আশির দশকের বিএনপির সোনালী দিনগুলো নিয়ে আত্মতুষ্টি এবং বর্তমান অবস্থা
লিখেছেন লিখেছেন আহমদ মুসা ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১১:৫৭:০৩ সকাল
ইদানিং বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় বিএনপির রাজনৈতিক চিন্তাধারার প্রতি দুর্বল কিছু মানুষ আশির দশকের বিএনপি এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজপথের আন্দোলনমূখী সোনালী দিনগুলো নিয়ে বেশ আত্মতুষ্টিমূলক প্রচার প্রচারনা চালিয়ে বর্তমান বিএনপির রাজনৈতিক ব্যর্থতাকে আড়াল করার চেষ্টা লক্ষ্যনীয়।
আশির দশক আর বর্তমানের যুগ এক নয়। বর্তমানে অধিকার হারা মজলুম মানুষের জন্য বিএনপি তেমন কোন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। বিএনপিপন্থী কোন কোন মাঝারি গোছের বিদ্ধান সচেতন ব্যক্তির দৃষ্টিতে বর্তমান আওয়ামী সরকারকে হিংস্র বাঘের সাথে তুলনা করতে দেখা যাচ্ছে।
দেশের সচেতন মানুষের ধারণা তাদের এই অবজার্ভেশনটা সঠিক নয়। হিংস্র বাঘটাও এখন অনেক কৌশলী হয়ে গেছে। এখন সেই বাঘটার বাহুর নৈতিক বল যেমন নেই তেমনি দেশীয় মাটি ও মানুষের মেজাজের প্রতিফলন ঘটিয়ে সেই তেজোদ্ধীপ্ত শক্তিও নেই। নিজস্ব সাতন্ত্র ও সকীয়তা বলতে কিছুই বাকী নেই। হারিয়ে ফেলেছে সব। এই বাঘটাও এখন লেজকাটা শিয়ালের চেয়েও অনেক বেশী ধূতার্মী আয়ত্ব করেছে। সুন্দরী নারীর প্রতি লম্পট প্রতিবেশীর লোলপ দৃষ্টি শক্তিতে কিভাবে আগুন ধরানো যায় সে রকম বেইশ্যার দালালগিরিতে লিপ্ত রয়েছে বাঘটি। কিন্তু বিএনপি এক্ষেত্রে যেকোন ধরনের ভূমিকা রাখার যোগ্যতা ও অধিকার হারিয়েছে মীর জাফরের আদর্শিক আপন ভাইয়ের (জেনারেল মইন ইউ আহমদ) হাতে যখন নিজের ধারালো তলোয়ারটাই কোন কিছু যাচাই বাচাই না করে হাতে তুলে দিয়েছিল। এক্ষেত্রে কিছুটা হলেও জাতিকে আশার আলোক বর্তিকা নিয়ে স্বগৌরবে মাঠে ময়দানে উদ্ব্যেত বুকে দাড়িয়ে যাচ্ছে একটি প্রবল সম্ভাবনাময়ী শক্তি। যাদেরকে আজ "ইসলাম" নাম থাকার কারণে মূখে ভেংচি কাটছে বাংলাদেশ বিরোধী সকল শক্তি। এমন কি কোন কোন বাংলাদেশপন্থী ইন্টেলেকচুয়ালরাও তাদের অস্থিত্ব স্বীকার করতে চান না। অথচ তাই হচ্ছে বাস্তব সত্য। কিন্তু বাংলাদেশের আসল শত্রুরা এদেরকে বুঝতে ভুল করলেও চিনতে ভুল করেনি।
তাদের যুক্তি শুধু একটাই এরা ’ইসলামওয়ালা।’ সুতরাং জঙ্গী, মৌলবাদী, রাজাকার, চ্যাতনা বিরোধী ইত্যকার নিন্দাবাদে ঘায়েল করার সব ধরনের ফ্যাসিবাদী ফর্মূলা প্রয়োগ করে যাচ্ছে অবিরাম গতিতে।
এহেন পরিস্থিতিতে দেশের রাজনৈতিক সংকটের মূল সমস্যার পেছনে যে কয়েকটি পক্ষ জড়িত তাদের মধ্য আপাতত কাগুজে বাঘকে প্রধানতম একটি পক্ষ হিসেবে প্রকাশ্যে স্বীকার করা হচ্ছে। এখানেই বাংলাদেশপন্থীদের চিন্তাভাবনার যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। আওয়ামী লীগ নামের রাজনৈতিক শক্তিটির অপমৃত্য হয়ে গেছে অত্যন্ত করুণভাবে। শেখ হাসিনা বা তার দল আওয়ামী লীগের কার্যত কোন অস্থিত্বই নেই। আওয়ামী লীগ এখন ইন্ডিয়ান গোলাম দাসীর চেয়েও নিকৃষ্টতর কিছু জীবের মর্যাদাও পাচ্ছে না দেশের মানুষের কাছে। লাইসেন্সধারী পোষাকী সন্ত্রাসীদের তিন চার স্তরের নিরাপত্তা নিয়েও আওয়ামী ইউনিফর্ম ব্যবহার করে আজ এয়ারকন্ডিশন গাড়ীর রঙ্গিণ গ্লাসটা পর্যন্ত খুলতে সাহস পাচ্ছে না পাতি নেতা থেকে শুরু করে হাতি নেতারা পর্যন্ত।
জুতা বৃষ্টির বণ্যায় ভেসে যাওয়া থেকে শুরু করে কত ধরনের ঝড় তুফান অপেক্ষা করছে ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ হয়ে যাওয়া পথহারা অন্ধলোকগুলোর জন্য। মন্ত্রীসভার সদস্য হয়ে জাতে উঠার জন্য হামাগুড়ি দিয়ে লাইনে দাড়িয়ে পঙ্খজ শরমহীনদের কদমবুচি দিয়েই প্রমাণ করলো এই কাগুজে বাঘ আসলে কত নিকৃষ্টতর গোলামী আর দাসত্বের মাধ্যমে নিজের অসহায়ত্বই জাহির করেছে।
কিন্তু যাদের আত্মসম্মানবোধ কিছুটা হলেও এখনো আছে বলে দেশের অসহায় মানুষ ধারণা করে সেই বিএনপিই বা এক্ষেত্রে একটি স্বাধীন দেশের দায়িত্বশীল রাজনৈতিক সচেতন গোষ্টীর প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে কতটুকু ভূমিকা রাখতে পেরেছে?
অথচ কয়েকদিন আগেও আমরা দেখেছি এসব মন্ত্রী সান্ত্রীদের পরিষদ থেকে বিদায় বেলায় শেখ হাসিনার কদমবুচি নেয়ার প্রতিযোগিতা! এই সরল সমীকরণটাও যদি বাংলাদেশপন্থীদের বুঝে উঠতে আরো সময় ব্যয় করে তবে জাতির আকাশে যে কালো মেঘ জমা হয়ে তীব্র বজ্রপাতের গর্জনে প্রতিনিত কান জ্বালাপালা করছে তা থেকে উদ্ধারের প্রস্তুতি নিতে আরো কি পরিমাণ সময় অপেক্ষা করতে হবে আল্লাহই মালুম?
ল্যাংটো সভ্যতার মশালধারী জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে চিহ্নিত আমাদের প্রতিবেশী ইন্ডিয়ার (অনেকেই রসিকতা বলে থাকেন ল্যন্ডিয়ান) টালমাটাল বিস্ফোরন্মুখ স্বাধীনতাকামী জনতার দাবীকে মুছে দেয়ার জন্য বাংলাদেশকে গ্রাস করা অথবা বাংলাদেশে একটি অনুগত গোলামীর মানসিকায় পাশ করা একটি তথাকথিত এলিট গোষ্টী দরকার ল্যান্ডিয়ানদের কাছে। ল্যান্ডিয়ানদের এই প্রয়োজনীয়তা মিটাতে গিয়েই আজ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অপমৃত্যু হয়েছে।
এখন বাংলাদেশপন্থীদের দর কষাকষি বা নেগোশিয়েশন করতে হলে ল্যান্ডিয়ানদের সাথেই করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগকে বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের কোন পক্ষ হিসেবে স্বীকার করার অর্থই হচ্ছে বালকে জাতে তুলে নতুনভাবে প্রাণ সঞ্চার করার নামান্তর। বর্তমান সংকটে বাল কোন পক্ষই না। সুতরাং মৃত অজাবিন গাছের গোড়ায় পানি ঢালার প্রয়োজন নেই।
বিষয়: বিবিধ
২০১৬ বার পঠিত, ৩১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বিএনপির উচিত বাংলাদেশের মানুষের মনোভাব বুঝে চলতে শেখা ।
০ সেখানে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীই কাফি ।
কিন্তু কথায় আছে '' বাঙ্গালী শক্তের ভক্ত , নরমের যম ''
বেয়াড়া জাতিতে সাইজ করার জন্য শক্ত মুগুর হচ্ছে এই আওয়ামী লীগ।
আপনাকে অনেক মোবারকবাদ ও খায়রে মখদম করছি আমার ব্লগ পাতায় আগমনের জন্য।
আপনার এখানে সমস্যা আছে। আজ আমরা মুসলিম জাতি এই করনেই বিভক্ত হয়ে পরে আছি। কেননা আমরা সদা সর্বদা ইসলামকে আধুনিকতার নামে ইসলামাইজড করতে গিয়ে আসল ইসলামকে গুলিয়ে ফেলেছি। আজ আমাদেরকে ইসলামকে প্রতিস্ঠিত করার জন্য ইসলামকে গনতন্ত্রের পোষাক পরিয়ে ইসলামাইজড করার কোন দরকার আছে কি? ইসলাম কি আধুনিকতার বোঝেনা? ইসলামকি পুরোনে? ইসলামকি কেয়ামতের আগ পর্যন্ত পূর্ননয়?
আজ আমরা নতুন করে ইসলামাইজড করতে চাই। কেন? কারন আমরা দেখাতে চাই পশ্চিমা সমাজকে যে আমরাও ইসলামি গনতান্ত্রিক!!!!!
স্বর্নযুগে ইসলাম যেমন ছিল তেমনি থাকবে আর এই ইসলাম কিয়ামতের আগ পর্যন্ত এই একই আইন দিয়েই চলবে সেটাই ইসলামের সৈন্দয্য। তাই গনতন্ত্রকে ইসলামের পোষাক পরানোর অপচেস্টার কোন মানে হয় না। কেননা মওদুদী সাহেব ও তার বইয়ে লিখেছেন "গনতন্ত্র কুফরি মতবাদ"
গনতন্ত্র বলতে যদি আমরা খোলাফায়ে রাশেদার সেই সোনালী যুগকেই মডেল হিসেবে সংজ্ঞায়িত করতে পারি তাহলে সেই গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের আন্দোলন করতে কোন আপত্তি থাকা উচিত নয়।(????)
আমাদের যানা উচিত খুলাফায়ে রাশেদিনরা কেউ গনতন্ত্রীক ছিলেন না তারা ইসলামের আসল শাসক ছিলেন। বলতে পারেন তাদের মতো শাসক আল্লাহ আমাদেরকে দিন যারা তাদের আদর্শ অনুসরন করে শাসন করবে।
ভাই, হেকমাহ অবলম্বন করেন তবে গনতন্ত্রকে নতুন ইসলামাইজড করার হেকমাহ অবশ্যই গর্হিত কাজ।
আর রসুল (সা) "রসুল" কথাটি যে অমিট করতে বলেছেন তা ছিল কাফের/মুশরেকদের সাথে চুক্তি করার সময়। এটা নিশ্চই আপনি যানেন।
যেমন ধরেন, আমরা বাংলাদেশ ইসলামিকক রাস্ট্র হয়ে গেলাম এখন আমরা আমাদের পার্শবর্তি দেশ ভারতের সাথে চুক্তি করলে তারা চুক্তির সময় আপত্তি করলে আমরা তাদের ছার দিব।
কিন্তু বাংলাদেশের মধ্যেই যাদি বিসমিল্লাহ,রসুল,আল্লাহর উপর ভরাসা তুলতে বলে তা কি হবে? কখনই নয্ কেননা এখানে মুসলিম প্রধান। এখানে হেকমাহ অবলম্বন করে সেই কথা গুলো তোলা মানেই তাদরে সাথে অংশী হওয়া।
তাই কাফের,মুশরিক,ইহুদি,মুনাফিক এই ৪ জাতির সাথে সাথ দেবার মুসলিমের কোন মানেই হয় না।
নিশ্চই যে যে জাতির অনুসরন করবে সে কেয়ামতের দিন তাদে সাথেই উঠবে।
আমি মনেহয় একটু করা কখাই বলে ফেললাম আমাকে ভুল বুঝবেন না। আমি ইসলামকে গনতন্ত্রর লেবাস দারা ইসলামাইজড করার পক্ষপাতিত্ব নই।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ব্লগ পাতায় আগমনের জন্য।
ধন্যবাদ অধম গরীবের কুটিরে আগমনের জন্য।
বিএনপি বা খালেদা জিয়ার এত বড় একটা ভুল নিয়ে কেউ তেমন গবেষনা মূলক লিখছে কি না জানি না, মাহমুদুর রহমানের লেখায় আমরা প্রথম মঈন সাহেবের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে পারি। ম্যাড়াম খালেদার ভাই এসকান্দর মির্জার ক্লাস মেট হিসাবে ধারালো তলোয়ারটা মঈনকে তুলে দিয়েছিল। আর মঈন সাহেব সেই তলোয়ারটা দিয়েই ভারতের পদতলে বাংলাদেশকেই জব করে দিল ।
বিষয়টা নিয়ে আপনার গবেষনা মূলক একটা পোস্ট আশা করছি। যাজ্জাকাল্লাহ খায়ের।
মন্তব্য করতে লগইন করুন