ঈদের ভিন্ন রকম অনুভূতি
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ৩০ জুলাই, ২০১৪, ০৫:৫৮:৪৬ বিকাল
ভেবেছিলাম “ঈদ উপলক্ষে” ভিশু ভাইয়ার অনুরোধ রক্ষার্থে বিডি ব্লগের অভিজ্ঞতার আলোকে দু’একটি কৌতুক পরিবেশন করবো। কিন্তু লিখতে বসে মন কিছুতেই সাড়া দিলো না। তাই ভিন্ন অনুভূতি নিয়েই আজকের এই লেখা। ইউ-কের যে এলাকাতে আমি থাকি তা মূলত মুসলিম কমিউনিটি। এজন্য মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে লাখো কোটি শোকরিয়া। আরও শোকর এজন্য যে আমরা অনেকেই যারা বাংলাদেশে একে অপরকে চিনতাম জানতাম, নিজেদের ভাল-মন্দ শেয়ার করতাম, রবের অপার রহমতে অলৌকিকভাবে একই এলাকাতে আবার সকলেই একত্রিত হয়েছি। সকলেরই বাসা একদম পাশাপাশি। আর এটা সম্ভব হয়েছে একের প্রতি অন্যের অদৃশ্য নাড়ীর টানের কারণেই।
এবারের ঈদের জামাত বাসার পাশে হওয়ার কারণে গাড়ীতে না গিয়ে বাসার সকলেই পায়ে হেটে ঈদের জামাতে উপস্থিত হয়েছিলাম। তাই এবারের দৃশ্য ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন রকম। গাড়ী পার্ক করার যে পেরেশানী তা থেকে আমার ছেলে ছিল মুক্ত। সেইসাথে লক্ষ্য করলাম চারিদিক থেকে আমাদের মতই দলে দলে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সকলেই তাকবির পড়তে পড়তে পায়ে হেটে ছুটে আসছে জামাতের দিকে। এই মনোরম দৃশ্য আমার কাছে এটাই প্রথম এ দেশে। জামাত প্রাঙ্গনে ঢুকে দেখি এ এক বিশাল জনসমারোহ। নারী আর শিশুদের উপস্থিতি ছিল নজর কাড়ার মত। জামাতের বিশাল জায়গা জুড়ে ছিল নারী এবং শিশু। ঈদের নামায, খাবারের আয়োজন, পুরুস্কার বিতরণী (সারা মাসব্যাপী প্রতিযোগিতার ফলাফল শেষে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা), শিশুদের জন্য চমৎকার উপভোগ্য খেলার সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা, স্থানীয় মেয়রের উপস্থিতি ও বক্তব্য এবং অন্যান্য Activities সবকিছু মিলে বেশ আকর্ষণীয় এবং উপভোগ্য ছিল।
কিন্তু ঈদের নামায ও ঈমাম সাহেবের মর্মস্পর্শী খুতবা শেষে মোনাজাতের সময় তৈরি হয় এক ভিন্ন আবহ। বিষাদে ভরা এক করুন হৃদয়বিদারক দৃশ্যের। বেদনায় ভারাক্রান্ত হয়ে উঠলো পুরা চত্তর। সবার চোখের সানে ভেসে উঠলো আফগানিস্থান, মিশর, ইরাক, সিরিয়া, বাংলাদেশ সহ মুসলিম দেশগুলোর ভয়াবহ লোমহর্ষক কাহিনী। প্রিয়জনদের শোকে মুহূর্তেই মিলিয়ে গেল সব আনন্দ আয়োজন। সকলের চোখের পানি আর আহাজারিসহ অন্তরের আকুতিমাখা দোয়া যেন আসমান আর জমিনে একাকার হয়ে গেল। এমনিতেই কয়েকদিন থেকে মুসলমানদের সার্বিক অবস্থা ও প্রিয়জনদের অভাবে মনে অনেক কষ্ট আর ব্যথা অনুভব করছিলাম। তাছাড়াও ব্যাক্তিগত একটা কারণে মনটা প্রচণ্ড খারাপ ছিল। ব্যথা উপশমের জন্য মাকে নিয়ে একটি পোষ্টও দিয়েছিলাম। আমার শ্রদ্ধেয় ব্লগার বন্ধুদের অপরিসীম দোয়া ও সান্ত্বনায় অনেকটা ভালো বোধ করেছিলাম। বিশেষ করে আমার স্নেহের ছোট বোন আফরা মণির প্রথম মন্তব্যটা মনে হচ্ছিল উত্তম চিকিৎসা আমার জন্য। মহান রাব্বুল আলামীন সকলের মঙ্গল করুন এই দোয়া করি মিনতি ভরে।
পরিশেষে আমাদের শোক শক্তিতে রুপান্তরিত হয়ে আগামী ঈদ মুসলমানদের জন্য শান্তি ও সুখের বার্তা বয়ে আনুক এই কামনা করছি। সেইসাথে সবাইকে ছালাম জানিয়ে শাওয়াল মাসের ছয়টি রোযার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আজকের মত এখানেই পরিসমাপ্তি টানছি। আল্লাহ্ হাফেজ।
বিষয়: বিবিধ
১৭৬৩ বার পঠিত, ৪৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সময় হাতে থাকলে আমার পোস্ট টি তে একটু ঘুরে আসুন।
গুপ্তকথা।
এই ইনফরমেশনটা কি জানেন যে , গাজার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ইংল্যান্ড দলের খেলোয়াড় মঈন আলী একটা ব্যাজ পড়েছিলেন , যার জন্য আইসিসি তাকে ব্যান করেছে ?
গত ১/২ দিনের ঘটনা এটা । মানে আপনাদের এখানে ঈদের দিনেই হয়ত হবে ।
http://article.wn.com/view/2014/07/29/ICC_lets_off_protesting_Ali_with_a_warning/
আর এই বছর চট্টগ্রামে কেন যেন বেশিরভাগ মাঠেই ।ঈদের জামাত হয়নি।
ঢাকায় ঈদ করলাম, শায়খ ড মনজুর ইলাহির পিছনে ঈদের সালাত ১২ তাকবিরে (সহিহ সুন্নাহ অনুযায়ী) আদায় করেছি আলহামদুলিল্লাহ সাথে বউকেও নিয়েছিলুম।
আলহামদুলিল্লাহ ভালই কেটেছে ঈদ তবে রমযানের জন্য একটু মোন খারাপ ছিল+গাজার জন্য।
আল্লাহ সকল মুসলিমকে হেফাজত করুন কুফারদের বিরুদ্ধে জয়যুক্ত করুন আমিন।
আমরা আশা করি আগামিতে আমাদের দেশে এ ধরনের সমাবেশ ঘটবে।
ঈদকে ঘীরে বাচ্চাদের জন্য প্রতিযোগীতার ব্যবস্থা সত্যি প্রশংসনীয়। আগামিতে কোপেনহেগেনে আমরা চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
জাজাকুম আল্লাহ খাইরান।
আপনার অাহবানে সবাই সাড়া দিয়ে এক বছরের রোজা থাকার সওয়াব হাসিল করুন এই দোয়া করি।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন