পাকিস্তানী হানাদার এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য

লিখেছেন লিখেছেন আহমদ মুসা ১৭ জুন, ২০১৩, ০১:৪৮:০৬ দুপুর

১৯৪৭ সালে বৃটিশের গোলামীর জিঞ্জির থেকে মুক্ত হয়ে যে আশা ও আখাংকা নিয়ে এদেশের মানুষ পাকিস্তান সৃষ্টি করলো সেই পাকিস্তানের পশ্চিমাংশের শাসকরা বাংগালীদের উপর জুলুম নির্যাতন ও শোষণ-ত্রাশণের মাধ্যমে তাদের প্রাপ্য অধিকার ও মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করে অবজ্ঞা ও অবহেলা করতে লাগলেন। ফলে আবারো শুরু হলো জালেম ও শোষকদের বিরুদ্ধে এদেশের মানুষের লড়াই সংগ্রাম। একাত্তুর সালে চুড়ান্ত স্বাধীনতা যুদ্ধে অসংখ্যা বদি আদমের প্রাণ ও রক্ত স্রোতের বিনিময়ে অর্জিত হলো প্রিয় মাতৃভুমি স্বাধের বাংলাদেশ। স্বাধীন দেশে বিগত ৪২ টি বছর অনেকে ক্ষমতায় আসলেন অনেকে ক্ষমতা হারালেন বা ক্ষমতা থেকে চলে গেলেন। আওয়ামী লীগও বেশ কয়েক বার এদেশকে শাসন করেছে। এখনো তারা ক্ষমতায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ শাসনামল বিভিন্ন কারণে চরমভাবে বিতর্কিত, মারাত্মক নিন্দনীয়। জনগণের উপর ফ্যাসিবাদী কায়দায় এমনভাবে নিষ্ঠুর নির্যাতন ও শোষণ-ত্রাশন ও লোটপাঠের মগের মুল্লুকে পরিনত করলেন যা বৃটিশ ও পাকিস্তান যামানার শাষকগোষ্ঠীর সম্মিলিত অপশাসনের চেয়ে হাজার গুণ বেশি। একটু গভীরভাবে চিন্তা করলে আওয়ামী দুঃস্বাশন ও পাকিস্তানী হানাদারদের নির্যাতনের মাত্রা তুলনা করা যেতে পারে নিম্নরূপে।

১) পাকিস্তানী হানাদাররা কোন আলেম ওলামাকে হত্যা করেনি, কিন্তু আওয়ামী জাহেলরা নবী (সা)’র ওয়ারিশ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান ঘুমন্ত ও জিকির-আযকারে মশগুল এবাদতরত আলেম-ওলামাদের উপর ইতিহাসের নিকৃষ্টতম নিষ্ঠুর গনহত্যা পরিচালনা করেছে।

২) পাকিস্তানী হানাদাররা কোন নিষ্পাপ শিশুকে হত্যা করেনি। কিন্তু আওয়ামী নাস্তিকরা মাদ্রাসার অসহায় কোরআনে হাফেজ অসংখ্যা শিশুকে হত্যা করেছে।

৩) পাকিস্তানী হানাদাররা প্রকাশ্যে কোন নিরপরাধ মানুষকে লাটি বৈঠা দিয়ে মেরে তার উপর নাঁচানাচি করেনি। কিন্তু আওয়ামী শয়তানরা দেশের সাধারণ মানুষকে লাঠি বৈঠা দিয়ে হত্যা করে তার উপর পৈশাচিক কায়দায় নাঁচানাচি করে ইতিহাসের সব নিষ্ঠুরতাকে হার মানিয়েছে।

৪) পাকিস্তানী হানাদাররা মানুষ মেরে কেটে কেটে ১৮/১৯ টুকরো করেনি। কিন্তু আওয়ামী কুলাঙ্গাররা এধরণের অসংখ্যা নজীর স্থাপন করেছে।

৫) পশ্চিম পাকিস্তানী হানাদাররা লোটপাট করে এদেশের সম্পদ নিয়ে যেতে পারেনি, কিন্তু আওয়ামী হায়েনারা হলমার্ক, ডেসটিনি, শেয়ার বাজার সহ বিচিত্র কিচিমের পন্থায় দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে এদেশকে পঙ্গু করার আয়োজন করেছে।

৬) পাকিস্তানী হানাদাররা বাইতুল মোকাররম সহ দেশের মসজিদে গুলি চালিয়ে নিরস্ত্র মুসল্লিদের হত্যা করেনি। কিন্তু আওয়ামী মোনাফেকরা তার চেয়েও বেশী নিষ্ঠুর কায়দায় মুসল্লিদের হত্যা করেছে।

৭) পাকিস্তানী হানাদাররা এদেশের মসজিদের আজান বন্ধ করেনি। কিন্তু আওয়ামী জাহেলরা মসজিদের আজান দেওয়ার মাইক বন্ধ করে দিয়েছে।

৮) পাকিস্তানী হানাদাররা সাধারণ মুসলিমদের উপর জুলুম করেনি। কিন্তু আল্লাহর লা’য়ানত পার্টি নাস্তিক কাফেরের বাচ্চারা এদেশের সংখ্যগরিষ্ঠ মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনকেই হত্যা করেছে বেশী।

৯) পাকিস্তানী হানাদাররা দাড়ি টুপিধারী কোন পরহেজগার দ্বীনদার ব্যক্তির ধর্মীয় লেবাসকে কটাক্ষ করে তার উপর নির্যাতন করেনি। কিন্তু ছাত্রলীগ-যুবলীগ নামের পিতৃপরিচয়হীন দুনিয়ার নিকৃষ্টতম অপদার্থ হায়েনারা পিতৃতুল্য প্রবীণ দাড়িওয়ালা ব্যক্তিকে নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দিয়ে এদেশের মুসলমানদের রক্ত কণিকায় আগুন ধরায়ে দিয়েছে।

১০) পাকিস্তানী হানাদাররা হেজাবপরিহিতা কোন মহিলার দিকে তাকানোর সহস করেনি। কিন্তু আওয়ামী টাউট-লম্পটরা এদেশের সম্ভ্রান্ত হিজাব পরিহিতা উচ্চশিক্ষিতা মা’বোনদের বিনা পরওয়ানায় গ্রেপ্তার করে রিমান্ডের নামে অকথ্য ভাষায় নির্যাতন করে ইতিহাসে নজীন স্থাপন করেছে।

১১) পাকিস্তানী হানাদাররা কাজের মেয়েকে চুরি করার ভুয়া অভিযোগে মানুষের মল-মুত্র খেতে বাধ্য করেনি। কিন্তু আওয়ামী জালেমরা কাজের মেয়েকে দীর্ঘ তিন মাস বাথরুমে আটকিয়ে রেখে লাগাতার শারিরিক নির্যাতন চালিয়ে মলমুত্র খেয়ে বেচে থাকতে বাধ্য করেছে।

১২) পাকিস্তানী হানাদাররা গরীব অসহায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের হরতাল প্রতিরোধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার জন্য জড়ো করে পাইকারি হারে গনহত্যা চালিয়ে অনন্দ উল্লাস করেনি। কিন্তু আওয়ামী নিষ্ঠুর ঘাতকরা রানা প্লাজার মত অনেক ট্র্যজেটিক অঘটন ঘটিয়ে বীর দর্পে হেলিকপ্টারে ছড়ে সীমান্ত থেকে ফেরত আসে।

১২) পাকিস্তানী হানাদাররা নিজের শসস্ত্র বাহিনীর চৌকষ অফিসারদের পরিকল্পিতভাবে এক জাগায় জড়ো করে গনহত্যা চালিয়ে নিঃশ্বেস করে দেয়নি। কিন্তু আওয়ামী ঘাতকরা পিলখানায় পরিকল্পিত গনহত্যা চালিয়ে একটি বাহিনীকে ধ্বংস করে দিয়েছে।

এভাবে লিখতে গেলে সারাদিন লিখতে হবে, কিন্তু শেষ করা যাবে না। আমি হয়রান হয়ে যাচ্ছি। বাকী পয়েন্টগুলো পাঠকের উপর চেড়ে দিলাম।

এখন সময় হয়েছে এই জাতির প্রতিরোধ করার। ঘুমন্ত জাতিকে জাগাতে হবে। সবাই সোচ্চার হতে হবে।

বিষয়: বিবিধ

১৪১৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File