মীরজাফর'রা শত্রুপক্ষেরই হয়, আপন কেউ নয়। ( এম এ আই হানিফ )

লিখেছেন লিখেছেন হানিফ খান ২১ নভেম্বর, ২০১৮, ০২:০৯:৩৬ দুপুর



মীরজাফর'রা শত্রুপক্ষেরই হয়, আপন কেউ নয়।

Star ঐক্যবদ্ধ একটি দলের অভ্যন্তরে বিবাদ তৈরি করাই শত্রুপক্ষের আসল চ্যালেঞ্জ।

আর এমন সফলতা লাভ করতে পাটকেল মারতে হয় এন্টি পার্টির পাঁজর ঘেঁষে, যা যুদ্ধ ঘোষণা করার মাধ্যমে নয় বরং কুপন্থা বা অপ-কৌশলে।

সেই পাটকেল হিসেবে যদি ব্যবহার করা যায় দলের ভিতর লুকিয়ে থাকা মিরন, মীর জাফর, মহাম্মদিবেগ, মহারাজা নন্দকুমার ও রবার্ট বেইল্টদের মত পদলোভী ও স্বার্থপর'দের, তাহলে তো কথাই নেই। এই যেনো 'ঘরে বসে মন্ত্র পড়ে দূর পুকুরের মাছ শিকার করা'র উদাহরণ।

Star পৃথিবীর শুরুলগ্ন থেকে আজকের এই পর্যন্ত।

অতীত, অতীতের অতীত এবং বর্তমান।

সর্বযুগে সর্বসময়ে মানুষের মধ্যে বিবাদের দেয়াল ছিলো।

নির্দিষ্ট কোনো ইস্যুর মাখনে তৈরি হতো সেই দেয়াল।

বিবাদের সেই দেয়ালই তৈরি করে দিতো ভিন্ন দল, ভিন্ন গোত্র ও ভিন্ন ভিন্ন জাতি।

বিভিন্ন দল, গোত্র ও জাতির মধ্যে চলতে থাকতো যুদ্ধ, লড়াই, মারামারি, হানাহানি, অতপর রোনাজারি ।

আজও তা আছে। থাকবে পৃথিবীর অন্তিমকাল পর্যন্ত, যতক্ষণ না পৃথিবীর সকল জাতির অন্তিমদশা চলে আসবে।

এই দল, উপদল ও জাতির মধ্যে রয়েছে ন্যায়নীতির পার্থক্যতা।

কেউ সত্যের উপর থাকে, কেউ মিথ্যারঝুড়ি নিয়ে দৌড়ে।

কেউ সত্য প্রতিষ্ঠায় ন্যায়ের ঝাণ্ডা নিয়ে সামনে এগোয়, কেউ তার বিপরীতে শয়তানি ডাণ্ডা নিয়ে লাফায়।

সত্য-মিথ্যা ছেড়ে আধিপত্য বিস্তারেও বিভক্তির ঘটনা অহরহ।

সব মিলিয়ে মানুষ আজ দলেদলে বিভক্ত। যা আগেও ছিলো। ভবিষ্যতেও থাকবে।

কিন্তু একটা দল যখন নিজেদের জয়লিপ্সা মিটানোর জন্যে আদাজল খেয়ে মাঠে নামে, তখন যে কোনোভাবে প্রতিপক্ষকে নিজেদের চরণতলে ফেলে তলোয়ারের মাথায় নেওয়ার পাঁয়তারা খুঁজে বেড়ায়।

সহজ ও স্বাভাবিক পন্থায় যখন পরাজিত হয় তখন আশ্রয় নেয় এক হীনকৌশলের।

যার একটি সুক্ষ্মচাল হলো 'মীর জাফর' পন্থা। যদিও কোনো পন্থার নাম মীরজাফর হয় না, তবে ইতিহাস একটি নির্দিষ্ট কাজ'কে "মীরজাফরী" নামে নামকরণ করেছে।

১৭৫৭ সালের ২৩ শে জুন। এদিন পলাশীর আম্রকাননে স্বদেশী বিশ্বাসঘাতকদের চক্রান্তে বিদেশী বেনিয়াদের হাতে বাংলার স্বাধীনতাসূর্য অস্তমিত হয়েছিল। বাংলাদেশে মুসলিম শাসনের প্রতি বিদ্বেষ ও স্বার্থের লোভে পড়ে হিন্দু বিশ্বাসঘাতকেরা দেশের স্বাধীনতা ইংরেজদের হাতে বিকিয়ে দিয়েছিলেন। তখন বাংলার প্রধান সেনাপতি থাকা অবস্থায় মীরজাফরের ষড়যন্ত্রমূলক ভূমিকা, জঘন্য বিশ্বাসঘাতকতাও জাতির জন্য কলঙ্কজনক এবং তা অবশ্যই ক্ষমার অযোগ্য।

জাতি মীরজাফরকে কোনোদিন ক্ষমা করেনি এবং করবেও না।

যদিও ষড়যন্ত্র ও বিশ্বাসঘাতকতার মূল নায়ক যে জগৎশেঠ, উমিচাঁদ, রায়দুর্লভ, মানিকচাঁদ, রাজভল্লভ, নন্দনকুমার, কৃষ্ণভল্লভ, রামনারায়ণ, সেতাবরায় প্রমুখ এ কথা অনেকটা চাপা পড়ে গেছে।

Star আসল কথায় আসি,

° ক্বওমী মাদ্রাসা একটি ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্মের নাম।

° ক্বওমী মাদ্রাসা সত্যের পক্ষে চেতনা জাগানিয়া একটি সংস্থার নাম।

° ক্বওমী মাদ্রাসা 'ওয়া যা-আল হাক্ব, ওয়া যাহক্বাল বাতিলাহ'........., আয়াতের এক নিদারুণ উদাহরণ।

° 'ক্বওমী মাদ্রাসা' মাটিকে সোনায় রূপান্তরিত করা এক পরশপাথরের নাম।

* কথায় ক্বওমী মাদ্রাসা বাতিলের বিরুদ্ধে একটি সঙ্গবদ্ধ মুজাহিদের ঘাটির ডাকনাম।

ইংরেজ খেদাও আন্দোলন থেকে শুরু করে আজ অবধি ইসলাম ও দেশবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র'কে রুখে দেওয়ার আন্দোলনে এই ক্বওমীর ধারক-বাহকরাই সামনের সাড়িতে ও নেতৃত্বে ছিলো এবং আছে। যা অস্বীকার্য। বিশালাকৃতির ইতিহাস শিরোনামে উপস্থাপন করার নয়।

Star আমাদেরই যুগের ঐতিহাসিক ঘটনার এক চিমটি ইতিকথা ব্যক্ত করছি।

দলমত নির্বিশেষে সকল মুসলমানদের নিয়ে মুসলিম অধ্যুষিত এই বাংলার জমিনে নাস্তিকদের আস্ফালন দমিয়ে দেয় এই ক্বওমিয়ানরা। আপনি আমিও ছিলাম নিশ্চয় এই আন্দোলনে। ছিলো না কেবল ক্ষমতালোভি ও পদলোভীরা।

তৈরি হয় আরেকটি গণবিস্ফারণ। নাস্তিক্যবাদের ঘাড়ে চাপা দিয়ে রাজপথে নেমে যায় অস্ত্রহীন মুজাহিদের দল।

স্পষ্ট হয়ে যায় ক্বওমি আলেম-উলামাদের মধ্যে একতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ। আর একতার চাদরে আটকিয়ে সকল আস্তিকমনাদের ঈমানি চেতনায় তৈরি হয় একটি নাম 'হেফাজতে ইসলাম'।

জেলায় জেলায়, থানায় থানায় ও পাড়ায় পাড়ায় ইসলাম ও নবী প্রেমিকদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটতে থাকে সুন্দর ও সুস্থ আন্দোলনের মাধ্যমে।

সংগঠিত হয় একটি ৬ এফ্রিল (লংমার্চ)।

নাস্তিক ও তাদের দোসরদের হৃদয়ে আঘাত হানে আস্তিকদের নারায়ে তাকবীরের বোমারু আঘাত। যেই আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় শাহবাগিদের শাহী বিরিয়ানির ডেগচি।

শুধু নাস্তিকরাই নয়, তাদের দোসর ক্ষমতাবানরাও হয়ে পড়ে কোণঠাসা।

Star দাবী আদায়ে আন্দোলনের তিব্রতা রূপ নেয় ৫ মে'র অবরোধ।

অতপর ক্ষমতালোভী খোদাদ্রোহিরা বাঁচার চিন্তায় বেছে নেয় এক ভয়ংকর পথ।

রক্তে রঞ্জিত হয় শাপলাচত্বর।

বাকি'টা ইতিহাস হয়ে আছে, এই ইতিহাসের ইতি কখনো টেনে ধরার নয়।

Star এখন সেই শত্রুপক্ষের আচরণে মধু মিশেছে। আর সেই মধুর সাথে বিষাক্ত বস্তুর মিশ্রণ আমাদের মত লক্ষলক্ষ ক্বওমির সন্তান ও বাবুনগরীরা ঠিকই বুঝতে পারলেও গুটিকয়েক চাটুকার ও মীরজাফররা তার বিপরীত।

আর এই মীরজাফর ও চাটুকার দিয়েই শত্রুতা উদ্ধারসাধন করা মোক্ষম মনে করছে শত্রুপক্ষ।

অতীত ভুলে যাওয়া এই গুটিকয়েক পদলোভীদের দিয়েই আমাদের একটি ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্মে ফাটল ধরিয়ে যদি নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিল করা কুচক্রীদের আসল উদ্দেশ্য হয়ে থাকে তাহলে সেই ষড়যন্ত্রে আংশিক সফল তারা।

মধুর মৌচাকে আজ বিষের ছিটা পড়েছে। মৌমাছিরা আজ ছন্নছাড়া।

ইংশা-আল্লাহ, অচিরেই মৌমাছিরা সেই বিষের ছিটা নির্গত করে মীরজাফর আর পদলোভীদের চিহ্নিত করবে।

অবশেষে ভুল বুঝে তাউবা না করলে সেই জাতীয় গাদ্দার ও পদলোভীদের শেষ পরিণতি হবে,

মিরন, মীরজাফর, মহাম্মদিবেগ, ইয়ার আলী খানদের মত অপমান আর অপদস্থমুলক করুণ পরিণতি।।

বিষয়: বিবিধ

৯৮১ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

386153
২৩ নভেম্বর ২০১৮ সকাল ০৯:০৫
হতভাগা লিখেছেন : কওমী ছাত্রদের কাছে প্রশ্ন , উত্তর দিতে পারলে পুরষ্কার আছে -

কওমী জননী এই উপাধি কে পেয়েছেন ? কেন পেয়েছে ? কারা এই উপাধি দিয়েছে?
২৩ নভেম্বর ২০১৮ রাত ১১:৫১
318107
শাহাদাত হুসাইন নবীনগর লিখেছেন : একজন ব্যাক্তি চাটুকারিতা করে নমিনেশন নেয়ার ধান্ধ্যায় “কওমী জননী” উপাধিটা দিয়েছে।
কওমীর জননী কোন ব্যাক্তি নয়।কওমীর জননী হল “দারুল উলুম দেওবন্ধ”
প্রধানমন্ত্রী কওমী সনদের স্বীকৃতি দিয়ে ভাল কাজ করেছেন।কৃতজ্ঞতা আদায় করবো এবং করেছি। তাই বলে কওমী জননী বানিয়ে দেবো তা ঠিক নয়।
২৪ নভেম্বর ২০১৮ সকাল ০৮:৪১
318108
হতভাগা লিখেছেন : নামগুলো জানতে চাইছিলাম
386162
২৩ নভেম্বর ২০১৮ রাত ১১:৫১
শাহাদাত হুসাইন নবীনগর লিখেছেন : একজন ব্যাক্তি চাটুকারিতা করে নমিনেশন নেয়ার ধান্ধ্যায় “কওমী জননী” উপাধিটা দিয়েছে।
কওমীর জননী কোন ব্যাক্তি নয়।কওমীর জননী হল “দারুল উলুম দেওবন্ধ”
প্রধানমন্ত্রী কওমী সনদের স্বীকৃতি দিয়ে ভাল কাজ করেছেন।কৃতজ্ঞতা আদায় করবো এবং করেছি। তাই বলে কওমী জননী বানিয়ে দেবো তা ঠিক নয়।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File