নতুন তথ্য ও প্রযুক্তি আইনের প্রবর্তনঃ অপরাধ দমন নাকি ভিন্নমত দলন?

লিখেছেন লিখেছেন আহমদ মুসা ২৪ আগস্ট, ২০১৩, ০৩:৫৭:৪৬ দুপুর

ভুমিকাঃ আজকের এই বগ্লটির ভাবার্থ একজন ব্লগারের পোস্টকৃত লেখাতে আমার একটি মন্তব্যে আরেকটু বিস্তারিত বর্ধিতাকারে পোস্ট করলাম।

সংশ্লিষ্ট আইনের ৫৪, ৫৬, ৫৭ ও ৬১ ধারায় উল্লেখিত অপরাধকে আমলযোগ্য ও অজামিনযোগ্য।



এসব আইন কানুনের ধারা উপধারা সৃষ্টি করে প্রকৃত অপরাধীকে সাজা দেয়া কি সম্ভব হবে? আসলে আমাদের দেশে সাধারণত আইনি বিভিন্ন ধারা উপধারার মারপ্যাচেঁ যেভাবে নিরাপরাধ মানুষ হয়রানির শিকার হয় সেভাবে প্রকৃত অপরাধীদের হয়রানী বা শাস্তির আওতায় আনা যায়না। কারণ প্রভাবশালী অপরাপধীরাই অদৃশ্যভাবে নিয়ন্ত্রণ করে আইন আদালত থেকে শুরু করে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও এজেন্সীগুলো। তাই বরাবরের মত এবারো আশংকা করা হচ্ছে নিরাপরাধ ব্যক্তিরাই হয়রানীর স্বীকার হবেন বেশী।

আইন কানুন সম্পর্কে আমার তেমন পড়া শুনা নেই। তাই বিস্তারিত বিশ্লেষণ করার যোগ্যতাও নেই আমার। তবে এখানে একটি স্থানে অশ্লীলতা চড়ানোর বিষয়ে বলা হয়েছে। এই বিষয়ে আমার নিজের অনুভূতির কথাই প্রকাশ করছি মাত্র।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে আগেকার সময়ে যখন ইন্টারনেট বা সামাজিক যোগাযোগের গ্লোবালাইজেশনের এই জয়জয়কার অবস্থা ছিল না। তখন অশ্লীলতার বহুবিদ পন্থার মধ্যে একটি ক্ষেত্র ছিল বিভিন্ন পর্ণো ম্যাগাজিন ও চটি সাহিত্যের প্রকাশনাগুলোতে। কিন্তু সে আমলে তো এসব অবাঞ্চিত কর্মকান্ডের মূলোৎপাটন বা দমনের কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয়নি। অথচ এসব অনৈতিক কর্মকান্ড প্রতিরোধের জন্য যথেষ্ট আইন কানুন আমাদের দেশে ও সমাজে প্রচলিত আছে। কিন্তু এসব আইনের প্রয়োগ নেই।

গ্রামীন সমাজে এসব আইন কানুনের কিছুটা প্রভাব থাকলেও তাও বিভিন্ন মতলববাজ গোষ্ঠী ধর্মীয় গোড়ামী ও ফতওয়াবাজী বলে গালাগালি করে পাইকারী হারে এসব ভাল কাজের বিরোধীতা করে আসছে। যদিও এসব ভাল কাজের ভিতরেও কিছু বিচ্চিন্ন ঘটনা ঘটে মাঝে মধ্যে। কিন্তু এসব বিচ্চিন্ন ঘটনাকেই পুজি করে ধর্মীয় নীতিনৈতিকতার যে সুন্দর আবহ আমাদের গ্রামীন সমাজে চালু রয়েছে তাকে উপ্রে ফেলার আয়োজন চলছে বিভিন্ন কৌশলে। এসব কৌশলের অংশ হিসেবে যোগ দিয়েছে বিভিন্ন দেশী বিদেশী সেটেলাইট ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া। বিশেষ করে আমাদের প্রতিবেশী ভারতীয় কয়েকটি চ্যানেল এক্ষেত্রে ভুমিকা রাখছে অত্যন্ত নোংরাভাবে।

প্রশ্ন ছিল অশ্লীলতা নিয়ে। বর্তমানে অশ্লীলতা ছড়ানোর বহুমূখী ক্ষেত্র বিস্তার লাভ করেছে। বিশেষ করে ভার্চুয়াল জগতে অর্থাৎ ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেভাবে চটি সাহিত্যের ভয়াবহতা শয়লাভ করেছে তার প্রতিরোধ করার জন্য অগে থেকেই অনেক আইন কানুন রয়েছে আমাদের দেশে। আমার এক আইনজীবি বন্ধুর সাথে আলাপকালে বিষয়টি তার কাছ থেকে কিছুটা ধারণা পেয়েছি। কিন্তু এসব নোংরামী প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কি সেসব আইন কানুন প্রয়োগ করা গেছে?

আমি একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলি। ”মা” লিখে গোগল চার্সে এন্টার করলাম। এর বাকী অংশ আর বলার দরকার পড়বে না আশা করি। পাঠকরা নিশ্চয় বুঝে গেছেন আমি কি বলার চেষ্টা করছি। আমাদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে যারা এই আইনটি প্রণয়নের উদ্যেগ নিয়েছেন তাদের রাজনৈতিক মতলবের উর্ধ্বে উঠে যদি প্রয়োগ করতে পারেন তবেই কিছুটা সাফল্য আশা করা যায়। নতুবা সেই সাফল্য হবে নিজেদের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য প্রতিপক্ষ বিরোধী মতকে ঘায়েল করার সাফল্য।

ইতিমধ্যে সরকার বিরোধী মতাদর্শের লোকজন থেকে এর বিপক্ষে সমালোচনা শুরু হয়েছে। তাদের ধারণা সরকারের কুকীর্তির বিরুদ্ধে মানুষ যাতে টু শব্দ করতে না পারে সেজন্য বিরোধী মতের লোকদের ক্ষেত্রে সরকার তার সেরা অস্ত্র ৫৭ নম্বর ধারার সর্বোচ্চ অপপ্রয়োগ করবে। এই নতুন আইনের মূল উদ্দেশ্য সরকারের কুকর্মের বিরোধীতাকারীদের আচ্ছামত পাকড়াও করে শায়েস্তা করা।

কিন্তু কথা হচ্ছে আগামীতে বিএনপি কিংবা বর্তমান ক্ষমতাসীনদের বিরোধী কোন পক্ষ যদি ক্ষমতায় আসে তখন আওয়ামী লীগকে তাদের নিজেদের গড়া আইনেই তাদের জেলে ঢোকাবেন।

অনেকেই রসিকতা করে বলাবলি শুরু করেছে পুলিশ কাউকে দেখামাত্র সরাসরি গুলি করে মেরে ফেলবে । তা না হলে পুলিশের চাকুরী নট । এরকম আইনও শীঘ্রই করা হবে।

বিষয়: বিবিধ

১৮০২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File