ইসলামের অমিয় শান্তির সুবাসিত ধারা সবার জীবনে মঙ্গল আনুক

লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ১০ জুন, ২০১৩, ০১:৫৬:৫৮ রাত



জীবনের শ্রেষ্ঠতম দশ রাত

দ্বিতীয়

ছোট ছোট সোনামণিরা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী ব্যক্তিদের জন্য মাসব্যাপী কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন সকলকেই ব্যতিব্যস্ত ও প্রানবন্ত করে রেখেছিল। ইসলামের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর খোঁজা এবং সঠিক উত্তর সরবরাহকৃত বাক্সে ফেলতে বেশ প্রতিযোগিতা চলছিল। কারণ প্রতিদিনই সঠিক উত্তর দাতার নাম মাইকে ঘোষণা এবং মাস শেষে ঈদের দিন পুরুস্কার বিতরনেরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল। শিশুরা ইফতারি শেষে হাদিসের বই নিয়ে ছুটাছুটি করত, কেউবা মোবাইলে ইন্টারনেট ঘাটত সঠিক উত্তর পাবার আশায় আবার কেউবা বাবা মাকে ঘিরে ধরে জিজ্ঞাসা করত, সঠিক উত্তর কোনটি? সত্যিই বলতে কি এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শুধু শিশুরাই শিখেনি, বড়রাও লাভবান হয়েছে।

অপরিচিত একে অপরের পরিচিতি জেনে নেয়া, কুশল বিনিময়, সৌহার্দমূলক কথাবার্তা, অকৃত্রিম দরদ, হৃদয় উজাড় করা আত্মত্যাগ যার স্পর্শ বা সান্নিধ্যে মুহূর্তেই প্রাণটা জুড়িয়ে যেত। এভাবেই ইসলাম ধর্মের যে স্বাদ, পবিত্রতম ভালোলাগা ও ভ্রাতৃত্ববোধের নির্যাস তা বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একেবারে মিলেমিশে একাকার হয়ে একশত ভাগ পূর্ণ হত। ইফতারির পর পর মাগরিবের নামায আদায় করে মহিলারা কেউ কেউ কোরআন তেলোওয়াত করতেন, কেউবা জিকির আজগর আবার কেউবা গ্রুপে বসে হাদীস নিয়ে আলোচনায় রত থাকতেন। এরপর তারাবীর নামায শেষে অনেকেই চলে যেতেন আবার কেউ কেউ একেবারে ফজরের নামায আদায় করে তবেই বাসায় ফিরতেন। এভাবে ক্রমেই সকলের মধ্যে প্রগাঢ় এক আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে উঠে। একদিন কোন সাথী কোন কারণে অনুপস্থিত থাকলে অন্য সাথীরা তার ব্যাপারে জানার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠত।

তারাবী শেষে মসজিদের ঈমাম সাহেব যে বয়ান করতেন তার প্রতি আমার শুধু নয় মসজিদে আগত সকলেরই এক বিশেষ আকর্ষণ ছিল। সেদিন বয়ান শেষে ঈমাম সাহেব মাইকে ঘোষণা দিলেন যদি কোন মা-বোন ইতেকাফ করতে চান তাঁদের উদ্দেশ্যে বিনয়ের সাথে বলতে চাই এ ব্যাপারে আমাদের কোন আপত্তি নেই তবে মসজিদে মহিলাদের থাকার সেরকম কোন সুবন্দোবস্ত নেই। হঠাৎ এ ঘোষণা শুনে কিছুটা বিষণ্ণ হলাম এবং পরিবারের সদস্যরাও বলল মনে হয় বাসাতেই ইতেকাফ করা ভাল হবে। আমি তাদেরকে আমার নিয়তের বিষয়টি জানালে সাথে সাথে তারা মসজিদে ইতেকাফ করতে আর কোন দ্বিমত পোষণ করেনি। আমি দশ রাত মসজিদে থাকার জন্য যাওয়ার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছাতে থাকি।

হঠাৎ করেই বুকের মধ্যে কেমন যেন শীতল একেবারে অন্যরকম অনুভূতি অনুভব করলাম আর সাথে সাথেই দু’চোখ বেয়ে অঝোর ধারায় বর্ষণ শুরু হল। যাওয়ার পূর্বে ওজু শেষ করে দু’রাকায়াত নফল নামায আদায় করে দেশে মায়ের সাথে টেলিফোনে কথা বললাম। মাকে ইতেকাফের বিষয়টি জানালাম এবং এই দশ রাত কোন কথা হবে না তাও জানিয়ে দিলাম। মায়ের কাছে দোয়া চেয়ে বললাম আল্লাহ্‌ চাহে তো ইতেকাফ শেষে কথা হবে। আমার স্নেহময়ী জননী এ সংবাদে আনন্দে আত্মহারা হয়ে আমার জন্য পরম করুণাময়ের দরবারে বুকভরে দোয়া করলেন। চলবে

বিষয়: বিবিধ

১৫৮৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File