কিছু মানুষের লোভ এবং অজ্ঞতার কারণে বজ্রপাতে মানুষের প্রাণহানি বৃদ্ধি পাচ্ছে!

লিখেছেন লিখেছেন আহমদ মুসা ২৮ মে, ২০১৬, ১০:৩৭:৩১ রাত



বর্ষার মৌসুমে এতদাঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশে যেমন পরিবর্তন আসে তেমনি আবহাওয়া ও আকাশের অবস্থাতেও তা লক্ষ্য করা যায়। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ও ঝড়ো বাতাসের কারণে মেঘের সাথে মেঘের ঘর্ষণে বজ্রপাত সৃষ্টি হয়ে প্রচন্ড শক্তিতে বিদ্যুুৎ উৎপন্ন হয়।

বৃটিশ শাসনামলে ভারতীয় উপমহাদেশের বজ্রপাত প্রবণ অঞ্চলে এক ধরনের ধাতব পিলার সাদৃশ কতগুলো বোতল আকৃতির বস্তু মাটির মধ্যে পুতে রাখা হয়েছিল যা পিতল, তামা, লোহা, টাইটেনিয়ামসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক আকর্ষণ সমৃদ্ধ ধাতু দিয়ে তৈরী। ইলেক্ট্রিক্যাল ফ্রিকোয়েন্সী অনুযায়ী এই বোতলগুলো একটি থেকে আরেকটির নির্দিষ্ট দুরত্বে স্থাপন করা হয়েছিল।



বজ্রপাত হওয়ার সময় যে ধরনের ইলেকট্রিক চার্জ সৃষ্টি হয় তা এই বোতলগুলো সরাসরি এবজর্ভ করে আর্থিংয়ের কাজ করে। এতে ঝড়ো হাওয়া ও মেঘলা আকাশে বজ্রপাত সৃষ্টি হলেও মানুষ ও পশু পাখির তেমন ক্ষতি হতো না। মানুষ ও পশুপাখি আক্রান্ত হলেও মারা যাওয়ার আশংকা কম থাকতো।

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর কিছু অসাধু অজ্ঞ লোভী মানুষ পিলার সাদৃশ্য এসব বোতলকে সীমান্ত পিলার মনে করে এবং এতে মূল্যবান ধাতু লুকিয়ে রেখেছে ভেবে মাঠি থেকে কুড়িয়ে এসব খোলা বাজারে বেচা বিক্রি করতে থাকে।

অথচ এই প্রযুক্তিটি বৃটিশ আমলে বজ্রপাতের প্রাদুর্ভাব থেকে মানুষকে রক্ষার জন্যই দেশের বজ্রপাত প্রবণ অঞ্চলগুলোতে মাটির নীচে পুতে রাখা হয়েছিল।

পাকিস্তান আমল থেকে শুরু করে বাংলাদেশ আমলের শুরুর দিকে আমাদের দেশের প্রায় প্রতিটি থানায় ও গ্রামে প্রয়োজন অনুযায়ী এ ধরনের বোতল নির্দিষ্ট দুরুত্বে পুতে রাখা ছিল।



কিন্তু বর্তমান প্রজন্ম এই বস্তুটি যেমন দেখতে পাই না তেমনি এই প্রযুক্তিগত উপকারী জিনিসটি সম্পর্কে তেমন অবগতও নয়। অজ্ঞতা ও লোভী মনোভাবের কারণে আমরাই আমাদের বিপদ ডেকে আনছি!

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বজ্রপাতে আমাদের দেশে যে পরিমাণ মানুষ মারা যাওয়ার খবর পত্রিকায় বের হয়েছে তাতে নতুনভাবে পুরাতন এই প্রযুক্তি ব্যবহার বা তার চেয়েও বেশী কার্যকরী নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের উপর গুরত্ব দেয়া উচিত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

বিষয়: বিবিধ

২০৭৩ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

370356
২৯ মে ২০১৬ রাত ০৩:২৭
কুয়েত থেকে লিখেছেন : এতে ঝড়ো হাওয়া ও মেঘলা আকাশে বজ্রপাত সৃষ্টি হলেও মানুষ ও পশু পাখির তেমন ক্ষতি হতো না। মানুষ ও পশুপাখি আক্রান্ত হলেও মারা যাওয়ার আশংকা কম থাকতো ভালো লাগলো ধন্যবাদ
370365
২৯ মে ২০১৬ সকাল ০৬:৪৩
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : বজ্রপাতে আগেও মানুষ মারা গেছে, কিন্তু এইবার এতোগুলো মানুষ একসাথে মারা যাওয়া সত্যিই ভাবার বিষয়।
অনুসন্ধানী পোস্ট। ধন্যবাদ জনাব।
370367
২৯ মে ২০১৬ সকাল ০৬:৪৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এখন অনেক টাওয়ার হয়েছে। মোবাইল ফোন এবং বিদ্যুত লাইন এর । এই টাওয়ারগুলিতে লাইটনিং এরেষ্টর স্থাপন করেও এই কাজ করা যায়।
370374
২৯ মে ২০১৬ সকাল ০৭:৩৮
শেখের পোলা লিখেছেন : কর্তৃপক্ষের অত সময় নেই, কেননাা জনগনের হাতে আর ভোট নামের বস্তুটি নাই। আর তারা টাকা ভাগাভাগী নিয়ে ব্যস্ত আছে।
370395
২৯ মে ২০১৬ দুপুর ০২:২৫
হতভাগা লিখেছেন : এখনকার বেশীর ভাগ প্রাকৃতিক বিপর্যয় মনুষ্য সৃষ্ট

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File