এক যুবক বললেন ‘‘ আমি আগে আওয়ামীলীগ করতাম, তিনটি কারণে আওয়ামীলীগকে এখন ঘৃণা করি”
লিখেছেন লিখেছেন সুন্দরের আহবান ১৫ মে, ২০১৪, ০৮:৪৬:১৮ রাত
আজ বিকেলে যাত্রাবাড়ী একটি ওয়ার্কশপে মোটর সাইকেল সার্ভিসিংয়ের এর জন্য কাজ করতে দিয়ে সেখানে বসেছিলাম এমন সময় নারায়ণগঞ্জ ভূইঘরের এক যুবক এসেছে তার মোটর বাইক সারানোর জন্য। তার সাথে পরিচয়ের পর অনেক কথাই হলো। বিবাহিত যুবক, দুই ছেলের জনক। গার্মেন্টস এবং প্লাস্টিক সামগ্রীর ফ্যাক্টরী আছে। একটি মানবাধিকার সংগঠনের কর্মী। তার মা স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জন প্রতিনিধি এবং স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য। শিক্ষিত এবং সমাজ সচেতন পরিবারের সন্তান। তার সাথে অনেক বিষয়েই কথা হলো। নারায়ণগঞ্জের যে স্থান হতে আবু বকর সিদ্দিকসহ আরো সাতজন ব্যাক্তি অপহরণ এবং গুম হয়েছে তার কাছাকাছি তার বাড়ি। নারায়ণগঞ্জ এবং নুর হোসেনের অনেক ঘটনাই তার দর্পনে সুষ্পষ্ট। যুবকের বেশ কিছু কথা ঃ
১. সাত খুনের লাশ ভেসে ঠোর পর নূর হোসেনের ব্যাপারে মিডিয়ায় তোলপার হচ্ছে, প্রতিদিন তার কুকীর্তি ছাপা হচ্ছে। আইন শৃংখলা বাহিনী তার অবৈধ আস্তানার সন্ধান পাচ্ছে, তার বাড়িতে অস্ত্র-মাদক পাচ্ছে। এ বিষয়ে কি প্রশাসন আগে কিছুই জানতো না। যে কোন ব্যক্তিই বলবে হ্যা জানতো। জানতোই না বরং প্রশাসনের সহযোগিতায়ই নূর হোসেনের ভয়ংকর হয়ে ওঠা। তবে আজ কেন তাকে নিয়ে এত তোলপার? এর কারণ সরকার ঘৃণ্য রাজনৈতিক স্বার্থে নূর হোসেনকে ভয়ংকর দানবে পরিণত করেছে, এখন আর এ দানবের প্রয়োজন নেই তাই তার বিরুদ্ধে লোক দেখানো এ্যাকশন নেয়া হচ্ছে।
২. ঐ যুবক বললেন ‘‘ আমি আগে আওয়ামীলীগ করতাম, তিনটি কারণে আওয়ামীলীগকে এখন ঘৃণা করি, প্রথমত: মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মতো একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আলেমকে যুদ্ধাপরাধী সাজিয়ে ফাসি দেয়া হচ্ছে- এটা আমি মানতে পারি না। তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেই ১৯৭১ সালে সাঈদী অপরাধ করেছে, কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে একন সাঈদী কি করছেন- এখন বরং তার ওয়াজ মাহফিলের কারণে সমাজ থেকে অন্যায় অনাচার পাপ দূর হচ্ছে। যুবকরা ইসলামের দিকে আকৃস্ট হচ্ছে। আমার তো মনে হয় সাঈদী ইসলামের কথা বলেন, এটা যারা পছন্দ করেন না তারাই তাকে ফাসি দিতে চায়।’’ আমি তাকে বললাম মূলত বাংলাদেশ এখন চলছে ভারতের প্রেসক্রিপশনে- ভারত বাংলাদেশে কোন শক্তিশালী ইসলামী দল, কোন জনপ্রিয় ইসলামী স্কলার, ইসলামী বক্তা এবং ইসলামী রাজনীতিবদকে রাখতে চায় না। তখন ঐ যুবক বললো ১৯৭১সালে আমার স্বাধীনতা অর্জন করেছি কিন্তু ভারত যে কারণে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা করেছে তা হলো এ ভূখন্ডে তাদের আধিপত্য বিস্তার করা- এ কথা ১৯৭১ সালে বোঝা না গেলেও আমরা বর্তমান তরুণ প্রজন্ম ভালভাবে টের পাচ্ছি। ঐ যুবক দ্বিতীয় কারনটি বললো তা হচ্ছে ‘‘ জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের নাম পরিবর্তনের জন্য এত টাকা খরচ করা কেন? সরকার নাম পরিবর্তনের জন্য ১৩০০ কোটি টাকা খরচ করেছে। এটা আমি মেনে নিতে পারি না। বঙ্গবন্ধু একজন জাতীয় নেতা- আরো অনেকভাবে তাকে স্মরণ করা যায়, কিন্তু নাম পরিবর্তন কেন?। তৃতীয় যে কারণটি সে বললো তা হচ্ছে শাহবাগী নাস্কিদের উত্থানে সরকারের সহযোগিতা এবং শাপলা চত্বরে আলেমদের নৃশংসভাবে হত্যা করা।
৩. পৃথিবীর যে কোন দেশেই বিভিন্ন মত পথ এবং দলের মানুষ থাকে। বাংলাদেশেও থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আজ আমরা আমাদের ভবিষ্যত নিয়ে শংকিত। কে কখন গুম হয়ে যায়, তা বোঝা যাচ্ছে না। সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থে একটি রাজনৈতিক দলকে শেষ করে দেয়ার জন্য ৩২০০ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে ট্রাইবুনালের পিছনে। এত আয়োজন কেন? যদি একটি দলকে পছন্দ না হয় তাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করুন। আমিও জামায়াতকে পছন্দ করি না। তাই বলে তাদের যুবক কর্মীদের ধরে ধরে হত্যা করবেন আর বুড়াদেরকে ফাসি দিয়ে মারবেন, এটা ঐক্যের রাজনীতি নয়। ১৯৭১ সাল আমরা পার করেছি ৪৩ বছর আগে এখন দেশ গড়ার কাজে ঐক্যবদ্ধ রাজনীতি দরকার। কিন্তু সর্বত্র সংকীর্ণ দলীয় রাজনীতি। প্রশাসন, আইন, বিচার, সাংবাদিকতা, ব্যবসা,চাকুরী সর্বত্র যেন শুধুমাত্র একটি দলের লোকেরাই চাকুরী করবে। তারাই আধিপত্য বিস্তার করবে। দেশে বুঝি আর কোন মানুষ নেই। সর্বশেষ যুবকটি বললো- ‘‘ ভাই আমি আগে আওয়ামীলীগকে ভোট দিয়েছি, আওয়ামীলীগ করাতাম-একথা বলতেও লজ্জা পাই’’
বিষয়: বিবিধ
১২৭০ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় মূলধন হচ্ছে যে এর সমর্থকেরা এদের একেবারে অন্ধ সমর্থক ।
খারাপ হলেও এরা আওয়ামী লীগের কাজ কে ঠিকই জাস্টিফাই করে দেয় ।
এসব কথা বলতে পারে জামাতের কোন সমর্থক বা শিবিরিয়ান ।
আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে কাহিনী জমানোর কাঁচা প্রচেষ্টা ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন