কে বলে তুমি নেই??!!!
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ১৮ এপ্রিল, ২০১৪, ০৫:৪৮:৪৩ বিকাল
প্রতিটি নিঃশ্বাসে, হৃদয়ের প্রতিটি স্পন্দনে, ধমনীর প্রতিটি কোষের রক্ত সঞ্চালনে, হাসি-আনন্দ দুঃখ-বিরহ গাঁথা জীবনের প্রতিটি পরতে পরতে, সূর্যাস্তের অপূর্ব নৈসর্গিক প্লাবনমূখর উত্তাল অশান্ত সাগরের বেলাভূমিতে দাঁড়িয়ে, ঝর্ণার অবিশ্বাস্য প্রবল জলের রাশি রাশি অবিরাম স্রোতের মনমোহনী শব্দে, বাহারী রঙে সজ্জিত রক্তিম বর্ণে ঢাকা আকাশের বিশালতার মোহমায়া জালে আবদ্ধ হয়ে, সোনালী ডানা মেলে ঝি ঝি পোকার অপরূপ মিষ্টি মধুর গুঞ্জরনে, গভীর নিদ্রাপ্লুত জগতে স্বর্গীয় স্বপ্নে বিভোর থেকে কিংবা নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় যুদ্ধের ময়দানে হাসি মুখে নিজের প্রাণটুকু উৎসর্গ করার পূর্ব মুহূর্তেও যে প্রিয় মহামানবের আদর্শের স্পন্দন ও মহানুভবতার ছোঁয়া মুমিনগণ হৃদয়ের গভীরে অনুভব করে সে আমার পেয়ারা রসূল হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা সাল্লালাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম।
তাই তো নবীর আদর্শে অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিতদের শক্তি ও ঐক্যের ডাকে ভীত হয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র ও বিষাক্ত খেলা ক্রমান্বয়ে ভয়ংকর হয়ে উঠছে। তারা সবসময়ই ওঁত পেতে বসে আছে বিভিন্ন কৌশলে ইসলাম পন্থী শক্তি গুলোকে টুকরো টুকরো করতে। যদিও সেটা কোন কালেই সম্ভবপর হয়নি আর হবেও না ইনশাল্লাহ।
ঈমানদারগণ কখনই তাদের কু মতলবে বিভ্রান্ত হবে না। আর যারা ঈমানদার হিসাবে নিজেকে দাবী করে আর শরীক হয় অমুসলিম কার্যকলাপে তারা মূলত বিশ্বাসী নয়। তারা মুসলমানদের চিহ্নিত দুশমন। মানুষের মধ্যে এমন কতক লোক আছে, যারা বলে, আমরা আল্লাহ্ ও পরকালে বিশ্বাসী; অথচ তারা বিশ্বাসী নয়। আল্লাহ্ ও মু’মিনগণকে তারা ধোকা দিতে চায় কিন্তু তারা নিজেদেরকে নিজেরাই ধোকা দেয়, অথচ তারা বুঝতে পারে না। তাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে, আল্লাহ্ তাদের ব্যাধি আরো বৃদ্ধি করেছেন, আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি, কারণ তারা মিথ্যাচারী। তাদের যখন বলা হয় পৃথিবীতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না; তখন তারা বলে, আমরাই তো শান্তি স্থাপনকারী। সাবধান! এরাই ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারী কিন্তু তারা বুঝতে পারে না। (সূরা বাক্বারাহঃ ৮-১২)
তাই প্রকৃত বিশ্বাসীগণের উচিৎ নবীজির আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র ছিন্ন করে, তাদের বিষদাঁত সমূলে উৎপাটন করে, নিজেদের মধ্যে বিদ্যমান সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বার্থ পরিহার করে দুঃখী অসহায় মানুষের উদ্ধারে দল মত নির্বিশেষে সকলেই এক কাতারে শামিল হওয়া। সীসা ঢালা প্রাচীরের ন্যায় ঐক্যের দুর্গ গড়ে জুলুম, নিপীড়ন আর অন্যায়ের ভীত ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়া, প্রতিষ্ঠিত করা মানব জাতির বহু প্রতিক্ষিত মুক্তির স্বাধীনতা। তাঁদের নিকট এটাই জাতির আজ একমাত্র প্রত্যাশিত আকাংখা এবং দাবী।
আমার নবী রক্তপাত, হানাহানি, মারামারি, মদ, জুয়া, যেনা, ব্যভিচার, অশ্লীলতা আর নৈরাজ্যেকে খতম করে দিশেহারা মানুষকে দিয়েছে স্বস্তি, শান্তি আর মুক্তির আনন্দ। গোটা মানবজাতি যখন ঘোরতর পাপের অতল সমুদ্রে ডুবে যাচ্ছিল, মহান সৃষ্টিকর্তার পরিবর্তে যখন তারা জীবজন্তু, আগুন, পানি, প্রকৃতি, সূর্যসহ নিজেদের মনগড়া দেব-দেবীর পূজা করতো তখন তুমিই বিশ্ব মানবতার শ্রেষ্ঠতম মহোপকারী বন্ধু হিসাবে সমগ্র মানবজাতির ত্রাণকর্তা হিসাবে উদ্ধার করেছো। ক্ষমতা ও জঘন্য কার্যকলাপের দাপটে ভয়াবহ নেশাগ্রস্থ হায়েনাদের পাশবিকতা ও হিংস্রতার অক্টোপাসে বন্দী হয়ে যারা শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মরতে বসেছিল তুমিই তো তাদেরকে উদ্ধার করেছো। বন্দী খাঁচায় বসবাসরত মানুষগুলোর মধ্যে মুক্তির স্বাদ এনে দিয়েছো এবং তাদের মধ্যে সৃষ্টি করেছো নতুন জীবনের উদ্যম সূচনা ও উদ্দীপনা। কোন ষড়যন্ত্রই তোমার আন্দোলনের গতিপথকে স্তিমিত বা নির্মূল করতে পারেনি আজও পারবে না ইনশাল্লাহ।
চারিদিকে আজ অসহায় এতীম সন্তানদের আকাশ বিদীর্ণ করা ক্রন্দন, বিধবা নারীদের হৃদয় ফাটা যন্ত্রণা, সন্তান হারা পিতামাতার বোবা কান্না, আপনজন হারানোর তীব্র বেদনায় শোকাতুর নিদ্রাহীন স্বজন, অগণিত শহীদ আলেম-ওলামাদের রক্তে ভেজা শাপলা চত্ত্বর সহ সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ তৌহীদি জনতার লাশের স্তূপের সারি সকলেই তোমারই আদর্শে অনুপ্রাণিত, উজ্জীবিত ও উৎসর্গীকৃত। সান্ত্বনার আদর্শিক অফুরাণ বলিষ্ঠ প্রাণসঞ্চারকারী মহাশক্তির ছায়াতলে তারা তোমারই অমূল্য পরশে ধন্য, আনন্দিত এবং গর্বিত। জীবিত থেকে মৃত, এহকাল থেকে পরকাল, কেয়ামত থেকে পুলসেরাত, জাহান্নাম থেকে বেহেশতের সঠিক দিক নির্দেশনায় সর্বত্রই তোমার মহিমাময় ত্যাগ ও নজীর বিহীন অভাবনীয় আদর্শ বিরাজমান। তাই আকাশ-বাতাস, চন্দ্র-সূর্য, সাগর-নদী, বৃক্ষকূল-পক্ষীকূল, মানুষ-পৃথিবী যতদিন থাকবে তুমিও ততদিন আমাদেরই মাঝে বিরাজ করবে, সৃষ্ট জগতের সর্বত্রই মিশে আছো তুমি। কে বলে তুমি নেই?!!!
বিষয়: বিবিধ
১৪৫৮ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভালো লিখেছেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন