কুরআন শিক্ষা করা নাশকতা!! এবং রাস্ট্রদ্রোহীতা??
লিখেছেন লিখেছেন সুন্দরের আহবান ২২ জুন, ২০১৪, ০৯:২৫:১৬ রাত
বাংলাদেশ নামক পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলমানের দেশে কুরআন শিক্ষা করা নাশকতা এবং রাস্ট্রদ্রোহীতা- এটাই আজ বাংলাদেশের চরম বাস্তবতা- । ইসলামের দুশমনরা কখনো সরাসরি আল্লাহ, রাসুল, কুরআন হাদীসের বিরোধীতা করে না। ওরা নিজেরা ইসলামের বিধান পালন করে না, কৌশলে মুসলমানদের ইসলামী আদর্শ পলানে বাঁধা দান করে এবং আল্লাহর বিভিন্ন আদেশকে বিতর্কিতভাবে উপস্থাপন করে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সকল মুসলমান নর নারীর জন্য পর্দা ফরজ করেছেন- আল্লাহর নির্ধারিত এই বিধানের বিরুদ্ধে সরাসরি কথা না বলে ওরা নিজেরা যেমন পর্দা পালন করে না ঠিক তেমনি অন্যকে কৌশলে বাঁধা দেয়, যেমন ভিখারুন নিসা নুন স্কুলে হাফ হাতা শার্ট এবং ক্রস বেল্ট বাধ্যতামূলক, সেখানে স্কার্ফ পড়া যাবে না, বোরকা পড়া যাবে না- এটা স্কুলের ড্রেস কোড। রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে দুজন ছাত্রীকে বোরকা পড়ার অপরাধে কলেজ থেকে বের করে দেয়া হয়েছে, তাদের অপরাধ তারা কলেজের ড্রেস কোড অনুসরণ করছে না। একইভাবে চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজে ছাত্রীদের হিজাব পরিধান করতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। যারা ইসলামের পর্দা প্রথাকে মানে না এবং এটা বাতিল করতে চায়- তারা বোরকা এবং হিজাবের বিরুদ্ধে যে সব ভাষায় অপপ্রচার চালায় তা হচ্ছে- ‘‘কুৎসিত চেহারা ঢাকার জন্য বোরকা পড়ে’’ ‘‘সমাজের অপরাধীরা নিজেদের চেহারা ঢাকার জন্য বোরকা পড়ে’’ এর চেয়েও জঘন্য যে বিষয়টির অবতরণা করা হয় তা হচ্ছে- তারা চরিত্রহীন দেহ ব্যবসায়ীদের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসে। তবে কি আমরা বলবো হিটলার যেহেতু পোষাক পরিধান করতো অতএব আমরা পোষাক পড়বো না, অথবা চোর ডাকাতরা যেহেতু পোষাক পড়ে অতএব আমরা নেংটা থাকবো? রাজধানীর খিলগাঁওয়ে পর্দানশীন মেয়েরা একটি বাসায় জরো হয়েছিল সহীহ কুরআন শিক্ষার জন্য। তাদেরকে নাশকতার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেফতার করে বর্তমান ইসলামের দুশমন সরকারের করিৎকর্মা পুলিশ কর্মকর্তারা আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড দাবী করেছে। শতকরা নব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে মুসলিম মেয়েরা সহীহ কুরআন শিখতে একটি কুরআন ক্লাসে একত্রিত হয়েছে সেখান থেকে যারা তাদেরকে গ্রেফতার করলো তারা মুসলমান তো দুরের কথা নিজেদের মানুষ বলে দাবী করতে পারে কি না? আজ তা বড় প্রশ্ন। শতকার নব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে কুরআন শিক্ষার উপর ওরা এভাবেই আঘাত করে। সরাসরি বলে না যে কুরআন শিখতে পারবে না, অথবা হিজাব পড়তে পারবে না। এই যে কুরআন শিক্ষার আসর থেকে নিরাপরাধ মেয়েদের গ্রেফতার করা হলো- এটা দেখার পর শত আগ্রহ থাকা সত্বেও অনেকেই আর সহীহ কুরআন শিক্ষার জন্য কোন তালিমের ক্লাসে একত্রিত হবে না। পর্দানশীন মেয়েদের যেভাবে টেনে হিচড়ে আদালতে হাজির করা হলো এটা দেখার পর অনেক শহুরে মেয়েরা বোরকা পড়া ছেরে দিবে। এমন দুটি ঘটনা আমি পাঠকদের সামনে উপস্থাপন করছি। আমার বাসার পশেই একটি মক্তবে এক ভদ্র লোকের দুটি ছেলে প্রতিদিন দুপুরের পর কুরআন পড়তে যেতো- তারা সম্ভবত তখন আমপাড়া পড়ছে। ভদ্রলোক তার ছেলেদের মক্তবে যাওয়া বন্ধ করে দিলেন। কথা প্রসঙ্গে তিনি আমাকে একদিন কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করে বললেন কখন আবার জঙ্গী ট্রেনিংয়ের কথা বলে আমার ছেলেদের ধরে নিয়ে যায় তাই আপাতত বলেছি হুজুরের কাছে যাওয়ার দরকার নেই। আমি যে মহল্লায় বসবাস করি সে মহল্লারই এক ভদ্রলোক- তিতাস গ্যাস অফিসে চাকুরী করেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতে আদায় করেন, তার স্ত্রীও পর্দানশীন এবং ধার্মিক। ওনার মেয়ে ইডেন কলেজে পড়ছে। মেয়েটি ক্লাস টেনে ওঠার পর থেকে বোরকা পড়ে বাইরে যেতো কিন্তু এখন দেখি বোরকা তো দূরে থাক তার মাথায় ওড়না পর্যন্ত নেই। অন্য জনের মেয়ের ব্যাপারে সরাসরি তো আর প্রশ্ন করা যায় না। যাক আমি আমার ছোট বোনের মাধ্যমে জানলাম ২০০৯ সালে ইডেন কলেজের হোস্টেল থেকে ১০/১২ জন ছাত্রীকে বের করে দেয়া হয়েছিল তাদের পড়ার টেবিলে কুরআন পাওয়া গেছে এবং তারা বোরকা পরিধান করে; তো এই মেয়েও কলেজে বোরকা পড়ে গেলে জঙ্গী হিসেবে কলেজ থেকে বের করে দিতে পারে এই ভয়ে সে এখন বোরকা পড়া ছেড়ে গিয়েছে।
নাচ গান করা অপরাধ নয়, মদের আসরে মাতাল হওয়া অপরাধ নয়, রমনা পার্কে, গুলশান আর ধানমন্ডি লেকে অশ্লীল আড্ডা দেয়া অপরাধ নয়, নস্টামী ভ্রস্টামী করা অপরাধ নয়, বয় ফ্রেন্ডের সাথে গার্ল ফ্রেন্ডের অসভ্যতা করা অপরাধ নয়, গাজা ফেনিসিডিল খাওয়া তেমন কোন বড় অপরাধ নয়। শতকরা নব্বই ভাগ মুসলানের দেশে মুখে দাড়ি রাখা অপরাধ, টাখনুর উপড়ে প্যান্ট পড়া অপরাধ, কুরআন শিখতে যাওয়া অপরাধ, বোরকা পড়া অপরাধ, নিজের চরিত্রকে পুত পবিত্র রাখা অপরাধ। এটা নাকি নব্বই ভাগ মুসলমানের দেশ? যারা কুরআন পড়তে বাঁধা দেয়, যারা কুরআনের আসর থেকে গ্রেফতার করার পর বলে নশকতার ষড়যন্ত্র করছিল, তারা আবু জেহেল আবু লাহাবের অনুসারী হতে পারে মুহাম্মদ সা. এর উম্মত দাবী করার কোন অধিকার তাদের থাকতে পারে কি না-সেটা গবেষণার বিষয়। নিরাপরাধ তরুণ তরুণীদের কুরআন শিক্ষার আসর থেকে গ্রেফতার করার পর যে সব মিডিয়া আবার রং চড়িয়ে সংবাদ প্রকাশ করে যে উস্কানীমূলক বই পাওয়া গেছে!! ও সব মিডয়ার কর্ণধররা আর যাই হোক মুসলিম পরিচয় দেয়ার অধিকার রাখে না। এ সব দেখার পরও যে সব নামধারী মুসলমান শুধু নিজের মুসলামনীত্বটুকু বজায় রাখার জন্য ইয়া নাফসী জপছেন- তিনি নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করুন আপনি কি ঈমানদার? আপনার হৃদয়ে কি ঈমানের কোন অংশ আছে? যারা নিজেদের বড় আলেম, মুহাক্কিক, মুজতাহিদ আর মোকাম্মেল বলে দাবী করেন আর এ সব ঘটনা দেখার পরও চুপ আছেন তারা কেমন মুসলিম? হাদীসের ভাষায় আপনাদের বলা হয়েছে বোবা শয়তান। মূলত ইসলামের দুশমন আর বোবা শয়তানের মধ্যে কি তেমন বেশী পার্থক্য আছে?
বিষয়: বিবিধ
১১৩২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন