বিভিন্নমূখী শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে আমাদের ভবিষ্যৎ গন্তব্যেস্থল কোথায়?
লিখেছেন লিখেছেন আহমদ মুসা ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৫:৩৫:৩১ বিকাল
বিশিষ্ট ব্লগার সিটিজি৪বিডি জনাব মুহাম্মদ জামাল উদ্দীন ভাইয়ের পোস্টকৃত একটি ব্লগে আমি মন্তব্যে লিখতে শুরু করেছিলাম। কিন্তু বিষয়টি অল্প কথায় বুঝানোর দক্ষতা না থাকার কারণে আমার মন্তব্যেটি বেশ লম্বা হয়ে যাচ্ছে বিধায় আলাদা ব্লগ আকারে পাঠকদের খেদমতে পেশ করলাম। পড়ে মন্তব্যের মাধ্যমে আপনাদের মতমত জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো।
আমাদের জাতি স্বত্তার সুষ্ঠু বিকাশের ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় হচ্ছে তিন-চারমূখী শিক্ষা ব্যবস্থা। এই বহুমূখী শিক্ষা ব্যবস্থার কারণেই জাতি আজ বহুদা বিভক্ত। সাধারণ শিক্ষা এবং মাদ্রসা শিক্ষা- এভাবে স্থায়ী পার্থক্য সৃষ্টির ফলে আমাদের সমাজে শিক্ষার প্রভাবে তৈরী হয় জগাখিচুড়ী মার্কা বিভাজন।
বৃটিশরা আসার আগে এ অঞ্চলে এভাবে বহুমূখী শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল না। তখন একই প্রতিষ্ঠান থেকে ধর্মীয় বিষয়ে যেমন উচ্চ শিক্ষিত বের হতো তেমনি জ্ঞানের অন্যন্যা শাখা থেকেও শিক্ষিত মানুষ বের হয়ে জাতিকে দিক নির্দেশনা দিত যাদের মধ্যে ছিল ধর্মীয় শিক্ষা এবং সাধারণ শিক্ষার একটি সুন্দর সমন্বয়।
বৃটিশরা তাদের শাসন টিকিয়ে রাখার জন্যই মূলত এ অঞ্চলের মানুষের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা ব্যবস্থাকে ডি-ইসলামাইজড করার মধ্যে দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষাকে সাধারণ শিক্ষা থেকে সফলভাবে আলাদা করতে পেরেছে বলেই তাদের পক্ষে এ অঞ্চলের মানুষকে দীর্ঘ ১৯০ বছর গোলামীর জিঞ্জিরে আবদ্ধ রাখতে সক্ষম হয়েছিল।
মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত এবং সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিতদের মধ্যে যে একটা মনঃস্তাত্বিক দুরত্ব তা আজ আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে বিরাট ধরনের বিভাজন সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছে।
মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিতদের মধ্যে একটি বিশাল অংশের মধ্যে এক ধরনের হীনমন্যতাবোধ কাজ করছে। তাদের জীবনে কিছুটা নৈতিকতাবোধের চর্চা থাকলেও দেশ ও সমাজকে নৈতিকতার মানদন্ডে দিক নির্দেশনা দিয়ে পরিচালনা করা ও নেতৃত্ব দেয়ার মানসিকতা লোভ পেতে বসেছে।
এসব মাদ্রাসা শিক্ষিতরা মানব জীবনের বিভিন্ন সাইট ও দিকের প্রতি বেখবর। ক্ষেত্র বিশেষে উদাসীনও বটে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নীতি নৈতিকতার পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে অতি নিস্কলুষ ও পরিচ্চন্ন জীবন যাপনকারী হিসেবে মনে করেন নিজেদেরকে। অথচ মানুষ মাত্রই জীবন চক্রের বাঁকে বাঁকে নীতি নৈতিকতা ও সার্বিক জীবন ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে জীবন ধারণ ও চালনের প্রতিটি উপদানই সম্পর্কযুক্ত।
মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়া বা পড়ানোর মধ্যেই যদি নিজের পার্থিব জীবনের সফলতা এবং আখিরাতে নাজাতের উসিলা খুজে বেড়ায় তাহলে জীবন চক্রের অন্যন্যা উপদানগুলো থেকে কেন আবার সুযোগ সুবিধা ভোগ করা হবে? অথচ এই সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষ প্রতারিত হচ্ছে এবং প্রতারিত করছে। কিন্তু এই প্রতারণার বিনাশ সাধন কিংবা এর মূলোৎপাঠনে নিজের কোন ভূমিকা না রেখে হাত গুড়িয়ে নিজেকে আত্মকেন্দ্রিক করে রাখা অথবা চিন্তা ও বিবেগবোধের দুয়ারে তালা মেরে রাখার অলিখিত রীতি রেওয়াজই চালু রেখেছে মাদ্রাসা শিক্ষিতের একটি বড় অংশ।
মাদ্রাসা শিক্ষিতদের আরেকটি সংখ্যায় কম হলেও উল্লেখযোগ্য অংশ আছে যারা বুনিয়াদী শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে ঝাপসা ও ভাসা ভাসা জ্ঞান চর্চার কারণে দ্বীনি ইলমের মূল স্পিরিট বা মহিমাটাই বুঝে উঠতে ব্যর্থ হন। যার ফলে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে আধুনিক চাক চিক্যতার আকর্ষণে ট্র্যাক পরিবর্তন করে ধর্মীয় বিষয়ে নিজের অর্জিত জ্ঞান ও বিশ্বাসের মধ্যে সন্দিহান হয়ে পড়েন। মাদ্রাসা শিক্ষিতদের উল্লেখযোগ্য অংশ হীনমন্যতাবোধের কারণে জাতি বড় ধরনের খেদমত থেকে বঞ্চিত।
যখন দেখি একজন দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত দাওরায়ে হাদিস পড়ুয়া আলেমকে দুর্নীতিবাজ এইট পাশ ট্রাফিক কনস্টেবলের বিভিন্ন আইনী ঘেড়াকলে আটকিয়ে নাজেহাল হওয়ার পরেও সংশ্লিষ্ট ট্রাফিক পুলিশের পদ পদবী ও প্রশাসনিক মর্যাদা অনুধাবন করতে অক্ষম এবং তাকে স্যার স্যার’ সম্বোধন করে আত্মসমর্পণ করে নিজের অসহাত্বের প্রকাশ করতে দেখি তখন এসব আলেমদের হীনমন্যতাবোধ নিয়ে কৌতুহল জাগবে একজন সচেতন মানুষের। আবার যখন দেখা যায় আলিয়া ধারায় পড়ুয়া কোন কামিল পাশ আলেমকে ইসলামী শরীয়াহ’র সাধারণ কোন বিষয়ে সঠিক ধারণা দিতে ব্যর্থতার পরিচয় দেয় তখন এসব মাদ্রাসা শিক্ষিত আলেমরা জাতিকে কোথায় নিয়ে যাবে?
(আমি এখানে শ্রদ্বেয় আলেম সমাজকে ঢালাওভাবে খাটো করছি না। দুটি উদাহরণ টেনেছি আমাদের সমাজে বিদ্যমান অসংগতিগুলো বুঝানোর জন্য।)
অপর দিকে সাধারণ শিক্ষাকে সর্ব সাধারণের গ্রহণযোগ্য ধর্মীয় শিক্ষা থেকে আলাদা করার কারণে যে বিভাজন সৃষ্টি হয় তাতে লাভবান হন বৃটিশরা। ধর্মীয় শিক্ষা বিবর্জিত সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার ফলে খুব সহজেই বৃটিশরা তাদের অনুগত এমন একটি শ্রেণী তৈরীতে সক্ষম হয় যারা জন্মগতভাবে এদেশের মানুষ হলেও তাদের কৃষ্টি-কালচারে বিজাতীয় অনুসরণ। বংশগত রক্তের ধারাবাহিকতায় এ অঞ্চলের আদিবাসী হলেও চিন্তা-চেতনা ও রুচিবোধে গোলামীর মানসিকতা সম্পন্ন।
এই শ্রেণীটিকে বৃটিশরা পৃষ্টপোষকতা দিয়ে সেটেল করতে সহায়তা করে অত্যন্ত কৌশলী কায়দায়। এদেরকেই সম্পৃক্ত করা হয় এ জাতির সমাজনীতি ও সামাজিকতা পূণর্গঠনে। অর্থনৈতিক শোষণ ও রাজনৈতিক পূনর্বিন্যাশ করে বৃটিশদের সাম্রাজ্যেবাদী দখলদারী বজায় রাখতে ধীরে ধীরে এই শ্রেণীটির উত্থান ঘটিয়ে তাদেরকেই আনূকুল্যতা ও পৃষ্টপোষকতা করে বৃটিশের রাজত্ব ঠিকিয়ে রাখার কৌশল অবলম্বন করে।
বৃটিশরা বিতাড়িত হয়েছে আজ অনেক বছর হয়ে গেলো। তারা পালানোর ফলে আমরা দু’দুবার স্বাধীনতা অর্জন করলাম। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তাদের তৈরী সিস্টেমের কারণে আমাদের দেশ, সমাজ ও জাতি গঠনের নীতি নির্ধারকরা গোলামীর মানসিকতার উর্ধ্বে উঠতে পারেনি সম্পূর্ণভাবে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ধর্মীয় শিক্ষা এবং সাধারণ শিক্ষার মধ্যে স্থায়ী পার্থক্য তৈরীর ফলে যে ভয়াবহ বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে তার জলন্ত নজীর। আইন আদালতে যারা বিচার আচারের সাথে সম্পৃক্ত তাদের মধ্যে কয়জন মানুষকে পাবেন যারা অন্তত শুদ্ধ করে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করতে পারবেন? অথচ ন্যায় বিচার করতে গেলে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত নিয়ম নীতির কোন বিকল্প নেই!
পুলিশ বিভাগের কয়জন কর্তাকে পাবেন যারা কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে নীতি নৈতিকতার ব্যাপারে পর্যাপ্ত ধারণা রাখেন? প্রশাসনের কয়জন মানুষকে পাবেন যারা একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের আত্মমর্যাদাশীল কর্মকর্তা হিসেবে মদিনা স্ট্যাটের মত একটি বিচক্ষণ প্রশাসন চালাবার মত কোরআন সুন্নাহয় বর্নিত কলা কৌশলে দক্ষ?
একটি স্বাধীন দেশের অর্থনীতিকে শোষণবাদী সুদযুক্ত অর্থব্যবস্থা থেকে ইনসাফ ভিত্তিক জনকল্যাণমূখী অর্থব্যবস্থায় রূপান্তরের মাধ্যমে প্রকৃত গরীব দুঃখী মানুষের অভাব অনটন মিটিয়ে জাতীয় অর্থনীতি নির্ধারণে পর্যাপ্ত দক্ষতাসম্পন্ন মানুষ? প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় কি পরিমাণ মানুষ পাবেন যারা “দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ” কথাটির গুরুত্ব অনুধাবন করতে সক্ষম?
সর্বপরি দেশ পরিচালনায় যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের মধ্যে কয়জন মানুষকে পাবেন যারা অন্তত পাচ ওয়াক্ত নামাজে ইমামতি করার মত যোগ্যতা সম্পন্ন? অথচ আল্লাহ বলছেন নামাজ সমস্ত পাপ কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখে! এ জন্যই আমরা আজ দেখতে পাই আইন সভার সদস্য হতে আগ্রহীদের মাঝে অসৎ পন্থায় (যেটা পাপ কাজের অন্তভূক্ত) সম্পদের পাহাড় গড়ার প্রতিযোগিতা এবং তাও আবার নির্বাচন কমিশনের হলফ নামায় স্বগৌরবে আত্মস্বীকৃতি!
সুতরাং মাদ্রাসা শিক্ষা এবং এবং সাধারাণ শিক্ষার মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে যতদিন পর্যন্ত এই জাতির শিক্ষা নীতি প্রনীত না হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা একটি প্রকৃত স্বাধীনচেতা দেশের নাগরিকের মর্যাদা লাভ করতে পারবো না। ততদিন পর্যন্ত এই জাতির প্রকৃত অর্থেই ভাগ্যের কোন উন্নতি হবে না। শিক্ষা ব্যবস্থা হতে হবে একমূখী। একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আমরা চাই ধর্মীয় বিষয়ে যেমন বিশেষজ্ঞ তেমনি জ্ঞানের অন্যন্যা শাখাতেও বিশেষজ্ঞ ও প্রফেশনাল তৈরীর সমন্বিত ব্যবস্থা।
বিষয়: বিবিধ
৭৮১৭ বার পঠিত, ৬২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কারন মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের আউটপুট নেই, শুধুমাত্র মিলাদ মাহফিল, জানাজা ইত্যাদি সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় আচার ছাড়া। অন্যদিকে স্কুল কলেজের ক্ষেত্রে বেসিক ইসলামী শিক্ষা না থাকায় মুসলমানের ঘরে জন্ম হয়েও নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে বে ওয়াকিপ।
ধন্যবাদ সুন্দর বুঝিয়েছন।
তবে,
“দেশপ্রেম
ঈমানের অঙ্গ” হাদিসের গুরুত্ব অনুধাবন করে?
এই কথাটি হাদিস নামে প্রচলিত হলেও এটি জাল কথা।
এটি হাদিস নয়। তবে দেশকে ভালবাসার অন্য সহিহ হাদিস আছে।
বিস্তারিত যইফা ১ম খন্ড দেখুন।
সময় করে এই লিংকে গিয়ে কমেন্টস এর উত্তরটা একটু দিয়ে আসবেন প্লিজ...আপনারা দুই মুসা এক নাকি?
আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ। আপনাকে অনেক অনেক মোবারকবাদ জানাচ্ছি একটি সুন্দর ও শিক্ষামূলক ওয়েব সাইটের লিংক দেয়ার জন্য। আপনি আমার সম্পর্কে যা অনুমান করছেন তা সঠিক নয়। আমি এবং লিংকে দেয়া আহমাদ মুসা নামের মডারেটর একই ব্যক্তি নই। আমার সাথে উক্ত ভদ্রলোকের সাথে যোগাযোগ এবং পরিচয় কোনটাই নেই। আমার আসল নাম আহমদ মুসা নয়। এই নামে কেন আমি লেখালেখি করছি তা নিয়ে ব্লগিংয়ে আসার শুরুর দিকে একটি ছোট্ট ব্লগ লিখেছিলাম বিডিটুডে/টুমোরো সাইটে। সম্ভবত এটি আমার দ্বাদশ ব্লগ এই সাইটে। আমার ব্লগ লেখার হাতেখড়ি হচ্ছে সিটিজি ব্লগ ডট কম থেকে। বিডিটুডে আইডি খোলার পর থেকে এখানেই আমার লেখালেখি সীমাবদ্ধ। অবশ্য ফেইসবুজেও মাঝে মধ্যে পোস্ট দিয়ে থাকি। ফেবুতে আমি বেশ কয়েক বছর পূর্বে আমি এই নামেই আইডি খুলেছিলাম। তখন অবশ্য লেখালেখি কিংবা নিয়মিত লগইনই করতাম না। মাসে দু'চার বারের বেশী ফেবুতে লগইন করা হতো না। লেখালেখির সাথে জড়িত হওয়ার পর থেকে ফেবুতে নিয়মিত লগইন করি এবং মাঝে মধ্যে পোস্ট দিয়ে থাকি। এজন্য আহমদ মুসা নামের আইডিটা ফেবুতে বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে। অবশ্য আহমদ মুসা, আহমেদ মুসা, আহমাদ মুসা, ahmad musa, ahmed musa, ahamad musa নামে আরো অনেককেই দেখা যায় ফেইসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের ওয়েব সাইটগুলোতে। ফেইসবুকে আহমদ মুসা নামে বাংলা হরফে লেখা আইডি দিয়ে আরো একজন ভদ্রলোক লেখালেখি করে থাকেন। সম্ভবত তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। আমি ঠিক সিউর নই। এই ভদ্রলোকের লেখা অত্যন্ত মান সম্মত এবং ইসলাম ও মানবতার পক্ষে তার ক্ষুরধার লেখনি আমাকে বিমোহিত করে। সম্ভবত তিনি বিডিটুডেতেও লিখে থাকেন ভিন্ন কোন নামে। ফেইসবুকে আমার আইডি ahmad musa.
আর একটি বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। সেটি হচ্ছে- আমার লেখনির মধ্যে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বিভিন্ন আক্বিদাগত ও প্রায়োগিক আমলগত মাজহাবী মতভিন্নতাকে ফোকাস করে হাইলাইট করাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। আমি মনে করি এসব টুকনো বিষয়গুলো নিয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি ধরনের লেখালেখিতে মনোযোগ দিলে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বিভাজনকে উস্কে দেয়ার নামান্তর। আমার প্রতিটি লেখার মধ্যে আমি চেষ্টা করি মুসলিম উম্মাহর ঐক্য সৃষ্টির কৌশল অবলম্বন করা।
খুব ভালো লাগলো আপনার উত্তর পেয়ে। একই নাম দেখে জানার ইচ্ছা হচ্ছিল তাই জিজ্ঞাসা করেছিলাম।
সত্যি কিছু কিছু মানুষ আছে যাদের উৎসাহে অনেকেই উৎসাহীত হয় যেমন আমি হয়েছিলাম"সত্যলিখন"
আপার লেখা দেখে।
পরসমাচার,
আপনার একটা কথায় আমার একটু আপত্তি আছে।
আপনি বললেন,
"আমি মনে করি এসব টুকনো বিষয়গুলো"
এখানে টুনকো বিষয় বলতে কি বুঝাচ্ছেন?
রসুল (সা) এর সুন্নত কে??
যদি সুন্নতকে বুঝান তাহলে আমি দ্বীমত পোষন করছি।
আল্লাহ বলেছেন,
"লাকাদ কানা লাকুম ফি রসুলিল্লাহী উসওয়াতুন হাসানাহ..."
"মাই ইয়তইর রাসুলাহু ফাকাদ আতা আল্লাহ"
"কুল ইনকুনতুম তুহিব্বুনাল্লহা ফাত্তাবিউনি.."
তাই কোন কিছু সুন্নত সাব্বস্থ হলে তা টুনকো হবার কোন চান্চ নাই।
আপনাকে ধন্যবাদ।
আল হামদুলিল্লাহ আপনার দেয়া কোরআনের রেফারেন্সগুলো আমার জানা আছে। শরীয়তের বিভিন্ন মাসআলা মাসায়েলগুলোর প্রায়োগিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন ইমাম ও তাদের অনুসারী বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণে এখতেলাফ থাকতে পারে। এবং তা স্বাভাবিকও বটে। কিন্তু আমরা যদি একটু গভীরভাবে বুঝার চেষ্টা করি তবে দেখা যাবে ইসলামের অতীব জরুরী খুবই গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী বিষয়ে বিভিন্ন ইমাম ও তাদের অনুসারী বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের মধ্যে তেমন কোন মৌলিখ পার্থক্য নেই।
এক শ্রেণীর প্রেক্টিসিং মুসলামন দেখা যারা বিনা বাধায় অতি সহজে পালনযোগ্য বিভিন্ন এবাদত বন্দেগীর কোন কোন উপসর্গ নিয়ে মারাত্মাক মতবিরোধে জড়িয়ে পড়েন। এক্ষেত্রে কোন কোন অপরিনামদর্শী মুসলামন হঠাৎ কোরআন ও সুন্নাহর প্রাসংঙ্গিক রেফারেন্স টেনে নিয়ে আসেন। অথচ তাদের চিন্তার মধ্যে এই বিষয়গুলো স্থান পায় না যে, তিনি যে বিষয়ে মতামত দিচ্ছেন সে বিষয়ে তার যথেষ্ট পরিমাণ শরয়ী পান্ডিত্য আছে কিনা।
আমি এখানে টুকনো বিষয় বলতে বুঝাতে চেয়েছি ইসলামী শরীয়তের সাধারণ কিছু প্রায়োগিক বিষয় সংক্রান্ত মাসআলা মাসায়েলের ক্ষেত্রে অতি উৎসাহী হয়ে তর্কে জড়িয়ে যাওয়াকে। অথচ এ নিয়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বিভাজনের বিষবাষ্পকে আরো বিস্তৃত করা হচ্ছে কিনা সেদিকে তেমন একটা খেয়াল রাখার প্রয়োজন মনে করেন না।
বি. দ্রা. এখানে আমি অবশ্য যারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে দ্বীমের মধ্যে ফিতনা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন হারাম ও শিরকী কর্মকান্ডের মাধ্যমে মানুষকে গোমরাহীতে নিমজ্জিত রেখে তাদের আলোচনায় আনছি না। তাদের ব্যাপারে অন্যভাবে আলোচনা করা যেতে পারে।
সুন্নাহকে টুনকো বিষয় না ভাবার জন্য।
আসলে আমার এই প্রশ্ন করার কারন আছে, বেশি বিস্তারিত লিখলে হয়তো কমেন্টসের কলেবর বৃদ্ধি পাবে তাই চুপ হয়ে গেলাম।
জাজাকাল্লাহু খাইরান।
মুসলিম উম্মাহর ঐক্য/বিভেদ প্রসংগে আহমদ মুসা যা বলেছেন তা যদি আপনি গভীরভাবে ভেবে দেখতেন তবে উম্মাহ আপনার কাছে অনেক কিছুই পেতে পারতো!!
মধ্যপন্থা ও প্রান্তিকতা - এ দুয়ের তফাতটা সবসময় খেয়াল রাখা এবং কথায় কাজে যুক্তি-তর্কে বা গবেষণা ও সিদ্ধান্তে এক কথায় সকল ক্ষেত্রে তার প্রয়োগ নিশ্চিত করার মত ভারসাম্যপূর্ণ নেতৃত্ব যদি উলামায়ে কিরামের মধ্য থেকে আবির্ভূত না হন তবে উম্মাহর ঐক্য ও বিজয় স্বপ্নই থেকে যাবে এবং জিল্লতির মাত্রা বাড়তেই থাকবে! আর এর জন্য বাইরের শত্রুর প্রয়োজন হবেনা!!
যেমন – আপনি যদি দেখেন জাপান, চীন এদের ব্যাপারে – তাদের পুরা শিক্ষাব্যবস্থাটা তাদের মতো করে সাজানো এবং তাদের লোকেরা যাতে সহজে বুঝতে পারে এজন্য তাদের নিজেদের ভাষায় রূপান্তরিত। এজন্য আপনি এসব দেশে যে কোন বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষার জন্য গেলে অবশ্যই তাদের ভাষা আপনার জানতে হবে। কিন্তু তাদের নিজেদের জন্য ব্যাপারটা সহজ কারণ তারা বুঝে তাদের নিজের ভাষায়। দুর্দান্ত গতিতে তারা শিখে এবং কর্মক্ষেত্রেও তারা দোর্দান্ড প্রতাপে কাজ করে যায়।
আমাদের গোলামের বাচ্চাদের আবার খালি সাদা-চামড়া প্রীতি-ই না তাদের ইংরাজী-ভাষা-প্রীতিও চরম। উচ্চশিক্ষার একটা জায়গায়ও আপনি ইংরাজী ছাড়া কিছু বুঝতে পারবেন না, এতে করে ভাষাগত বৈষম্যের কারণে আপনি এমনিতেই বুঝতে সময় নিবেন – এতে সময়ের যথেষ্ট অপচয়ও হয়। তারা/আমরা সবকিছু ইংরাজীতে পড়বো কিন্তু কুর’আনের ব্যাপারে আবার তরজমা করতে হবে আপনার, দেখেন কিরকম গোলামের বাচ্চা এগুলা, আরবীর প্রীতি নাই আছে ইংরাজীর, বাংলার ব্যবহার নাই আছে সে-ই ইংরাজীর-ই, আবার বলে আমাদের ভাষা শহীদ।
জাপান, চীন এরা ইংরাজীতে পড়তে পারতো না? অবশ্যই পারতো যেমন আমরা ঠেকে ঠেকে পড়ি। কিন্তু তারা এটা নিয়েও হিসেব করে – তারা দেখে ১ টা মানুষ সর্বমোট ৫০ বছর জীবন পেলে তার মোট সময় ১৮,২৫০ দিন (৩৬৫ এর হিসেবে) এবং ৪৩৮,০০০ ঘন্টা। এর অর্ধেক সময় ঘুম-খাওয়া-নাওয়া বাদ দিলে মাত্র ২১৯,০০০ ঘন্টা, এর মধ্যে ২০ বছর শিক্ষায় বাদ দিলে কর্মের সময় তারও অর্ধেক। এবার ঐ সময়ে কি শিখাবো এবং কি করাবো? কাজের জিনিস? নাকি ভিনদেশীর সাথে ভাব-বিনিময়ের ভাষা, যাদের সাথে সারাজীবনে তাদের ৯০% এর কখনও দেখা হওয়ারও সম্ভাবনা নাই? তারা বুঝলো যারা উন্নয়নের জন্য কাজ করবে তাদের কাজের শিক্ষাই আসল কারণ ভাব বিনিময়ের হারতো কম, তো কাজের শিক্ষা এবার কোন ভাষায় দিলে কম সময়ে বেশী শিখানো যায়? তারা হিসাব করে পেলো মাতৃ/পিতৃ ভাষা। তো বিদেশে যে নতুন জিনিস আবিস্কার হচ্ছে সেগুলা বুঝবে কিভাবে? তার জন্য অল্প কিছু বানায় তারা যারা শুধু খুজে বের করে অন্যদের নতুন জিনিস এবং আবার নিজেদের ভাষায় অনুবাদ করে যাতে – শিক্ষার্থী এবং কর্মীদের সহজে বুঝানো যায়। এভাবে তারা বিভাগ করে নিছে – যাতে একদলের কাজই থাকে খুজে বের করা-অনুবাদ করা (এবং খুব নগন্য সংখ্যা), আরেকদলের কাজ থাকে শিক্ষার্থীদের পড়ানো (এখানে প্রায় পুরো জনশক্তি-ই)। আর শিক্ষার্থীদেরও অন্য ভাষা শিক্ষার পিছে সময় নষ্ট হয়না, পুরো সময়টাই তারা কাজের জিনিস শিখে। কিন্তু আমাদের গোলামের বাচ্চাদের ইংরাজী না বললে তো জাত-কূল চলে যাবে নইলে তো মানুষ ক্ষ্যাত বলবে। এতে করে গোলামের বাচ্চারা নিজেরাও তাদের মূল্যবান কাজের/শিক্ষার সময় নষ্ট করে কাজের জিনিস বাদ দিয়ে ভাব-বিনিময় এর জিনিস শিখে আর অন্যদেরও সময় নষ্ট করায় এভাবে। এতে করে লাভ হয় কার? ঐ ইংরাজদের-ই, কিভাবে সেটা – আমরা কি শিখতেছি, কি করতেছি, কি রিপোর্ট করতেছি এবং কি বুঝাইতে চাচ্ছি তা তাদের জানার-বোঝার জন্য আমাদের ভাষা শিখতে হয় না, তাদের মাতৃ-পিতৃ ভাষায়ই পেয়ে যাচ্ছে এখানে, কিন্তু চীন-জাপানে এই চান্স পায় না তারা, ওদেরটা বুঝতে তাদেরও ঐ ভাষা শিক্ষার জন্য কামলা বানাতে হয়।
এছাড়া আরেক দিক – আমাদের শিক্ষা পুরাটা ধার করা, নিজেরা ঐটার উন্নয়নে কোন চেষ্টা করবে না, গোলামের বাচ্চারা হা করে তাকিয়ে থাকবে যে তাদের সাদা-বাবারা কি বই বের করলো বা কি করলো অতটুকুই ইমপোর্ট করবে এবং ঐটাই শিখবে এবং শিখাইতে থাকবে পরবর্তী সাদা-বাবাদের নতুন ডেলীভারী দেয়া ছাড়া, নিজেরা চেষ্টা পর্যন্ত করবে না, এবং তাদের গর্বে বুক ফুলে যায় যখন বলে আমরা ব্রিটিশ, ইউরোপিয়ান কিংবা আমেরিকান ষ্ট্যান্ডার্ড ইমপোর্ট করে পড়ী; অথচ লজ্জা পায় না তারা নিজেদের অযোগ্যতার ব্যাপারে।
আর ধর্মের ব্যাপার কি আর বলবো সেটা, ২০ বছর সময়ে যতো হাজার পৃষ্ঠা একজন শিক্ষার্থীকে শিক্ষা দেয়া হয় তার এক-ভাগ সময় রাষ্ট্রীয়ভাবে সমস্ত স্কুলে কুর’আনের তালীম দিলে ১০০% মুসলামান আজকে হয়তো আল্লাহর রহমতে হাফেযে-কুর’আন থাকতো। যতোটা সময় ইংরাজি শিক্ষার পিছনে ব্যয় করে তার ২০ ভাগ সময় দিলে হাফেয হয়ে যেতো।
স্কুলে-কলেজে বাংলা-ইংরাজীতে যে কয়টা কবিতা শিখানোর পিছনে হাজার হাজার টিচার নিয়োগ দিয়ে রাখছে সে কয়টা হাফেয নিয়োগ দিলে সবাই সব সূরা মুখস্ত কইতে পারতো, আরও শিখতে পারতো নৈতিকতা এবং হইতো অনুশাশিত (পুলিশ-র্যাব লাগতো না শাসনের জন্য); আমরা কবিতা শিখাইয়া উদ্দীপ্ত করাইতে চাই কিন্তু সূরা শিখাবো না; অথচ একটা কবিতাও কর্মক্ষেত্রে কোন কাজে আসে না প্রলাপ বকা ছাড়া, শিখাইবো আজি হতে শতবর্ষ পরে ... আরে এইটা কি? এরকম আরও অনেক কিছু। এভাবে এই গোলামের বাচ্চারা আমাদের মূল্যবান সময় কেড়ে নিছে, শিখাইছে ফাও-প্রলাপ বকা, শিখাইছে নৈতিকতা বিহীন-আধুনিকতা; শিখায় নাই নৈতিকতা শিখায় নাই ধর্ম।
ফলতো কি হইছে? – হইছে সব গোলাম – চাকরীর নামে বিদেশীদের-কামলা দিয়া খায়। ইউনিভার্সিটিতে চুমাচুমি-জরাজড়ির রেকর্ড হয়, ছাত্ররা অস্ত্রবাজী করে, আরও কত কি? আর বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে আজও – আমরা শান্তির লক্ষে কাজ করে যাচ্ছি, আমরা শান্তি দিয়ে যাচ্ছি। এর এসব কীত-পঙ্গের শাসনের জন্য কাজের লোকগুলাকে পুলিশ-র্যাব বানাইয়া ওদের-ই পোলাপান-ভাই-ভাইস্তাদের পিটাচ্ছে। পুরা সময়-ই আমাদের লস মূলত; কিন্তু গুনতেছি টাকা অনেক বেড়ে গেছে, নিশ্চয়ই লাভ হয়েছে। আসলে কিছুই হয় নাই; আরও অধঃপতন হইছে।
এসব আগাছাকে আগে-ভাগেই সমূলে নির্মূল না করলে বাংলাদেশ নামক ক্ষেতের (দেশের) ফসলের (মানুষের) ক্ষতি করে যাবে ... এরা দেশের মাটি কাইটা (সম্পদ নিয়া) অন্য দেশে পাহাড় (সম্পদ বিনিয়োগ) বানানোর কাজে লিপ্ত; এদের মেরে ফেলতে হবেই হবে .... অনেক ক্ষতি করছে এরা এবং এখনও করে যাচ্ছে ....
আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রকৃত মানবীয় শিক্ষা ব্যবস্থা তথা ইকরা বিসমি রাব্বিকাল্লাজি খালাখ এর আদলে তৈরী করতে হলে তথাকথিত নীতিনির্ধারক বানরের সন্তানদের আগে নির্মূলের উদ্যেগ নিতে হবে।
এবার আসি বাংলা শিক্ষিতরা এত ইংরেজী প্রীতি তাদের নিজেদের কথ্য ভাষাকেও বাংরেজী বানিয়ে ফেলেছে। ইংরেজী ভাষা অনুবাদত দুরের কথা ।
আমাদের এই বিদেশী প্রীতিই আমাদের আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থাকে পংগু করে রেখেছে । এতটাই হীনমন্য জাতি আমরা বাংলাদেশীরা ভাষা, পোষাক-আষাক , খাওয়া-দাওয়া ,চলাফেরা সব কিছুতেই নিজেদের স্বকিয়তাকে ছুড়ে ফেলে কাকের লেজে ময়ুরের পেখম লাগানোর মত নিকৃষ্ট কাজ করতে এতটুকু দ্বিধাবোধ করছি না।
আপনার মুল্যাবান পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ।
পারিবারিক কাহিনীকে গল্পাকারে লিখেছিলাম
আরেকটি বাস্তব অভিজ্ঞতার কাহিনী
একজন শিক্ষার্থী যদি শিক্ষাজীবনের শুরু থেকেই সম্মিলিত শিক্ষা পেয়ে শিক্ষিত হয় তবে সে সব বিষয়ে প্রকৃত জ্ঞানার্জন করেই জীবন গঠন করতে পারবে।
আমরা কি সেই ধরণের শিক্ষাব্যবস্থা আদৌ পাব???
ইনশায়াল্লাহ যদি আমাদের বহুমুখী আন্দোলনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারি তবে অবশ্যই পূর্ব দিগন্তের উদিতব্য আগামীর সূর্যটা আমাদেরই হবে। তখনই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ইকরা বিসমি রাব্বিকাল্লাজি খালাক এর আদলে প্রণীত করা হবে ইনশায়াল্লাহ।
তবে একটি ভালো শিক্ষাব্যবস্থা জাতিকে উপহার দিতে হলে জাতির ঘাড়ে সওয়ার হওয়া বাকশালী ভূতকে বিদেয় দিতে হবে।
পরবর্তিতে ব্লগ ফেইসবুক সহ বিভিন্ন মাধ্যমে এ ধরনের লেখা আশা করছি।
শিক্ষা নিয়ে কথা বলতে গেলে আপনার লেখার চেয়ে বড়ো হয়ে যাবে। এনশা আললাহ আরেকদিন বলবো।
সুন্দর একটা টপিক নিয়ে যৌক্তিক লখা পড়ে ভাল লাগলো।
ধন্যবাদ।
দারুণ সুন্দর মন্তব্যে করেছেন ভাইজান। আপনি একেবারে আমার মনের কথাটাই সুন্দর ও সহজভাবে তুলে ধরেছেন অল্প কথায়। আপনার এই মন্তব্যে নিয়েও সুন্দর একটি ব্লগ পোস্ট করা যায়। সম্ভব হলে আপনি এ বিষয়ে বিস্তারিত একটি লেখা পোস্ট করতে পারেন। তাতে অন্তত আমাদের সমাজের কিছু মানুষ তো সচেতন হওয়ার অথবা কারো দৃষ্টিশক্তি খুলে যাওয়ার সুযোগ হবে হয়তো।
এখন তো আপনার মন্তব্যের উত্তর দিলাম। বরং আমার উত্তরটা কিন্তু আপনার মন্তব্যের চেয়েও অনেক বড়। এবার তাহলে প্রাসংগিক বিষয়ে আপনার মতামত জানায়ে মন্তব্যে করবেন আশা করছি।
শিক্ষার এই বহুমুখী ব্যবস্থার কারণেই পরিবার, সমাজ ও দেশ আজ চরম খেসারত দিচ্ছে।
আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি মন্তব্যে করার জন্য। আরো ভাল হতো যদি প্রাসংগিক বিষয়ে আপনার মূল্যবান মতামতযুক্ত মন্তব্যটা পেতাম।
আসলে আমাদের সমাজের প্রতিটি শিক্ষাই যেন অপরিপক্ক এবং অসম্পূর্ণ। যেমন যারা সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত তারা দ্বীনের ক্ষেত্রে অনেকটা অজ্ঞ। আবার যারা দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত তারা আবার সাধারণ জ্ঞানের অজ্ঞ বিশেষ করে ভাষার জ্ঞান তাদের নেই বললেই চলে।
আবার সাধারণ শিক্ষাই শিক্ষিত তারা মনে করে দ্বীনের ক্ষেত্রে ধাবিত হওয়াটা আমাদের জন্য কাম্য নয়। আবার যারা দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত তাদের অনেকের ধারণা যে, সাধারণ শিক্ষা গ্রহণ করাটা শরীয়ত বিরোধী।
তবে আমাদের সমাজে অনেক এমন শিক্ষিত লোকও পাওয়া যায়, যাদেরকে আমরা প্রকৃত শিক্ষিত বলতে পারি। তারা দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত এবং সাধারণ শিক্ষাতেও শিক্ষিত। অর্থাৎ তারা দ্বীনি মাদ্রসায় লেখা-পড়া করেছেন এবং সরকরী মাদ্রাসাতেও শিক্ষা গ্রহণ করেছেন এবং সাধারণ শিক্ষাও গ্রহণ করেছেন। তবে তাকে কত যে পরিশম করতে হয়েছে, তা আল্লাহ তায়ালাই ভাল জানেন।
আমাদেরকে শিক্ষা ব্যবস্থাটাকে ঢেলে সাজিয়ে সকল বিষয়কে সমন্বয় করে সমাজকে উপহার দিতে পারলেই ব্যক্তি, সমাজ, দেশ ও জাতি খাটি সোনায় রূপান্তরিত হবে।
ভাই আহমদ মুসা! আপনার লেখাটি যে সমাজকে অনেকটা সজাত করে তুলেছে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
আল্লাহ তায়ালা আপনাকে সুস্থ রাখুন, আপনার বয়স, সন্তান, সম্পদ ও আমলে আল্লাহ তায়ালা বরকত দান করুন। আমীন
খুব সুন্দর মন্তব্যে করেছেন। আমিও সেটাই ইংগিত করতে চেষ্টা করেছি। দ্বীনি শিক্ষা এবং সাধারণ শিক্ষার সমন্বিত প্রচেষ্ঠার মাধ্যমেই জাতি যেমন খাটি সোনায় পরিনত হবে তেমনি পারলৌখিক জীবনেও মুনিবের দরবারে জবাবদিহিতার উপযোগী মননশীল জীবনবোধ রচনা করতে স্বার্থক ও সফল হবে। আপনাকে অসংখ্যা ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার লেখাটি পড়ে মন্তব্যে করার জন্য। অনেক দিন আপনাকে ব্লগে দেখা যায়নি। আশা করছি এখন থেকে নিয়মিত আপনার লেখা থেকে আমরা বঞ্চিত হবো না। ভাল থাকুন- আপনার সার্বিক সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।
শিক্ষা ব্যবস্থার যে বিশ্লেষন তুলে আনলেন তাতে বৃটিশ পূর্ব,বৃটিশ পরবর্তী দুই ধাপেই মূলতঃ দেখিয়েছেন।
এটা ঠিক একমুখী শিক্ষা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে। সংকট নিরসন সহজ হয়। মূল বিবেচনার বিষয় হচ্ছে আমরা কী বৃটিশ পূর্ব চেতনায় ভর করে একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিব নাকী আমাদের স্বাধীনতা থেকে অর্জিত চেতনাকে অগ্রাধিকার দিব ?
আমার বিবেচনায় স্বাধীনতা যেহেতু আমাদের রক্তার্জিত অর্জন,সেহেতু এই চেতনা অগ্রাধিকীকারের দাবী রাখে।
এক্ষেত্রে আমার ব্যাক্তিগত অভিমত হচ্ছে-প্রথমতঃ ধর্মশিক্ষার হাতে খড়ি মক্তব/মন্দির/গৃহ/অন্যান্য ব্যবস্থাপনায়। দ্বিতীয়তঃ দশম শ্রেনী পর্যন্ত সকল ধর্মের নৈতিক আদর্শিক দিক গুলোকে সমন্বিত করে একটি পাঠদানের ব্যবস্থা করা । তৃতীয়তঃ একাদশ দ্বাদশে ছাত্র/ছাত্রীর ইচ্ছানুযায়ী সাধারন শিক্ষার পাশাপাশি তার পছন্দের ধর্ম শিক্ষার গুরুত্ব বাড়ানো। চতুর্থতঃ অনার্স ও উচ্চতর পর্যায়ে ছাত্র/ছাত্রীর ইচ্ছানুযায়ী- ধর্ম, জ্ঞান -বিজ্ঞানের যে কোন শাখায় গবেষনার ব্যবস্থা রাখা।
এবং শিক্ষার প্রথম থেকে শেষ স্তর পর্যন্ত আমাদের ঐতিহ্য ও স্বাধীনতার ইতিহাস বাধ্যতামূলক রাখা ।
যাহোক,পড়ার অনুরোধ রাখায় ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
এই দুই শ্রেনির মাঝে একটি বিরাট ব্যবধান থাকার ফলে আমাদের দেশের আর্তসামাজিক অবস্থায় বিরাট একটা বিশৃংখলা বিদ্যমান। এই বিশৃংখলা থেকে মুক্তির জন্য আমার ছোট মাথায় যা আসছে তা এ ভাবে বলতে পারি-
এই দুই শ্রেণির মাঝে বিশাল তফাৎটি কমিয়ে একটি সামাঞ্জস্যবিধান করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বলা যত সমহ কাজটা অনেক কঠিন। আমাদের দেশের উঁচুস্তরের মানুষগুলোকেই এই পদক্ষেপ নিতে হবে। যারা এ কাজটি করতে পারবে, আমি বলবো তারা বাংলাদেশের জন্য বিশাল কিছু করবে বলে -ইতিহাসে উল্লেখিত হবে।
ধন্যবাদ স্যারকে সুন্দর এই লেখাটির জন্য
আরো একটা দিক হলো আমাদের আলিম সমাজের কাছ থেকে যে শিক্ষা সংস্কারের প্রপোজাল আমরা দেখেছিলাম তাও কিন্তু অনেক ভালো ছিলো, কিন্তু 'হুজুরেরা আর কি জানে' মানসিকতা ও তাদের অতি ইসলামিকতা ও সেই প্রপোজাল কে কাজে লাগাতে দেয়নি।
আরো ভয়াবহ ব্যাপার হলো আমাদের জাতীয় কোন শিক্ষা নীতি আজো পর্যন্ত চুড়ান্ত ভাবে কিছুই নেয়া হলো না। যেদল যেভাবে আসতেছে তারা তাদের মত একটা নীতি মালা তৈরী করছে যা গোটা বাংলাদেশের ঐকমত্য হয় না।
সুন্দর একটা লেখা উপহার দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ, প্রিয় আমহমাদ মূসা
আমি তখন পডেছি, ভালোই লাগলো, আপনার লিখার হাত কিন্তু জটিল। আশা করি মিস করবেননা।
আমি ব্যাস্ততার কারনে ব্লগে মন্তব্য করতে পারিনি।
একটা জিনিস আমার কাছে ভালই লাগলো। ব্রিটিশদের ইতিহাস। অজানা কিছু জানলাম।
আসলে ভাই আমাদের বর্তমান যে শিক্ষা ব্যাবস্তা, তা থেকে প্রতিটা মানুষ শুয়োর হয়ে বাহির হচ্ছে যেন।
যে শিক্ষা ব্যাবস্থায় সৃষ্টিকর্তাকে চিনাতে ব্যার্থ. সে শিক্ষা ব্যাবস্থা কতটা গ্রহনযোগ্য?
আরেকটা কথা সিটিজিবিডি২৪ ভাইর একটা মন্তব্য- সুশিলরা নাপিত।
বাস্তবাতা হলো আমাদের এই সুশিল নামে শয়তান গুলাকে আগে রিপেয়ার করতে হবে।
আমাদের সুশিলদের কথা আর কি বলবো, তারা সব লুইচ্ছার গুষ্টি।
পিলাচ অনেক ধন্যবাদ
এসব মাদ্রাসা শিক্ষিতরা মানব জীবনের বিভিন্ন সাইট ও দিকের প্রতি বেখবর। ক্ষেত্র বিশেষে উদাসীনও বটে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নীতি নৈতিকতার পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে অতি নিস্কলুষ ও পরিচ্চন্ন জীবন যাপনকারী হিসেবে মনে করেন নিজেদেরকে। অথচ মানুষ মাত্রই জীবন চক্রের বাকে বাকে নীতি নৈতিকতা ও সার্বিক জীবন ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে জীবন ধারণ ও চালনের প্রতিটি উপদানই সম্পর্কযুক্ত।[/i
আপনার উপরের উদৃতি ছাড়াও সকল বিষয়ে আমি একমত। আমি যা চিন্তা করি আপনার লিখলীনে তার অনেক গুলো এসে গেছে।
মূলত শিক্ষা মধ্যে, দুনিয়াবী জ্ঞান, মানবতার জ্ঞান এবং আত্মা পরিশুদ্ধিতার জ্ঞান থাকতেই হবে। শুধুমাত্র দুনিয়াবী জ্ঞান নিয়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনীয়ার, ব্যরিষ্টার হলে তারা হবে কতগুলো মডারেট জানোয়ার। এদের দ্বারা কেউ উপকৃত হয়না, হওয়া সম্ভবও নয়।
-আপনার সাথে একমত পোষন করছি ।
Because when i try to admit my little boy ..i donot find any up to mark school where balance the religious-modern education.Also the schooling system is very poor.
Really i fedup who i can teach my boy good citizen with proper religious flavor.
একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আমরা চাই ধর্মীয় বিষয়ে যেমন বিশেষজ্ঞ তেমনি জ্ঞানের অন্যন্যা শাখাতেও বিশেষজ্ঞ ও প্রফেশনাল তৈরীর সমন্বিত ব্যবস্থা।
বিশ্লেষণমূলক পোস্টের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আল্লাহ আপনাকে আরও ভাল লেখার তৌফিক দান করুক। আমিন।
আমরা তো শুধু বলতে বলতে শেষ। বৃটিশ চলে গেছে কত বছর। কেন তাদের মানসিক গোলাম হয়ে আছি।
আমি ইসলাম পন্থী।কিন্তু আমার ছেলেকে আমি তাকে কোন শিক্ষাব্যবস্থায় পড়াবো বলূন। বর্তমান সবাই কি করছে।
ভাই জান আমার মনে হয় - একটা মডেল থাকা চাই। সেই মডেল ৫৪ টি মুসলিম দেশ করতে পারলো না?
খুব বিশ্লেষণধর্মী লেখা তাই বারবার মন্তব্য করতে গিয়েও থেমে যেতাম।
কারন জ্ঞানের স্বল্পতা।
তাড়পরও বলছি কিছু সেটা হলো আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যাবস্থা যেমন আছে তারমধ্যেও আল্লাহ কল্যান রেখেছেন।
জাজাকাল্লাহ । ভাইয়া সুন্দর লিখাটির জন্য।
মন্তব্য করতে লগইন করুন