সংস্কৃতির সৌরভ কী হেরেমে বন্দী???!!!
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ০৮ নভেম্বর, ২০১৪, ০৫:৪১:২৭ বিকাল
সংস্কৃতি হলো একটি সমাজের দর্পণ। যেখানে মানুষের নিত্যদিনের বিশ্বাস, সততা, মূল্যবোধ, সৌন্দর্যবোধ, জীবনবোধ ও জীবনব্যবস্থার সার্বজনীন অভিব্যক্তির নান্দনিক রূপ চমৎকারভাবে ফুটে উঠে দৃশ্যমান অবয়বে। মানুষের হৃদয়ের গভীর থেকে উৎসারিত চেতনা ও স্বপ্নের স্ফুরণ ঘটে সংস্কৃতির মধ্যে প্রতিচ্ছবি হয়ে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় আজ আমরা যে সংস্কৃতির উত্থান লক্ষ্য করছি তা কী আমাদের বিশ্বাস, ন্যায়বোধ, রুচিবোধ ও ইসলামের আদর্শকে উপস্থাপন করে? যদি উত্তর হয় না- তাহলে আমাদের আদর্শ, বিশ্বাস, সততা, চেতনা সবকিছুই কী আজ হেরেমে বন্দী?
আরও অদ্ভুদ বিষয় হলো, অন্যায় অসত্য নির্যাতন জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদমুখর হলেই অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে সুচতুর পরিকল্পনার দৃষ্টিভঙ্গীর ফাঁদে আটকিয়ে মুসলমানদেরকে মৌলবাদী, সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী, মানবতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, ধর্মান্ধ সেকেলে ইত্যাদি বাক্যবাণে বিদ্ধ করা হয়। এই শব্দগুলোর সাইনবোর্ড মুসলমানদের গাঁয়ে স্থায়ীভাবে ঝুলিয়ে দিয়ে বিষাক্ত মানসিকতায় ভরা স্বঘোষিত বুদ্ধিজীবী স্বার্থান্বেষী বিক্রীত মিডিয়াগুলো অবিরামভাবে প্রচার প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে সমগ্র বিশ্বজুড়ে। বদ্ধ উন্মাদের মত তাদের বিকারগ্রস্ত এসব উগ্রবাদী মিথ্যা বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার অনাকাঙ্ক্ষিত ও বিব্রতকরই শুধু নয় মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত মানহানিকর, অরুচিকর এবং নিচুমানের। এতদ্বসত্ত্বেও বেপরোয়াভাবে কোরআন মজীদ ও ইসলামের শ্বাশতবাণীকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্যভরে আক্রমণের লক্ষ্যস্থল করে বিশ্বব্যাপী কাফের মুশরিকদের যে সম্মিলিত পাশবিক উল্লাস তা সঠিকভাবে জানা বা হৃদয়ঙ্গম করার সময় বা প্রয়োজনীয়তা অনেক মুসলিম দলগুলোর আজ নেই। এগুলোকে মোকাবিলা করার নেই কোন কার্যকরী কর্মপন্থা, যথাযথ পরিকল্পনা বা আদর্শিক দিকনির্দেশনা। বিশ্বব্যাপী আজ তাই মুসলিম উম্মাহ ভয়াবহতম পরীক্ষার সম্মুখীন।
ইসলামী বৃহৎ শক্তিকে টুকরো টুকরো করে ভাড়াটিয়া গংরা তাই ইসলামকে আপত্তিকর ভাষায় তুলো ধুনো করে স্বল্পবসনা নারী, যৌনকর্মী, নর্তকী, অরুচিকর নাটক সিনেমার অভিনেতা অভিনেত্রীর প্রশংসায় ও সফলতায় উচ্ছসিত পুলকিত। সেইসাথে বাড়ছে অসংখ্য অভিভাবকের অভিলাষ। তাদের ছেলেমেয়েদেরকে জীবনের সফলতা ও বিজয় এনে দিতে বরেণ্য সঙ্গীত শিল্পী, নর্তক-নর্তকী হিসাবে গড়ে তোলার প্রাণপণ প্রতিযোগিতা। এদের কাছে বাদ্যযন্ত্রকে মনে হয় আরাধ্য দেবতা আর ইসলামিক অনুশাসনকে মনে হয় জঞ্জালসর্বস্ব উটকো এক আপদ। আর এভাবেই তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বেড়ে যাচ্ছে নগ্নতা, যৌনতা, অশ্লীলতা ও নেশা। কঠিন মাশুল দিতে হচ্ছে জাতিকে। অবৈধ গর্ভপাত আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে, পরকীয়া বাড়ছে, সংসার ভাঙছে, তালাকের সংখ্যা কল্পনাতীত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিপরীতে তাহাজ্জুদ নামায পড়া এবং হাদীসের বই রুমে রাখার অপরাধে ভাগ্যে জুটছে অপরাধের শাস্তি। তালিম করার জন্য জেলে যেতে হচ্ছে মা বোনদের, হিজাব পড়ার কারণে জুটছে বেইজ্জতি আর লাঞ্ছনা!! একেই বলে মহিলা প্রধানমন্ত্রীর শাসনামলের মুসলিম প্রধান দেশ!!! আবার ক্ষমতাসীনদের ভাষায়, বর্তমান সময়েই ইসলাম সবচেয়ে বেশী সুসংহত!! কী তামাশাপূর্ণ উদ্ধত্যপনা??!!
এতদ্বসত্ত্বেও মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বিভাজন, অদূরদর্শিতা, অপরিনামদর্শী সিদ্ধান্ত, প্রকৃত দ্বীনের হক পালনে গড়িমসি, পারস্পারিক অশ্রদ্ধা, অসম্মান সর্বোপরি গ্লানিকর অবস্থান ও পরিণতি সাধারণ মানুষকে বিচলিত ও হতাশ করছে। অথচ কোরআন পাকে বলা হয়েছে, এমন কোন ইবাদত নেই, যা জিহাদ ও কিতালের বিকল্প হতে পারে। আর এক্ষেত্রে একজন মুমিনের জীবন-মরণ, ইবাদত ও কোরবানি সবকিছুই হওয়া উচিৎ শুধুমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য (সূরা আনআমঃ ১৬২)। ভূপৃষ্ঠে একারণে আল্লাহ্র মনোনীত দ্বীন কায়েমের জন্য নিঃশর্তভাবে নিজেকে অকাতরে কোরবানি করা ফরয। বর্তমান প্রেক্ষাপটে মুসলিম মিল্লাতের জন্য এটাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জরুরী কাজ তা হলো, দ্বীনকে সুরক্ষা করা ও দ্বীনের ইজ্জত হেফাজত করা। মুক্ত করা হেরেমে বন্দী জগদ্দল পাথরের ন্যায় শ্বাসরুদ্ধ করে রাখা মুসলমানের প্রাণের স্পন্দন ও দুনো জগতের জান্নাতি সুখশান্তি ও কল্যাণের শেকড় সুস্থ সংস্কৃতি।
বিষয়: বিবিধ
১৪৬৭ বার পঠিত, ৩৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাজাকাল্লাহু খাইর।
ভালো আছেন ভাইয়া?
আলহামদুলিল্লাহ!
আজ এই জীবনে প্রথম ফুফা হলাম। খুব আনন্দ লাগছে। নবজাতক এবং তার মায়ের জন্য দোয়া করবেন।
হৃদয় ছুঁয়ে বিবেক কে নাড়া দেওয়ার মত লেখাটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। জাযাকাল্লাহ খইর
১০০% সহমত। এর থেকে উত্তোরণ না ঘটাতে পারলে আমাদের কপালে দুঃখ আছে।
আপনার জন্য অন্নেক অন্নেক দোয়া ও শুভ কামনা রইলো।
আমাদের সমস্যা হচ্ছে আমরা মিডিয়ার বাজারি সংস্কৃতির উপর বেশি আষ্থা স্থাপন করে ফেলেছি। প্রতিভা কে অনুসন্ধান করতে হয়না সেটা আপনাআপনিই প্রকাশিত হয়। অথচ এই নাম করে কত কোটি টাকার ব্যবসা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ধ্বংস হচ্ছে জাতিগত চরিত্র।
ভাল লাগল আপু ।
শ্রদ্ধেয়া সন্ধাতারা আপুজ্বী!আস্ সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে সামগ্রিগ বিবেচনায় বিষাদের কালো ছায়ার অযাচিত দীর্ঘ বিস্তৃতি জীবন সিদ্ধানে বারে বার হোচট খেতে বাধ্য করছে যেন!দোয়া চাই আপনাদের কাছে!
মন্তব্যের ঘরে ভিন্ন সাজে পদার্পণ আপনার অসাধারণ নান্দনিক অভিব্যক্তিময় হ্রদয়ছোয়া লেখনীকে বিব্রত করলে আন্তরিক ক্ষমাপ্রার্থী!
জাযাকুমুল্লাহি খাইরাল জাযাহ........।
আমার ভীষণ ঘুম পাচ্ছে, তাই পোস্ট এখনও পড়তে পারিনি
জাযাকাল্লাহু খাইরান।
আপনার দোয়ায় আমীন। বারাকাল্লাহু ফিক।
আর ঐসব মানুষের জন্য লিখাটি খুবি তেতো লাগবে যারা মুসলমান হয়েও ইসলাম পালনতো করেই না, বরং মুসলিম হিসেবে নিজের পরিচয় দিতেও লজ্জাবোধ করে। আল্লাহ তাদের হেদায়েত করুন।
লিখাটি পড়ে কেমন ভাল লেগেছে ভাষায় প্রকাশ করতে পারবনা, সে যোগ্যোতাও আমার নেই, এই কামনাই করব আপনার কাছে, এমন সুন্দর সাবলীল, গঠনমূলক লিখা থেকে বঞ্চিত করবেন না। খুব একটা বসতে পারিনা ব্লগে, তবু কিছু ব্লগারের লিখা মন্তব্য দেখে দারুণ ভাল লাগে, পড়তে না পারলে মনে হয় কি যেন রেখে অসমাপ্ত অবস্থায় রেখে যাচ্ছি, তাদের মাঝে আপনি অন্যতম।
শ্রদ্ধা ও ভালবাসা গ্রহণ করবেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন