ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য
লিখেছেন লিখেছেন সুন্দরের আহবান ১৭ আগস্ট, ২০১৪, ০১:৩৫:০৩ দুপুর
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষকে সৃস্টি করে এমনিতেই বলগাহীনভাবে ছেড়ে দেননি। মানুষকে এ পৃথিবীতে সকল জীবের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব নির্ণিত হয়েছে জ্ঞানের মাধ্যমে। সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ সা. এর উপর যে অহী নাযিল হয়েছে তার প্রথম বাণী ‘পড়’। ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার নাম। কোন খন্ডিত জীবনাদর্শ বা প্রচলিত অর্থে অন্যান্য ধর্মের মতো কোন ধর্ম নয় ‘ইসলাম’। ইসলাম আল্লাহর পক্ষ থেকে মনোনীত একমাত্র দীন বা জীবন ব্যবস্থা। মানুষের জীবনের প্রয়োজন পূরণের জন্য এমন কোন দিক ও বিভাগ নেই যা ইসলাম নির্দেশ করেনি। মানুষের জীবনের অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে মানুষ তার পরিচয় জানবে, তার দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে জানবে। মানবিকতা, নৈতিকতা, সাহসিকতা, যোগ্যতা, উদ্ভাবনী এবং বিশ্লেষণী শক্তি সকল কিছু সৃস্টি হবে শিক্ষার মাধ্যমে। শিক্ষা যদি কিছু বই পাঠ্য হিসেবে পড়ার, সার্টিফিকেট অর্জন করার আর কিছু কারিগরী বিষয় আয়ত্ব করার নাম হয়, তবে সে শিক্ষায় ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল, মোক্তার পাওয়া যেতে পারে কিন্তু আদর্শ নৈতিকতা সম্পন্ন কোন মানুষ পাওয়া যাবে না। আবার ‘দুনিয়া হচ্ছে আখিরাতের শষ্য ক্ষেত্র’ এ বিষয়টি ভুলে গিয়ে ইসলামকে খন্ডিতভাবে গ্রহণ করে শুধুমাত্র কিছু আনুষ্ঠানিক ইবদাত শিক্ষার জন্য নাম মাত্র ধর্মীয় শিক্ষাকে ইসলামী শিক্ষা মনে করা হয় তাতে চরম ভুল করা হবে। বর্তমান প্রচলিত আধুনিকতার নামে যে শিক্ষা চলছে সে শিক্ষা আদর্শ নৈতিকতা সম্পন্ন মানুষ তৈরী করতে সম্পূর্ণরুপে ব্যর্থ। এ শিক্ষা দীন ও দুনিয়ার কোন প্রয়োজনই পূরণ করতে সক্ষম নয়। আবার মাদরাসা শিক্ষার নামে যে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু আছে তাও কোনভাবেই পূর্ণাঙ্গ ইসলামী শিক্ষা নয়। ‘দুনিয়া হচ্ছে আখিরাতের শষ্য ক্ষেত্র’ এবং ‘ইসলাম আল্লাহর পক্ষ থেকে একমাত্র মনোনীত দীন বা জীবন ব্যবস্থা’ এ বিষয়টিকে সমানে রেখে পূর্ণাঙ্গ ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা কায়েম ব্যতিত দীন দুনিয়ার উভয় প্রয়োজন মেটাবার মতো আদর্শ মানুষ তৈরী করা সম্ভব নয়। তাই-----
১. শিক্ষাব্যবস্থাকে একই সঙ্গে দ্বীন ও দুনিয়ার প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হতে হবে।
২. মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সকলের জন্য ইসলামের মৌলিক জ্ঞানের পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা দিতে হবে।
৩. স্কুল-মাদরাসা নামে বিভাজনের শিক্ষা পরিহার করে সকলের জন্য একই ধারার শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে।
৪. পার্থিব জীবনের প্রয়োজনে যত প্রকার বিদ্যা শিক্ষা করতে হয় তা সবই ইসলামী দৃষ্টিকোণ হতে শিক্ষা দিতে হবে।
৫. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গোটা পরিবেশকেই ইসলামী ছাঁচে ঢালাই করতে হবে।
৬. উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে ইসলামের সাথে মানব রচিত বিধানের তুলনামূলক আলোচনার মাধ্যমে ইসলামের যৌক্তিকতা ও শ্রেষ্ঠত্ব শিক্ষার্থীদের মনে বদ্ধমূল করতে হবে।
৭. মেডিকেল, প্রকৌশল, দর্শন, ইতিহাস, কলা, ভূগোল, জোতির্বিজ্ঞান- অর্থাৎ শিক্ষার যতগুলো বিভাগ আছে তাতে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক কোন বিষয় থাকতে পারবে না।
৮. পৃথিবীর যতগুলো মতবাদ, আছে, দর্শন আছে, থিওরী আছে সব কিছুই ইসলামী আদর্শের আলোকে তুলনামূলক পর্যালোচনার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
৯. যেহেতু কুরআন, হাদীস ও ফিকাহ্ ইসলামী জ্ঞানের মূল উৎস, সেহেতু শিক্ষাব্যবস্থার উচ্চ স্তরে উন্নত মানের মুফাস্সির, মুহাদ্দিস ও ফকীহ সৃষ্টির উপযোগী বিশেষ কোর্স থাকতে হবে।
১০. শিক্ষকগণকে চিন্তা ও কর্মে প্রকৃত মুসলিম হতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
২২০৭ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন