"Humanity"-এর দোহায় দিয়ে "Human", হত্যা এ কেমন কথা!!
লিখেছেন লিখেছেন আমি স্বাধীন ৩১ আগস্ট, ২০১৩, ১২:৩৬:৫১ রাত
"Humanity"-এর দোহায় দিয়ে "Human", হত্যা এ কেমন কথা!!
কথায় আছে "A faithful dog never betray with it's master." মুনিব যা বলে তাতেই বদ-অভ্যাস বশত তার নিজের সমর্তন জানায় লেজ নাড়িয়ে। এবারো ভুল করেনি কুকুরটি! মুনিব যখন বলল, "চল, অজুহাত একটা পাইছি, নিজেদের মধ্যে হত্যাযজ্ঞে লিপ্ত সিরিয়ায় হামলা করার। তুই কি বলিস?"
লেজ নাড়াতে নাড়াতে কুকুরটির তৎক্ষণাৎ জবাব, "আবার জিগায়, গত কয়েক দশক যাবত পাইলেন; আফগানিস্তান, ইরাকে পাইলেন, আর এখন পাবেন না তা কি হয়? লন হুমড়ি খেয়ে পরি। পরে লভ্যাংশ যা পাবেন তার কিছুটা আমারেও দিবেন, আর কি!!" মুনিব খুশি, যাক এবারও তোরে পাওয়া গেল একনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে।
কিন্তু না, এবার মুনিবের বিবেক বাধা না দিলেও কুকুরের বিবেক ঠিক-ই বাধা দিল। বাধা দেবার যথার্থ কারণও আছে বটে। আগে অনেকবার মানুষের রক্তে শরীরের পশম ভিজালেও এবার সেই পশম সমেত নিজের গায়ের মাংশ খসে যেতে পারে! কারণ রাশিয়া আছে খুব পাশেই। অযথা নিজের মাংশ খসিয়ে লাভ নাই। আজ সে মুনিবকে বলল, "আপনার সাথে একটু betray করতে হচ্ছে, বৈকি। আপনি মারেন, আমি দেখি।"
সচেতন পাঠক, এতক্ষণে বুঝে গেলেন এই সেই কুকুরটি কোন দেশ! এটি আমেরিকার একনিষ্ঠ দালাল "ব্রিটেন"।
এইবার আসি আসল কথায়। কয়েক দশক যাবত বিভিন্ন দেশে সামরিক অভিযানের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বস্ত সহযোগী ছিল এই ব্রিটেন। কিন্তু গতরাতে এই প্রথম, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সিরিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে, যা১৭৮২ সালের পর এই প্রথম ঘটল!! নিউজঃ http://www.theguardian.com/world/2013/aug/30/obama-strike-syria-britain-vote
অনেকে ভাবছেন, হয়ত ইংগ-মার্কিন সম্পর্কে ছেদ ঘটতে যাচ্ছে। না, আসলে ব্যাপারটা তা না। সিদ্ধান্তটা শুধু সিরিয়ার জন্যে হতে পারে। নিজেরাই হামলার শিকার হতে পারেন সেই বোধ থেকেই তাদের সাময়িক এই পিছু হঠা, কেননা পার্শ্ববর্তী শক্তিশালী দেশ রাশিয়া সাফ জানিয়ে দিয়েছে তারাও ছাড় দিয়ে কথা বলবেনা এবং ভূমধ্যসাগরে যুদ্ধ বিমান পাঠিয়ে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।
আবার ভাবছেন, আমেরিকা সঙ্গী-হারা হয়ে গেল। না। "ভাত ছিটালে যেমন কাকের অভাব হয় না", তেমনি এইসব কুলঙ্গার দেশের মিত্রের অভাব হয় না কখনো। সিরিয়ায় সম্ভাব্য অভিযানের জন্য সমর্থন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদেশগুলো। মঙ্গলবার হামলার জন্য খুব দ্রুত প্রস্তুতি নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও এর ইউরোপীয় মিত্রদেশগুলো। আরেক মিত্র ফ্রান্স বলছে বুধবারের মধ্যে হামলা করতে। সিরিয়ায় সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে মিত্রদের সমর্থন নিশ্চিত করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। তিনি কানাডার নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী চাক হেগেল জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নির্দেশ পেলেই মধ্যপ্রাচ্যে ও আশপাশে মোতায়েন মার্কিন বাহিনী “হামলা শুরু করবে”। হামলা শুরু হলে তা হবে সিরিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা শক্তিগুলোর সবচেয়ে আক্রমণাত্মক অভিযান।
অপরদিকে তিন বিশ্বশক্তি রাশিয়া, জার্মানি ও চীন তাদের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছে। সাথে আছে ইরান।
যে যাই বলুক, আমার দৃষ্টিতে রাসায়নিক অস্ত্রের অজুহাতে যে কারণে হামলা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোঃ
১) ইরানে হামলার পূর্ব প্রস্তুতি এবং ইরানের বিরুদ্দে ছায়া যুদ্ধ ।
২) সিরিয়া দখল করে একটা পুতুল সরকার বসাবে আর সেখানে USA , EU ও ইসরাইল ঘাঁটি করবে।
৩) তারপর সুবিদামত কোন সময়ে ইরানে হামলা & ইরান দখল করে ওদের তেল ভান্ডার লুটে খাবে।
যাই হোক, আমেরিকা রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অজুহাতে হামলা করতে চাইছে। কিন্তু কি অদ্ভুত, মানুষ হত্যা বিরুদ্ধে গিয়ে মিসাইল, ড্রোন, ক্ষেপনাস্ত্র এবং বিমান হামলা করে সেই মানুষ নিধনই তারা যৌক্তিক মনে করে!!
এ যেন "Humanity"-এর দোহায় দিয়ে "Human", হত্যা!!
এ সম্পর্কিত নিউজঃ
১) http://www.sheershanews.com/2013/08/30/464
২) http://bangla.bdnews24.com/world/article665534.bdnews
বিষয়: আন্তর্জাতিক
২১৮৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন