জাতিসংঘ দূতের সফর ঃ আওয়ামীলীগ জানিয়ে দিলো তারা কোন সমাঝোতা চায় না, চায় শেখ হাসিনার অধীনে এক দলীয় নির্বাচন
লিখেছেন লিখেছেন সুন্দরের আহবান ১২ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১০:৪৬:১০ সকাল
জাতিংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত অস্কার ফার্দান্দেজ তারানকো বাংলাদেশে পাঁচ দিনের সফরে এসে ছয় দিন কাটিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা ছেড়েছেন। তিনি তাঁর ছয় দিনের সফরে উল্লেখ যোগ্য কোন ফলাফল নিয়ে যেতে পারেন নি। বাংলাদেশের রাজনীতির কর্ণধর এবং সরকারী মহলের জেদের রাজনীতির স্বরুপ জাতিসংঘের এই প্রতিনিধি ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করে গেছেন। বাংলাদেশকে একটি জলন্ত অগ্নিকুন্ড বানিয়েছে সরকার। সব দল ও মতের বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা আজ তিরোহীত। বিরোধী দলের অফিসে তালা, নেতারা কারাগারে, সরকার বিরোধী কেউ মিছিল সমাবেশ করতে পারবে না। মিছিল নিয়ে বের হলেও সাথে সাথে পুলিশ, র্যাব এবং আওয়ামী ক্যাডার বাহিনীর গুলি। এমনি অবস্থায় একজন দলান্ধ, যিনি ইতিমধ্যে আওয়ামী ক্রীতদাস হিসেবে উপাধি পেয়েছেন তার ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য সরকার বিরোধী দলকে আহ্বান করছে। এ বিষয়গুলো জাতিসংঘের প্রতিনিধি ভালভাবেই প্রত্যক্ষ করেছেন। তিনি এ বিষয়গুলোর একটি সুষ্ঠু সমাধানের চেস্টা করেছেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট সমাধানে ইতিপূর্বে কেউ এত বেশী দৌরঝাপ করেন নি। কিন্তু অস্কার ফার্দান্দেজ তারানকোকে হতাশ করেছে সরকার এবং আওয়ামীলীগ। আওয়ামীলীগের এক কথা, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, তিনি যে ভাবে চাইবেন সেভাবে নির্বাচন হবে। তার মানে আওয়ামীলীগ নির্বাচনী সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করবে, আর বিরোধী দল পুলিশের গুলি, হামলা, গ্রেফতার রিমান্ড সয়ে সয়ে জী হুজুর জাহাপনা বলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। অস্কার ফার্দান্দেজ তারানকো ঢাকা ছাড়ার আগে হঠাৎ করে শেখ হাসিনার প্রেস সচিব সাংবাদিক সম্মেলন করে বললেন, জাতিসংঘ মহাসচিব নাকি শেখ হাসিনার কাছে টেলিফোন করে বলেছেন, যে সংবিধান (আওয়ামীলীগের ইচ্ছানুযায়ী) শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রেখে নির্বাচন করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ মহাসচিব আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। আমরা জানি না, জাতিসংঘ মহাসচিব আদৌ শেখ হাসিনার কাছে ফোন করেছেন কি না? অথবা ফোন করলেও কি কথা বলেছেন। আওয়ামীলীগের এমন চাঁদ কপাল যে তারা কোন কিছু বলার আগেই তার সাথে আরো দু চারটি কথা যোগ করে আওয়ামী প্রচার মাধ্যমের ভুমিকা পালন করছে বর্তমান বাংলাদেশের সব সেবাদাস মিডিয়া। যাও দু একটি মিডিয়া ছিল যারা আওয়ামী অপকর্র্মের সমালোচনা করতো তাদের বন্ধ করে দেয়ায় এখন আওয়ামী দলকানা সাংবাদিক এবং মিডিয়া দিনকে রাত আর রাতকে দিন বলে প্রচার করছে। তাই প্রধান মন্ত্রীর প্রেস সচিব সাংবাদিক সম্মেলন করার সাথে সাথে সেবাদাস মিডিয়াগ্রলো প্রচার করতে লাগলো যে, শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রেখে নির্বাচন করতে জাতিসংঘের আশাবাদ। জাতিসংঘ মাহসচিব যদি ফোন করেই এ বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে থাকেন, তবে অস্কার ফার্দান্দেজ তারানকোর সফর কি কারণে? তিনি এত বৈঠক করলেন কি জন্য? কেন তিনি এত দৌড়ঝাপ করলেন? মূলত আওয়মীলীগ যতোই সংলাপের কথা বলুক, তারা আদৌ সংলাপ চায় না, কোনভাবেই সুষ্ঠ’ নির্বাচন চায় না। তারা চায় বিরোধী দলহীন একটি এক দলীয় নির্বাচন, যেখানে শুধু তারাই থাকবে, আর কেউ সে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এ বিষয়টি সম্ভবত ভালভাবেই উপলব্ধি করতে পেরেছেন জাতিসংঘের সফররত প্রতিনিধ দল। জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর ব্যর্থ্য করে দেয়ার জন্য আওয়ামীলীগ এবং শেখ হাসিনার ক্ষমতা আকড়ে থাকার একগুয়েমী মনোভাবই দায়ী। তারা জাতিসংঘ সহকারী মহাসচিবের সফরের সময়ও রাজপথে বিরোধী দলের উপর পুলিশী হামলা,গুলি,গ্রেফতার বন্ধ রাখে নি। এমনকি বিরোধী দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় মুক্ত রাখেনি, সেটি পুলিশ দারা অবরুদ্ধ করে রেখেছে, বিরোধী দলের নেতাদের ছেরে দেয়ার জন্য প্রস্তাব দেয়া সেত্বেও তাদের আটক রেখেছে। এ দারা আওয়ামীলীগ তাদের একদলীয় বাকশালী মনোভাব সুস্পষ্ট করেছে- অর্থাৎ তারা কোন সমাধান চায় না, তারা চায় ক্ষমতা, তারা চায় এক দলীয় শাসন, তারা চায় এক দলীয় নির্বাচন, তারা চায় আরো বেশী করে বিরোধী নেতাদের জেলে নিতে, তারা চায় বিরোধী দলের নেতাদের আরো বেশী করে হত্যা করতে, যেভাবে প্রতিদিন পুলিশের গুলিতে মানুষ মারা যাচ্ছে। বাংলাদেশ থাকলো কি গেল এটা দেখার বিষয় নিয়। বিষয় হচ্ছে আাওয়ামীলীগ আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চায়। তাই জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এই বার্তাই সম্ভবত নিয়ে গেছেন যে, আওয়ামীলীগের মতো একটি গণ বিরোধী দল ক্ষমতায় থাকলে অথবা তারা বিরোধী দলে থাকলেও তাদের কাছ থেকে কোন প্রকার সমঝোতার আশা করা যায় না।
বিষয়: বিবিধ
১৫৭৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন