রমজান আলোচনাঃ পর্দা
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ০২ জুলাই, ২০১৪, ০৯:০৫:৩৭ সকাল
আ’উযুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বানির রাজীম। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।
আসসালামু আ’লাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতাহু।
মানবজীবনে পর্দা একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ অত্যাবশ্যকীয় বিষয়। বিশ্ব নিখিলের এমন কোন সৃষ্টি নেই যা পর্দার মধ্যে পরিবৃত নয়। তাই সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ হিসাবে মহান রাব্বুল আলামীন পর্দা নারীদের জন্য যেমন অপরিহার্য করেছেন তেমনি করেছেন পুরুষের জন্যেও। অথচ খুবই বেদনাদায়ক যে, পর্দা আজ নারীদের কাছে সবচেয়ে পরিত্যক্ত এবং উপেক্ষিত একটি বিষয়। আবার অনেকের নিকট ঘৃণিত এবং সেকেলেও বটে।
অথচ লক্ষ্য করুণ, আল্লাহ্ সুবহানুতা’য়ালা স্বয়ং পবিত্র কোরআনে আমাদের প্রিয় রাসূলকে উদ্দেশ্য করে কি বলতেছেন এই আয়াতে কারীমায়-
(হে নবী) বিশ্বাসী পুরুষগণকে বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানসমূহকে রক্ষা করে চলে। এটিই তাদের জন্য উত্তম পন্থা। নিশ্চয়ই তারা যা করে আল্লাহ্ সে সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গভাবে পরিজ্ঞাত।
(একইভাবে হে নবী) বিশ্বাসী নারীগণকে বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে ও তাদের লজ্জাস্থানসমূহের হেফাজত করে; তারা যা সাধারণতঃ প্রকাশ করে থাকে তা ব্যতীত তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে। তারা যেন তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে রাখে। তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, সৎ পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগিনী পুত্র, সেবিকা যারা তাদের অধিকারভূক্ত অনুগত, যৌনবাসনা রহিত পুরুষ এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ব্যতীত কারও নিকট তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। (উপরন্তু) তারা যেন সজোরে যমীনের উপর এমনভাবে পদক্ষেপ না করে যাতে তাদের অপ্রকাশিত সাজ-সজ্জা ও আভরণ প্রকাশিত হয়ে পড়ে। (সূরা আন-নূরঃ ৩০-৩১)
আসুন, উপরের আয়াতটি থেকে মূলতঃ আমরা নিম্নোক্ত অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোর দিকে কোরআন এবং সহি হাদিসের আলোকে বিশ্লেষণপূর্বক সংক্ষিপ্ত আলোচনা করিঃ
১। নারীকে তার সৌন্দর্য স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, সৎ পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগিনী পুত্রের সম্মুখে প্রদর্শনের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে।
২। আপন গোলামের সম্মুখে সৌন্দর্য প্রকাশের অনুমতি রয়েছে।
৩। অধিনস্থ বা অনুগত লোক যাদের নারীদের প্রতি কোন আগ্রহ নাই এমন মানুষের সম্মুখে সৌন্দর্য প্রদর্শনের অনুমতি আছে।
৩নং নির্দেশের ব্যাখায় বিজ্ঞ হাফেয ইবনে কাসীর তাঁর তফসীরে বলেনঃ
এমন সব অনুগত লোক, ভৃত্য বা মজুর যারা অত্যন্ত সরলমনা, চালাকচতুর নয় এবং যাদের নারীদের প্রতি কোন যৌনকামনা নাই তাদেরকে বুঝানো হয়েছে। এক্ষেত্রে দু’টি অবস্থার কথা বলা হয়েছে, প্রথমতঃ তারা বৃদ্ধ, অবোধ কিংবা জন্মগত নপুংসক। দ্বিতীয়তঃ কোন ব্যক্তি বাড়ীর অনুগত ভৃত্য বা ভিখারী হওয়ায় পুরুষোচিত শক্তি সামর্থ্য থাকলেও সে কোন যৌনবাসনা পোষণ বা চিন্তাও করতে পারে না এবং যাদের দ্বারা কোন অনাচার-অমঙ্গলের আশংকা নাই। আর যদি কোন সন্দেহের উদ্রেক হয় তাহলে সেই ভৃত্যকে গৃহের ভিতরে প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।
৪। এমন নাবালক ছেলের সম্মুখে সৌন্দর্য শোভা প্রকাশের অনুমতি আছে যার মধ্যে এখনও যৌন অনুভূতির সঞ্চার হয় নাই, যারা যৌন বাসনাহীন বা নারীদের গোপন কথা সম্বন্ধে অপরিজ্ঞাত।
৫। আপন মহিলা আত্মীয়-স্বজন বা সবসময় মেলামেশা করে এমন মেয়েদের সম্মুখে সৌন্দর্য-শোভা প্রকাশ করা জায়েয হলেও সন্দেহযুক্ত আচরণ প্রদর্শনকারী, দুশ্চরিত্রা বা অজ্ঞ মূর্খ নারীর সামনে আলোচ্য মুমিন নারীর সৌন্দর্য প্রকাশের অনুমতি নাই।
উপরোল্লিখিত গণ্ডির বাহিরে অন্য কোন পর পুরুষের সামনে সৌন্দর্য বা শোভা প্রকাশ নিষিদ্ধ এবং গর্হিত যা পাপাচার হিসাবে গণ্য। “পর পুরুষের সম্মুখে সাজ-সজ্জা সহকারে বিচরণকারী নারী আলোকময় কিয়ামতের অন্ধকারের ন্যায়”। (তিরমিযী)
সুতরাং নারীদের সৌন্দর্য প্রদর্শনের শর্তারোপ বা গণ্ডির সীমাবদ্ধতা রাখার উদ্দেশ্য হল যাতে তাদের সৌন্দর্য, সুন্দর সজ্জিত বেশভূষা, অলংকারাদি বা সুগন্ধি দ্বারা কোন প্রকার অবৈধ উত্তেজনা সৃষ্টি এবং যৌন উচ্ছৃঙ্খলতার পরিবেশ সৃষ্টি না হয়। তাদের নিয়্যত যেন সৌন্দর্য ও বেশভূষা প্রকাশের নিমিত্তে না হয় এজন্য সাধ্যানুযায়ী তাদেরকে চেষ্টা করতে হবে। অন্যথায় ইচ্ছাকৃতভাবে সৌন্দর্য প্রকাশের উদ্দেশ্যে কোন আংশিক অঙ্গ অনাবৃত রাখলে সেজন্য পাপ বহন করতে হবে। কিন্তু পর্দা করার পর যেমন দেহের গঠন, শারীরিক সৌষ্ঠব, আকার-আকৃতি, উচ্চতা প্রকাশে কোন দোষ নাই। কেননা অনিচ্ছা সত্ত্বেও এসব প্রকাশ হতে বাধ্য। এতোদব্যতীত নারীদেরকে অবশ্যই সৌন্দর্য ও শোভা গোপন রাখা উচিৎ। উপরন্তু নারীগণকে এমনভাবে পদক্ষেপ করতে নিষেধ করা হয়েছে যাতে সৌন্দর্য ও আকর্ষণীয় বেশভূষা পদধ্বনির দ্বারা প্রকাশিত হয়ে পড়ে। ফলে পর পুরুষের দৃষ্টি নারীর দিকে নিবন্ধিত হয়।
কোরআন মজীদে আল্লাহ্ তা’য়ালা আরও বলেনঃ
হে নবী, আপন বিবিগণকে, কন্যাগণকে ও মুমিন রমণীগণকে বলে দিন, তারা যেন তাদের দেহ চাদর দিয়ে আবৃত করে রাখে এবং তার কিয়দংশ নিজেদের মুখমণ্ডলের উপর টেনে দেয়। (সূরা আহ্বজ্বাবঃ ৫৯)
হযরত ইবনে আব্বাস (রা) এই আয়াতের তফসীরে বলেনঃ
মহান রাব্বুল আলামীন মুমিন নারীগণকে আদেশ দিয়েছেন, তারা যখন কোন প্রয়োজনে গৃহের বাহিরে যাবে, তখন যেন তারা মাথার উপর হতে চাদরের কিছু অংশ দিয়ে মুখমণ্ডল আবৃত করে। (তাফসীরে ইবনে জারীর)
নারীরের মূল আকর্ষণ ও সৌন্দর্য যেহেতু মুখমণ্ডলে তাই বাহিরে যাওয়ার সময় অবশ্যই পর্দা ও সম্ভ্রমশীলতা বজায় রাখা তাদের জন্য অপরিহার্য। যাতে লোকে মনে করে তারা শালীন, সম্ভ্রান্ত মহিলা- নির্লজ্জ ও শ্লীলতাবর্জিতা নহে এবং সেইসাথে দুরাচার অসৎ অভিপ্রায় পোষণকারী যেন প্রলুব্ধ হওয়ার কোন সুযোগ না পায়। যৌন উচ্ছৃঙ্খলতা রোধে ইহা একটি কার্যকর ব্যবস্থাও বটে।
তবে পর্দার সীমারেখা ও কড়াকড়ি সত্ত্বেও আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে বা সর্বসাধারণের বিপদ সংকুল পরিস্থিতিতে ইসলাম নারীকে সার্বজনীন ভূমিকা পালনে সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালনের অনুমতি প্রদান করে। যেমন নিজেদের জীবন, মান-সম্ভ্রম ও সতীত্ব রক্ষার্থে নারীদের অস্ত্রধারণ জায়েয করা হয়। তাছাড়া পর্দা ও শালীনতা বজায় রেখে যুদ্ধক্ষেত্রে আহত সৈনিকদের ব্যান্ডেজ করা, তাদের পশ্চাতে ক্যাম্পের তদারকি করা, রান্না করা এবং তৃষ্ণার্তদের পানি পান করানো ইসলাম অনুমতি দেয়। তবে সর্বাবস্থায় অন্তঃকরণে আল্লাহ্র ভীতি থাকা বাঞ্ছনীয়।
নারী-পুরুষ উভয়ের পর্দা ব্যতিরেকে অন্তঃকরণ এবং দৃষ্টির পরিশুদ্ধি সম্ভব নয়। সার্বিক পরিস্থিতির পবিত্রতা, উদ্দেশ্যের নির্মলতা ও নর-নারীর ভাবাবেগের কথা বিবেচনায় রেখে ইসলামের আদর্শিক উদ্দেশ্য সাধনে সামাজিক শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা আনায়নে বহির্মুখী কাজে নারী-পুরুষের সম্মিলিত অংশগ্রহণ অধিকতর সতর্কতামূলক হওয়া বাঞ্ছনীয় এবং শ্রেয়।
এটাই সৃষ্টিকর্তার আদেশ। যিনি আকাশ ও যমীনের একমাত্র নিয়ন্ত্রক। যিনি তাঁর সৃষ্টির মঙ্গল, কল্যাণ ও সংশোধন সম্পর্কে সবিশেষ অবহিত।
“আকাশ ও যমীনে যা কিছু আছে সবই আল্লাহ্র”। (সূরা বাকারাঃ ২৮৪)
তিনিই একমাত্র পরাক্রমশালী সত্ত্বা যিনি ঘোষণা করেছেনঃ “সেইদিন দয়াময়ের কাছে পরহেজগার তথা মুত্তাকীদের অতিথিরূপে সমবেত করবো। আর অপরাধীদের তৃষ্ণার্ত অবস্থায় জাহান্নামের দিকে হাকিয়ে নিয়ে যাব”। (সূরা মারিয়ামঃ আয়াত ৮৫-৮৬)
তিনি হলেন সেই ভয়াবহ পরিণাম দিবসের একমাত্র অধিকর্তা।
“সেদিন তোমরা দেখতে পাবে যে, প্রত্যেক স্তন্যধাত্রী (দুধ দানকারীনি) নিজের দুগ্ধপোষ্য নিজ সন্তানকে ভুলে যাবে এবং প্রত্যেক গর্ভবতী নারীর গর্ভ খসে পড়বে আর লোকদের দেখতে পাবে নেশাবিহীন অবস্থায়ই মাতাল সদৃশ উদ্ভ্রান্ত। (এটাই হল কিয়ামতের সংক্ষিপ্ত চিত্র)
তবে জেনে রাখ, বস্তুত আল্লাহ্র শাস্তি খুবই কঠিন। (সূরা হাজ্জঃ ২)
তাই অন্তঃকরণকে আমাদের অবস্থান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে হবে। সৃষ্টির পবিত্রকরণের পন্থা স্রষ্টা ব্যতিরেকে কে আর অধিক অবহিত হতে পারে?
আল্লামা আব্দুর রহমান আল-কাশগরী (রাঃ) বলেছেনঃ সন্তানের চরিত্রের ভাল-মন্দ যাচাই হয় তাঁর জন্ম দানকারিণী মাতার চরিত্রের ভিত্তিতে।
যে উত্তম মায়ের অবদানে সারা বিশ্ব জাহানে গড়ে উঠতে পারে ইসলাম ও মুসলিম জাতির সুখ, শান্তি, পারস্পারিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার এক জান্নাতী আবাস। আর এভাবেই আমরা পেতে পারি অনিন্দ্য আনন্দ, ভালোবাসা আর সম্প্রীতিতে ভরা বেহেস্ত সাদৃশ্য মনোরম হৃদয় জুড়ানো ধরিত্রী।
তাইতো কবি বলেছেনঃ
“প্রীতি ও প্রেমের পুণ্য বাঁধনে সবে মিলি পরস্পরে,
স্বর্গ এসে দাঁড়ায় তখন আমাদেরই কুড়ে ঘরে”।
অমুসলিম বহু গবেষক, চিন্তাবিদ তাই ইসলামকে চিরতরে নির্মূল করার জন্য এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, নারীদের চরিত্র ধ্বংসের মাধ্যমেই গোটা সমাজকে ধ্বংস করা যায়।
ইসলাম ও বিশ্ব মানবতার শত্রু ইহুদীদের অন্যতম এক রাব্বী বলেছেন, “এমন যন্ত্র আছে, যা উম্মতে মুহাম্মাদীকে ধ্বংসের ব্যাপারে এক হাজার কর্মীর চেয়েও অধিক কার্যকর তা হল চরিত্রহীন মহিলা। সুতরাং এদের ধংস করতে হলে প্রবৃত্তির অনুসরণের দিকে ঠেলে দাও।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের উচিৎ আধুনিকতার নামে মেয়েদের নগ্নতা, বেহায়াপনা ও চরিত্রহীনতার দিকে ঠেলে দেয়া। কেননা যেদিন আমরা এদের উলঙ্গ করে চরিত্রহীন অবস্থায় ছেড়ে দিতে পারব, তখন তারাই হবে এমন এক দুঃসাহসী বিজয়িনী সৈনিক, যারা উম্মতে মুহাম্মাদীকে ধ্বংস করে সার্থক বিজয় নিয়ে আমাদের কাছে ফিরে আসবে”।
আর যে মা বোনেরা আল্লাহ্র কিতাব ও রাসূলের (সাঃ) এর সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরে শত্রুদের নিরবচ্ছিন্ন কৌশলের কাছেও নিজের ইজ্জত, সতীত্ব, সম্ভ্রম অক্ষত রেখেছে তারাই হবে বিশ্ব সভায় শ্রেষ্ঠত্বের আসনে সমাসীন, আর এদের জন্যই রয়েছে দুনো জাহানের সুসংবাদ।
সম্রাট নেপোলিয়ন বলেছেন, Give me a good mother, I shall give you a good nation. “আমাকে একটি ভাল মা দাও, আমি তোমাকে একটি ভাল জাতি উপহার দেব”।
মা হলেন সকল শিক্ষকের প্রধান শিক্ষক। তিনি হলেন জীবনের প্রথম এবং গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা নিকেতন। এই প্রতিষ্ঠান থেকেই প্রকৃত শিক্ষা, লাজ-লজ্জা, শালীনতার শিক্ষা শুরু হয়।
মহান রাব্বুল আলামীন সর্বাবস্থায় পর্দার অন্তর্নিহিত গুরুত্ব হৃদয়ঙ্গম করার মাধ্যমে তাঁর দেয়া আদেশ ও নিষেধাবলীকে সঠিক ও যথাযথভাবে পালনের মাধ্যমে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনকে নিষ্কলুষ, শান্তিপূর্ণ ও শৃঙ্খলাবদ্ধ রাখার উদ্দেশ্যকে সফলকাম করুন এবং সেইসাথে আমাদের সকলকেই পর্দার সাথে জীবন জিন্দেগী পরিচালনা করার তৌফিক দান করুণ।
পবিত্র রমযান হল নেক আমলের ও নেকী অর্জনের সর্বোত্তম মৌসুম। তাই কোরআন ও হাদীসের আলোকে আজকের এই “রমযান আলোচনা” কে আল্লাহ্তা’য়ালা সকলের জন্য নাজাতের অসিলা বানিয়ে দিন। বিশ্ব জাহানের সকল নারী এবং পুরুষের বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীন দৃষ্টিকে পরিশুদ্ধ করে দু’নো জগতের কামিয়াবী অর্জনে কবুল ও পুরুস্কৃত করুণ। আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১৭২০ বার পঠিত, ৪৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার ব্যাখ্যামূলক সুন্দর পোস্টটি ভালো লাগলো
আল্লাহ আপনার লেখার হতকে আরো শানিত করুন আমীন।
দোয়ায় আমীন!!
অনেক সুন্দর লিখেছেন! খুব ভালো লাগলো!
আপু চালিয়ে যান সাথে আছি ,,আপনার বাচ্চার জন্য একটি সুন্দর সমাজ চাইলে অবস্যই লিখতে হবে পাশাপাশি কাজ করতে হবে।
সুন্দর তথ্যসমৃদ্ধ পোস্টের জন্য শুকরিয়া!
হিজাব আমাদের অলংকার! পরিপূর্ন হিজাবের মাধ্যমে আমরা সবাই আদর্শ মুসলিম হিসেবে যেন থাকতে পারি সেই দোআ করি! আমীন!
মহান আল্লাহ আপনাকে উত্তম জাযা দান করুন। আমীন।
ইদানিং আবার বেশ কিছু মহিলাকে পর্দা করতে দেখে বেশ ভালোই লাগে। তাঁদের সম্পর্কে ধারণা উন্নত হয় কিন্তু পরক্ষণেই আবার যখন দেখি তিনি বোরকা বা হিজাব পড়ে যথাযথ পর্দা করেছেন কিন্তু সঙ্গে তাঁর তরুণী যে মেয়েটি আছে সে পর্দা ছাড়াই শুধু নয় বরং অনেকটা খোলামেলা পোশাকে বের হয়েছে তখন মনে কষ্ট পাই।
আমি খোঁজ করে এর পেছনে ২ রকমের কারণ পেয়েছি। (১) এক শ্রেণী আছেন যাঁরা মনে করেন, পর্দা শুধু বড়দের জন্য। তাঁর মেয়ে যেহেতু এখনও ছোট কিংবা বিয়ে হয়নি কাজেই পর্দা তার জন্য নয়। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। আমার ঐ বোনটি কখনো চিন্তাও করে দেখেননি যে তাঁরা মা-মেয়ে উভয়ই যদি পর্দা ছাড়া রাস্তায় বের হন তাহলে দুষ্টু পুরুষরা তাঁর দিকে নয় বরং তাঁর মেয়ের দিকেই তাকাবে লোলুপ দৃষ্টিতে। কাজেই পর্দা করে ফিৎনার হাত থেকে বাঁচতে হবে সকলকে।
(২) কোনো কোনো বোন তরুণী বয়সে কিংবা বিয়ের আগে পর্দা করেননি। এটা না জেনেও হতে পারে আবার পরিবেশের কারণেও হতে পারে। পরবর্তীতে যখন তিনি বই পড়ে, শুনে, বুঝে কিংবা স্বামীর চাপে অথবা অনুরোধে পর্দা করতে শুরু করেছেন তখন হয়ত তাঁর ঐ মেয়েটি তরুণী বয়সে উপনীত হতে চলেছে। এখন তিনি মেয়েকে পরামর্শ দেন, পর্দা করতে বলেন কিন্তু মেয়ে তো আর শোনে না। ঘরে যেহেতু সারাক্ষণ ভারতীয় সিরিয়াল চলে কাজেই মেয়ের চিন্তা-ভাবনা বেশ আধুনিক। তিনি যতই উপদেশ দেন না কেন মেয়ে উল্টা তার যুক্তি দিয়ে বসে। হয়ত পাল্টা বলেই ফেলে, তুমি তো আমার মতো বয়সে পর্দা করনি। তাহলে আমাকে এত পরামর্শ দিচ্ছ কেন?
অসহায় মা'য়ের তখন কান্না আর চুল ছেঁড়া ছাড়া অ্ন্য কোনো উপায় থাকে না। ঐ মা'য়ের মনের কষ্ট তখন কেউ বুঝতে চায় না।
চলুন, আমরা সকলে ঐ সকল মায়েদের জন্যও দোয়া করি এবং ঐ সমস্ত সকল তরুণীর হেদায়েতের জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করি। তিনি যেন পর্দা করলে নারী-পুরুষ উভয়ের নগদ কী লাভ তা সঠিকভাবে বুঝার তাওফিক দান করেন। আমীন।।
(প্রসঙ্গক্রমে কমেন্ট লেখাটা পোষ্ট এর মতো বড় হয়ে গেল। কষ্ট করে পড়ার জন্য সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ।)
241823 ০৫ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৭:৫৫
সন্ধাতারা লিখেছেন : Many many thanks for giving nice honest comment. You are right that it has been a bit long. I wished to cut it short but due to rush finally I could not manage time. Jajakalla khairan.
তাই হিজাবের এই অপসংস্কৃতি থেকে বাঁচতে হলে আমাদেরকে নিম্নলিখিত কাজগুলি করতে হবে -
১। আল্লাহ ভয় বাড়াতে হবে। এজন্য বাস্তব সম্মত ব্যাখ্যার মাধ্যমে বোঝাতে হবে।
২। যেহেতু আমরা নগদ লাভে বিশ্বাসী তাই পর্দার নগদ উপকারিতা সম্পর্কে ব্যাপক প্রচার চালাতে হবে।
৩। যেহেতু এ ধরণের কাজ রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে হলেই ভালো হয় কিন্তু আমাদের দেশে সে সুযোগ নেই তাই আমাদেরকে ব্যক্তিগত পর্যায় থেকেই শুরু করতে হবে।
এ সংক্রান্ত আমার পরবর্তী লেখা লক্ষ্য করুন।
242213 ০৬ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৮:৫০
সন্ধাতারা লিখেছেন : Alhamdulillah. Thanks for your nice comment. Ramjanul Mubarak bhaiya.
মন্তব্য করতে লগইন করুন