সমাজ গঠনে নারীর ভূমিকা

লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ০৭ মার্চ, ২০১৪, ০৩:১১:৫১ দুপুর



বর্তমান বিশ্বের সর্বত্রই আজ চরম হতাশা, নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা, অশান্তি ও অস্থিরতা বিরাজমান। এসব অশান্তি আর অস্থিরতার পেছনে যে কারণগুলি বিদ্যমান তার মধ্যে অন্যতম হল নারীদের পশ্চাৎমুখী ভূমিকা। বিপুল সংখ্যক নারী অনেক ক্ষেত্রে ইসলাম সম্পর্কিত ভ্রান্ত ধারণা, সীমিত জ্ঞান ও যোগ্যতার অভাবে তাদের প্রতি কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে আরোপিত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে অনেকাংশে ব্যর্থ হচ্ছেন এমনকি কোরআন ও হাদীসের বিপরীত আমল করছেন যা কাঙ্ক্ষিত নয় বলে আমার ব্যক্তিগত ধারণা। তারা নিজেদেরকে রেখেছেন ধর্মীয় আদর্শিক চিন্তা-চেতনা থেকে যোজন যোজন দূরে । ফলে এর ভয়াবহ পরিণতি ব্যক্তি ও পরিবার থেকে শুরু করে আর্থ-সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, অশান্ত, অসহিস্নু, কলুষিত ও বিপদগামী করছে। রাষ্ট্র বঞ্চিত হচ্ছে নারীদের গৌরবময় ভূমিকা থেকে। যার দায়ভার ও জবাবদিহিতা থেকে নারীরা কিছুতেই মুক্তি পেতে পারে না। কারণ পুরুষের পাশাপাশি নারীকেও সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে। পর্দা সংক্রান্ত জটিলতায় মুসলিম নারীকে গৃহাভ্যন্তরে আটকিয়ে না রেখে ও ইসলামকে বাড়াবাড়ির পর্যায়ে ঠেলে দিয়ে জীবন জীবিকাকে অভিশপ্ত না করে সকলের অধিকার রক্ষায় এবং চির স্বাশত কল্যাণমুখী কার্যকর ভূমিকায় নারীদেরকেও অংশগ্রহণ করতে হবে। আর এজন্য প্রয়োজন ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা।

কারণ মহান আল্লাহ্‌ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সমস্ত পথহারা কুধারণার বশবর্তী মানবকুলকে সংশোধন করে ইসলামের সঠিক, সত্য ও সুন্দরতম পথে ফিরানোর জন্য কিতাবসহ যুগে যুগে নবী ও রাসূল দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন তন্মধ্যে আমাদের প্রিয় নবী (সঃ) হলেন সর্বশেষ এবং সর্বকালের শ্রেষ্ঠ নবী। তিনি এই ধরাতলে বিশ্বমানবতার রহমত স্বরূপ হিসাবে প্রেরিত হয়েছেন। তাঁর আদর্শের ছায়াতলে আশ্রিত হয়ে গোটা মানবজাতি হয়েছে বিকশিত, গর্বিত এবং পরিপুষ্ট। এর উদ্দেশ্য মানুষের জীবনকে অতি কঠোর, কষ্টদায়ক ও অসহনীয় করার পরিবর্তে সহজ, গতিশীল, মধু্র ও শান্তিময় হিসাবে গড়ে তোলা। আর এই পন্থাই হল ইসলামের অনস্বীকার্য মূল প্রাণসত্তা।

মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র আল কোরআন ও হাদীসের আলোকে নারীদের ভূমিকা, অধিকার, মর্যাদা ও সম্মানের এক গৌরবমণ্ডিত বাস্তব দলিল বিশ্ব জাহানের কাছে পেশ করেছেন। অথচ নারীরা আজ পথভ্রষ্ট ও বিভ্রান্ত হয়ে নারী স্বাধীনতার নামে বেহায়াপনা, নগ্নতা আর স্বেচ্ছাচারিতাকে বেছে নিয়ে পদে পদে হচ্ছে বঞ্চিত, লাঞ্ছিত, এবং নিগৃহীত। আর এই অভিশাপের সুদূরপ্রসারী কালো ছায়া আমাদের ব্যক্তি পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনকে চরম বিভীষিকাময় করে তুলছে। একটি সন্তান জন্ম লাভের পর থেকেই প্রতিনিয়ত বাবা-মায়ের ঝগড়া ঝাটি, মারামারি, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ আর স্বাধীনতার নামে বাড়াবাড়ির বীভৎস চিত্র অবলোকন করছে। তার সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনধারাকে করছে তিক্ত, বিষাক্ত ও বাধাগ্রস্ত। বাবা মায়ের কলহের পরিণতিতে সেও হচ্ছে অবহেলিত ও উপেক্ষিত। আর এভাবেই শিশুটির মন মগজে সমস্ত দৃশ্যপট স্থায়ীরূপে ধারণ ও লালন পালন করতে থাকে যা পরবর্তী জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রতিফলিত হয়। এমতাবস্থায় আল্লাহর পিয়ারে হাবীব মহত্তম মানবদরদী বন্ধু অত্যন্ত দক্ষ সুণিপন কারিগরের ন্যায় ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণে যে অভূতপূর্ব অপরিবর্তনীয় আদর্শ ও শিক্ষা তাঁর উম্মতের জন্য রেখে গেছেন তা যথাযথভাবে পালন করা মেয়েদের জন্য আজ অতীব জরুরী। এক্ষেত্রে মুসলিম মেয়েরা পর্দার বিধান মেনে শরীরের অপরিহার্য অংশ খোলা রেখে কোরআন ও সুন্নাহর কাছে ফিরে আসতে হবে। প্রতিষ্ঠিত করতে হবে আল্লাহ্‌র হুকুমকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিটি প্রান্তে তবেই ব্যক্তি-পরিবার এবং সমাজ হবে অভিশাপমুক্ত, কল্যাণে পরিপূর্ণ এবং ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠনে হবে অনেক বেশী উপকৃত।



বিষয়: বিবিধ

৫৮৮৪ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

188415
০৭ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:১৯
রাইয়ান লিখেছেন : সুন্দর লেখা...অনেক ধন্যবাদ ।
০৭ মার্চ ২০১৪ রাত ১০:১৩
139859
সন্ধাতারা লিখেছেন : মূল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।
188430
০৭ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:১৬
জোস্নালোকিত জ্যাস লিখেছেন : মা..!!!
188584
০৭ মার্চ ২০১৪ রাত ১০:১৪
সন্ধাতারা লিখেছেন : হা............।। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
188793
০৮ মার্চ ২০১৪ সকাল ১১:২৩
সজল আহমেদ লিখেছেন : লেখাটা ভাল লেগেছে।
০৮ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:২২
140116
সন্ধাতারা লিখেছেন : প্রেরনামূলক মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
188804
০৮ মার্চ ২০১৪ সকাল ১১:৩৮
হতভাগা লিখেছেন : নারীর কাজ ঘরেই ।নারীরা ঘরে তাদের কাজ সঠিকভাবে পালন করলেই সমাজ সুন্দর হয়ে উঠবে ।

বাইরে এলেই সমস্যা পাকাবে ।
০৮ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:৫২
140125
সন্ধাতারা লিখেছেন :
আপনার মন্তব্যের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই সঙ্গত কারণে দ্বিমত পোষণ করছি। আমার অভিজ্ঞতায় এমন অনেক পরিবার আছে যারা একমাত্র মেয়ের আয়ের উপর নির্ভরশীল। মেয়ের আয় ব্যতিরেকে তাদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান অনিশ্চিত। এক্ষেত্রে ইসলাম কী বলে? ইসলাম সবক্ষেত্রেই জীবনের সমস্যা ভিত্তিক সমাধান দেয় বলেই চৌদ্দ শত পূর্বের মোমেনা নারীগণ ব্যবসাসহ বিভিন্নমুখী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ছিলেন। যেমন হযরত আসমা (রাঃ) মদিনা থেকে তিন কিলোমিটার দূরে তাঁর স্বামীর খেজুর বাগান থেকে খেজুরের ছড়া বহন করে আনতেন, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) র স্ত্রী নিজ হাতে উপার্জন করতেন এবং তাঁর স্বামী এবং ইয়াতিমদের ভরণপোষণ করতেন। অথচ পরবর্তীকালে ফিতনার আশংকায় নারীদেরকে গৃহ কোণে আবদ্ধ রাখায় তারা নিজেদের ইসলামী জীবন গঠন এবং ইসলামী সমাজে নিজেদের দায়িত্ব পালনে অক্ষম হয়। যা কিনা রসূল (সাঃ) ও সাহাবায়ে কেরামের নীতির পরিপন্থী। আমার জানা মতে এ যুগেও বিশেষ করে তবলীগ জামাতের সাথে সম্পৃক্ত অনেক পরিবার এই নীতির কারণে শিক্ষা বঞ্চিতভাবে নিজের পরিবারে অভিশপ্ত জীবন যাপন করছে যা কারও কাম্য নয়।
০৮ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:০৮
140132
হতভাগা লিখেছেন : ''আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) র স্ত্রী নিজ হাতে উপার্জন করতেন এবং তাঁর স্বামী এবং ইয়াতিমদের ভরণপোষণ করতেন।''

০ আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) কি কাজ করতেন যে উনার ভরন পোষন করতে হত উনার স্ত্রীকে ? ইসলাম তো বলে সামর্থ্য ও যোগ্য হলে বিয়ে করতে , না হলে সংযম পালন করতে । ইসলাম কি নারীর আয় স্বামীর সংসারে ব্যয় করতে বলে ?

সূরা নিসা এর ৩৪ নং আয়াতে স্ত্রীকে স্বামীর সম্পদের হেফাজত করতে বলা আছে স্বামীর অবর্তমানে আল্লাহর হেফাজতের মাধ্যমে । তার মানে চাকরি বা ব্যবসার চেয়ে স্বামীর সংসার আগে একজন স্ত্রীর কাছে ।

কথা হল : স্বামী ও স্ত্রী উভয়েই চাকরি করে । এখন সেই সংসার কার টাকায় চলবে ? স্বামীর? না কি স্ত্রীর ? না কি উভয়ের টাকায় ?
188920
০৮ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:২২
সন্ধাতারা লিখেছেন : সংসারের আয় এবং ব্যয় নির্ভর করে অবশ্যই স্বামীর উপর এখানে স্ত্রীর কোন বাধ্যবাধকতা নেই সত্যিই কিন্তু কোন কারণে একজন বিবাহিত পুরুষ যদি বিকলাঙ্গ হয়ে পড়ে তখন স্ত্রীর করণীয় কী হবে????

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File