তারুণ্যের অঙ্গীকারে জেগে উঠুক প্রাণ
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ২১ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০৪:৩৬:৫৬ রাত
বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের সুউচ্চ মহত্বের দাবীদার ও সংগ্রামী চেতনার বৈশিষ্টমণ্ডিত তারুণ্যের অঙ্গীকারে উদীপ্ত অভিযাত্রীরাই আমাদেরকে নিয়ে যাবে বিজয়ের প্রান্তে। মুছে দেবে অশ্রুজল, ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে ফেলবে মিথ্যাশ্রয়ী লোভী পাষাণ মন্দিরের বেদী। দগ্ধ ক্ষত সন্তানহারা জননীর মুখে এনে দেবে নতুন সোনালী দিনের হাসি। চাপা বুকের ব্যথাগুলো স্নিগ্ধ মদির পরশে ভালোবাসার আলো হয়ে ফুটে উঠবে দিকে দিকে। রক্ত ঝরা প্রাণে জাগিয়ে তুলবে ভাষা, যোগাবে শক্তি পুরাবে আশা। প্রাণে প্রাণে জেগে উঠবে মহা সত্যের প্রেম ভালোবাসা।
আমরা যদিও জানি মুসলিম উম্মাহ আজ আত্মঘাতী ও আত্মবিস্মৃত এক জাতি হিসাবে গোটা বিশ্ব ব্যাপী খেতাব অর্জন করে চলেছে যা খুবই পরিতাপের বিষয়। অমুসলিমদের সর্বনাশা ষড়যন্ত্রের শিকারী সেজে তাওহীদ বিনাশী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হয়ে একটি চক্র নিজেদেরকে আশীর্বাদপুষ্ট মনে করছে। বস্তুত এভাবেই সারা পৃথিবী জুড়ে মুসলিম জাতি আজ অন্ধভাবে বিজাতীয়দের হাতের পুতুল হিসাবে নগ্নভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিজাতীয়দের ক্রীড়ানক হয়ে প্রাণহরণ করছে হাজার হাজার নিস্পাপ কচি মুখের জান্নাতি পাখীসহ নিরস্ত্র অসহায় নরনারী ও আলেম ওলামাকে।
অথচ ইসলামের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যই হল মানুষের জীবনকে নিরাপত্তা, স্বস্তি, শান্তি ও সুখের সৌরভে বিকশিত করা। প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়া ইসলামের নির্মল পরিশীলিত ও প্রীতিময় আমোদিত আনন্দের প্লাবন। ভ্রমে নিপতিত বিলাসী মুসলিম জাতি আজ নিরাময়হীন বদ্ধ উন্মাদনার জোয়ারে প্রলুব্ধ হয়ে নষ্ট গড্ডালিকায় গাঁ ভাসিয়ে দিচ্ছে। এভাবেই তারা অন্ধ আর বিবেকবর্জিত হয়ে দুনো জগতের সুখ শান্তিকে উচ্ছেদ করছে পৃথিবী থেকে। অন্ধকারকেই আলো ভেবে আঁকড়ে পড়ে আছে তারা। তাইতো তারা আজ ঈমান ও আকীদার বিপরীতে প্রত্যক্ষভাবে সাংঘর্ষিক বিনোদমূলক বিষয়কে গ্রহণ করেছে জীবনের অপরিহার্য কর্ম হিসাবে। বদ্ধ উন্মাদের ন্যায় তারা আজ ভোগ বিলাস আর আরাম আয়েশে লিপ্ত। ব্যক্তিগত চিন্তা চেতনা, অভিরুচি, প্রয়োজনীয়তা, বোধ বিবেচনার সমাধি রচনা করে অন্ধত্ববশতঃ ডুবে আছে ভ্রমের সমূদ্রে। যা সাধারন সরলমনা ও শান্তিপ্রিয় মানুষকে করে তুলছে দিশেহারা। বিচলিত বিভ্রান্ত জনগণ জ্ঞানশূন্য হয়ে অবাস্তব অনুরাগে মদদপুষ্ট মানুষদের দানবীয় শক্তি ও নিপীড়নে পিষ্ট হচ্ছে অনবরত। নিঃসংকোচে নির্লজ্জ ও বেহায়াপণা কর্মে অনুরক্ত হয়ে পুরা জাতিকে ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষিপ্ত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে হায়েনারা। এই জাতীয় বিবেকবর্জিত মুসলমানরূপী নিপীড়কদের নেই কোন নুন্যতম লাজলজ্জা, লোক নিন্দা বা কলঙ্কের ভয়।
আগামী প্রজন্মকে ধ্বংস করতে সংস্কৃতির নামে তরুণ তরুণীদের মধ্যে ঢেলে দেয়া হচ্ছে বিজাতীয় সংস্কৃতির মরণ বিষ। যে বিষময় বীজের অঙ্গূরোদ্যম একদিন প্রকাণ্ড শাখা প্রশাখা হয়ে গোটা দেশকে ভয়াবহ বিষাক্ত ফণায় আতঙ্কিত জীবনের কড়াল গ্রাসে প্রতিনিয়ত অতিষ্ট করে তুলবে। যার পূর্বাভাস ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। বিজাতীয় ধর্মীয়বোধের অনুকরণে অপসংস্কৃতির যে উন্মত্ততার জোয়ার দেশে অনুরণিত হচ্ছে তাতে সাধারণ মানুষ শঙ্কিত ও দ্বিধান্তিত। তাইতো সামাজিক দৃষ্টিতে আজ খোলা আকাশের নীচে ব্যস্ততম এলাকায় গলাগলি, জড়াজড়ি করে যুবক যুবতীরা বসে প্রেমালাপ করা কোন অশোভনীয়, অমার্জিত কিংবা গর্হিত কোন কাজ নয়। শাহবাগ চত্তরে যুবক যুবতীদের রাত কাটানো কিংবা আনন্দের জোয়ারে ভেসে পর পুরুষের হাতের ছোঁয়ায় তরুণীদের নগ্ন বাহুমূলে কিংবা বুকে পিঠে উল্কি অঙ্কন করা নয় কোন পাপকর্ম। জনসমক্ষে এসব নির্লজ্জতা করে তারা হচ্ছে আহ্লাদিত। আর এটাই আজ বাংলাদেশের সংস্কৃতি।
আলেম ওলামারা অপেক্ষায় আছে কখন আল্লাহ্র রাসূল (সাঃ) এবং মহান আল্লাহ্ কে নিয়ে মানুষ কটূক্তি করবে তখনই কেবল তাঁরা প্রতিবাদ কিংবা প্রতিরোধ গড়ে তুলবে তার আগে চলমান এসব আনন্দযজ্ঞের বিষয়ে তাঁদের কোন আপত্তি বা মাথাব্যথা নেই। তাইতো দিনে দিনে অপসংস্কৃতির নোংরা দূষিত পরিবেশে বেড়েই চলেছে অসামাজিক কার্যকলাপ। তরুণ তরুণীদেরকে দেয়া হচ্ছে বেহায়া বেশরম বানানোর আঞ্জাম। সরকারীভাবে কুৎসিত চর্চাগুলোকে করা হচ্ছে উৎসাহিত আর দ্বীনি বোনদেরকে করা হচ্ছে প্রতিপদে নিগৃহীত ও নাজেহাল। আল্লাহ্ পাক তাই সতর্ক করে বলেছেন, “শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না, সে তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন; সে অবশ্যই তোমাদেরকে প্ররোচিত করে পাপাচারে ও লজ্জাহীন কর্মকাণ্ডে” (সূরা বাকারাঃ ১৬৯)।
হে তরুণ সমাজ তোমরা আর কতকাল এভাবে বিভ্রমে কাটাবে? বেদআত আর শিরকে পরিপূর্ণ জাতিকে তোমরা কী মুক্ত করতে এগিয়ে আসবে না? কিয়ামতের মাঠে তাহলে কীভাবে জবাবদিহিতা পর্বে মুক্তির পথ মিলবে? মূল্যবান সময় চলে যাচ্ছে আর তোমরা কীসের মধ্যে ডুবে আছো? একবারও গভীরভাবে বিদ্যমান বিষয়গুলো ভেবে দেখেছো কী? বিকৃত রগরগে শিরকের চকচকে রঙিন ফানুসে আর কতকাল বেহুঁশ থাকবে? আমরা বুকভরা দীর্ঘশ্বাস আর অনুপযুক্ত বসবাসের স্বীকার হয়ে কলঙ্কিত জীবনযাপন চাইনা। “রাব্বানা লাতাজাআলনা ফিতনাতাল্লিললাজিনা কাফারু” হে আমাদের মহান রব, কাফিরদের যে ফিতনা তা থেকে আমাদেরকে সুরক্ষা করুণ (সূরা মুমতাহিনাঃ ৫)।
সামনে আসছে উন্মাতাল করা নগ্নতার নববর্ষ তাই এখনই বিপজ্জনক সংস্কৃতির থাবা থেকে মুক্ত করতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করা উচিৎ। যারা আমাদের আদর্শবোধকে বিপন্ন ও বিপথগামী করতে চায়, যারা আমাদেরকে তাওহিদী চেতনাকে চিরতরে মুছে ফেলতে চায় এই নিন্দিত চিহ্নিত গোষ্ঠীকে পরিত্যাগ করা আজ অত্যন্ত জরুরী এবং সময়ের দাবী। অতীতের জ্বালা গ্লানি মুছে দিতে তরুণ প্রজন্মের উচিৎ আল্লাহ্র অনুগ্রহ কামনা করে অমুসলিমদের তাওহীদ বিনাশী সর্বপ্রকার আগ্রাসী চক্রান্তকে সমূলে উপড়ে ফেলা। রোপণ করা আগামী সোনালী দিনের সজীব ও স্বাস্থ্যকর মূল্যবান বীজ। আর এভাবেই সত্যের অপরূপ জ্যোতি আলোর মশালে দীপ্ত সুশোভিত হয়ে তারুণ্যের অঙ্গীকারে দিকে দিকে জেগে উঠবে দ্বীনি চেতনার স্পন্দন। জননীর মমতায় উল্লসিত হবে শিশু কিশোরের প্রাণ।
বিষয়: বিবিধ
১২১৯ বার পঠিত, ৩৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আজ নেতিবাচক মন্তব্য করবো-
নির্দিষ্ট সময়ের সীমারেখায় আবদ্ধ এ 'ধরা'র নিয়তী! নিঃশেষের চুড়ান্ত পর্যায় যেতে কিছু কাঠামো অতিক্রম করতেই হবে,যা কোরান-হাদিসে বর্ণিত হয়েছে!
তারই নমুনা আজকের এই বাস্তবতা!কিছু করার নেই আমাদের!নিয়তীর হাতে নিজেদের সঁপে দিয়ে বসে থাকাই আমাদের উচিৎকর্ম হবে!
শ্রদ্ধেয়দ্বয়! আমার মনের কথা নয় উপরুক্ত মন্তব্য! মাঝেমাঝে বিষাদের কাল ছায়া বিস্তৃত থেকে বিস্তৃততর হয় হ্রদয়াকাশে!স্বীয় ব্যর্থতা থেকেই এমন নেতিবাচক কথা বেরিয়ে আসে!
সন্ধাতারা আপু ও লজিকাল ভাইছা আপনারাই সঠিক!
আমার জন্যে দোয়া চাই.....।
আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভেচ্ছা। আমাদের সকলের এহজীবন এবং আখেরাত অনাবিল সুখ আর শান্তিময় হোক এই প্রার্থনা।
বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের সুউচ্চ মহত্বের দাবীদার ও সংগ্রামী চেতনার বৈশিষ্টমণ্ডিত তারুণ্যের অঙ্গীকারে উদীপ্ত অভিযাত্রীরাই আমাদেরকে নিয়ে যাবে বিজয়ের প্রান্তে । Ins-ha Allah .
আমাকে ভুল বুঝার জন্য খুব খারাপ লাগলো।
আপনার লেখাকে "ছাই পাঁশ লিখা" মনে করার মতো সাহস, যোগ্যতা, জ্ঞান কোনটাই আমার নেই।
আপনার লেখার মান, আপনার চিন্তা ভাবনা, আপনার জ্ঞানের গভীরতা দেখে আমি মুগদ্ধ হই। বিশ্বাস করুন। আল্লাহ্ সাক্ষি আছেন। আমার মনের অবস্থা আপনি জানেন না, কিন্তু আল্লাহ্ ঠিকই জানেন। "ইন্নাল্লাহা আলীমুম বিজাতিছ ছুদূর।" (কুরআনের অনেক জায়গায় আছে এ কথা)।
খেয়াল করলে দেখবেন, আমি আসলে দুষ্টুমি করতে পারি এমন পোস্টেই বেশি থাকি। আপনার পোস্টগুলো সিরিয়াজ ও গভীরতাও অনেক। ডীপলি চিন্তা না করে অপ্রাসঙ্গিক কমেন্ট করাটা এ ধরনের পোস্টের সাথে মানায় না। তাই (আগের মতো) পোস্ট না পড়ে হুট করে কমেন্ট করতে কেমন জানি লাগে! কারন অনেকেই তা ভালো চোখে দেখে না।
তাছাড়া ইদানিং অনেক ব্যস্ততা যাচ্ছে। সবসময় ব্লগে আসতেও পারি না। যখনই আসি সামনে যেটা দেখি সেটা দেখে পালিয়ে যাই।
এত কিছু বলার জন্য আমি সরি।
বিভ্রান্তি কেই কেউ যখন একমাত্র সঠিক বলে মনে করে তখন এই রকম অবস্থা হওয়াই স্বাভাবিক।
আপনার মোতো জদি আমিও গুছিয়ে লিখতে পারতাম ইশশশশ
আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভেচ্ছা। আমাদের সকলের এহজীবন এবং আখেরাত অনাবিল সুখ আর শান্তিময় হোক এই প্রার্থনা।
নিছিল আজ নেতিবাচক মন্তব্য করবো... অত এব কাহাফ ভাই
একজন আলেম হিসাবে তার মন্তব্যের সাথে সে নিজেও একমত হবেন না। আপু আপনার কথা গুলো বাস্তব অনেক ভাল লাগলো ।যাযাকুমুল্লাহ
এ প্যারার সাথে সম্পূর্ণ একমত ।
আমাদের ইমামরাই আজ কুরআনের কিছু মানছে আর কিছু মানছে না।ফলে এ অবস্থা ।
বরাবরের মত অনবদ্য । অন্নেক ধন্যবাদ ।
তারুণ্যের অঙ্গীকারে জেগে উঠুক প্রাণ,
অপসংস্কৃতির কাল ছোবল হয়ে যাক ম্লান । >- >-
আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভেচ্ছা। আমাদের সকলের এহজীবন এবং আখেরাত অনাবিল সুখ আর শান্তিময় হোক এই প্রার্থনা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন