অন্তরকে অবরুদ্ধ করা যাবে কী????
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০১:৫৮:১৪ রাত
ভূমিকায় প্রসঙ্গক্রমে কিছু ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা বলে নেয়া প্রয়োজন। দেশে সরকারী চাকুরীরত অবস্থায় আমি জাতীয় রাজনীতি বা কোন দলের দলীয় সমর্থক-কর্মী ছিলাম না নীতিগত কারণে। একটি পেশাজীবী সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভানেত্রীর দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে পেশার প্রয়োজনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, শ্রদ্ধাভাজন ডঃ কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার ইশতিয়াক আহমেদ, আ, স, ম আব্দুর রবসহ অনেক নেতা নেত্রী তথা বুদ্ধিজীবীর সাথে সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছিল আমার। অপরাজনীতির ডামাডোলে দলীয় পর্যায় থেকে একদিন অনুরোধ আসে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি দলের সাথে শরীক হয়ে কাজ করার। কিন্তু তা আমি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করায় আমার উপর নেমে এসেছিল অমানুষিক নির্যাতন।
সেসময় আল্লাহ্র অশেষ নেয়ামতে একজন অকৃত্রিম পরোপাকারী হিসাবে যে মহৎ ব্যক্তিটি আমাকে অকুণ্ঠ স্নেহ মায়ামমতা দিয়ে সাহায্য সহযোগিতা করেছিলেন, তিনি হলেন পরম শ্রদ্ধেয় স্যার জাতীয় অধ্যাপক নূরুল ইসলাম। পরিচয়ের সূত্রসহ বিস্তারিত আর একদিন লিখার ইচ্ছে আছে ইনশাআল্লাহ। মহান আল্লাহ্র অপার করুণায় প্রতিটি বিপদে যিনি মূল্যবান উপদেশ ও অব্যাহত স্নেহের সুশীতল ছায়ায় আমার জীবনের অবর্ণনীয় কণ্টকাকীর্ণ পথকে করেছিলেন কুসুমিত। ফলে অনিয়ম অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেই চাকুরীর শেষ ক্ষণটি পর্যন্ত আপোষহীন এক কাফেলাসহ অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে সক্ষম ছিলাম আলহামদুলিল্লাহ্। আজ আমি দীর্ঘদিন যাবত ব্যাক্তিগত প্রয়োজনে পরবাসী। কিন্তু দেশের মাটি ও মানুষের শেকড় যেন আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে প্রতিটি মুহূর্তের জন্য।
সীমাহীন অযোগ্যতা ও ব্যস্ততা সত্ত্বেও নিজের দেশ এবং জাতির ভাবনায় উদ্বিগ্ন হয়ে বিবেক দংশনে চুপ থাকা কঠিন বিধায় কলম ধরতে বাধ্য হই। জাতির ঘোরতর দুর্দিনে চিরচেনা শত্রুরা যখন বন্ধুবেশে আবির্ভূত হয় তখন দেশের ভাগ্যাকাশে যে মরণফাঁদ অপেক্ষা করছে তা একজন উন্মাদেরও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। সেটা ক্রমেই যেন কঠিন থেকে কঠিনতম হয়ে ভয়ংকররূপ পরিগ্রহ করছে। পর্দার আড়ালে ভারতের সীমাহীন খবরদারী, নজরদারী, লোভ আর শোষণের কারণে বাংলাদেশ আজ নিঃস্ব প্রায়। জারী সারি ভাটিয়ালির দেশ, প্রাণোচ্ছলে ভরা সুখী বাংলাদেশে আজ বিরাজ করছে কবরের নিস্তব্ধতা। নিরীহ জনগণকে শায়েস্তা করার জন্য উসকিয়ে দেয়া হয়েছে পুলিশ, র্যা ব, বিজিবি সহ আওয়ামী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাহিনীকে। ব্যাংক লুট, শেয়ার বাজার লুট, ধর্ম লুট, অর্থনীতি, বাক স্বাধীনতা লুট, পঞ্চদশ সংশোধনীর নামে ভোটাধিকার লুট, ভূমি লুট, মা বোনদের ইজ্জত লুট, শান্তি লুট করে এখন তারা মস্তক লুট করছে নির্বিচারে।
ট্রানজিট সুবিধা, বন্দর সুবিধা, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ ব্যবসার নামে কোটি কোটি টাকার বহুবিধ সুবিধা ভারতকে দিয়ে ইতিমধ্যেই তারা বিশস্থ বন্ধুত্বের যোগ্যতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশের মানুষ জানে এরা পরীক্ষিত মিরজাফর ও গুপ্তচোর। বন্ধুদের অঙ্গুলি হেলনে রাতের অন্ধকারে ঘটানো হয়েছিলো শাপলা চত্তরে ৫ই মে, ২০১৩ এর গণহত্যা। আর এখন প্রকাশ্যে বোমাবাজি করে, গুলি চালিয়ে ভবিষ্যৎ বংশধরসহ নির্মূল করার ঘোষণা দিয়ে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে পেট্রোল বোমা দিয়ে তরতাজা মানুষ পুড়িয়ে বার্ন ইউনিটে নাটক তথা ফটোসেশন চলছে। আকাশভেদী কষ্টে কলিজা ছিঁড়ে যাচ্ছে আহত তথা স্বজনদের কিন্তু সেখানেও নিষ্কৃতি নেই চলছে রাজনীতির মহোৎসব। পেট্রোলবোমা অস্ত্রসহ হাতে নাতে ধরা পড়ার পর প্রকৃত দুষ্কৃতিকারীরা দলীয় লোক হওয়ায় তাদেরকে মুক্ত করতে দেয়া হচ্ছে উত্তম মানুষের সত্যায়নপত্র। অস্ত্রধারী খুনীদেরকে করা হচ্ছে পুরুস্কৃত। সাধারণ মানুষের কোষাগার থেকে যারা জীবন জীবিকা নির্বাহ করছে সেই রক্ষক এখন ভক্ষকের ভূমিকায়। বাংলাদেশ এখন একটি আজব দেশের এক ভয়াল মৃত্যুপুরীর নাম। সদ্য সন্তানহারা শোকার্ত একজন মা বেগম খালেদা জিয়াকে কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে অবরুদ্ধ রাখা হয়েছে ইন্টারনেট সংযোগসহ সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে।
দেশরক্ষার চলমান আন্দোলনে যে দলটির সর্বোত্তম ত্যাগ তাঁরা “জামায়াত শিবির”। তাঁদের এই দুঃসাহসিক ত্যাগে ভীত সরকার নির্বিচারে হত্যা ও গুম চালাচ্ছে ইতিহাসের সর্বোচ্চ নিকৃষ্টতম পন্থায়। জ্বালাও, পোড়াও, হত্যা, গুম, ফাঁসি, জেল, জুলুমসহ কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে অবরুদ্ধ রেখে ক্ষণিকের দুনিয়ায় নির্যাতন করা যায় বটে কিন্তু ৮৫ ভাগ মুসলিম দেশের মানুষদের অন্তরকে স্তব্ধ বা অবরুদ্ধ করা যাবে কি?
আর এসব জুলুমবাজদের ক্ষেত্রে আল্লাহ্ পাকের ফয়সালা, “নিশ্চয়ই যারা অবিশ্বাসী, তাদেরকে ভয় দেখানো বা না দেখানো উভয়ই সমান; তারা ঈমান আনবে না। আল্লাহ্ তাদের হৃদয় ও কর্ণ সমূহের উপর মোহর মেরে দিয়েছেন ও তাদের চোখের উপর আবরণ রয়েছে, আর তাদের জন্য রয়েছে (পরকালে) কঠিন শাস্তি” (সূরা বাকারাঃ ৬-৭)।
বিষয়: বিবিধ
১৩৫৬ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক ধন্যবাদ আপু।
বেশী কিছু বুঝি না আপু ।তবে এটুকু বুঝি জুলুম করে কারো শেষ রক্ষা হয় নি হবে ও না । এর শাস্তি দুনিয়াতে আছে আর আখেরাতে তো আছেই । অনেক ধন্যবাদ আপু ।
মনে করবেন না আশা করি। আমিও দেশের বাহিরে থাকি।
গত সপ্তাহে গুগলের Street view তে ঢাকা শহর
ঘুরলাম।
উৎসাহ ও প্রেরণামূলক আন্তরিক সুন্দর অনুভূতি রেখে যাওয়ার জন্য বারাকাল্লাহু ফিক। ভালো থাকবেন খুব ভালো সবসময়। দোয়া রইলো।
আস্ সালাম.....শ্রদ্ধেয়া আপুজ্বী!
'চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী' একজন চোরের ক্ষেত্রে এ প্রবাদ প্রযোজ্য! ওরা তো চোরের চেয়ে হাজার গুণ উপরে নিকৃষ্ট হিংস্রতায়! নিজেদের স্বার্থ-ক্ষমতার জন্যে সম্ভাব্য সব অপকর্মই করে যায় ওরা!
ওদেরও শেষ দিন অবশ্যই আসবে ইনশা আল্লাহ!
মহান রাব্বুল আলামীন আমাদের সকলকেই সর্বাবস্থায় ভালো রাখুন, সুস্থ রাখুন এবং দুনো জাহানের কামিয়াবী হাসিলের তৌফিক দিন এই প্রার্থনা রইলো। আমার জন্য দোয়া করবেন দয়া করে ভাইয়া।
মহান রাব্বুল আলামীন আমাদের সকলের সৎ নিয়্যতগুলো কবুল করুণ। আমীন। ছুম্মা আমীন।
মহান রাব্বুল আলামীন আপনিসহ আমাদের সকলকেই সর্বাবস্থায় ভালো রাখুন, সুস্থ রাখুন এবং দুনো জাহানের কামিয়াবী হাসিলের তৌফিক দিন এই প্রার্থনা রইলো। আমার জন্য দোয়া করবেন দয়া করে ভাইয়া।
আল্লাহপাক কারো কারো রশি একটু ঢিলা করে দেন, তাদের দৌড়ের সীমারেখে একটু লম্বা হয়, এর বেশী কিছু নয়। অতীতেও পৃথিবীর সকল অত্যাচারীই পতিত হয়েছে, ইতিহাসের আস্তাকূড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। বর্তমানেও হবে- শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র!
মহান রাব্বুল আলামীন আপনিসহ আমাদের সকলকেই সর্বাবস্থায় ভালো রাখুন, সুস্থ রাখুন এবং দুনো জাহানের কামিয়াবী হাসিলের তৌফিক দিন এই প্রার্থনা রইলো। আমার জন্য বেশী বেশী দোয়া চাই ভাইয়া।
মহান রাব্বুল আলামীন আপনিসহ আমাদের সকলকেই সর্বাবস্থায় ভালো রাখুন, সুস্থ রাখুন এবং দুনো জাহানের কামিয়াবী হাসিলের তৌফিক দিন এই প্রার্থনা রইলো। আমার জন্য বেশী বেশী দোয়া চাই ভাইয়া।
আপনার দোয়ায় আমীন।
কিন্তু মৃত্যু তাদের নিকটবর্তি।
মহান রাব্বুল আলামীন আপনিসহ আমাদের সকলকেই সর্বাবস্থায় ভালো রাখুন, সুস্থ রাখুন এবং দুনো জাহানের কামিয়াবী হাসিলের তৌফিক দিন এই প্রার্থনা রইলো। আমার জন্য বেশী বেশী দোয়া চাই ভাইয়া।
মন্তব্য করতে লগইন করুন