পাকিস্তানের ঘৃণিত ১০ ব্যক্তির তালিকায় মালালা ও সাংবাদিক হামিদ মীর
লিখেছেন লিখেছেন শিহাব আল মাহমুদ ০৩ অক্টোবর, ২০১৩, ০৫:৫২:৪৬ বিকাল
সম্প্রতি ইন্টারনেট ভিত্তিক একটি জরিপ সংস্থা পাকিস্তানের ঘৃণিত দশ ব্যক্তির খোঁজ করেছিল। এতে সাংবাদিক, অভিনেত্রী থেকে শুরু করে উঠে এসেছে রাজনীতিবিদদের নামও। ঘৃণ্য দশজনের তালিকায় উঠে এসেছে মালালা ইউসুফজাই এর নাম! জরিপে উঠে আসা সেই ঘৃণ্য দশ ব্যক্তির ছবি ও কথা এই ব্লগ-
শাকিল আফ্রিদি
পাকিস্তানের স্থানীয় একজন চিকিৎসক তিনি। উসামা বিন লাদেনকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য দায়ী করা হয় তাকে। বর্তমানে জেলে আছেন এই লোক। বর্তমানে পাকিস্তানে সবচেয়ে ঘৃণ্য ব্যক্তি তিনিই। সিআইএ-এর হয়ে কাজ করায় বেশির ভাগ পাকিস্তানি তাকে দেশের শত্রু বলে মনে করে। সেই সাথে পাকিস্তানিরা মনে করে অ্যাবোটাবাদে যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ হামলার জন্য শাকিল আফ্রিদিই দায়ী।
ভিনা মালিক ‘বেহায়াপনা’র দায়ে পাকিস্তানি ঘৃণ্য ব্যক্তিদের তালিকায় এসেছে ভিনা মালিকের নাম। পাকিস্তানের চলচ্চিত্র তারকা বলিউডে এসেছিলেন তার ক্যারিয়ার গড়তে। কিন্তু বিকিনি পড়ে প্রায় পুরো নগ্ন হয়ে ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে ছবি তোলায় দেশজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। ভিনা মালিক মনে করেন তিনি রূপ-গুণ দিয়ে পাকিস্তানের মুখ উজ্জল করছেন। কিন্তু পাকিস্তানিরা তাকে সহজভাবে দেখেন না। তাদের ধারণা, পাকিস্তানের নারীদের ভাবমূর্তি পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছেন তিনি।
আলতাফ হোসাইন
লন্ডন প্রবাসী আলতাফ হোসাইন পাকিস্তানের এক রাজনৈতিক দলের প্রধান। পাকিস্তানিদের ধারণা, করাচির কিছু নির্দিষ্ট বোমা হামলার জন্য দায়ী এই ব্যক্তি। আলতাফ হোসেনের উপর পাকিস্তানিদের রাগের সবচেয়ে বড় কারণ হলো, এই ব্যক্তির উপর রয়েছে পাকিস্তানকে ভাগ করার ষড়যন্ত্রের গুরুতর অভিযোগ।
মালালা ইউসুজাই
১৬ বছর বয়সী মালালা তালেবানদের বিরুদ্ধে কথা বলায় বিখ্যাত হয়েছেন। বিশেষ করে তালেবানদের গুলিতে মৃত্যুর খুব কাছে থেকে ফিরে আসার পর বিশ্ব মিডিয়ায় তুমুল আলোচিত হয় এই কিশোরী। পাকিস্তানিরা তাকে ঘৃণা করে, কারণ- তারা মনে করে দেশের জন্য কিছু না করেই বিখ্যাত হয়ে গেছেন তিনি। তারপর দেশের নাম ভাঙ্গিয়ে খাচ্ছেন। পাকিস্তানিদের ধারণা, মালালা সিআইএ’র এজেন্ট। জরিপে অংশ গ্রহণ করা পাকিস্তানিদের দাবি-মালালা ও তার বাবাকে একাধিকবার সিআইএ কর্তাদের সাথে দেখা গেছে।
আসমা জাহাঙ্গীর
এই ভদ্রমহিলা পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। পাকিস্তানিরা তাকে ঘৃণা করে তার ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ ও ভারতের সাথে বন্ধুভাবাপন্ন মনোভাবের কারণে। পাকিস্তানিরা মনে করে, আসমা জাহাঙ্গীর একজন কাদিয়ানী।
মারবি সিরমেদ
পাকিস্তানের ঘৃণ্য ব্যক্তিদের অন্যতম এই নারী। পেশায় সাংবাদিক ও ব্লগার। পাকিস্তানিরা তাকে ঘৃণা করে ধর্মনিরেপক্ষতার জন্য। মারবি’র মতে, পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ একজন ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ, আর তিনি পাকিস্তানকেও একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। তার এই মনোভাবের কারণেও পাকিস্তানিরা তাকে ঘৃণা করে।
মীরা
পাকিস্তানের স্থানীয় চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তিনি। কিন্তু বলিউডে পাড়ি জমানোর পরই তাকে ঘৃণা করা শুরু করে পাকিস্তানিরা। বিশেষ করে বলিউডি ছবিতে চুম্বন দৃশ্যে তার উপস্থিতি সহজভাবে মানতে পারেনি পাকিস্তানের মানুষ। এছাড়া আরো কিছু কলঙ্কিত ঘটনার জন্যও ঘৃণ্য এই নারী। পাকিস্তানিদের ধারণা, মীরা দেশের ভাবমূর্তীকে পুরোপুরি ক্ষুণ্ন করেছে।
হোসাইন হক্কানী
এই ভদ্রলোক তিন বছর পাকিস্তানি অ্যাম্বাসেডর হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত ছিলেন। ‘মেমো গেট’ কলঙ্কের সাথে গভীর সম্পৃক্ততার কারণে পাকিস্তানিরা তাকে ঘৃণা করে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নানা উক্তি করেও জনগণের রোষানলে পড়েন তিনি।
নাজাম শেঠী
পাকিস্তানের বেসরকারি সংবাদ টিভি জি নিউজের সংবাদ গবেষক তিনি। ধর্মনিরপেক্ষতা ও ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব পোষণের কারণে পাকিস্তানিদের কাছে তিনি ঘৃণ্য হয়েছেন।
হামিদ মীর
তিনি পাকিস্তানের বিখ্যাত সাংবাদিক। ‘র’ এর এজেন্ট মনে করে তাকে ঘৃণা করে পাকিস্তানের মানুষ। ঘৃণা করার আরো একটি বড় কারণ মনে করা হয় কাশ্মীর বিষয়ে তার বিস্ময়কর নীরবতার জন্য। অনেক পাকিস্তানির মতে হামিদ মির সিআইএ’র একজন সক্রিয় এজেন্টও।
বিষয়: বিবিধ
২৮৭৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন