ব্লগিংয়ে আসার প্রেক্ষাপট, কি পেলাম ব্লগ থেকে, আমিই বা কি দিতে পারলাম?
লিখেছেন লিখেছেন আহমদ মুসা ২১ মে, ২০১৪, ০৭:৩২:৩৮ সন্ধ্যা
হঠাৎ আমার প্রোফাইল চেক করতে গিয়ে দেখলাম বিডিটুডে ব্লগ সাইটে আইডি খুলেছি আর মাত্র একদিন পরেই এক বছর পূর্ণ হবে।
দীর্ঘদিন ধরে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও ব্লগ নিয়ে কোনদিন চিন্তা ভাবনা করিনি। কোন ব্লগ সাইটে ভিজিট করার আগ্রহ কোনদিন সৃষ্টি হয়নি। অফিসে আমার এক কলিগের পিসিতে প্রায় সময়ে সোনার বাংলা ওয়েব পোর্টাল ওপেন করা দেখতাম ফেইসবুকের মত সার্বক্ষণিক। তার দেখাদেখিতে আমিও সোনার বাংলা সাইটের হোম পেইজটি ওপেন করতাম বিভিন্ন পত্রিকার লিংক সহজে পাওয়ার জন্য। কিন্তু কোনদিন ব্লগ সাইটে নজর দেয়ার অাগ্রহ সৃষ্টি হয়নি।
ব্লগ সাইটে ভিজিট না করলেও দৈনিক আমারদেশ এবং নয়াদিগন্তের অনলাইন এডিশনে বিভিন্ন নিউজের উপর পাবলিক কমেন্টের সুযোগ গ্রহণ করতাম। বহুল প্রচারিত জনপ্রিয় পত্রিকা দৈনিক আমারদেশ কর্তৃপক্ষ সম্ভবত প্রতি সপ্তাহে একবার কি দু’বার তাদের প্রিন্ট ভার্ষণে বিভিন্ন নিউজের উপর পাঠকদের নির্বাচিত কমেন্টগুলো প্রকাশ করতেন।
আমি সাধারণত ফেইসবুকের আমার ahmad musa আইডি ব্যবহার করেই আমার মন্তব্যগুলো করতাম।
হঠাৎ একদিন আমার এক কলিগ আমারদেশ পত্রিকার সে সময়ের দু’দিন পূর্বের একটি কপি হাতে নিয়ে আমার উদ্দেশ্য বললেন ঐ মিয়া! চা পান করান! আপনার কমেন্ট প্রিন্ট ভার্ষনে প্রকাশিত হয়েছে। সম্ভবত আমার কমেন্টটি ছিল পাকিস্তানী স্কুল ছাত্রী মালালা ইউসূফজাইয়ের ব্যাপারে প্রকাশিত একটি নিউজের উপর বেশ লম্বা একটি মন্তব্য। পত্রিকাটি হাতে নিয়ে চোখ বুলিয়ে দেখলাম আমার পুরো মন্তব্যটির একটি নির্বাচিত অংশ মাত্র। গোটা মন্তব্য নয়। যাহোন বেশ ভাল লাগলো। আমার মতো একজন অধমের মন্তব্য বহুল প্রচারিত এবং দেশের সর্বাদিক জনপ্রিয় পত্রিকায় প্রিন্ট ভার্ষণে দেখে খুবই পুলোকিত হলাম। খুশীতে কলিগকে পকেটের সাস্থ্যহানি করে চা-ও পান করালাম!
চট্টগ্রামের একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নামকরা অধ্যাপকও মাঝে মধ্যে পত্রিকার নিউজের উপর মন্তব্য করতেন। তিনি আমার দু’য়েকটি মন্তব্য পড়ে আমাকে খুবই উৎসাহ দিলেন। কোন একদিন উক্ত অধ্যাপকের চেম্বারে চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক একটি অনলাইন পত্রিকা http://www.ctgtimes.com ওয়েব পোর্টালের সম্পাদক জনাব মাসরুর জোনায়েদ সাহেবের সাথে দেখা হল। তাদের পত্রিকার সাথে http://www.ctgblog.com নামে একটি ব্লগ সাইটও চালু ছিল। কথা প্রসঙ্গে তাদের ব্লগ সাইটে একটি একাউন্ট খুলে লেখালেখি করতে পরামর্শ দিলেন আমাকে। তার কথায় সেখানে একাউন্ট খুলেছিলাম। কিন্তু নিয়মিত লেখালেখি তেমন করা হয়নি।
এরই মাঝে হঠাৎ একটি বায়বীয় ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাড়ী ছাড়তে হলো। দেশের রাজনৈতিক অবস্থাও নাটকীয়ভাবে জটিল হয়ে গেল। পূর্ব থেকেই চালু থাকা প্রতিদিন মানুষের খুন খারাবী ও রক্তপাত নিত্যদিনের ঘটনা, যা এখনো রয়েছে। রাজনৈতিক জটিল সমীকরণে অত্যন্ত অন্যায়ভাবে মিথ্যা এলজাম দিয়ে আমাকে হয়রানী করা শুরু করলেন গ্রামীন কিছু টাউট-বাটপার টাইপের মানুষ। এসব চরিত্রহীন টাউট টন্নীগুলোর না আছে কোন সুনির্দিষ্ট পেশা, না আছে উপার্জনের কোন বৈধ উৎস। কিন্তু সুস্থ্য সমাজ বির্নিমানের প্রতিবন্ধক এসব মানব কীটগুলোর সাথে নষ্ঠ রাজনীতির দূর্গন্ধ লেগে থাকার কারণে কোন ভাল মানুষ তাদের ধারে কাছে ঘেষতে অস্বস্তিবোধ করে। অথচ তারাই সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ করছে। গ্রামীন হাটবাজার, বিয়ে শাদী, সামাজিক আচার অনুষ্ঠান, জাগা জমি ক্রয় বিক্রয়ে যেন এসব মানব কীটগুলো এক অলিখিত স্বপক্ষভুক্ত সম্প্রদায়। কারো বাড়ী নির্মাণ, স্কুল কলেজে ছাত্রীদের ইভটিজিং থেকে শুরু করে যাবতীয় সামাজিক অনিষ্ঠকর কাজকর্মের সোল এজেন্সীর দায়িত্ব নিজেরাই কাধে তুলে নিয়েছে এরা।
এসব সামাজিক মানব কীটগুলোর অত্যাচারের সাথে যোগ হয়েছে আগুণে পেট্রোল ঢেলে দেয়ার মতো গজব আলীর চাকু হাতে তাড়া করতে লাগলো লাইসেন্সধারী পোষাকী সন্ত্রাসীদের উৎপাত! বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় এসব সামাজিক মানবকীট এবং লাইসেন্সধারী পোষাকী সন্ত্রাসীরা যেন একে অপরের আত্মার আত্মীয়। এ যেন চোরে চোরে মাস্তুতু ভাই। সামাজিক মানবকীট এবং লাইসেন্সধারী পোষাকী সন্ত্রাসীদের যৌথ প্রযোজনায় বিরাম গতিতে চলমান নারকীয় বিভিষিকাময় পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ যে কত অসহায় তা কোন মিডিয়ায় তুলে ধরাটাই যেন কবিরা গোনাহের কাজ! নারায়নগঞ্জের পেনেল মেয়র নজরুল ইসলাম এবং ইলিয়াছ আলীর মত যদি ভিকটিম হাইপ্রোফাইল হয় তবে হয়তো মিডিয়াতে কিছুটা হৈ চৈ হয় অল্প কয়েক দিনের জন্য। আবার সে ক্ষেত্রেও ঘটনা সফলভাবে ধামাচাপা দিতে ভূমিকা না রাখার অপরাধে শাড়ীর আচঁলে পেচানো সহকারী এটর্নী জেনারেলকেও টয়লেট টিস্যুর মতো ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করতে দেখা যায়।
বলছিলাম নিজের ব্লগিংয়ে আসার প্রেক্ষাপট। সামাজিক মানবকীটগুলোর অত্যাচার এবং লাইসেন্সধারী পোষাকী সন্ত্রাসীদের ধাওয়া খেয়ে বাড়ী ছেড়ে আশ্রয় নিতে হলো শহরে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার এক কাজিনের বাসায়। আল্লামা সাঈদী সাহেবের মামলার জুড়িশিয়াল কিলিংয়ের ফরমায়েশী হুকুম জারিকে কেন্দ্র করে গোটা দেশ প্রতিবাদমুখুর হয়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। অগনিত প্রতিবাদী জনতার উপর অত্যাচার নেমে আসলো ক্ষমতার মোহে অন্ধ কিছু অপরিনামদর্শী রাজনৈতিক অঙ্গনের খেলোয়াড়দের পক্ষ থেকে। স্বাধীন দেশের নিরাপরাধ মানুষের রক্তে রঞ্জিত হলো দেশের জনপথ। এর এক মাস পর হেফাজতের উপর হয়ে গেল আরেক দফা ইতিহাসের নিকৃষ্টতম ভয়াবহ নিষ্ঠুরতা এবং গনহত্যা।
প্রতিদিন অফিস থেকে বাসায় ফিরে কাজিনের ল্যাপটপে বসেই ফেইসবুক এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোতে দেশের সার্বিক খোজ খবরের আপডেট জানতে ব্যস্ত হয়ে যেতাম। মোবাইলেই যোগাযোগ রাখতাম বাড়ীতে। আমার বৃদ্ধ মা জীবন দিবসের বিকাল বেলায় এসে নিজ সন্তানের উপর অনাকাংখিত মুসিবত দেখে খুবই ভেঙ্গে পড়লেন। আব্বাও খুব অসহায় হয়ে গেলেন। আমাদের বংশের কেউ অতীতে কোনদিন মামলা মোকাদ্দমায় জড়াননি। গ্রামীন সহজ সরল বাবা মা’র সন্তান যে কিনা এলাকাতে মোটামোটি একজন ভাল মানুষ হিসেবে সবার কাছে পরিচিত তার উপর এমন মিথ্যা এলজাম দিয়ে হয়রানীর উদ্দেশ্য বাড়ী ছাড়া করার ফলে মা’বাবার বার্ধক্যের সময়ে যেখানে কাছে থাকাই দরকার ছিল। সেখানে সাময়িকভাবে বঞ্চিত হলাম তাদের খেদমত করা থেকে। নয় মাসের অন্তসত্বা স্ত্রীর সার্বক্ষনিক পাশে থেকে যেখানে তার মনে সাহস যুগিয়ে সরাসরি খোজ খবর রাখার কথা সেখানেও বঞ্চিত হলাম প্রিয়তমা স্ত্রীর পাশে থাকতে।
কাজিনের ল্যাপটপে ফেইসবুকে এক বন্ধুর সাথে চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে বিডিটুডে ব্লগ সাইটের একটি সুন্দর লেখা পড়ার আমন্ত্রণ পেলাম। ইতোপূর্বে আমি সিটিজিব্লগ সাইটে প্রায় পনেরটির বেশী ব্লগ পোস্ট করেছিলাম। কিন্তু আমার ব্লগের পাঠক তেমন পাওয়া গেল না। একটি লেখাতেও কেউ কোন মন্তব্যও করলো না। পাঠক না থাকা এবং মন্তব্য না পাওয়ার কারণে সিটিজিব্লগ সাইটে লেখা পোষ্ট করতে আগ্রহ হারিলে ফেললাম। হয়তো উক্ত ব্লগ সাইটটি তেমন পরিচিতি না থাকার কারণেই এ অবস্থা হয়ে থাকতে পারে।
লেখাটি পড়ে আমার মনেও আগ্রহ জাগলো বিডিটুডে ব্লগে একটি একাউন্ট খুলে অন্যন্যাদের লেখা পড়ে নিত্য নতুন কিছু জানার পাশাপাশি নিজের অনুভুতিও শেয়ার করবো অন্যদের সাথে। সে রাতের পরদিন অফিসে এসেই আহমদ মুসা নামের এ আইডি তৈরী করেছিলাম। তখন থেকেই এই ব্লগ সাইটের সাথে জড়িত হয়ে গেছি। আমার পরে অনেকে আইডি খুলে আমার চেয়েও অনেক বেশী ব্লগ পোষ্ট করেছেন। অনেকে যথেষ্ট জনপ্রিয়তাও পেয়েছেন তাদের শক্ত হাতের ক্ষুরধার লেখনীর কারণে। লেখার হাত শক্ত থাকায় তারা পাঠকের মনও জয় করে নিয়েছেন। আমিও একজন পাঠক হিসেবে সে সব লেখকদের দারুণ ভক্ত। আমি যেমন ছোট্ট মানুষ তেমনি ভাল কিছু লিখতে না পারার কারণে পাঠকের মন জয় করতে পারি না। এ জন্য আমি পাঠকদের সারিতেই থাকি বেশীর ভাগ সময়। এ কারণে আমি ব্লগার হিসেবে পরিচিত না হলেও অনেকের কাছে মন্তব্যকারী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছি। এতেই আমার আনন্দ। সম্ভবত আমার লিখিত পোস্টের চেয়েও মন্তব্যের পরিমাণ বেশী হবে। অথচ আমি এসব মন্তব্যগুলো এতোদিন সংগ্রহ করিনি। সেদিন এক বন্ধুর পরামর্শে মন্তব্যগুলো সংগ্রহ করতে গিয়ে বিপাকে পড়ে গেলাম। কখন কার ব্লগে কি ধরনের মন্তব্য করেছি তা তো মনে করতে পারছি না!
যাহোক আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমিও আপনাদের সবার জন্য দোয়া করছি।
পূর্বের পোস্টঃ প্রবাসীদের নিয়ে নাটকে অবমাননাকর উক্তির প্রতিবাদ
বিষয়: বিবিধ
৩৪৯৫ বার পঠিত, ৯৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দোয়া রইলো ।
আপনার লেখাতে মা'শায়াল্লাহ অনেক শক্তি আছে। দোয়া করছি আল্লাহ যেন আপনার লেখাতে দিন দিন বরকত দান করেন।
লাল গোলাপের শুভেচ্ছা:
আপনার জন্য খাটি বাংগালী মিষ্টি
আমার মনের কথা বলেছেন ভাই আসেন কোলাকুলি করি।
ব্লগিং জগতে আপনার আগমন ইতিহাস যেনে আমার মত অনেকেই উৎসাহিত হবেন।
তবে বিঃদ্রঃ বার্থডে উপলক্ষে আপনার ঘাড় ভেঙ্গে কিছু উদর পুর্তি করার চেষ্টা হবে।
আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং ব্লগীয় বর্ষফুর্তিতে চলে আসুন আড্ডায় মেতে উঠি। তখন দেখা যাবে কে কার পকেটের উপর দখলদারিত্ব বজায় রাখতে পারে।
আপনার কমেন্ট এবং লেখাগুলো বেশ মানের হয়ে থাকে। আপনার উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।
নিজেকে ধন্য মনে করছি আমার মত একজন নালায়েক অধমের লেখা মন্তব্যে মহান ব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছি।
আপনার লেখাগুলোও কিন্তু খুবই চমৎকার!
ধন্যবাদ। লিখতে পারেননা। কিন্তু লিখা দেখে এমনটি মনে হয়নি। পাকা হাতের লিখক মনে হয়েছে। আত্মবিশ্বাস আর নিয়মিত চর্চাই বড় বিষয়। আশা করি এবার লিখতে পারবেন। লিখবেন। খুব ভাল লাগল পড়ে।
শুভেচ্ছে।
শুভেচ্ছা ও সালগীরা মুবারক।
তবে আপনি লেখেন ভালই, লেখালেখি চালিয়ে যাবেন ইনশা আল্লাহ
এবার আসেন। শুভেচ্ছা লন, কোলাকুলি করি।
ফুল, কেক, মিষ্টি আর বিরিয়ানিও দিলাম।
সবশেষে চা বিস্কুট-
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমার মত একজন নগন্য মানুষের পাতায় আগমন দেখে।
নেন খান..
ঐ আবুইল্ল্যা! পিতাগোরাসরে ডাইক্যা লও! আল জাবের আর নিউটনরেও খবর দেও। এই মিয়া কয় কি? হেতিনি নাকি ব্লগে প্রচুর খাদ্যদ্রব্য দিয়েছে! আজ তার একদিন তো আমার সারা জীবন! অংক এবং হিসাব নিকাশ সব কইরালামু আজকেই!
স্রস্টার অস্থিত্ব নিয়ে লেখা আপনার ধারাবাহিক লেখাগুলো পড়েই আপনার ভক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। পরবর্তী দেখলাম একের ভিতর অনেক গুনের সমাহার! ভ্রমণ কাহিনীতেও আপনি সেরাদের কাতারে! ধন্যবাদ নালায়েক বান্দার গরীবালয়ে এসে ধন্য করার জন্য।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো
ব্লগিংয়ের সাথে আমার জড়িত হওয়াটাও একটি আঘাতের মত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে। জীবন যুদ্ধের বাঁকে বাঁকে অনেক ঘাত প্রতিঘাত মোকাবিলা করতে হয়। কোন কোন ঘটনা আবার কারো জীবনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে উপলক্ষ হয়ে থাকে। হতে পারে লেখালেখির জগতে আসাটাও এর পেছনে সে ধরনের কোন ভূমিকা কাজ করতে পারে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ মূল্যবান মন্তব্য রেখে যাওয়ার জন্য।
আল্লাহ পাকের ইচ্ছা, মেধা, আগ্রহ, আন্তরিক প্রচেষ্টা ও কর্ম-নিরবিচ্ছন্নতা।
আপনার লেখার ধরণ ও মান বেড়েছে।
যে কোন লেখা মানুষের মনে দাগ কাটে তিনটি কারণে। যদি কোন লেখায় এই তিনটি গুণই পাওয়া যায় সে লেখা অমর হয়ে ওঠেঃ
১- বিষয়বস্তু- যা হবে অধিকাংশ মানুষের জীবন ঘনিষ্ট
২- পরিমিত আবেগের প্রকাশভংগি- রাগ, ক্ষোভ, প্রেম-ভালোবাসা- যাই হোক তার প্রকাশ যেন হয় পরিমিত। এবং তা যেন অনেক লোকের মনের কথা বলতে পারে।
৩- সহজ, শৈল্পিক ও গতিময়তা- লেখার শুরুতেই থাকবে এক ধরনের যাদু ময়তা এবং এই যাদুর গতি চলতে থাকবে লেখার শেষ পর্যন্ত। লেখা শেষ করেও পাঠক মনে করবে- আরো লম্বা হলে ভালো হতো!
এই তিনটি বৈশিষ্ট্য এক সাথে বা এক দিনে আসে না। অনেক পড়াশুনা, কোন বিষয় নিয়ে নিজের আত্মার সাথে নিয়মিত কথোপকথন ও লেখার প্লান নিয়ে গভীর চিন্তা-ভাবনা করা।
আমার মনে হচ্ছে- আপনি সে দিকে এগিয়ে চলেছেন।
লেখক হতে চাইলে নিজকে লেখক হিসাবেই আগে ভাবতে হবে(ব্যবসায়ী, শিক্ষক বা বক্তা হিসাবে নয়। আমার ভালো লেগেছে- আপনি নিজকে একজন লেখক হিসাবেই দেখে থাকেন।)
আপনার জন্যে অনেক দোয়া রইলো।
আমাদের যাইতূন পত্রিকার জন্যে ছোট একটা লেখা দিন, প্লিজ।
মুহতারাম শ্রদ্বেয় ড. আবুল কালাম আজাদ স্যার আন্তরিক মোবারকবাদ ও খায়রে মখদম করছি।
আমি অতি নগন্য একজন মানুষ। পেশাগতভাবেও তেমন কোন উল্লেখযোগ্য প্রফেশনাল ব্যক্তি নই। আমার সম্পর্কে মোটামোটি সঠিক ধারণা পাবেন ড. আব্দুস সালাম আজাদী স্যার থেকে। উচ্চতর গবেষণার জন্য আপনি যে বছর বাংলাদেশ ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে সে বছরই আমি আপনার পুরাতন কর্মস্থল এবং আপনারই রেখে যাওয়া বিভাগে অত্যন্ত চোট্ট একটি পোস্টে চাকরিতে জয়েন করেছিলাম, এখনো আছি একই প্রতিষ্ঠানে। অবশ্য শুরুতে যে চেয়ারে বসতাম সে চেয়ারের সামান্য দু'য়েক চামছ দাম বেড়েছে-এ আর কি!
২০০২ সালের কোন এক তারিখের ঘটনা। ড. আজাদী স্যার আমাকে তার লিখিত একটি পান্ডুলিপি টাইপ করতে দিয়েছিলেন। লেখার বিষয় ছিল রাহমাতুল্লিল আলামীন, সাওয়ারে কায়েনাত বিশ্বনবী (সা) এর বাল্যকালের সীরত কেন্দ্রীক একটি ছোট নাঠিকা। ছোট্ট একটি লেখা, মাত্র ৩/৪ পৃষ্ঠা হবে সম্ভবত। লেখাটি টাইপ করতে গিয়ে বার বার আমার চোখ দিয়ে পানি আসতেছিল। আমি শুধু টাইপই করেছিলাম। অথচ আমার চোখ দিয়ে পানি ঝরতেছিল। খুবই আবেগ দিয়ে রাসুল (সা) এর বাল্যকালের সীরত লিখেছিলেন ড. আজাদী স্যার! টাইপ শেষ করে আজাদীকে স্যার প্রুফ দেখার জন্য দেয়ার সময়েও আমার চোখে পানি চল চল করতেছিল। অনেকদিন লেখাটির একটি কপি আমি সংগ্রহে রেখেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য লেখাটি আমি হারিয়ে ফেলেছি পরবর্তীতে। ব্যাপারটি আজাদী স্যারের মনে আছে কিনা জানি। তবে এ একটি বিষয় আমার অন্তরে খুব দাগ কেটেছিল।
আমার লেখার মান সম্পর্কে আপনি যা ধারণা করছেন তা একান্ত আপনার মূল্যায়ন। আমি নিশ্চতভাবেই জানি আমার লেখা মোটেও মান উত্তীর্ণ নয়। তবে আপনার মূল্যায়ন সম্পর্কে আমি আশা পোষণ করছি এবং খালেছ নিয়তে দোয়া প্রার্থনা করছি মহান আল্লাহ যেন আমার মধ্যে সে ধরণের গুন সৃষ্টি করে দেন।
নিয়মিত লেখালেখি চর্চার জন্য যে পরিমান সুযোগ সুবিধা দরকার, যে পরিমান অধ্যবসায় ও গভীর অনুশীলন ও পড়াশুনা করা দরকার সে সুযোগ এবং সে ধর্য্য যেন আমাদের মত নবীনদের মাঝে সৃষ্টি হয় দোয়া করবেন।
আমি নিশ্চতভাবেই জানি আমার মধ্যে লেখক হওয়ার কোনই যোগ্যতা নেই। তবে এ জিনিসটা যেহেতু চর্চা ও সাধণার মাধ্যমেও অর্জন করা সম্ভব সেহেতু কিছুটা আশাবাদী তো হতেই পারি যদি আপনাদের মত মহান ব্যক্তিদের আন্তরিকতাপূর্ণ উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা পাই!
আপনি অনেক মূল্যবান এবং খুবই দামী পরামর্শ দিয়েছেন। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি এবং আপনাদের কাছ থেকেও দোয়া চাই যেন উল্লেখিত গুনাবলীগুলো অর্জন করতে মনোযোগ দিয়ে আন্তরিকতার সাথেই সাধণা করতে পারি।
আজ থেকে ছয়/সাত মাস পূর্বে ফেইসবুকে আপনার সাথে বেশ কিছুক্ষণ চ্যাটিং করার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। ব্যাপারটি আপনার মনে আছে কিনা আমার জানা নেই। গত মাসখানেক আগে ড. আজাদী স্যারের সাথেও একবার অনেক্ষণ আলাপ আলোচনা করেছিলাম ফেইসবুকে। কিন্তু ইদানিং ফেইসবুকে আপনাদের কাউকেই একটিভেট দেখা যায় না।
যদি সম্ভবত হয় ফেবুতে অথবা অন্য কোন মাধ্যমে স্যারের সাথে যোগাযোগ করার সুযোগ হয় তবে বিস্তারিত জেনে নেয়ার সুযোগ গ্রহণ করতে ছাড়বো না কিন্তু! কিভাবে মাসিক জয়তুনের পাঠক হতে পারবো, কিভাবে জয়তুন পরিবারের সদস্য হতে পারবো!
শুভকামনা রইল ।
ব্যস্ততাই কর্ম মুখর মানুষের জীবনের এক অবিচ্চেদ্য অংশ। আপনার প্রতি দারুণভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমিও তাহলে ইদানিং কারো কারো প্রিয় ব্যক্তি হয়ে গেলাম!! অতিরিক্ত প্রিয় ব্যক্তি হলে কিন্তু খবর আছে! মনে আছে তো সেই পরটার সাথে ডিম ভাজির আ্ড্ডার কথা? পকেটের সাস্থ্য কিন্তু একদম ফতুর বানাইয়ে দিবো!
একজন ঈমান মানুষের চরিত্রের অবিচ্চেদ্য অংশই হলো বিনয় ও নম্রতা। কিন্তু আজ মুসলমানরা এসব সুন্দর সুন্দর সুন্নতগুলোকে নিজেদের জীবনে লালন করতে কার্পন্যতা করে।
আমার মাঝে এমন কিছুই নেই যে, প্রবীন এবং নবীন ব্লগাররা শিখতে পারবে। বরং কেউ যদি কিছু দেখে শিখতে চায় আমি সরাসরি আপনার কাছেই পাঠিয়ে দিবো।
ধন্যবাদ ভাল থাকুন। আমার জন্য দোয়া করবেন।
ইচ্ছে থাকলে অবশ্যই উপায় একটা না একটা হবেই। আপনার ইচ্ছার মধ্যে আরেকটু আন্তরিকতা বাড়িয়ে দিন। একটি শক্ত কাটের মধ্যে হাতুড়ি পিটিয়ে পেরেক ডুকানোর আগে সেখানে পূর্ব থেকেই পেরেকের জন্য কোন জায়গা বরাদ্ধ থাকে না। যখনই পেরেকের উপর প্রেসার দিয়ে চাপ দেয়া হয় তখন কাঠ পেরেকের জন্য জায়গা করে দিতে বাধ্য হয়।
একইভাবে আমাদেরকে সময় বের করার জন্য সে উদাহরণ থেকে কিছু শিখতে হবে।
আসলে ম্যারাথন মন্তব্যে আপনার জুরি মেলা ভার সেটা ব্লগের সবাই কমবেশি ওয়াকেবহাল!!
চালিয়ে যান। তবে কমেন্ট কালেকশনের আইডিয়াটা কিন্তু চমতকার!!
ধন্যবাদ আপনাকে ফেবুতে শেয়ার করার জন্য। ইদানিং ব্লগে খুবই কম আসা হয় কি না, শেয়ার না করলে হয়তো জানতামই না, প্রিয়জনের ব্লগীয় জীবনের নানা কাহিনী।
আপনার সাথে আমার ঝাগড়া করতে ইচ্ছে করে। কত সুন্দর একটা সুযোগ পেয়েও এক সাথে কক্সবাজার যাওয়ার সুযোগ হলো না।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। সাথে সাথে ভাবীকেও অনেক মোবারকবাদ জানাচ্ছি
(এটা অবশ্য অতীত মূখী হয়ে না বরং সামনের মুখী হয়েই ধন্যবাদ এবং খায়রে মখদম করছি।)
প্রিয় আহমেদ মুসা ভাই আপনাকে হৃদয়ের গভীর থেকে মুবারকবাদ।
আপনার মত বিনয়ী এবং বাতিলের অন্তরে কাপন সৃস্টিকারী ব্লগারকে শুভেচ্ছা জানাই।
আসলে আপনার মত কলম সৈনিক আল্লাহর দেয়া নেয়ামত। আল্লাহ আপনাকে লিখনী যোগ্যতা, বিনয়, হিকমাহ আধ্যাত্মিকতা সবই দিয়েছেন দোয়া করি আল্লাহ আপনাকে কবুল করে নিন।
জাজাকাল্লাহু খাইরান ভাইয়া আপনার উপলব্দি গুলো শেয়ার করার জন্য।
আল্লাহ আপনার কলমকে আরো শানিত করুন। আমিন।
আপনাকেও হৃদয়ের গভীর থেকে জানাই মোবারকবাদ এবং খায়রে মখদম করছি। ভাই আপনি আমার সম্পর্কে খুব বেশী উচ্চ ধারণা পোষণ করলেন যা মোটেই সঠিক নয়। আপনি যা ভাবছেন তার ধারে কাছেও আমি নই। আপনার প্রশংসাতে তো আমাকে মঙ্গল গ্রহের উচ্চতায় তুলে দিলেন! এতো উচ্ছতা থেকে নামবো কিভাবে? পড়লে তো হাড্ডি মাংশ কিছুই থাকবে না!
যে কোন বিষয়ে চর্চা করলে সে বিষয়ে কিছু না কিছু তো আয়ত্ব করা যায়! তাই নয় কি? ব্লগিংয়ে আসার পর থেকে নিজের বিশ্বাস এবং সমসাময়িক বাস্তবতার আলোকে একজন পাঠক হিসেবে কিছুৃ কিছু অনুভূতি প্রকাশ করার প্রয়াস চালাই। যাতে করে একজন ধর্য্যশীল এবং যোগ্য পাঠক হতে পারি সে চেষ্টাই করি মাত্র।
আমিও আপনার সাথে দোয়ায় শরীক হলাম- আমিন।
চমৎকার প্রকাশ। সময়ের চিত্র খুবই অল্পতেই প্রকাশ পেয়েছে।
এটা সত্য আপনি কম পোষ্ট দেন। পড়েন বেশী। উৎসাহ দেন আরো অনেক বেশী। তার অর্থ হল - আপনি মেধা গড়ার কারিগরের কাজটা করেন বেশী।
আমি আজাদ স্যারের সাথে একমত। আপনার মধ্যে তা আছে।
আমার প্রত্যাশা হল -
১) আপনি বিষয় সিলেক্ট করে অল্প লিখুন তবে বিষয় ভিত্তিক হলে আমাদের উপকার হবে।
২) আমার কাছে মনে হযেছে - আপনি আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গন নিয়ে লিখুন। তা হতে পারে শুধু মাত্র ৭১।হতে পারে সেকুলার।
আমাদের জন্য দোয়া আর বরাবরের মত উৎসাহ কামনা করছি।
আপনাদের মত প্রবীণ ব্লগার এবং বিভিন্ন জ্ঞানীরে পোস্ট পড়ে মাঝে মধ্যে নিজেও কিছু অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করি ব্লগে মন্তব্য করার ব্যবস্থা রাখার সুবাদে। হয়তো কারো কারো দৃষ্টিতে আমার অগোছালো ভাষায় মন্তব্যগুলো ভাল লাগে। এটা অবশ্য আমার প্রতি একান্ত দয়া এবং উৎসাহ দেয়ার কারণেই হয়ে থাকে। এখানে আমার যোগ্যতার কোন প্রকাশ নয়।
বিষয়ভিত্তিক লেখার জন্য জ্ঞানে যে মাহারত বা গভীরতা দরকার আমার তা নেই। তার পরেও চেষ্টা করে যাবো মনে যা কিছু উদয় হয় তা ভাষায় প্রকাশ করতে। এক্ষেত্রে আপনাদের দোয়া এবং উৎসাহ খুবই প্রয়োজন আমার। ইতিহাস ভিত্তিক ঐতিহাসিক ঘটনার আলোকে কিছু লিখতে হলো প্রচুর গবেষণামূলক জ্ঞান থাকা দরকার। আমার মত একজন ব্যক্তির পক্ষে কি সম্ভবত এসব বিষয়ে কলম ধরা?
প্রত্যেক মুসলিমের জন্য দোয়া অবশ্যই করা উচিত। আমিও আপনার জন্য দোয়া করি। আপনার থেকেও একইভাবে দোয়া পাওয়ার দাবী করছি।
প্রত্যেক বিশ্বাসী মুসলিম মাত্রই একেকজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি। যার যতটুকু সামর্থ ও সুযোগ রয়েছে অবশ্যই সে দায়িত্ব পালনে আন্তরিক হতে হবে, সর্বৌচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে দায়িত্ব পালনের। আজ আমাদের অনেক ভাইয়েরা সীমাহীন জুলুম নির্যাতন সহ্য করে জালিমের বন্দীশালায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। আমাদের সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করতে হবে ভাইদের পাশে দাড়ানো যার যার অবস্থান থেকে।
জাতীয় নেতৃবৃন্দের উপর যেভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে তা ইতিহাসের ধারাবাহিক নির্মমতার উদাহরণ। যুগে যুগে যে সব আকাবেররা শাসকগোষ্টীর রক্তচুক্ষকে ভয় না করে উম্মাহকে সঠিক পথে গাইডলাইন দিয়ে ঈমান তরুতাজা রাখার চেষ্টা করেছিলেন তাদের উপর বে-ঈমান মোনাফিক শাসকগোষ্টী চরম নির্যাতন চালিয়ে তাদের কন্ঠ স্তব্ধ করে দিয়ে ইসলামী আদর্শকে মুছে দিয়ে ব্যার্থ চেষ্টার ত্রুটি করেনি কেউ। কিন্তু ইতিহাস স্বাক্ষী মোনাফিকরা কালের বিবর্তনে, সময়ের চক্রে ঘৃণার পাত্র হিসেবে চিহ্নত হয়ে যায়। অপরদিকে মজলুম রাহবাবারই যুগের পর যুগ, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষ চিন্তার জগতে প্রভাব ফেলে টিকে থাকে। আজ থেকে হয়তো পঞ্চাশ/একশত বছর পরেই হয়তো অধ্যাপক গোলাম আজম, আল্লামা সাইদীসহ উম্মাহর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিয়ে গর্ভ করবে গোটা দুনিয়ার মুসলিম উম্মাহ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন