জঙ্গিবাদ নামক জুজুর সৃষ্টার আসলে কারা??

লিখেছেন লিখেছেন কুরআনের যোদ্ধা ২৭ আগস্ট, ২০১৩, ০৫:০০:৪৭ বিকাল



গতকালকের আলোচিত একটা সংবাদ-

বগুড়ায় জঙ্গিদের বাড়ি ভাড়া দেওয়া ও তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে বগুড়া শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দুলাল হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার সকালে জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও বগুড়ার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) গাজিউর রহমান বাংলানিউজকে জানান, রোববার দিনগত রাতে দুলাল হোসেনকে আটক করা হয়েছে। তিনি শহরের ঠনঠনিয়া ইয়াছিন নগরের মৃত সারোয়ার হোসেনের ছেলে।

গাজিউর রহমান জানান, ২২ আগস্ট বিকেলে বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া জবানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ঠনঠনিয়া ইয়াছিননগর এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা দুলালের মালিকানাধীন ভাড়া দেওয়া বাড়ি থেকে অত্যাধুনিক আগ্নেয় ও ধারালো অস্ত্র এবং গোলাবারুদসহ ৩ জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়।

(তথ্য সূত্র- http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=ab4b6b292d9cc37d86b9bcb5e60e0058&nttl=26082013219595)

এইবার একটু ইতিহাস কপচাই।

বাংলাদেশে ইসলামী মৌলবাদী জঙ্গীদের বোমা হামলার সূচনা হয় কত সালে?

খোঁজ নিলে জানা যায় ১৯৯৯ সালে তিনটি ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ১৮ জন নিহত হলেও আহত হন দুশতাধিক মানুষ। এই বছর সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা হামলার ঘটনা ঘটে যশোরের টাউন হল ময়দানের বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সম্মেলনে। এ হামলায় ১০ জন নিহত হয় আহত হয় শতাধিক। এছাড়াও ১৯৯৯ সালের ৮ অক্টোবর খুলনার আহমেদিয়া মসজিদে বোমা হামলায় আট জন নিহত ও আহত হয় ৫০ জন।

২০০০ সালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার জনসভায় ৭৬ কেজি ওজনের পুঁতে রাখা বোমা উদ্ধার করা হয়। বোমা হামলার পর কাছেই একটা কারখানায় বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার হয়।

এছাড়া সম্ভবত আল্লাহর দল একটি সংগঠন কবি শামসুর রাহমানের বাসায় ঢুকে কবির উপর হামলা চালানোর চেষ্টা চালায়।

২০০১ সালে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৫ পাঁচটি বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এসব বোমা হামলায় ৫৯ জনের প্রাণহানী ঘটে ।

এরমধ্যে ঢাকার পল্টনে কমউনিস্ট পার্টির সমাবেশে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ৭ জন, রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ১১ জন, গোপালগঞ্জের বানিয়ারচরের গির্জায় ১০ জন নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের অফিসে ২১ জন, বাগেরহাট জনসভায় ৯ জন, সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগের নেতা সুরঞ্জিত সেনের জনসভায় বোমা হামলায় চার জন নিহত হয়। আহত হয় কয়েক শতাধিক।

গত আওয়ামী লীগ আমলের এই বোমা হামলাগুলোতে অন্তত ৭৬ জন নিহত হন। (তথ্য সূত্র- http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=cd8c2dee09b5a334e4b7268671960e5f&nttl=21082013218450)

বিস্ময়কর হলেও সত্য, এই সময়কালে দুইবার ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ একটি বোমা হামলারও বিচার সম্পন্ন করতে পারেনি। এর মধ্যে দুইটি হামলায় যারা মারা যান তারা নিরেট আওয়ামী লীগ সমর্থক ছিলেন।

এর মধ্যে উদীচী এবং চাষাঢ়া বোমা হামলায় শুরুতেই বিএনপি নেতাদের নাম ঢুকিয়ে মামলা দুইটার বারোটা বাজানো হয়। পরে আওয়ামী লীগ আমলে গোপালী পুলিশের তদন্তেই চার্জশিট থেকে এদের নাম বাদ পড়ে। স্রেফ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রায় ১০-১২ বছর মামলাগুলো ঝুলিয়ে রাখা হয়।

আরও বিস্ময়কর হচ্ছে যেই মুফতি হান্নানকে আওয়ামী লীগের নেতাদের উপর বিভিন্ন বোমা হামলায় দায়ী করা হয় তার ভাষ্যমতেই শেখ হাসিনার জনসভায় পুঁতে রাখা বোমা হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগের তৎকালীন ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ আব্দুল্লাহ আর গোপালগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা মাহাবুব আলী খান জড়িত ছিল।

(তথ্য সূত্র- http://www.scribd.com/doc/149782920/Awami-League-leaders-involved-in-Hasina-murder-attempt)

উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালের ৩০ জানুয়ারি কোম্পানি মুফতি হান্নানের ছোটভাই ছাত্রলীগ নেতা মুন্সি আনিসুল ইসলামের নামে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার গোপালগঞ্জের বিসিক শিল্পনগরীর ৭ নম্বর প্লটের চার হাজার পাঁচশ বর্গফুট জমি বরাদ্দ দেয়। ২০১০ সালের ২৫ মার্চ এই কারখানার জমি বরাদ্দ বাতিল করা হয়।

(তথ্য সূত্র- http://www.kalerkantho.com/print_edition/print_news.php?pub_no=116&cat_id=1&menu_id=43&news_type_id=1&index=9)

এই জমিতেই মুফতি হান্নানের সাবান ফ্যাক্টরির আড়ালে বিশালাকৃতির সব বোমা তৈরি করা হয়।

বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা, বাসায় বিরাট বিরাট বোমা তৈরি হয়। অথচ বাঘ তা টের পায় মরতে বসার আগে আগে।

যাই হোক, আমার প্রশ্ন সেখানে না। আমার প্রশ্ন হইতেছে ঠিক কি কারণে জঙ্গীদের বিচার ঝুলায়া রেখে দিনের পর দিন রাজনীতি করা আর সুযোগ পাইলেই নিজেদের জঙ্গীবাদ দমনে সফলতার দাবী করা আওয়ামী লীগ আমলেই এইসব নতুন নতুন জঙ্গী সংগঠনের উত্থান হয়? (উল্লেখ্য, জেএমবির জন্মও ১৯৯৮ সালে।)

বিএনপি-জামাতের অনেক নেতার জঙ্গীদের প্রতি মদদের কথা জানা যায়। তবুও এরা বেশ বড় কয়েকটা জঙ্গীরে ঝুলাইতে পারলেও জঙ্গীদের প্রতি ন্যূনতম সহানুভূতি না থাকার দাবী করা আওয়ামী লীগের কেন এদের ঝুলাইতে কষ্ট হয়? (উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের হুইপ মির্জা আজমের ভগ্নিপতি বিএনপি আমলে ফাঁসির রায় হওয়া জঙ্গী শায়খ আব্দুর রহমান।)

শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্যে বোমা পুঁতে রাখা মুফতি হান্নানকে আওয়ামী লীগ সরকার কেন ধরতে পারে না? (মুফতি হান্নানকে বিগত বিএনপি সরকারের আমলে ২০০৫ সালের আগস্টে গ্রেপ্তার করা হয়।)

রাজনীতিতে নাকি লাশকে কখনও কবর দিতে হয় না। সময়ে সময়ে জিন্দা করে খেলা দেখাইতে হয়। জঙ্গীদের নিয়া রাজনীতি করতে আর কতদিন এইভাবে এই লাশটা কবর না দিয়ে ফেলে রাখা হবে এইটা একটু জানতে চাই।

বিষয়: বিবিধ

২০১৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File