মহীয়সী নারীর অজানা কথা
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ৩০ মে, ২০১৪, ১০:৩০:০১ রাত
উম্মুল মু’মেনীন হযরত যয়নব বিনতে জাহাশ (রাঃ) ছিলেন আসাদিয়া গোত্রের। তিনি ছিলেন নবীজির আপন ফুফাতো বোন। তাঁর মাতা উমাইয়্যা হলেন মহানবী (সাঃ) এর দাদা আব্দুল মুত্তালেবের কন্যা এবং হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মুত্তালেবের সৎ বোন। হযরত যয়নব বিনতে জাহাশ (রাঃ) রাসূলের স্ত্রী হওয়ার পরম মর্যাদা ও বিশেষ গৌরব লাভ করেছেন। যাকে নবীজির স্ত্রীর হওয়ার যোগ্য হিসাবে মনোনীত করে বিয়ের সিদ্ধান্ত স্বয়ং আল্লাহ্ তা’য়ালা আসমান থেকে প্রেরণ করেন। এ অলীমার অনন্য বৈশিষ্ট্য হল যয়নব (রাঃ) এর অলীমা সবচেয়ে শান-শওকতের সাথে সম্পাদন করা হয় যা নবীজির অন্য কোন বিয়েতে আর এমনটি হয়নি। এতে বকরীর গোশত আর রুটি দিয়ে মেহমানদারী করা হয়।
বিয়ের এই অনুপম বৈশিষ্টের কারণে হযরত আয়েশা (রাঃ) হযরত যয়নব (রাঃ) সম্পর্কে বলেন, নবীজীর স্ত্রীদের মধ্যে তিনিই একমাত্র ব্যতিক্রম যার সাথে আমার সমকক্ষতার তুলনা চলে। তিনি আরও বলেন, স্ত্রীদের মধ্যে আত্মিক অসাধারণ গুণাবলী ও অভূতপূর্ব সৌন্দর্যের মর্যাদায় হযরত যয়নব বিনতে জাহাশ ছাড়া কেহ আমার প্রতিপক্ষ ছিল না। হযরত আয়েশা (রাঃ) হযরত যয়নব (রাঃ) এর প্রশংসা করে বলেন, তিনি ছিলেন বিজ্ঞ-প্রাজ্ঞ এবং মহান মর্যাদার অধিকারিণী। তাঁর দ্বীনদারী, আল্লাহ্ ভীতি, সত্যবাদীতা, আত্মীয় স্বজনদের প্রতি সহানুভূতি, দানশীলতা এবং আত্মত্যাগে তাঁর চেয়ে উত্তম মহিলা আমি আর কখনও দেখিনি।
হযরত উম্মে সালমার মতে, হযরত যয়নব (রাঃ) হলেন অতি নেককার, অতি রোজাদার এবং অতি ইবাদত গুজার স্ত্রী। এক কথায় তিনি ছিলেন অত্যন্ত উদার, বিনয়ী, দানশীলা, আল্লাহ্র উপর নির্ভরশীলা একজন অল্পে তুষ্ট রমণী। এতীম, মিসকিন, অসহায় দ্বীন দুঃখী মানুষের জন্য তিনি ছিলেন একজন মানবদরদী অকৃত্রিম বন্ধু ও একান্ত সহানুভূতি সম্পন্ন নির্ভরশীল অভিভাবক। যিনি স্বহস্তে সুনিপুণভাবে চামড়া শিল্পের কাজ করে তার বিক্রয়লব্ধ সমুদয় অর্থ আল্লাহ্র পথে দান করতেন। তাঁর উদারতা ও দানশীলতা ছিল আকাশ ছোঁয়া, হৃদয়স্পর্শী ও নজীর বিহীন। যার সুশীতল স্নেহের ছায়াতলে মায়া-মমতা বঞ্চিত শিশুরা খুঁজে পেত মাতৃত্বের অমিয় সুধা ও জীবনে বেঁচে থাকার অনিঃশেষ অমূল্য আনন্দ।
ওফাতের পূর্বে নবীজি স্ত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, সেই আমার সাথে সর্বাগ্রে মিলিত হবে যার হাত সবচেয়ে দরায (দানশীল)। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমাদের মধ্যে হযরত যয়নব ছিলেন সবচেয়ে দরায হাত। কারণ তিনি নিজ হাতের উপার্জন থেকে ছদকা করতেন। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তাঁর দানশীলতার এই অভ্যাস বহাল ছিল। তাঁর মৃত্যুতে হযরত আয়েশা (রাঃ) সবচেয়ে বেশী শোকাহত হয়ে বলেন, ভাগ্যবতী অনন্যা মহিলা এ ধরা থেকে বিদায় নিয়েছেন। এতীমরা হয়েছে আশ্রয়হীন, অস্থির ও ব্যাকুল। কারণ তিনি ছিলেন এতীমদের জন্য দরদী ছায়ার মাধুর্যপূর্ণ প্রাণ জুড়ানো আশ্রয়স্থল। পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্ আমাদের সকলকেই এতীমদের সেবক বানিয়ে দিন। আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১৭৫৫ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
খুব ভাল লাগলো ।
কিন্তু মন্তব্য সংখ্যা দেখে খুব বিস্মিত হলাম ।
শুভেচ্ছা নিবেন আপু-
অবশ্যই তা-ই ।মন্তব্য কোন ফ্যাক্টর না ।
মন্তব্য দেখে লেখা বিচার করে তো লাভ নাই ।
লেখা বিচার করতে নিজে পড়ে এবং বুঝে ।
তবে ভাল পোস্টে মন্তব্য না থাকলে একটু কষ্ট লাগে । এই আর কি আপু ?
ভাইটি আমার নিঃসন্দেহে অনেক ভালো। কিন্তু নামটি......। পরিবর্তন করলে ভালো নয় কি?
যাজাকাল্লাহ।
লেখায় আল্লাহ মুখি করে। আমিও অনুপ্রানীত
হই। আগামীতে আপু আরো লিখে যাবে। আল্লাহ যেন তার হাতকে গতিশীল করেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন