তাওহীদ- এক আল্লাহ-য় বিশ্বাসের প্রভাব
লিখেছেন লিখেছেন সুন্দরের আহবান ২৫ আগস্ট, ২০১৩, ০২:৫২:৩৮ দুপুর
তাওহীদ তথা এক আল্লাহর উপর বিশ্বাসের কারণে মানুষের চিন্তা, আদর্শ ও কর্মে যে প্রভাব ও বৈশিস্ট তৈরী হয় তা হচ্ছে-
১. এ কালেমায় বিশ্বাসী ব্যক্তি কখনো সংকীর্ণ দৃস্টিভংগী সম্পন্ন হয় না। সে এমন এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী যিনি যমীন ও আসমানের ¯্রস্টা, মাশরিক মাগরিবের মালিক, তামাম জাহানের পালনকর্তা। এ ঈমানের পর সারা বিশ্বের কোন সৃস্ট বস্তুই তার থেকে আলাদা মনে করতে পারে না। আপন সত্বার মতোই সে এর সব কিছুতে এক আল্লাহর প্রভুত্ব, কর্তত্ব ও আধিপত্য বিরাজমান দেখতে পায়। তার সহানুভূতি, প্রেম ও খেদমত কোন বিশেষ পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকে না। আল্লাহর বাদশাহী এবং ক্ষমতা যেমন অনন্ত ও অসীম ঠিক তেমনি তাঁর প্রতি ঈমানদারের বিশ্বাস ও দৃস্টিভঙগী হবে সীমা বন্ধনহীন।
২. এ কালেমা মানুষের মধ্যে সর্বোচ্চ আত্মসন্মাবোধ ও আত্মমর্যাদাবোধ জাগিয়ে তোলে। এর উপর বিশ্বাস পোষণকারী জানে যে, আল্লাহ-ই সকল শক্তির মালিক। তিনি ব্যতীত আর কেহ মানুষের কল্যাণ বা অকল্যাণ করতে পারে না। কেহ তাকে জীবন দিতে পারে না, মারতে পারে না। এ জ্ঞান ও প্রত্যয় তাকে দুনিয়ার অপর যে কোন শক্তির প্রভাব থেকে মুক্ত করে আত্ম নির্ভরশীল ও নির্ভীক করে তোলে। সকল কিছুর মোকাবেলায় সে শুধু আল্লাহকেই ভয় করে।
৩. আত্ম বিশ্বাস ও আত্ম মর্যাদাবোধের সাথে সাথে এ কালেমা মানুষকে বিনয়ী করে তোলে। সে উদ্যত, গর্বকারী এবং অহংকারী হয় না। কারণ সে জানে সব কিছুই এক আল্লাহর দান, আমার নিজের কোন শক্তি ও ক্ষমতা নেই। তাই আচরণে ও ব্যবহারে সে হয় বিনয়ী ও নিরহংকারী।
৪. এ কালেমা তাকে আত্মশদ্ধি ও চরিত্র গঠনের পথে ধাবিত করে এবং অন্যায় ও দুস্কৃতি থেকে দূরে রাখে।
৫. এ কালেমায় বিশ্বাসী হৃদয় কখনো হতাশ এবং মনভাংগা হয় না। সে কখনো আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস হাড়ায় না। তাই সে নির্ভীক ও নিঃশঙ্কচিত্ত হয়।
৬. এ কালেমা বিশ্বাস মানুষের মধ্যে সৃস্টি করে দৃঢ় সংকল্প, উচ্চাকাংখা, অধ্যবসায় এবং আল্লাহর উপর বিশ্বাসের তুলনাহীন শক্তি। তার মধ্যে সৃস্টি হয় পর্বতের মতো বিশালতা। যার কারণে সে দুনিয়ার সকল সংকট, ইসলাম বিরোধীদের সকল ষড়যন্ত্র, বাধা প্রতিবন্ধকতা দু পায়ে মাড়িয়ে সামনে অগ্রসর হয়।
৭. এ কালেমা মানুষকে সাহসী সিংহ পুরুষে পরিণত করে। দুনিয়ার কোন অপশক্তিকে সে ভয় পায় না। জীবন-মৃত্যু, বিপদ, আপদ সুখ দুঃখের মালিক একমাত্র আল্লাহ। এ নির্বরতা তাকে সাহসী বীরে পরিণত করে।
৮. লা ইলাহ ইল্লাল্লাহর প্রতি বিশ্বাস মানুষের মনে সন্তোষ, পরিতৃপ্তি ও অনন্য নির্ভরতার গৌরবময় মনোভাব সৃস্টি করে এবং লোভ, লালসা, হিংসা, ও বিদ্ধেষের অবাঞ্ছিত মনোভাব তার অন্তর থেকে দূরীভূত করে দেয়। সাফল্য অর্জনের জন্য অবৈধ ঘৃণ্য ও গর্হিত পথ পরিহার করে চলে। সে বিশ্বাস করে সাফল্য, ব্যর্থতা, রুজি রোজগার, সম্পদ সব আল্লাহর হাতে।
৯. এ কালেমা বিশ্বাস মানুষকে আল্লাহর আইনের অধীন করে তোলে। সে বিশ্বাস করে প্রকাশ্যে গোপনে যাই করি না কেন সব কিছু আল্লাহ দেখছেন এবং এ কাজের জন্য আল্লাহর কাছে একদিন হিসেব দিতে হবে। তাই সে মানব রচিত সকল আইন থেকে আনুগত্যের মস্তক ফিরিয়ে একমাত্র আল্লাহর আনুগত্যের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে। ( ‘ইসলাম পরিচিতি’ থেকে সংক্ষেপিত )
বিষয়: বিবিধ
১১৮২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন