যতদিন ইসলামী আন্দোলন কায়েম হবে না, ততদিন আল্লার প্রেমিকরা আন্দোলন করেই যাবে

লিখেছেন লিখেছেন হানিফ খান ১২ এপ্রিল, ২০১৪, ০৮:০৫:৩৪ সকাল



নাস্তিক্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে কিয়ামত পর্যন্ত লড়বে হেফাজত

সরকারকে তওবা করতে হবে : Roseআল্লামা শাহ আহমদ শফী

নাস্তিকদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে : Roseআল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী

আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের সঙ্গে বেয়াদবি করে কেউ টিকে থাকতে পারবে না : মুফতী মুজিবুর রহমান

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর Roseআল্লামা শফী বলেছেন, হাসিনা, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ আমাদের শত্রু নয়।

তবে আল্লাহর নেয়ামত খেতে হলে আল্লাহকে মানতে হবে। এ সময় তিনি সরকারকে তওবা করার আহ্বান জানান।

Roseআল্লামা শফী বলেন, নিজে ভালো হলে জগত ভালো। আসুন আমরা তওবা করি, চুরি, টেন্ডারবাজি, জেনা, ব্যভিচার, হানাহানি, রক্তপাত, খুন, পরের সম্পদ লুণ্ঠন করবো না। আমরা ভালো হলে দেশটা ভালো হবে, সত্যিকারের সোনার বাংলা হবে এই দেশ।

শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের দুই দিনব্যাপী শানে রেসালত সম্মেলনের প্রথম দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হেফাজতের বিরোধিতাকারীদের উদ্দেশে আল্লামা শফী বলেন, ‘হেফাজতের দাবি ও ঈমানি আন্দোলন বুঝতে চেষ্টা করুন, হৃদয় দিয়ে অনুধাবন করুন। অযথা মিথ্যাচার করবেন না; বিশেষ কোনো উদ্দেশ্যে বিভ্রান্তি ছড়াবেন না।’

হেফাজতের ঘোষিত ১৩ দফা দাবির সপক্ষে Roseআল্লামা আহমেদ শফী বলেন, ‘১৩ দফা বাস্তবায়ন হলে সমাজে অপরাধপ্রবণতা থাকবে না। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে, নারী তার মর্যাদা ও প্রাপ্য অধিকার ফিরে পাবে। ঘরে-বাইরে-কর্মস্থলে পূর্ণ নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে জীবনযাপন করতে পারবে নারীরা।’

নিজের অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে আল্লামা শফী বলেন, আমি আজ কোনো কথা বলতে আসিনি। আপনাদের সঙ্গে মোলাকাত করতে এসেছি। আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। যতদিন বেঁচে আছি, যাতে দ্বীনের ওপর অটল থাকতে পারি, দ্বীনের কাজ করে যেতে পারি এই দোয়া করবেন।

গতকাল বাদজুমা শানে রেসালত সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনের প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ শফী। আরও বক্তব্য দেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী, যুগ্ম মহাসচিব মাওরানা মাহমুদুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী প্রমুখ।

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব লোকমান হাকিমের সভাপতিত্বে দ্বিতীয় অধিবেশনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন হেফাজতের নেতা আলতাফ হোসেন, নুর মোহাম্মদ, মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ছেলে মুফতি আবুল হাসনাত আমিনী, মুফতি শাখাওয়াত হোসেন, মুজিবুর রহমান প্রমুখ।

আল্লাহ ও রাসুলের (সা.) শত্রুদের রুখে দাঁড়ান

শানে রেসালত সম্মেলনে আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী বলেন, গণমাধ্যম, সাংস্কৃতিক অঙ্গন কিংবা সমাজে আল্লাহ ও রাসুলের শত্রু নাস্তিকদের অপতত্পরতা দেশের জনগণ বরদাশত করবে না। নাস্তিকদের উদ্দেশ করে বলেন, নাস্তিকরা তোমরা বুঝ! মুসলমান হয়ে যাও, আল্লাহকে মানো, না হয় এদেশে থাকতে পারবে না। নাস্তিক্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে হেফাজতে ইসলাম কিয়ামত পর্যন্ত লড়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ।’ সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আল্লাহ ও রাসুলের শত্রুদের তত্পরতা রুখে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

তার সংগঠনের আন্দোলন সম্পর্কে হেফাজতের আমির বলেন, ‘আমরা কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করিনি। আল্লাহ ও রাসুলের দুশমনদের বিরুদ্ধে ময়দানে নেমেছি আমরা।’ কাউকে ক্ষমতায় নেয়া কিংবা ক্ষমতাচ্যুত করা তাদের উদ্দেশ্য নয় বলে আবারও জানান তিনি।

আসুন দোয়া করি বাংলাদেশ যেন সোনার বাংলা হয়

সমাবেশে আল্লামা শফী বলেন, ‘আমরা ভালো হলে সরকার ভালো হবে। হেফাজতের আমির বলেন, ‘আমরা মুসলমান। আমাদের সঙ্গে কারও আদাবত (শত্রুতা) নেই। একমাত্র আদাবত, যারা আল্লাহর দেশে থাকে আল্লাহর নেয়ামত খাইয়া আল্লাহকে মানে না, তারা আল্লাহর দেশে থাকতে পারবে না।’ তিনি সম্মেলনে আসা নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আসুন আমরা আল্লাহর দরবারে তওবা করি। আমরা খারাপ হয়ে গেছি। না হয়তো আমাদের এ দেশ সোনার বাংলা হবে না কেন। আমরা আল্লাহর দরবারে দোয়া প্রার্থনা করি, বাংলাদেশকে যেন সোনার বাংলা বানাতে পারি। যেসব ব্যবসায়ী ব্যবসা চালাতে পারছে না, তাদের জন্য তিনি দোয়া করেন। যেসব গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে গেছে সেগুলো যাতে আবার চালু হয়, রাস্তাঘাট ভালো হয় সে জন্য দোয়া করেন।’

হেফাজতের আমির বলেন, ‘আমাদের দেশের কীভাবে উন্নতি হয়, আমাদের স্বভাবচরিত্র কীভাবে ভালো হয় ওদিকে লক্ষ্য রাখবেন। আমরা এ দেশের মানুষ, এ দেশে থাকতে হবে। এ দেশে থাকার মতো থাকতে পারি, সেজন্য দোয়া করবেন। আপন ভালো হলে জগত্ ভালো হয়। আমি অসুস্থ। আমার জন্য দোয়া করবেন।’

আসুন সবাই তওবা করি

সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফী সরকার, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে ‘দুশমন’ নয়, বরং তাদেরকে নিজেদের ‘বন্ধু’ বলে অভিহিত করেছেন। আল্লামা শফী বলেন, “হাসিনা সরকার, আওয়ামী লীগ বলেন আর ছাত্রলীগ বলেন, সবাই আমাদের বন্ধু। এদের সঙ্গে আমাদের কোনো আদাবত (শত্রুতা) নাই। ‘কেউ যদি হাসিনা সরকার, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগকে আমাদের দুশমন বুঝে থাকেন এমনটা ভুল হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা হাসিনা সরকারকে কোনো গালি দিইনি। এখানে হাসিনা সরকার আসতে না পারলেও আওয়ামী লীগের অনেক লোক এসেছে।’ অনেক ভুল-ত্রুটি হয়ে গেছে উল্লেখ করে শফী বলেন, ‘ভুল-ত্রুটি, ভুল-ভ্রান্তি অবশ্যই হয়েছে, হচ্ছে। জানা- অজানা, ইচ্ছা-অনিচ্ছায়, গোপনে- প্রকাশ্যে বহু গুনাহ করেছি।’ এ সময় তিনি সবাইকে তওবা করে আল্লাহর দরবারে ক্ষমা চাওয়ার অনুরোধ করেন।

আল্লাহ ও রাসুলকে (সা.) কটূক্তিকারীদের শরীরের সঙ্গে মাথা থাকতে পারে না

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবু নগরী বলেন, নাস্তিকরা যেভাবে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলকে (সা.) কটূক্তি করেছে, তাতে তাদের শরীরের সঙ্গে মাথা থাকতে পারে না। আমরা আইনকে হাতে তুলে নিতে চাই না। আমরা এখনও আশাবাদী, সরকার এসব নাস্তিকদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করবে।

বিশেষ অতিথি বক্তব্যে মাওলানা মুজিবুর রহমান যুক্তিবাদী বলেন, পাঁচ মে ঢাকার শাপলা চত্বরে কারবালা হয়ে গেছে। সরকার এই কারবালার কথা কোনোভাবেই বন্ধ করতে পারবে না। ঢাকার শাপলা চত্বরে যখন রক্তপাত হয়েছে, এদেশে ইসলামী আইন বাস্তবায়ন হবেই। তিনি সরকারের প্রতি ঈঙ্গিত করে বলেন, এখন মক্কার কাফেররা নেই, নেই মদিনার ইহুদিরা। তবে তাদের সহযোগীরা রয়ে গেছে। আমরা নবী প্রেমিকরাও আছি। আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের সঙ্গে বেয়াদবি করে কেউ টিকে থাকতে পারবে না।

ঢাকা লালবাগ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা শাখাওয়াত বলেন, কোনো একজন মুসলমান যদি এদেশে বেঁচে থাকেন, নাস্তিকদের ভয় করবে না। যতদিন ইসলামী আন্দোলন কায়েম হবে না, ততদিন আল্লার প্রেমিকরা আন্দোলন করেই যাবে।

শানে রেসালত সম্মেলনের প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলামের চট্টগ্রাম মহানগরীর নায়েবে আমীর আল্লামা শামসুদ্দোহা। এদিকে কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যেও মানুষের ঢল নেমেছে লালদীঘির শানে রসূল সম্মেলনে। এর আগে বিকেল ৩টায় শুরু হওয়া সম্মেলনে ৫টা ৫৫ মিনিটে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন হেফাজতের আমির ও সম্মেলনের প্রধান অতিথি আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী।

বিষয়: বিবিধ

১০৮৫ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

206324
১২ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৩৩
খেলাঘর বাধঁতে এসেছি লিখেছেন : ৫৪ বছর বয়সে আমাদের নবী ৭ বছরের শিশু আয়শাকে বিয়ে করেছেন, বিষয়টি অনেকের দৃষ্টিতে যৌন অপরাধ মুলক।

নিজ পালক পুত্রের যুবতি স্ত্রীকে নবীজী নিজেই বিয়ে করেছেন। এটি একটি অনৈতিক, অসামাজিক কাজ।

সুতরাং ক্ষেত্র বিশেষে নবীকে তিরস্কার করা অন্যায় কিছু না।
১২ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ১২:৩০
155098
বেআক্কেল লিখেছেন : রাখেন আমনের নবীর তিরষ্কার! আগে আমনের বাপ-মায়ের ধর্মের নীচের কাহিনী পরিষ্কার করেন তারপরে নবীর কথা কইয়েন।

- ভগবতীরে যে খোদ ভগবান ধর্ষন করল হেই কথা কেন কহেন না?
- মামী রাধা নাবালগ ভাগিনারে লইয়া বৃন্দাবনে উলঙ্গ লীলা খেলিল হেই কথা কেন কহেন না?
- পার্বতীরে লইয়া দেবতারা যে উচ্চ মানের বলাৎকার
করিল হেই কথা কেন কহেন না?
- সাবালিকা মাইয়াগোরে পবিত্রা বানাইতে মন্দিরে প্রাঙ্গণে ধর্ষনের জন্য রাইখা আসে, মাইয়ার পিতা-মাতা। এইডা কোন ধরনের পবিত্রা হেই কথা আগে কন?
- কুমারী পূজার নাবালিকা মাইয়াগোরে বাবা-মা মন্দিরে রাইখা আসে, আর কদাকার সাধুদের মহা দন্ড নাবালিকা মাইয়াগোরে ছিড়িয়া ক্ষত বিক্ষত করে হেইডা কোথায় পাইলেন? হেই সময় সাধুর কথা আমনের মনে পইড়া সুড়সুড়ি লাগে নাকি?

বেতমিজির জায়গা পান নাই, সুড়সুড়ি লাগলে মন্দিরে যান এখনো লাখ লাখ সাধু ফ্রেস পানির লাইগা লালা ফেলতাছেন।
206346
১২ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:৪৩
বিন হারুন লিখেছেন : নাস্তিকদের উদ্দেশ করে বলেন, নাস্তিকরা তোমরা বুঝ! মুসলমান হয়ে যাও, আল্লাহকে মানো, না হয় এদেশে থাকতে পারবে না। নাস্তিক্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে হেফাজতে ইসলাম কিয়ামত পর্যন্ত লড়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ।’
206362
১২ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ১২:১২
বেআক্কেল লিখেছেন : হুজুরেরা যে বাংলাতেও দুর্বল হেই কথা আগে জানতাম না।

ইসলামী আন্দোলন কায়েম হয়না, ইসলামী আন্দোলন করতে হয়, তারপর গতি প্রাপ্ত হয়। এইটা ঠিক নদীর স্রোতের মত। তাকে বাধা দিলে শক্তি প্রাপ্ত হয়, নাহয় এক সময় তা স্তিমিত হয়। হেই জন্য এটাকে গতিশীল রাখতে নদীর পানি দিন দিন বাড়াইতে হয়। যেখানে বাধা আসে বন্যার মত ভাসিয়ে নিতে হয়।

আর কি বলিয়া মন্তব্য করিব বুঝতে পারছিনা।
206405
১২ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০১:৩৩
নূর আল আমিন লিখেছেন : ইনশাল্লাহ লড়াই করে যাবো

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File