আল্লাহ্র নৈকট্য লাভে ‘তাহাজ্জুদ’-এর গুরুত্ব
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ২৪ মে, ২০১৪, ১১:৩১:১১ সকাল
মহান রাব্বুল আলামীনের একান্ত সান্নিধ্য লাভের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পন্থা তাহাজ্জুদ। মহান আল্লাহ্র বাণী- হে নবী (সাঃ) রাতের কিছু অংশে আপনি তাহাজ্জুদ পড়ুন। অতি শীঘ্রই সৃষ্টিকর্তা আপনাকে মাকামে মাহমুদে পৌঁছে দেবেন। (সূরা আল ইসরাঃ৭৯)। যার গুরুত্ব ও সৌন্দর্য স্পষ্টত আশা জাগানিয়া এবং উৎসাহব্যঞ্জক। ব্যক্তি জীবনে তাহাজ্জুদের বিস্ময়কর উপলব্ধি, অপরিসীম মাহাত্ব্য এবং অবিশ্বাস্যকর প্রাপ্তিতে আনন্দে আত্মহারা হয়ে বিশেষ বিশেষ মুহূর্তে কান্নায় লুটিয়ে পড়েছিলাম মাওলার দরবারে। তিনি যে কত বড় দয়াবান, মেহেরবান, মহীয়ান-গরীয়ান এবং সর্ব শক্তিমান তা ব্যক্তি অনুভূতি ছাড়া ক্ষুদ্র জ্ঞানে ভাষায় ব্যক্ত করার ক্ষমতা সত্যিই আমার নেই। তবে রহস্যাবৃত গভীর তত্ত্ব এর গুরুত্ব অনুধাবনে সুনিশ্চিতভাবে এটুকু প্রাণস্পর্শী ছোঁয়া পেয়েছি যে, একমাত্র আল্লাহ্র প্রশংসাতেই লুকিয়ে আছে অনন্তকালের প্রেমময় সুখ, শান্তি, কল্যাণ, সমাধান এবং অসম্ভবকে সম্ভব করার অমূল্য চাবিকাঠি।
ভালো কিংবা মন্দে, সুসময়ে কিংবা সঙ্কটাপূর্ণ বিপদে যে কোন উদ্দেশ্য বা লক্ষ্যেই গুরুত্বপূর্ণ সঠিক প্রাপ্তির ক্ষেত্রে, আল্লাহ্র সীমাহীন করুণা লাভে তাহাজ্জুদের যাদুকরী ফলাফল সুনিশ্চিত, অবিশ্বাস্য এবং কল্পনাতীত। আমাদের মধ্যে বিদ্যমান জড়তা, অস্পষ্টতা, দোদুল্যমানতা, হীনতা, দ্বিধা, সংশয় মুছে ফেলে অটল, অবিচল ও পরিশুদ্ধ চিত্তে অন্তর্যামীকে ডাকলে তিনি তাঁর কুদরতি হস্ত তাঁর বান্দাদের জন্য সুপ্রসারিত করে দেন। এটাই আল্লাহ্ তা’য়ালার অসীম দয়া ও মেহেরবানী, যা দৃঢ় ও ধৈর্যশীল বান্দার হৃদয়ে অবারিত শান্তি ঢেলে দিয়ে কানায় কানায় পরিপূর্ণ করে তোলে।
আল্লাহ্ তা’য়ালা পাক কালামে বলেন, “তারা রাতের বেলায় খুব কম সময় বিছানায় শুয়ে থাকে এবং শেষ রাতে আল্লাহ্র দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করে”। (সূরা আল যারিয়াতঃ ১৭)। তিনি তাঁর প্রিয় বান্দা-বান্দি সম্পর্কে প্রশংসা করে আরও বলেন, “রাতগুলো তারা কাটিয়ে দেয় তার মালিকের উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে এবং সেজদাবনত হয়ে”। (সূরা আল ফরকানঃ ৬৪)
বিলাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সাঃ) বলেছেন “তোমরা রাত্রি জাগরণ করো, এটা তোমাদেরকে প্রতিপালকের একান্ত নৈকট্যে পৌঁছে দেবে। এই ইবাদত গুনাহ মাফের উত্তম উপায়, পাপাচার থেকে দূরে রাখার শক্তি এবং দেহের রোগ নিরাময়কারী মহৌষধ”। তিরমিযী
দেহ ও আত্মার সুস্থতা, শান্তি ও পরিশুদ্ধি লাভে তাহাজ্জুদ অনুপম ও অতুলনীয় ইবাদত। যার হৃদয়স্পর্শী উপলব্ধি ও বুকভরা প্রশান্তি নিয়ে যায় মহাশক্তিধর, মহা ক্ষমতাবান আল্লাহ্র একান্ত সান্নিধ্যে। যার অদৃশ্য প্রাণশক্তির অসাধারণ স্বাদ এসে তৃপ্ততায় ভরে দেয় মনোজগতকে এক অভূতপূর্ব বিশেষ অমরত্নে। এটাই তাহাজ্জুদের মাধুর্যময় কারুকার্য এবং দয়াময়ের নৈকট্য লাভের উত্তম পথ।
বিষয়: বিবিধ
১৩০৪ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
রিপোর্ট করুন
এ ইবাদতটি এক বিষ্ময়! ইমাম গাজ্জালী (র) এর বইতে বিস্তারিত পড়েছিলাম। মায়ের তাহাজুজদের প্রাপ্তি দেখেছিলাম। ধন্যবাদ।
সত্যি চরম সত্য কথা বলেছেন। বেশ কিছুদিন আগে অল্প করে হলেও মাঝে মাঝে পড়তাম। মনে একধরনের প্রশান্তি ও রাতের ঘুমটা সুন্দর হতো। কিন্তু মাঝখানে কিছুটা ভাটা পড়েছে। আল্লাহ তুমি আবার পড়ার তৌফিক দাও। আমিন
মন্তব্য করতে লগইন করুন