্রাপ্তি, প্রেরণা ও ভালোবাসা। এরই ধারাবাহিকতায় আমার কর্ম জীবনের বিশেষ কিছু স্মৃতির প্রারম্ভিক অংশবিশেষ এখানে আমার প্রাণপ্রিয় পাঠকের জন্য বিবৃত হলঃ
সবেমাত্র আমি রংপুর থেকে ঢাকায় বদলী হয়ে এসেছি। ভুল চিকিৎসার কারণে তখন আমি শারীরিকভাবে বেশ পীড়িত। এমতাবস্থায় পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে জাতীয় অধ্যাপক নুরুল ইসলাম স্যারের স্মরণাপন্ন হলাম সঠিক চিকিৎসা পাবার আশায়। আল্লাহ্র অশেষ শুকরিয়া পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে আমাকে জানানো হল সবকিছুই স্বাভাবিক। ভুল রোগ নির্ণয় ও অত্যধিক কড়া ওষুধ সেবনের ফলে আমার এই বেহাল অবস্থা। উনি সব ওষুধ বন্ধ করে দিয়ে শুধুমাত্র ফ্রেস খাবার গ্রহণের উপদেশ দিলেন। আর তাতেই সেই অবধি আজ পর্যন্ত আমি সম্পূর্ণরূপে সুস্থ আলহামদুলিল্লাহ্।
যাহোক তখন আমি বয়সে তরুণী। আমার মায়ের ভাষায় ছোটবেলা থেকেই আমি আবেগপ্রবণ, অন্তর্মুখী শান্ত স্বভাবের, খুবই শান্তিপ্রিয় কিন্তু অন্যায়ভাবে কেউ কিছু বললে তা কিছুতেই মেনে নিতে পারতাম না। একদিন এমনি এক কাকতালীয় ঘটনার মুখামুখি দাঁড়িয়ে একটি মেয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে জাতীয় অধ্যাপক নুরুল ইসলাম স্যারের স্মরণাপন্ন হতে বাধ্য হলাম। যদিও স্যারের কাছে যাওয়ার পূর্বে আমাকে অবগত করা হয় যে, মেয়েটি পেশায় একজন ডাক্তার এবং তার বাবা স্যারের অতি শ্রদ্ধাভাজন স্কুল শিক্ষক। যে শিক্ষককে স্যার প্রাণ দিয়ে ভালোবাসেন। অনেকেই আমাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলেন এই বলে যে, স্যার বিষয়টি জানার পর কিছুই করতে পারবেন না তার প্রাণপ্রিয় শিক্ষকের কারণে। কিন্তু বিষয়টি আমি শত চেষ্টা করেও কিছুতেই মাথা থেকে সরাতে পারলাম না। অবশেষে স্যারের কাছে উপস্থিত হয়ে ঘটনাটি তুলে ধরি। আমার কথাগুলো খুব মনোযোগ সহকারে শোনার পর উনি বললেন, “ব্যাপারটি আমি দেখছি”। পরের দিন উপস্থিত অনেকের মধ্যে অভিযুক্তকে ডেকে সবকিছু শোনার পর স্যার বললেন আপনার আচরণের জন্য উনার কাছে ক্ষমা চান। এ কথা বলার সাথে সাথে ডাক্তার মেয়েটি সশব্দে কেঁদে উঠলেন। ঘটনার আকস্মিকতায় আমি তখন কিংকর্তব্যবিমূঢ় ......। চলবে
বিষয়: বিবিধ
২৩৭৪ বার পঠিত, ২৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার স্বতঃস্ফুর্ত প্রথম উপস্থিতি ও গুরুত্বপূর্ণ মতামতের জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
-জীবনে এক নান্দনিক সংজ্ঞা জানতে পারলাম।
পুরো লিখাটার জন্য অনেক ভালো লাগা নিয়ে সাথেই রইলাম প্রিয় আপুজি।
ভালো থাকুন।
শুভ রাত্রি।
আর হা যারা বেশি শান্ত, তারা খুব সহজে রাগে না, মুশকিল হল একবার রেগে গেলে থামানোও যায় না।
আপনার সুস্থতায় আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং অধ্যাপক নুরুল ইসলামের প্রতিও।
আপনি যখন চলবেন, আমি কি বসে থাকব? আমিও চলব, দেখি কার বাবা এসে আমাকে থামায়! আজ আপনার সব লিখা পড়ে তবেই ক্ষান্ত হব। কথা দিলাম, আহ কথা দিলেম তো!
তবে হ্যাঁ জ্ঞানতঃ কোনদিন কারো কোন ক্ষতি করিনি। অসম্মান করিনি অন্যায়ভাবে। তবে কেউ অন্যায় করলে চুপ করে হজমও করিনি। করবোও না আমৃত্যু। এটিই দ্বীনের শিক্ষা। আমার জন্য দোয়া করবেন, এভাবেই যেন অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে করতে মরতে পারি। আমার মায়ের কাছেও সবসময় একটিই আবদার করি যেন শহীদি মৃত্যু আল্লাহ্ পাক আমার নসীবে লিখেন।
আমার প্রিয় স্যারের জন্য দোয়া করেছেন জেনে ভীষণ আনন্দিত হলাম।
আপনার প্রতিযোগী মনটার জাগরণী সাড়ায় আবারো মনে হল নতুন করে উজ্জ্বীবিত হলাম। আপনার অদম্য স্পৃহা থেকে শিক্ষা পেলাম কিছু। অসাধারণ অভিব্যক্তি আর ভঙ্গিমায় মন্তব্য রেখে যাওয়ার জন্য অনিঃশেষ দোয়া ও শুভকামনা রইলো।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
সাহসী হৃদয়গুলো সব সময় অন্যায়ে প্রতিবাদী হয়ে উঠে। দ্বীনের শিক্ষা আপনার মাঝে সবস সময় জাগরূক থাকুক, আমারও কামনা তাই।
'আমাকে শহীদ করে সেই মিছিলে
শামিল করে নিও
যেই মিছিলের নেতা আমি হামজা
খুবায়েব খাব্বাব
খোদার ছিল যারা অতি প্রিয়
শামিল করে নিও'
আপনার শহিদীর তামান্নার কথা শুনে গানটি একবার গেয়েই ফেললাম।
আপনার প্রতিও রইল অফুরন্ত ভালবাসা, দোয়া।
সাহসী হৃদয়গুলো সব সময় অন্যায়ে প্রতিবাদী হয়ে উঠে। দ্বীনের শিক্ষা আপনার মাঝে সবস সময় জাগরূক থাকুক, আমারও কামনা তাই।
'আমাকে শহীদ করে সেই মিছিলে
শামিল করে নিও
যেই মিছিলের নেতা আমির হামজা
খুবায়েব খাব্বাব
খোদার ছিল যারা অতি প্রিয়
শামিল করে নিও'
আপনার শহিদীর তামান্নার কথা শুনে গানটি একবার গেয়েই ফেললাম।
আপনার প্রতিও রইল অফুরন্ত ভালবাসা, দোয়া।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আপনার জন্য অনিঃশেষ দোয়া , শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা রইলো।
বোনের জন্য বেশী বেশী করে দোয়া করার জন্য বিশেষ অনুরোধ থাকলো ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন