ড. মাসুদের উপর নির্যাতন প্রমাণ করে একটি গনবিরোধী, অশুভ শক্তি ক্ষমতায়
লিখেছেন লিখেছেন সুন্দরের আহবান ১৪ আগস্ট, ২০১৪, ০৭:৪৮:২০ সন্ধ্যা
বর্তমানে একটি অনির্বাচিত অবৈধ অগণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায়। যাদের প্রতি দেশের শতকরা পচানব্বই ভাগ জনগণ অনাস্থা জানিয়েছে। এ অনির্বাচিত সরকারের আস্ফালন দেখলে মনে হয় তারা কেয়ামত পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে। ক্ষমতাকে প্রলম্বিত করার জন্য তাদের একমাত্র ভরসা আইন শৃংখলা বাহিনী। এ বাহিনীর যতগুলো বিভাগ আছে প্রতিটি বিভাগ এখন আওয়ামী লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। এদের মধ্যে এখন আর সামান্যতম পেশাদারিত্ব দেখা যায় না। তাদের কর্মকান্ড দেখলে বোঝা যায় যে তারা একটি ফ্যাসিস্ট, গণবিরোধী মানবতা বিরোধী অবৈধ সরকারের লাঠিয়াল বাহিনী ছাড়া আর কিছু নয়।
বিরোধী দলের মিছিল দেখলেই গুলি, হাতের নাগালে পেলে গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা আতপর নির্যাতনে চিরজীবনের জন্য পঙ্গু করে দেয়া এ কাজই এখন পুলিশ করছে। ইতিপূর্বে শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলোয়ার হোসাইনকে রিমান্ডের নামে নির্যাতন করে তাকে পঙ্গু করে দেয়া হয়েছে। আবার চারদিন আগে গ্রেফতার হওয়া শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ড.শফিকুল ইসলাম মাসুদকে নির্মম নির্যাতন করে পঙ্গু করে দেয়া হয়েছে। ড. মাসুদ শুধু একজন সাবেক ছাত্র নেতাই নন। তিনি ছাত্র জীবনে কৃতিত্বের জন্য গোল্ড মেডেল পেয়েছেন, মাস্টার্স এবং পি এইচ ডি করেছেন, একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন, লেখক এবং কলামিস্ট। এমন একজন প্রতিভাবান মানুষকে তারাই নির্যাতন করছে যারা কোনমতে নকলের জোরে পাশ করে এখন সরকারী চাকুরী নিয়ে পেশাদারিত্ব বাদ দিয়ে দলীয় ক্যাডারের ভ’মিকা পালন করছে।এভাবে জুলুম করে কি সরকারের শেষ রক্ষা হবে? সরকার তাদের জুলুমের মাত্রা না কমালে ভবিষ্যত হয়তো ভয়াবহ হতে পারে যা থেকে সরকারকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না।স্বাধীন-সার্বভৌম এ জনপদের মানুষ স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ন্যায় বিচার, সুশাসন, গতান্ত্রিক অধিকার, আইনের শাসন এবং সূখী-সমৃদ্ধ জীবনের জন্য বার বার লড়াই করেছে। দু’শ বছরের বৃটিশের গোলামীর জিঞ্জির ছিন্ন করতে বার বার আন্দোলন ও বিদ্রোহ হয়েছে। আন্দোলনকারীদের জেল, জুলুম, নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখে স্বাধীনতাকামী জনতার মন থেকে আন্দোলনের চিন্তা দরীভূত করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। সাইয়েদ আহমদ ব্রেলভী, হাজী শরীয়ত উল্লাহ, মীর নিসার আলী তিতুমীরসহ অনেক নেতার নেতৃত্বে এ জনপদে স্বাধীনতার লড়াই হয়েছে। তারা প্রত্যেকেই নিজেদের সঙ্গী-সাথীসহ জীবন দিয়েছেন কিন্তু স্বাধীনতার আন্দোলন, জনগণের দাবী আদায়ের আন্দোলন থেকে পিছু হটেন নি।তাদের দেখনো পথেই জনতার তীব্র প্রতিরোধ এবং আন্দোলনের মূখে ইংরেজরা বিদায় নেয়, জনতা দু’শ বছরের ইংরেজদের গোলামী থেকে মুক্তি পায়। এ পথ ধরেই আসে ৫২ র ভাষা আন্দোলন, এবং ৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধ। যদিও আমাদের নতুন প্রজন্মকে স্বাধীনতা মানে ‘৭১’ এর বাইরে কিছু নেই। এ ইতিহাস বোঝানোর, শেখানোর, পড়ানোর, বলানোর এবং এ চেতনার কথা বলে স্বকীয়তা, এবং আত্ম পরিচয় ভূলিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তরুণদের বেঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে অতি আধুনিকতার নামে ধর্মনিরপেক্ষ তথা ধর্মহীন হওয়া। বাম-পতিত কমিউনিষ্ট যারা এখন বর্তমান আওয়ামী সরকারের কাধে সওয়ার হয়েছে তারা তরুণ প্রজন্মকে আত্ম পরিচয়হীন এক জাতিতে পরিণত করার সকল ব্যবস্থা সম্পন্ন করার চেষ্টা করছে। একদিকে আত্মপরিচয়হীন, চেতানহীন একটি জাতি তৈরীর চেষ্টা চলছে অপরদিকে প্রতিবাদী তরুণদের হত্যা করা হচ্ছে। গ্রেফতার করা হচ্ছে, রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে জীবনের জন্য পংগু করে দেয়া হচ্ছে। গ্রেফতার করার পর অথবা আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহনীর পরিচয়ে ধরে নিয়ে যাবার পর মানুষগুলোকে গায়েব করে ফেলা হচ্ছে। সরকার হয়তো ভাবছে এভাবেই প্রতিরোধের ভাষাকে স্তব্ধ করে দেয়া যাবে, মানুষ প্রতিবাদের ভাষা হাড়িয়ে ফেলবে। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী- কোন অত্যাচারী শাসকই অত্যাচার চালিয়ে নিজের ক্ষমতার মসনদ স্থায়ী করতে পারেনি। হিটলার চেয়েছিল সমগ্র পৃথিবী জয় করতে কিন্ত পরিনতিতে তাকে পাহাড়ের গুহায় আত্মগোপন করে আহত্যাার পথ বেছে নিতে হয়েছিল। ইংরেজরা অত্যন্ত শক্তিশালী হওয়া সত্বেও তাদেরকে এ দেশ ছেড়ে যেতে হয়েছিল। ইহাহিয়া এবং ভুট্টুকে জনতার দাবীর সামনে আত্মসমর্পন করতে হয়েছিল। মিশরের ত্রিশ বছরের শাসক হোসনী মোবারককে এখন কারাগারে দিন যাপন করতে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় প্রমাণ সরকারের দুর্দিনের বন্ধু বলে পরিচয় দেওয়া সাবেক স্বৈরশাসক এরশাদ সাহেব। এখানেও হয়তো সরকার ভাবতে পারে কোন আন্দোলন এবং প্রতিবাদই করতে দিবোনা, রাস্তায় নামতে দিবো না। সরকার বিরোধী কোন সংবাদপত্র রাখবো না। যেমন এক অভিনব কায়দায় এখন আমার দেশ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। কিন্তু জনতার প্রতিবাদের ভাষা মাঝে মাঝে এমন ভয়ানক হয় কোন প্রতিরোধ দিয়ে তা আর ঠেকিয়ে রাখা যায় না।
বিষয়: বিবিধ
১২৬৭ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন