আমাকে দেখেও সে হতভম্ভ

লিখেছেন লিখেছেন শিহাব আল মাহমুদ ১৬ আগস্ট, ২০১৩, ০৫:২৬:৫৪ বিকাল



Najnin Akter Bithy

লোকনাথ স্কুল এর সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ আমার এক আপুর সাথে দেখা। বোনও বললে কম হবে। তাকে দেখেই আমি চমকে গেলাম। আরে একি অবস্থা তোর ! কি হয়েছে তোর ? আমাকে দেখেও সে হতভম্ভ ! আমাকে দেখেই সে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো। এটা দেখে অনেক লোক জমা হয়ে গেছে। আমি ওকে বললাম --- আমার বাসাতে চল, সে বলল আজ না পরে সময় করে তোর বাসাতে যাব। আজ আর সময় নাই। আমি বললাম তো নাম্বার বন্ধ কেন ? তোকে অনেক রিং দিয়েছে। সবসময় বন্ধ থাকে।

সে বলল আমার কোন নাম্বার নাই---- তোরটা দে সময় করে রিং দেব। আমি তাকে আমার নাম্বার টা দিলাম। বললাম আমার অনেক কথা আছে। সে বলল পরে হবে আজ নয়। এটা এক মাস আগের কথা।

আজ সে আমাকে রিং দিল বলল আমি আসছি। আমিত খুশিতে ডগমগ। আম্মুকে বললাম মারিয়া আসছে। আমি আর আম্মু ওর জন্য বসে আছি। সে আসলো। আমি বললাম তুই একাই? তো হাজবেন্ড কোই। আর বললাম তোর বোরখা কোই। শাড়ী পরে ঘুরছিস কেন। সেই দিনও দেখলাম তুই সালোয়ার কামিজ পড়েছিলি। সমস্যা কি তোর ?

সে আবার কান্না শুরু করলো। তার পর যা বলল তা শুনলে আপনারও কান্না পাবে। সব কথা বলতে লাগলে অনেক সময় লাগবে। শুধু মুল বিষয় বলি। তার বিয়ের পর তার লিখা পড়া বন্ধ করেছে তার স্বামী। বোরখা পরা তার শাশুড়ির পছন্দ নয়। অর আব্বু আম্মু ইসলামী মাইন্ডের তাই তারা যাতে যোগাযোগ করতে না পারে তার ফোন নিয়ে নেওয়া হয়েছে। এক বছর হল পরিবারের সাথে তার কোন কথা হয়না। আমার কাছে এসেছে এই বলে যে সে হসপিটালে যাচ্ছে। আর বলল আমার একটা ছেলে আছে। আজ পর্যন্ত তাকে তার নানী দাদীদের সাতে দেখা করতে দেয়নি।

আমার শ্বশুর বাড়ীর সবাই সেকুলার। বলতে গেলে সবাই নাস্তিক। আমাকে ঠিক মতো নামাজ পড়তে দেয়না। কেউ শুক্র বারের নামাজও পড়েনা। আমি বললাম তোর বাবা-মা খোজ খবর নেইনি ? ফ্যামিলি কেমন ? যানিনা! ছেলে ইঞ্জিনিয়ার দেখেই রাজি। সে বলল --- যা হবার তা হয়ছে। এখন এই ভাবেই জীবনটা পারকরতে পারলে বাঁচি। আম্মু বলল--- মারিয়া সবুর করো। আল্লাহ্‌ সব ঠিক করে দেবে।

আরও অনেক কথা। সে শুধু কাঁদছে। আর আমাদের কাঁদাচ্ছে। আপনি বলেন এটা ছাড়া তার আর কিবা করার আছে ?

বাবা-মা শুধু ভাল ভাবে সন্তান মানুষ করলেই কি তাদের দায়িত্ব শেষ ? মেয়ে কোন ঘরে যাচ্ছে ? ছেলে কেমন ? তার ফ্যামিলি কেমন ? সেটা দেখা কি পিতামাতার দায়িত্ব নয় ? ছেলেরা তো যেকোনো পরিবেশ মানিয়ে নিতে পারে। আল্লাহ্‌ তাদের সে ক্ষমতা দিয়েছে। একটা মেয়ে কি টা পারে ? বাবা-মার একটা ছোট্ট ভুল সিদ্ধান্ত একটা মেয়ের জীবন ধ্বংস করে দিতে পারে। ছেলে মেয়েদের যেমন উচিৎ বাবা-মার উপরে ভরসা রাখা। তেমনি বাবা-মার উচিৎ ওদের মেয়ে/ছেলে কোন ঘরে যাচ্ছে তা খোজ নেওয়া।

ছেলে চাকরি করে এটাই কি তার সবচেয়ে বড় পরিচয় ? নাকি ছেলে সৎ চরিত্রবান এটাই সবচেয়ে বড় পরিচয় ?

বিষয়: বিবিধ

১৫৮০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File