এবার তুরস্ক

লিখেছেন লিখেছেন মোঃ হাম্মাদুর রহমান ০২ জুন, ২০১৩, ১০:২৭:১৪ সকাল

তুরস্ক প্রতিবেশী সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে পশ্চিমাদের মন পাওয়ার আশায় বিদ্রোহীদের সমর্থন দিয়েছিল । ফলশ্রুতিতে ন্যাটো তুরস্কের প্রতিরক্ষার জন্য তুরস্ককে বেলেস্তিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করে । কিন্তু শেষপর্যন্ত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তুরস্কও বিক্ষোভের বাইরে রইল না । সামরিক ব্যারাক ভেঙ্গে শপিংমল বানানোর পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হলেও এখন তা বিরাট আকার ধারণ করেছে । পশ্চিমা মিডিয়া এতে নাক গলিয়েছে । তুরস্কের বর্তমান সরকার ইসলামপন্থী ও ধিরে ধিরে তুরস্ক ইসলামি রাষ্ট্রে পরিণত হতে যাচ্ছে এসব কথা বলে ক্ষেপীয়ে তোলে সেক্যুলারবাদীদের ।

এখন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রজব তাইয়্যেব এরদোগানের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করেছে দেশটির জনগণ। তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের তাকসিম চত্বরে প্রায় এক লাখ মানুষ তার পদত্যাগের দাবিতে এ বিক্ষোভ করে।

শহরের কেন্দ্রস্থলে পার্কের গাছ কেটে শপিং মল নির্মাণ প্রকল্প বাতিলের দাবিতে প্রথম এ বিক্ষোভ শুরু হয় তবে এখন তা এরদোগানের পদত্যাগের দাবিতে রূপান্তরিত হয়েছে। অটোম্যান সাম্রাজ্যের সময়কার একটি সামরিক ব্যারাক রয়েছে তাকসিম চত্বরে এবং সেই ব্যারাককে শপিং মলে পরিণত করতে চাইছে তুর্কি সরকার।

শুরুতেই পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর ব্যাপক মাত্রায় টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে এবং ছত্রভঙ্গ করতে ধরপাকড় চালায়। সেইসঙ্গে বহু মানুষকে আটক করে এবং তাদের ওপর পানিকামান ব্যবহার করে পুলিশ। এ ছাড়া, হাজার হাজার মানুষকে তাকসিম চত্বরে পুলিশ আটকে রাখে; তাদের সেখান থেকে সরতে দেয়া হয়নি।

ক্ষুব্ধ জনগণ এরদোগানকে ফ্যাসিস্ট ও ‘নব্য সুলতান’ বলে আখ্যায়িত করে। তারা ব্যানার বহন করে যাতে লেখা ছিল এ দমন-পীড়নের জন্য জাস্টিস অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট পার্টিকে দায় নিতে হবে। এ সময় তারা সরকারের পদত্যাগ দাবি করে। প্রতিবেশি সিরিয়া ইস্যুতে এরদোগানের অবস্থানেরও নিন্দা জানায় বিক্ষোভকারীরা। এরইমধ্যে এরদোগানও স্বীকার করেছেন যে, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেছে। আর প্রেসিডেন্ট ওমর গুল বলেছেন, বিক্ষোভ উদ্বেগজনক ও চিন্তার পর্যায়ে পৌঁছেছে।

এদিকে, তাকসিম চত্বর থেকে ব্যাপকভাবে কালো ধোয়া উড়তে দেখা গেছে। তবে ধোয়া সৃষ্টির কারণ জানা যায়নি।

এ থেকেই বোঝা যায়, পশ্চিমাদের প্রধান শত্রু স্বৈরশাসক নয়, পশ্চিমারা ইসলামকে প্রধান শত্রু মনে করে ।

এই আন্দোলন থেকে হয়তো বড় কিছু ঘটবে না । কিন্তু ভবিষ্যতে কোন সিদ্ধান্ত নিতে হলে তুরস্কের সরকারকে অনেক ভাবতে হবে । সুতরাং এ আন্দোলনকে পশ্চিমাদের সতর্ক সংকেত হিসেবেই ধরে নেওয়া যায় ।

বিষয়: আন্তর্জাতিক

১৫৯১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File