ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য সুখবর

লিখেছেন লিখেছেন সিরাজুস সালেকিন ৩১ মে, ২০১৩, ০৭:২৭:৫৮ সন্ধ্যা

দেশব্যাপী সাড়া জাগানো বাউকুল উদ্ভাবক এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মো. আব্দুর রহিম দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে গবেষণা করে উদ্ভাবন করেছেন ডায়াবেটিক বাউ আম- ৩। এই আমে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কম বিধায় তা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ উপকারী। ইতিমধ্যেই এই জাতের আমের চারা সরবরাহ করা শুরু করেছে বাকৃবি জার্ম-প্লাজম সেন্টার।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে, আমরা প্রতিদিন যেসব ফল খাই তাতে যে পরিমান সুগার থাকে তা আমদের দেহের জন্য সহনশীল। এমনকি ডায়াবেটিক রোগীদেরকেও পরিমিত পরিমানে ফল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। এই ডায়াবেটিক আমের সুবিধা বলতে ডায়াবেটিক রোগীরা বেশী পরিমানে এই আম খেতে পারবে। তবে মিষ্টতা কিছুটা কম হতে পারে বলে অনেকে এ আম পছন্দ নাও করতে পারে।

ফলের মিষ্টতা প্রসঙ্গে বাউ জার্ম-প্লাজম





সেন্টারের পরিচালক বলেন ড. রহিম জানান, আমাদের মধ্যে কিছু ভ্রান্ত ধারণা আছে যে, ফলের মিষ্টতা বেশী হলে সুগার লেভেল বেশী হয়। কিন্তু তেঁতুল, আমড়া, টক পেয়ারা সহ অনেক টক জাতীয় ফলে সুগার লেভেল বেশী থাকার পরও তা টক লাগে। কারণ তা টারটারিক এসিডের মতো কিছু এসিডিক ফ্যাক্টরের জন্য মিষ্টতা কমে টক বেশী অনুভূত হয়।

জানা গেছে ১৯৯০ সাল থেকে ডায়াবেটিক আম উদ্ভাবনের চেষ্টা করা হয়েছে। এই জাতের আম উদ্ভাবনে ১০ এর অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী পিএইচডি ও মাস্টার্স ডিগ্রীর গবেষণা করেছেন। এই আমে অন্যান্য আমের তুলনায় সুগার লেভেল কম হওয়ায় এটা ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য উপকারী। ডায়াবেটিক রোগে আক্রান্ত রোগীরা এ ফল খেতে পারে। আমাদের দেশে ডায়াবেটিক রোগীদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। অনেক রোগী বেশী পরিমানে আম খেতে চাইলেও তা পারেন না। কিন্তু ডায়াবেটিক বাউ আম-৩ এই সব রোগীদের মন ভরে খাওয়ার সুযোগ করে দেবে। ইতিমধ্যেই এই জাতের আমের চারা সরবরাহ করা শুরু করেছে বাকৃবি জার্ম-প¬াজম সেন্টার।

বাউ আম-৩ নিয়মিত ফলধারনকারী ও বামন প্রকৃতির জাত। গাছে প্রতি বৎসরই প্রধানত ২বার ফুল ও ফল ধরে থাকে। প্রথম বার জানুয়ারী মাসের মাঝ-মাঝি হতে ফ্রেরুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে এবং দ্বিতীয় বার মে-জুন মাসে ফুল আসে। জানুয়ারী-ফ্রেরুয়ারী মাসে উৎপন্ন ফুল হতেই মূখ্য উৎপাদন পাওয়া যায়। জুন মাসের শেষের দিকে এই জাতের পাকা ফল পাওয়া যায়। ফুল আসা থেকে ফল পরিপক্ক হতে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ মাস সময় লাগে। ফলের আকার মাঝারী ও লম্বাটে প্রকৃতির। ফলের গড় ওজন ২৫৫ গ্রাম। গবেষনায় দেখা গেছে, এই জাতের ফল লম্বায় ১০.৬৮ সে.মি., পাশে ৭.১৭ সে.মি., উচ্চতায় ৬.০৬ সে.মি.। আঁটি গড়ে লম্বায় ৮.৮৫ সে.মি., পাশে ৪.৩৮ সে.মি., উচ্চতায় ১.৬৮ সে.মি., এবং গড় ওজন ৪৬.২৫ গ্রাম। খোসার ওজন ৩৪.৫ গ্রাম। খাওয়ার উপযোগী অংশ ১৭৪.০ গ্রাম যা মোট আমের ৬৮.৩৩%। পাকা ফলে রং হলুদাভ। ফলে রসের পরিমান কম কিন্তু আঁশের পরিমান বেশী।

ডায়াবেটিক বাউ আমের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এই আমে আর্দ্রতা ৮৩.৬৭%, অ্যাশ ০.৫৯ %, ভিটামিন সি ১২.৭০ মিঃ গ্রাম/১০০ গ্রাম, মোট চিনির পরিমাণ ১২.৩৬ %, জারিত চিনির পরিমাণ ২.৭০ %, বিজারিত চিনির পরিমাণ ৯.৬৬ %, ট্রাইট্রেটেবল এসিডিটি ০.৬০ %, টিএসএস (ব্রিক্স) ১১.১৭ % এবং পি-এইচ মান ৪.৭৪।

বিষয়: বিবিধ

১৩১৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File