গোয়াল ভরা গরু না থাকুক- বস্তা ভরা নাম্বার চাই হে ‘গুরু’
লিখেছেন লিখেছেন সুন্দরের আহবান ১২ অক্টোবর, ২০১৪, ১২:৫৪:১২ দুপুর
পুকুর ভরা মাছ, গোয়াল ভরা গরু আর গোলা ভরা ধান আবহমান বাংলার অতি পরিচিত দৃশ্য। যদিও যান্ত্রিক সভ্যতার উন্নতির সাথে সাথে এ সব এখন কারো কাছে অতীত ইতিহাস, কারো কাছে প্রবাদ বাক্য। গ্রামগুলোও আজ শহুরে রুপ ধারণ করা শুরু করেছে। খালে বিলে পুকুরে এখন আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। হাইব্রীড মাছের চাষাবাদ এখন সর্বত্র। হাইব্রীড জাতের ব্রয়লার মুরগীর খামার গ্রামে গঞ্জে সর্বত্র। হাইব্রীড খাবারের সাথে মানুষগুলোও এখন হাইব্রীড হয়ে যাচ্ছে। আমরা ছয় বছর বয়সে স্কুলে যাওয়া শুরু করেছি। প্রথম ছয় মাস ছোট ওয়ান পরবর্তী ছয় মাস বড় ওয়ানে পড়েছি। এখন জন্মের পরদিনই স্কুলে পাঠানো যায় কি না, তার কসরৎ চলছে। বেবী, কেজি, নার্সারীরর আগে আরো একটি ক্লাস যোগ করা হয়েছে তার নাম আড়াই প্লাস। ডিজিটাল সরকারের কমিউনিস্ট মন্ত্রী আজ বড় বেশী ডিজিটাল এবং সবচেয়ে বুর্জোয়া রাজনীতিবিদ হয়ে গেছেন। পাশের হার বাড়ানোর জন্য দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। পাশ চাই, পাশ- কিন্তু এ পাশ এখন জাতির গলার ফাসে পরিণত হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস ওয়ালাদের কৃতিত্ব দেখে তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। পরীক্ষায় খাতায় ছাত্ররা লিখুক বা না লিখুক তাদের জিপিএ-৫ দিতে হবে। এটা মন্ত্রী মহোদয় এবং মন্ত্রনালয়ের নির্দেশ। মেরুদন্ডহীন জাতি তৈরীর আগে শিক্ষকরা নিজেরাই মেরুদন্ডহীন হয়ে যাচ্ছেন। যারা দু’একজন মেরুদন্ড সোজা করে দাড়াতে চায় তাদের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয়ার জন্য সরকারের হাতে আছে নানা অস্ত্র। আজকের একটি নিউজ হয়তো অনেকেরই চোখে পড়েছে। পরীক্ষায় কম নাম্বার দেয়ার কারণে ২৭ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ নিউজ দেখার পর ক’জন শিক্ষকের আর মেরুদন্ড সোজা থাকবে। শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড- এ অপ্তবাক্য পরিবর্তন করে এখন বলতে হবে, শিক্ষা জাতির ভাঙ্গাদন্ড। ডিজিটাল জামানার হাইব্রীড ছাত্ররা খাতায় লিখতে পারুক বা না পারুক শতভাগ শিক্ষিত জাতি আর শতভাগ পাশের কৃতিত্বের জন্য নাম্বার দিয়ে দাও - যার বস্তায় যতো আছে। গোলা ভরা ধান নেই, গোয়াল ভরা গরু নেই, পুকুর ভরা মাছ নেই, সমস্যা কি বস্তা ভরা নাম্বার তো আছে দিয়ে দাও।
বিষয়: বিবিধ
১৬৪৬ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন