অমুসলিম অনুকরণের ভয়াবহতা
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ০৮ মে, ২০১৪, ১১:২৩:০৪ রাত
মুসলমানদের কোন কাজ-কর্ম, পোশাক-পরিচ্ছদ, চিন্তা-ভাবনা, আচার-ব্যবহার, অঙ্গ-ভঙ্গি ও এবাদতের আনুষ্ঠানিকতা যেন অমুসলিমদের অনুকরণে বা তাদের পালনীয় কোন কাজের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ না হয় সেজন্য আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন পাক কালামে বিশেষভাবে তাঁর বান্দাদেরকে সতর্ক করেছেন। কোরআন মজীদের ভাষায়, যারা অতি উঁচু মানের জীবন বিধান ও চিন্তাশক্তিকে পরিহার করে, ইসলামের সর্বোৎকৃষ্ট নীতি আদর্শ ও ধ্যান ধারণাকে উপেক্ষা করে অমুসলিমদের কাজ-সংস্কৃতিকে নিজেদের করণীয় হিসাবে বেঁছে নিয়েছে তারা জীবনের পদে পদে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হবে।
মুসলমান কিংবা অমুসলমান বিষয়টি তাই শুধু মৌখিকভাবে স্বীকৃত বিষয় নহে বরং আত্মিক ও বাহ্যিক আচার আচরণে অবশ্যই পার্থক্য নির্ণয়কারী। কর্ম-চিন্তা ও লক্ষ্য নির্ধারণে বিশেষভাবে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এক অপরিহার্য বিষয় যা কোনভাবেই উপেক্ষিত হতে পারে না। অনেকেই মুসলমান হিসাবে দাবী করলেও নিজেদের ধর্মীয় দায়িত্ব-কর্তব্য ও সংস্কৃতির পরিবর্তে তারা গানের তালে তালে কেক কেটে জন্ম দিনের উৎসব করা, নববর্ষ কিংবা থার্টি ফাস্ট নাইট পালন করা, ভ্যালেন্টাইন ডে উদযাপন কিংবা মাদারস ডে, ফাদারস ডে সহ বহুবিধ ডে পালনে অভ্যস্ত হয়ে বেমালুম ভুলেই গেছে যে এসব ইসলাম বহির্ভূত কাজ।
লক্ষ্য করুণ কোরআন মজীদে আল্লাহ্ পাকের হুশিয়ারিঃ
“হে ঈমাণদারগণ! তোমরা ইহুদী ও খৃষ্টানদেরকে নিজেদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, এরা পরস্পর একে অপরের বন্ধু এবং তোমরা যদি ওদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো তাহলে তোমরাও ওদের দলভুক্ত গণ্য হবে। আর আল্লাহ্ নিশ্চয়ই জালেম সম্প্রদায়কে কখনো সৎপথ দেখান না”। ( সূরা মায়িদাহঃ ৫১)
“মুমিনরা যেন মুমিন ছাড়া অবিশ্বাসী কাফিরদের নিজেদের বন্ধু হিসাবে গ্রহণ না করে। তোমাদের কেউ যদি এরূপ করে তবে আল্লাহ্র সাথে তাদের কোন সম্পর্কই থাকবে না”। (সূরা আল ইমরানঃ ২৮)
“তোমাদের রবের কাছ থেকে তোমাদের জন্য যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তোমরা সেটাই অনুসরণ করো, তাঁকে ব্যতীত অন্য বন্ধুদের অনুসরণ করো না, আর তোমরা খুব অল্প সংখ্যকই উপদেশ মেনে চলো। (সূরা আ’রাফঃ ৩)
“হে ঈমাণদারগণ! তোমাদের পিতা ও ভ্রাতাগণ যদি ঈমান অপেক্ষা কুফরীকেই শ্রেয় জ্ঞান করে তাহলে তাদেরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করো না। তোমাদের মধ্যে যারাই তাদেরকে অভিভাবক হিসাবে গ্রহণ করে তারা (স্পষ্টত) যালেম। (সূরা তওবাহঃ ২৩)
“তাদের মধ্যে তুমি এমন বহু মানুষকে দেখবে আছে যারা (মুমিনদের পরিবর্তে) কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব করতেই বেশী আগ্রহী। তাদের এসব কৃতকর্ম অতি নিকৃষ্ট; যে কারণে আল্লাহ্ পাক তাদের উপর ক্রোধান্বিত হয়েছেন এবং এ মানুষেরা অনন্তকাল যাবত জাহান্নামের শাস্তিভোগে নিপতিত থাকবে। (সূরা মায়িদাহঃ ৮০)
তাই কোন মানুষ যদি নিজেকে মুসলমান হিসাবে দাবী করে তাহলে অন্যের অনুকরণে নয় বরং সর্ব শক্তিমান মহামহিমের আদেশ পালনে সচেষ্ট হতে হবে। তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনে, নবীর উম্মত হিসাবে শাফায়াত পেতে হলে এবং সর্বোপরি কেয়ামতের মাঠে জবাবদিহিতার ভয় অন্তরে পোষণ করলে কোরআন ও হাদীসের আলোকে জীবন পরিচালনা করা চাই। তাই আসুন, মহান সৃষ্টিকর্তাকে ক্রোধান্বিত করে এমন কাজ থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখি এবং আল্লাহ্র শ্রেষ্ঠত্বের গুরুত্ব অনুধাবন করে তাঁর প্রিয় বান্দা-বান্দির উপযোগী করে নিজেকে গড়ে তুলি।
বিষয়: বিবিধ
১২০৭ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
|
মন্তব্য করতে লগইন করুন