অশুভ শক্তিকে রুধিবে কে??????
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ১২ নভেম্বর, ২০১৩, ১০:৩৯:২২ রাত
স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসের ভয়াবহতম বীভৎস অরাজকতা বাংলাদেশে এখন বিরাজমান। সংঘর্ষ, যুদ্ধ, হত্যা, খুন, গুম আর লুটপাটের যে বিপর্যয়কর ধ্বংসের নগ্ন মহাতাণ্ডব চলছে সেটা থেকে মুক্তি বা পরিত্রাণের একমাত্র স্থায়ী সমাধান হলো মহানবী (সাঃ) এর আদর্শ অনুকরণ, অনুসরণ ও বাস্তবে যথাযথ রুপায়ন। বাংলাদেশকে নিয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গভীর ষড়যন্ত্রের জাল যেভাবে বিস্তৃত এবং এর বীজ যেভাবে গ্রথিত-প্রোথিত সেটা সমূলে উৎপাটন করতে হলে শুধুমাত্র বিরোধীদলই যথেষ্ট নয়, এরজন্য প্রয়োজন মহানবী (সাঃ) এর নীতি, ঈমাণ, আকিদা, বিশ্বাস, মতাদর্শের অনুসারী একটি শক্তিমান কাফেলা। যারা কেবল আমার মহান প্রভুর সত্ত্বার গোলামী করেই নিজেকে এবং নিজের অর্জিত জানমাল সর্বস্বকে অকাতরে বিলিয়ে দিতে পারে। দুষ্কৃতিকারী শক্তির বিরুদ্ধে আজ মানবতার সেবার মানসিকতাসম্মন্ন, নিস্পাপ-নিস্কলুষ মহৎ চরিত্রের অধিকারী এমন নেতার বড় বেশী প্রয়োজন। যাদের নীতি-আদর্শের প্রেরণা শক্তি মানুষের মনের মণিকোঠায় বিশেষ সন্মান ও মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করবে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের প্রগাঢ় আস্থা, গভীর শ্রদ্ধা, ভালবাসা, সুনাম এবং ভক্তি কুড়াবে। আর যারা যোগ্যতা, বুদ্ধিমত্তা, দক্ষতা ও সাধ্য থাকা সত্ত্বেও নিরীহ নির্যাতিত মানুষের বিপদাপদে সাহায্যের হাত প্রসারিত না করে মুসলমান পরিচয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামায, রোযা, হজ্ব যাকাত, পরিবার আর মসজিদের গণ্ডীর মধ্যে নিজেদেরকে সীমাবদ্ধ রেখে নিরাপদ দুরত্বে আশ্রয় গ্রহণ করবে তাদেরকে একদিন আল্লাহ্র দরবারে এজন্য কৈফিয়ত দিতে হবে। ইসলামের নুন্যতম দাবীই হল ব্যক্তি-পরিবার থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পর্যন্ত ন্যায় শাসন প্রতিষ্ঠা করে মানুষের ন্যায্য অধিকার ও হক নিশ্চিত করা। আর তারা যে ধর্ম বা গোত্রেরই হোক না কেন। যে কাজ আমাদের নবী (সাঃ) আজীবন করে গেছেন এবং তাঁর উম্মতগণকেও যথাযথভাবে পালনের তাগিদ দিয়েছেন।
কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আজ নব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে নির্ভীক কলম সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানকে সত্য বলার জন্য জেলের অবর্ণনীয় কষ্ট পোহাতে হচ্ছে! আল্লাহ্ এবং রাসূলের বিদ্রুপকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য শহীদ হতে হচ্ছে! অত্যাচারী শাসক দ্বারা জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে সর্বত্রই আলেম-ওলামাকে ব্যাংক লুট, স্বর্ণের দোকান লুট, কোরআন শরীফ পোড়ানোসহ বহুবিধভাবে তিরস্কৃত ও সন্মানহানি করা হচ্ছে! তাঁদেরকে নিত্য নতুন মামলায় জড়িয়ে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে! হাজার হাজার নিরাপরাধ মানুষকে বিকলাঙ্গ করা হচ্ছে! দেশের দাড়ি টুপি ওয়ালা সন্মানিত নাগরিককে হেনস্থা করে জেলে রাখা হচ্ছে! শত শত ঘরবাড়ি, মন্দির-উপাসনালয় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে! কোমলমতি বোনদের শ্লীলতাহানি করে ছাত্রলীগের নেতারা ঘটা করে উৎসব করছে! দাপুটে মন্ত্রীরা ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারি, শেয়ারবাজার, হলমার্ক পদ্মাসেতু, রানা ভবন ধ্বসে আবোল তাবোল প্রলাপ বকছে! দেশের জনগণের আপত্তি সত্ত্বেও সরকার নিজেদের ইচ্ছামাফিক সংবিধান কাঁটাছেড়া করে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে! বাংলাদেশটাকে নিজেদের বাবার তালুক ভেবে জনমতের তোয়াক্কা না করে ভারতকে দিয়েছে ফ্রি ট্রানজিট, বন্দর, রামপাল টিপাইমুখসহ নানাবিধ সুবিধা!
এতদসত্ত্বেও প্রতিদিন সরকারের পুলিশবাহিনী, র্যা ব, বিজিবি এবং দলীয় ক্যাডারদের লোমহর্ষক নিদারুণ জুলুম নির্যাতনের স্বীকার হয়ে যেভাবে অসহায় মানুষ বিকলাঙ্গ কিংবা পশুপক্ষীর মত মৃত্যুবরণ করছে তা কেবল প্রাগ-সভ্যতার আদিম জাহেলিয়াতের যুগকেই স্মরণ করিয়ে দেয়। অধিকাংশ প্রচার মিডিয়াকে গোলাম বানিয়ে এবং সত্যের পথকে লৌহপ্রাচীরে আটকিয়ে সাধারণ মানুষের জানমাল নিয়ে মিথ্যাচার করে, হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে, রাজনীতির নোংরা ডিগবাজি খেলে, শঠতা আর অভিনয় দিয়ে আর যাই হোক জোর জচ্চুরি করে জনগণের মন জয় করা যায় না। অতি নাটকীয়তার ধারাবাহিকতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বলেছেন, উনি নাকি প্রধানমন্ত্রিত্ব চান না, শান্তি চান!!! যদি সত্যিই এটা আপনার অন্তরের ইচ্ছা হয়ে থাকে তাহলে অনতিবিলম্বে জনগণের দাবী মেনে নিয়ে সসন্মানে পদত্যাগ করুন। আপনার কাছে এই ছোট্ট চাওয়া আর শান্তির প্রতীক্ষায়ই তো পুরো দেশবাসী প্রহর গুনছে।
কিন্তু বাস্তবতা হোল রাজনৈতিক নেতাদের হিংস্রতা আর বর্বরতার দুর্দমনীয় মানসিকতায় দলন-পীড়নের দাবানল পুরো জাতিকে গ্রাস করে এক অগ্নিগর্ভে ঠেলে দিয়েছে। আমাদের প্রিয় মহানবী (সাঃ) একদা শত্রুদের নিষ্পেষণে অতিষ্ঠ জর্জরিত হয়ে সাহায্য প্রার্থনায় রাহমানুর রাহীম মহান আল্লাহ্র দরবারে মোনাজাতে শরীক হলে, করুণাময়ের কাছ থেকে বলা হয়, আল্লাহ্র সাহায্য তোমার অতি সন্নিকটেই। অশুভ শক্তির দাপটে বর্তমানে বিরাজিত সংঘাত সঙ্কটাপন্ন নৈরাজ্যকর পরিবেশ পরিস্থিতিতে, জাতীয় জীবনের সর্বনাশা ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক অভিশাপ থেকে বাঁচতে একমাত্র ভরসাকারী আশ্রয়স্থল হিসাবে আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ আল্লাহ্র সর্বশ্রেষ্ঠ আশরাফুল মাখলুকাত হিসাবে তাই মহান রবের সাহায্য প্রার্থনা করি।
বিদেশী প্রভূদের মনোবাঞ্ছা ও স্বপ্নপূরণের শিখণ্ডী হিসাবে বর্তমান সরকার ক্ষমতার জোরে, গাঁয়ের জোরে, মুখের জোরে, বুলেটের জোরে যেভাবে স্বদেশী-স্বজাতিকে দলিত মথিত করছে, ঘাসপাতার মত দুমড়ে মুচড়ে পথেঘাটে ফেলে রাখছে, বাংলার জনগণের কাছে অবশ্যই এজন্য একদিন না একদিন জবাবদিহি করতেই হবে। বিধ্বস্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা, সমাজব্যবস্থা, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দুরাবস্থার এই মহাসংকটে সমগ্র মানবজাতির আলোর দিশারী, মানবতার মহোপকারী বন্ধু, গোটা মানবজাতির মুক্তিদূত মুহাম্মদ (সাঃ) যেমন দুশমনদের শোষণ থেকে বাঁচার জন্য মানবীয় কর্মসূচীর সঠিক ও সুনির্দিষ্ট আন্দোলন সংগ্রামের জেহাদে শরীক হয়ে তাঁর সমগ্র জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন, ঠিক তেমনিভাবে আন্দোলনের চূড়ান্ত সফল সমাপ্তির জন্য ইসলামের দুশমনদের বিরুদ্ধে আমাদেরকেও বীরের মানসে রুখে দাঁড়াতে হবে। ঈমানী চেতনা ও ইসলামের প্রাণশক্তিতে উদ্দীপ্ত উজ্জীবিত হয়ে একমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য মানবকল্যাণ ও মানবমুক্তির জেহাদে শরীক হলে তবেই কেবল দুনো জাহানের পূর্ণতা প্রাপ্তির বিজয় অবধারিত।
বিষয়: বিবিধ
১০৯৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন