“গোটা জাতি মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত”

লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ২৭ নভেম্বর, ২০১৩, ০৯:৩৫:০২ রাত



বাংলাদেশ আজ এক ভয়াবহ আতংকিত মৃতপুরীর নাম। দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে সংঘাত-সহিংসতা। মানুষ প্রতিটি মুহূর্তে অনিশ্চিত এক অজানা আশংকায় আক্রমনের ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে দিনাতিপাত করছে। গ্রামের পর গ্রাম পুরুষশুন্য। মানুষ আজ নির্যাতন, জেল, জুলুম, বিকলাঙ্গ আর লাশ হওয়ার ভয়ে জন্মস্থান, ঘরবাড়ী, আপনজন সবকিছুর মায়ামমতা দূরে ঠেলে জানটা নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। চারিদিকে দাউ দাউ করে আগুনের দাবানল জ্বলছে। সহিংসতা, সংঘাতময় পরিবেশকে উসকিয়ে দিয়ে জনগণকে শায়েস্তা করার জন্য পুলিশ, বিজিবি, র্যা বকে মাঠে নামানো হয়েছে। প্রকাশ্যে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে আওয়ামী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গুণ্ডাদের। এদের গুলিতে নিহত, পিটিয়ে হত্যার পর লাশ গুম কিংবা বিকৃত অবস্থায় লাশ অজ্ঞাত জায়গায় ফেলে রাখা, বাড়িতে বাড়িতে আগুন-ভাংচুর, এযেন রক্ত এবং লাশের সিঁড়ি বেয়ে ক্ষমতার মসনদে যাবার উন্মত্ত চূড়ান্ত পাতানো খেলা।

দেশী-বিদেশী চক্র আর চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের হাতে গোটা দেশের নিরস্ত্র অসহায় মানুষ আজ জিম্মি। খেটে খাওয়া দিনমজুররা সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম আর ঘামে ভেজা শরীর নিয়ে দিনশেষে বুকভরা তৃপ্তি নিয়ে ফিরত আপন কুটীরে প্রিয়জনদের সান্নিধ্যে। সেই নিখাদ ভালবাসা, স্বস্তি কিংবা শান্তির নিঃশ্বাস নেয়ার হারানো দিনগুলি আজ শুধুই যেন স্বপ্নের ইতিহাস। হিংস্র হায়েনারা ব্যাংক লুট, শেয়ার বাজার লুট, ভূমি লুট, মা-বোনদের ইজ্জত লুট করেই ক্ষান্ত হয়নি, তারা গোটা জাতির শান্তি লুট করেছে। এই অসহনীয় পরিস্থিতি কিন্তু একদিনে হঠাৎ করে জাতির উপর আপতিত হয়নি। ক্ষমতালোভী দেশি-বিদেশী দুশমনরা এই মরণবীজ বপন করেছে বহু আগেই। সুনির্দিষ্ট এজেণ্ডা নিয়ে। আর সেই প্রোথিত বিষবীজ তিল তিল করে দেশের ধর্ম, সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি, গণতন্ত্র, বিচারব্যবস্থা, বাকস্বাধীনতা সবকিছু তছনছ করে বিষধর সাপের মূর্তিতে ভয়ংকররূপে প্রতিটি শাখা প্রশাখার রন্ধ্রে রন্ধ্রে আজ জেঁকে বসেছে।

তারই ধারাবাহিকতায় জনগণের চাওয়া-পাওয়া নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষাকে সরকার দম্ভভরে উপেক্ষা করে গণদাবীকে অবজ্ঞা অবহেলায় দু’পায়ে দলে প্রভুদের খুশী করা সিদ্ধান্ত দেশের উপর চাপিয়ে দিয়েছে। আর এই সুবাদে “নির্বাচনী কলা” কে সামনে রেখে দেশী-বিদেশীদের আখেরী স্বার্থ হাসিলের “নগ্ন বাণিজ্য” মহড়া চলছে। এযেন “কারো সর্বনাশ, আর কারো পৌষ মাস”। তারপরও এই নির্বাচনী সাজানো নাটক মঞ্চের সপাপ্তি রেখা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তা দেখার জন্য দেশবাসী জানবাজি রেখে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। বোধকরি আজকের এই অদূরদর্শী লোভী নেতারা অচিরেই তাদের কর্মের পরিণাম হারে হারে টের পাবে। দিদি-দাদা নাটকের পরিসপাপ্তি বা শেষ দৃশ্য দেখার জন্য তাই আমাদেরকে আরও বেশ কিছুটা সময় ধৈর্যের সাথে অপেক্ষা করতে হবে। কারণ আমরা সকলেই জানি, পাপ বাপকেও ছাড়ে না।

মানুষের দেহের কোন সুনির্দিষ্ট অঙ্গে ক্যন্সার সনাক্ত করা হলে অতি দ্রুত সেটা শরীর থেকে অপসরণ করা হয় যাতে গোটা শরীরে ছড়িয়ে না পড়ে কিন্তু যদি দেরীতে রোগনির্ণয় করার ফলে সমস্ত শরীরে ক্যান্সার সংক্রামিত হয় তখন রোগীকে বাঁচানো আর সম্ভবপর হয়ে উঠে না। অবশ্য ব্যতিক্রম কিছু অলৌকিক ঘটনা ছাড়া। আজ দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আমরা যেন সেই অলৌকিক কিছু ঘটনার প্রতীক্ষায় রুদ্ধশ্বাসে প্রহর গুনছি। মহান রাব্বুল আলামীন আমাদের সহায় হউন।



বিষয়: বিবিধ

১৭০৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File