যুগে যুগে তিন শ্রেণির মানুষ ইসলামের বিরোধীতা করেছে ও ঈমানদারদের উপর জুলুম নির্যাতন করেছে

লিখেছেন লিখেছেন সুন্দরের আহবান ০৯ আগস্ট, ২০১৪, ১১:০৮:৪৬ রাত



আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষকে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন তার খলিফা হিসেবে। আল্লাহর খিলাফাত কায়েমই মানুষের আসল কাজ। মানুষ আল্লাহর খিলাফাত এ জন্য কায়েম করবে যেন তারা জীবনের সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর দাসত্ব করতে পারে, তার আদেশ নিষেধ বাস্তবায়ণ করতে পারে, সে অনুযায়ী নিজের জীবন, পরিবার, সমাজ ও রাস্ট্র পরিচালনা করতে পারে। এ কাজগুলো মানুষ কিভাবে করবে এ জন্য আল্লাহ যুগে যুগে অসংখ্য নবী ও রাসুল প্রেরণ করেছেন। নবী রাসুলগণ মানুষকে এক আল্লাহর দাসত্ব ও তাদের আনুগত্য করার আহ্বান জানিয়েছেন। পৃথিবীতে দু’জন নবী ব্যতীত সকল নবী ও রাসুল বিরোধীতা, অপপ্রচার, জুুলুম, নির্যাতন, ষড়যন্ত্র এবং প্রতিবন্ধকতার সম্মূখীন হয়েছেন। যে দুজন নবী বিরোধীতা ও বাঁধার সম্মূখীন হননি তাদের একজন হচ্ছেন প্রথম মানুষ ও প্রথম নবী আমাদের আদি পিতা হযরত আদম আ. অপরজন হচ্ছেন হযরত সুলাইমিন আ.। আদম আ. ছিলেন পৃথিবীর প্রথম মানুষ তার বিরোধীতা করার মতো আগে থেকে কেউ ছিল না, আর হযরত সুলাইমান আ. তাঁর পিতা ও নবী দাউদ আ. এর রেখে যাওয়া সিংহাসন লাভ করেছিলেন এবং আল্লাহ তাকে আরো বেশ কিছু ক্ষমতা দিয়েছিলেন-যার কারণে তার বিরোধীতা করা এবং তার উপর জুলুম নির্যাতন করার মতো কেউ সাহস করেনি।এ ছাড়া সকল নবী অপপ্রচার, জুুলুম, নির্যাতন, ষড়যন্ত্র এবং প্রতিবন্ধকতার সম্মূখীন হয়েছেন। সকল যুগে তিন শ্রেণির মানুষ নবী-রাসুল ও ইসলামের বিরোধীতা করেছে এবং তাদের উপর জুলুম নির্যাতন করেছে।

১. কায়েমী স্বার্থবাদী শক্তি- যারা সমাজ ও রাস্ট্রের সকল স্তরে আগে থেকেই কর্তৃত্ব নিয়ে ছিল। তারা নবী রাসুলদের আহ্বান শুনেই বুঝেছে যে, এ দাওয়াত গ্রহণ করলে বা সমাজের অধিকাংশ লোক এ দাওয়াত গ্রহণ করলে তাদের কর্তৃত্ব ও আধিপত্য কায়েম হয়ে যাবে। মানুষের প্রভূত্ব ও কর্তৃত্ব খতম হয়ে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে।

২. পূজিপতি, সমাজপতি ও অঢেল সম্পদের মালিকগণ- তারাও বুঝতে পেরেছে নবীদের এ আহ্বান এবং দাওয়াত সকল স্তওে ছড়িয়ে পড়লে তারা বৈধ-অবৈধ উপায়ে সম্পদের যে পাহাড় গড়ে তুলেছে তা জনগণের মাঝে ফেরত দিতে হবে এবং অবৈধভাবে আর সম্পদ উপার্জন করা যাবে না।

৩. প্রচলিত ধর্মীয় পুরোহিত , ধর্মীয় পন্ডিত এবং ধর্ম ব্যবসায়ী শ্রেণি। তারাও এটা বুঝতে পেরেছে। নবীদের দাওয়াত সমাজে ব্যাপ্তি লাভ করলে তারা আল্লাহর দীনের মাঝে যে বিকৃতি সৃস্টি করেছে, নিজেদের বৈষয়িক স্বার্থে অহীর বিধানে সংযোজন ও বিয়োজন করেছে। তা জনগণের কাছে প্রকাশিত হয়ে পড়লে তাদের কর্তৃত্ব ও প্রভূত্ব খতম হয়ে যাবে ।

যুগে যুগে এ তিন শ্রেণি আল্লাহর প্রেরিত দীনকে নিজেদের রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক এবং পার্থিব স্বার্থে ব্যবহার করেছে। তারা যুগে যুগে ইসলামপন্থ’ীদের উপর জুলুম নির্যাতন করেছে, দীনের বিরোধীতা করেছে এবং ইসলাম নির্মূলে ভূমিকা পালন করেছে। সকল নবী এমনকি নবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সা. এর যুগে এ তিন শ্রেণির লোক মুসলমানদের উপর জুলুম নির্যাতন করেছে, আল্লাহর দীনের বিরোধীতা করেছে, অপপ্রচার চালিয়েছে। আজকের পৃথিবীতেও এ তিন শ্রেণির মানুষই বিশ্বব্যাপী মুসলিম নির্যাতন, ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের উপর জুলুম নির্যাতন এবং তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। বর্তমান পৃথিবীতে এ তিন শ্রেণি হচ্ছে :

১. কায়েমী স্বার্থবাদী শক্তি - ইউরোপ, আমেরিকাই শুধু নয় মুসলিম নামধারী প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী যারা আছেন সবাই- এ তালিকায় মিশরের সিসি, সৌদী বাদশাহ, কাতারের আমীর, বাংলাদেশের ধর্ম নিরপেক্ষ প্রধানমন্ত্রী সবাই আছেন।

২. পূজিপতি শ্রেণি- আই এম এফ, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানী, বিশ্বের বড় বড় ব্যাংক, বীমা, বিভিন্ন দেশে বড় বড় পুজির মালিকগণ, এন জি ও সমূহ।

৩. ধর্মীয় পূরোহিত/ধর্ম ব্যবসায়ী শ্রেণি- ইসলামের ভূল ব্যাখ্যাদানকারী সুবিধাবাদী শ্রেণি, পীরতন্ত্রে বিশ্বাসী শ্রেণি, মাজার পূজারী, অন্যায়ভাবে রাস্ট্রীয় সুবিধা ভোগকারী নামধারী আলেম, কুরআনের চেয়ে অন্য কোন ভুল কিতাবকে বেশী প্রাধান্য দানকারী ধর্মীয় শ্রেণি।

বিষয়: বিবিধ

১৫৪৩ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

252719
০৯ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:২১
বুড়া মিয়া লিখেছেন : শর্টকাটে খুব ভালো বলেছেন ...
252751
১০ আগস্ট ২০১৪ রাত ০২:০৯
আফরা লিখেছেন : যুগে যুগে এরা ছিল থাকবে ও এর মাঝেই সত্য পথের পথিকেরা সত্যকে এগিয়ে নিয়ে যাবে ।অনেক ভাল লাগল আপনার লেখা ।
252825
১০ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ১২:৪৬
১০ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:৩৬
197133
সুন্দরের আহবান লিখেছেন : এ বিষয়ে আমার একটি প্রবন্ধ আছে- যার কলবের অনেক বড়, সংক্ষেপে বলার চেস্টা করেছি যাতে সবাই পড়ে, বড় লেখা অনেকেই পড়তে চায় না। তবে আমিও তো এ বিষয় তো আমি জেনেছি আরো অনেকের লেখা বই-প্রবন্ধ পড়ে;

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File