চাঁদমুখ

লিখেছেন লিখেছেন পিন্টু রহমান ৩১ মে, ২০১৪, ১২:৪৪:২১ দুপুর

নুয়েপড়া ধানের উপরিতলে দ্বাদশী জ্যোৎস্না বিচ্ছুরিত হয়ে তাঁর চোখে-মুখে ঢেউ খেলে যায়। শূন্যে কুয়াশা বালিকার লঘু আস্তরণ আর নিচে মাঠভরা হেমন্তের সোনালি ফসল। ধানগুলো যেন ধান নয়, কোটি কোটি স্বর্ণের চোখ!

প্রজাপতির ডানায় ভর করে বাতাসে মৌ মৌ গন্ধ নৃত্যরত ।

পথিক বুক ভরে শ্বাস নেয়। আঃ হুবহু একই রকম; অতসীর শরীরের সাথে এই গন্ধের কোন অমিল নেই। অনেক দিনের পরিচিত গন্ধ; যে গন্ধ তার অস্থিমজ্জায় রক্তের কণায় কণায় ।

খাঁড়ি বেয়ে উদ্দেশহীন কিছুক্ষণ চলার পর পথিক তার দিক পরিবর্তন করে। ডানে লোকালয় আর সম্মুখে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। শিশিরস্পর্শে শরীরের লোমগুলো কাঁটা দিয়ে ওঠে; খেলে যায় বিচিত্র স্বাদের শিহরণ।

আইল ধরে হাঁটতে হাঁটতে এক একবার সে থমকে দাঁড়ায়। তখন অতসীর কথা মনে হয়; খুলে যায় স্মৃতির বদ্ধ জানালা। এই পথ ধরেই তো তাঁর মনের চোরাগলিতে ডুব দেওয়া! হ্যা; ঠিক এই পথেই।

তিথি নক্ষত্রের কথা মনে নেই; তবে সে রাতেও এমন জ্যোৎস্নার প্লাবন ছিল। বৃক্ষের পাতায় পাতায় ছিল শিশিরের টুপটাপ পদধ্বনি; মায়াবী সুরের ইন্দ্রজাল। বাতাসের কাঁধে ভর করে সে সুর অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছিল। মুখ তুলে তাকাতেই পথিক সেদিন চমকে উঠেছিল। তার সামনে যে দাঁড়িয়ে আছে সে কি অতসী; নাকি স্বর্গের অপ্সরী!

চোখের ঘোর কাটতে অনেক সময় লেগেছিল। এ যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি! মনে হয়েছিল, সে আর অনাহুত নয়; অতসীর জীবন নাটকে এক আমন্ত্রিত অতিথি।

শুরু হয় অন্তহীন পথচলা; অহর্নিশ স্বপ্ন দেখার পালা। সেদিনও এমন মাঠভরা ধান ছিল, হেমন্তের কুয়াশা ছিল, ছিল পূর্ণ চাঁদের আলো।

এই গাছটিকে কেন্দ্র করেই তাদের অভিসার আবর্তিত হতো। রাতের পর রাত ভালবাসার পানসি এখানে নোঙর করতো। দু’দণ্ড জিরিয়ে নিতো। একে অন্যকে আতœস্থ করতো।

আইলের ওপাশেই ডোবা ; আর ডোবার ঠিক পাশেই বয়েসী বটগাছটা- যা কালের স্বাক্ষী হয়ে এখনো ঠাঁই দাঁড়িয়ে।

অতসী ছিল দুরন্ত; পাহাড়ী ঝর্ণার

বিষয়: সাহিত্য

৯৮৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

228676
৩১ মে ২০১৪ দুপুর ০৩:২৩
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ খুব ভালো লাগলো
228908
০১ জুন ২০১৪ সকাল ১০:১৮
আতিকুর রহমান ফরায়েজী লিখেছেন : ভালো লাগলো পিলাচ মাইনাস সমান পিলাচ। অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File