উজানগাঙের নাও
লিখেছেন লিখেছেন পিন্টু রহমান ২৮ মে, ২০১৪, ০৭:৩৩:২৮ সন্ধ্যা
শেষরাতের মগ্নতায় যদিও বা তার চোখের পাতায় খানিকটা ঘুম এসে ধরা দিয়েছিল কিন্তু ঐ ঘুম বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি; সজনেপাতার ফাঁক-গলে একচিলতে রোদ এসে তার সারামুখ চষে বেড়ায়। মালা তথাপি ঘুমের আবহ ধরে রাখতে চোখ মেলে তাকায় না, মাথার বালিশটা আলগোছে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে; পলায়নরত ঘুমটাকে নিজের মধ্যে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করে। অথচ খেদালী মেম্বারের ( একবার ভোটে দাঁড়িয়ে ফেল করেছিল) বউ-ত্রয়ীর বাকযুদ্ধে ঐ চেষ্টাটাও বিঘিœত হয়; বারবার তাল কেটে যায়। ফলে মালার খিটমিটে মেজাজ আরো বেশি খিটমিটে; মুখের ওপর লেপটে থাকা চুল বামহাত দিয়ে সরাতে-সরাতে অষ্পষ্ট স্বরে বিড়বিড় করে, মাগী...ঝড়গা করার আর সুমায় পালিনি, চুল ছিড়াছিড়ি করবি তে দেকিশুনি নাঙ ধরছিল ক্যান!
মেয়েটি হয়তো আরো কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে পড়ে থাকতো কিন্তু খুব শীতল হাতের স্পর্শে ধড়ফড় করে উঠে বসে; ভয় এবং লজ্জা যুগপত তাকে আঁচড় কাটে- সম্মুখেই মাতবর চাচা দাঁড়িয়ে! শরীরের দৃশ্যমান চিহ্নসমূহ সামলাতে-সামলাতে অবাক হওয়ার ভঙ্গিতে মালা জিজ্ঞেস করে, চাচাজান আপনি; আপনি একেনে কি কচ্চেন?
মুখে হাসির রেশ টেনে মাতবর বলে, হ রে মা আমি; তোর মার কাচে আয়চি।
- ক্যান, মা তো আপনাগের বাড়িই গিচে!
মালার মা বস্তুত: মাতবর বাড়ির বাধা-ঝি। সকাল থেকে গভির রাতঅব্দি সেখানেই অবস্থান করে; পেটানো শরীরের স্বক্ষমতা দিয়ে যৌথ পরিবারটির কাজকর্ম নিজের মতো করে দেখভাল করে। রাবেয়ার শরীরে যেন ক্লান্তি নেই; সংসারটাকে নিজের সংসার থেকে খুব বেশি আলাদা বলেও মনে হয় না! বরং কাজটুকুন আছে বলেই মা-মেয়েতে দু’মুঠো খেতে পারে, পরতে পারে।
মাতবরকে দেখে রাবেয়া নিজেও খুব বিচলিত হয়, ভাইজান আপনি; আপনি একেনে! কারুক দি কলিই তো হতু- চলি যাতাম।
উঠোনে পা ফেলা অবধি মাতবরের চোয়াল-জোড়া থেমে নেই; মুখে পান পুরে গরুর মতো জাবর কেটে চলেছে। জাবরকাটার এক ফাকে আয়েশী ভঙ্গিতে বলে, ঝুমার মার শরীলডা ভালো না রাবিয়
বিষয়: সাহিত্য
৯৮৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সম্ভবত গল্পের ধরনই এমন!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন