আর কত নিষ্ঠুরতা দেখতে হবে?

লিখেছেন লিখেছেন আহমদ মুসা ২৮ মে, ২০১৩, ০৭:৩৯:০৩ সন্ধ্যা

হেফাজতে ইসলামের উপর ভয়াবহ রাষ্ট্রীয় নিষ্ঠুরতার পর থেকে বেশির ভাগ মানুষ যারা ইসলামের অনুসারী কিংবা যারা অনুসারী না হলেও ইসলামী জীবন ব্যবস্থার প্রতি বিদ্ধেশ পোষণ করেন না তেমন লোকজনের সাথে দেখা হলে, কথা হলে অধিকাংশই হতাশা ও পেরেশানীতে ভারাক্রান্ত। হেফাজতের ব্যানারে দেশের যে মহা গনজাগরণ সৃষ্টি হলো তা কি নিমিষেই ইতি টানলো কিনা? এতোগুলো তরুজাতা খাটি অথচ নিরাপরাধ অসহায় ঈমানদারের প্রাণের কুরবানীর বিনিময়ে কি কিছুই অর্জিত হবে না? ১/১১ পর হতে পিলখানা ম্যাসাকার থেকে শুরু করে ধারাবাহিক ভয়াবহ নিষ্ঠুরতার খলনায়কদের কি পথের কাঠা আরো পরিস্কার হয়ে গেলো? হাসান সরওয়ার্দীর মত আত্মমর্যাদাহীন আর্মি অফিসারের অরুচিকর নিরষ কিছু কর্মকান্ডের কারণে দেশের তাবত সেনাবাহিনীর সামগ্রিক চরিত্র তার মাধ্যমেই প্রকাশ করানো হচ্ছে কি না? এধরনের আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সাধারণ মানুষের অন্তরে নাড়া দিচ্ছে। এ জাতীয় বিভিন্ন প্রশ্নের কারণে চিন্তার জগতে দারুণ এক ঘোমটবাধা হতাশা সৃষ্ট হচ্ছে বলে অনেকেই চিন্তিত। কিন্তু এর একটা বিপরীত দিকও যে প্রবলভাবে সম্ভবনাময়, তা নিয়ে কেউ কেউ খুবই আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে। আমরা ঠিক জানি না তাদের এই আত্মবিশ্বাসের মধ্যে কতটা আবেগ জড়িত। তবে মতিঝিল ট্রাজেডীর পর থেকে ঘটনার হোতা ও খলনায়কদের দিধাহীনভাবে আস্ফালন ও প্রতিপক্ষ শুণ্য মাঠে গোল দেয়ার ডামি আত্মতুষ্টির অন্তুরালে ঠিকই ১১ নম্বর বিপদ সংকেতের ভয়াবহ কম্পন শুরু হয়ে গেছে বামপন্থী প্রভাবিত বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের। হেফাজতে ইসলামের নেতা কর্মী, অনুসারী এবং তাদের আকাবেরদের অতীত ইতিহাস সম্পর্কে যাদের সামান্যতমও ধারণা আছে তারা ঠিকই বুঝতে পারবে কর্ম কৌশল ও শক্তি সামর্থ কি এবং কিভাবে তা প্রয়োগ করবে। অনেকেই এদেরকে এতিম, গরীব, মিসকিন ও আধুনিক শিক্ষা বঞ্জিত বলে তুচ্চ তাচ্ছিল্য করে উপহাস করতে দেখা যায়। প্রকৃতপক্ষে রাজনৈতিক অঙ্গনের অথর্ব, অপদার্থ, বেখবর কিছু ফালতু লোকেরাই এসব গালিগালাজ দিয়ে ধর্মের প্রতি নিজের অন্তরের বিদ্ধেষকে প্রকাশ করে মাত্র। হেফাজতে ইসলাম জামায়াত শিবিরের মত কোন স্তর বা ক্যাডার বিত্তিক চেইন অব কমান্ডের সুসংঘটিত দল নয়। এদেরকে আপাতত দৃষ্টিতে ধর্মীয় আবেগ জড়িত অরাজনৈতিক সামাজিক শক্তি মনে করা হলেও ৫-৬ ই মে এর পর থেকে যে পথে তাদেরকে ঠেলে দেয়া হয়েছে তাতে তারা জামায়াত শিবিরের চেয়েও সুসংঘঠিত হয়ে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামা অতি অল্প সময়ের ব্যাপার মাত্র। হয়তো দু’মাসও লাগবে না। এদের লোক বল এমনিই তৈরী করা আছে। কওমী মাদারিসগুলোর ভিতরের খবর যারা রাখেন, তারা খুব ভাল ভাবেই জানে এবং সহজেই বুঝতে পারবে বিষয়ের গভীরতা কতটুকু। এরা যে ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং যে পরিবেশ পরিস্থিতিতে বেড়ে উঠেছে তাতে সহজেই প্রস্তুতি গ্রহণ করা অল্প সময়ের ব্যাপার মাত্র। তথাকথিত শহুরে মধ্যবৃত্ত শ্রেণীর ভোগ বিলাশপ্রিয়তা এদের মাঝে নেই। নেই গুটি কয়েক উচ্চ বৃত্তের নাফরমানীর অর্থায়ণ। মজার বিষয় হচ্ছে এরা বুঝতে পেরেছে এই মুহুর্তে দেশ ও ইসলামের আসল শত্রু কারা? এবং এটাও তারা বুঝতে পেরেছে শত্রু পক্ষ ঠিক কি ধরণের আঘাত হানতে কিভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে? তারা এটাও বুঝতে পেরেছে দেশ ও ইসলামের পারমেনান্ট ও ক্যজুয়াল শত্রু কারা? কি উপায়ে এসব শত্রুদের হাত থেকে এই জাতিকে, এই দেশকে রক্ষা করা যায়? হয়তো অচিরেই আমরা দেখতে পাবো নতুন উৎসাহ ও উদ্ধীপনা নিয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে হাজির হবেন হেফাজতে ইসলামের দ্বিতীয় স্তরের মিশন। আমরা অপেক্ষায় থাকলাম ততদিন পর্যন্ত।

বিষয়: বিবিধ

১৭০৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File