কারাগারের গেট থেকে কোন ওয়ারেন্ট ছাড়াই পাঁচবার গ্রেফতার ঃ মাওলানা আবু হানিফের উপর চরম অমানবিক জুলুম নির্যাতন

লিখেছেন লিখেছেন সুন্দরের আহবান ১১ আগস্ট, ২০১৩, ০৮:০৭:২২ রাত



মাওলানা আবু হানিফ ডগাইর দারুচ্ছুন্নাত ফাজিল মাদরাসায় আরবী প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা করেেছন প্রায় ১৫ বছর কিন্তু এই পনের বছরেও তার চাকুরী এম পিও ভুক্ত না হওয়ায় তিনি মাদরাসার চাকুরী ছেড়ে ডগাইর বাজারেই লাইব্রেরী কাম স্ট্রেশনারী দোকানের ব্যবসা করছেন। অবশ্য তিনি মাদরাসায় চাকুরী নেয়ার অনেক পূর্ব থেকেই ডগাইর বাজার এলাকায় অবস্থান করছেন। তার ছাত্র জীবন এখানেই কেটেছে। প্রায় পচিশ বছর যাবৎ এ এলাকায় আছেন। সদালাপী অমায়িক ব্যবহার সবার সাথে ভাল আচরণ লেন দেন সহ সকল বিষয়ে উত্তম চরিত্রের অধিকারী ব্যাক্তি হিসেবে তিনি সবার কাছে সমাদৃত। এই ব্যক্তি দীর্ঘ ছয় মাস যাবৎ সরকারী বাহিনীর রোষানলে পড়ে কারাগারে মানবেতর জীবন যাবন করছেন। তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার অন্যায় এবং গর্হিত কাজের অভিযোগ করার মতো কোন লোক অত্র এলাকায় খুজে পাওয়া যাবে না। একজন আলেম এবং ভাল মানুষ হিসেবে সবাই তাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখেন। এই ব্যাক্তিকে গত ৪ ফেব্রুয়ারী জামায়াতে ইসলামী আহুত হরতালের দিন সকাল সারে সাতটায় তার ডগাইর বাজারের দোকান থেকে ডেমরা থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। পরের দিন ৫ ফেব্রুয়ারী তার বিরুদ্ধে ডেমরা বাশের পুলে গাড়ী পোড়ানোর মামলা দিয়ে আদালতে পাঠায় । আদালত তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠায় এর পর প্রায় দীর্ঘ দুই মাস পর এপ্রিল মাসে আদালত থেকে জামিন দিলে কাশিমপুর কারাগারের গেট থেকে যাত্রবাাড়ী থানা পুলিশ তাকে আবার গ্রেফতার করে দুটি মামলা দেয়। এর এক মাস পর মে মাসে আবার জামিন লাভ করলে আবার কাশিমপুর কারাগার থেকে তাকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানার পেন্ডিং মামলায় আবার গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপর জুন মাসে আবার জামিন লাভ করলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের গেট থেকে আবার গ্রেফতার করে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ আবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়। রমজান মাসে দুইবার তিনি আদালত থেকে জামিন লাভ করলে দুইবারই তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের গেট থেকে গ্রেফতার করা হয়। সর্বশেষ তিনি ৭ আগস্ট আদালত থেকে জামিন লাভ করলে তাকে ঈদের দিন বিকেল পাঁচটায় কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করলে আবার যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। ঈদের দিন থেকে তাকে থানা হাজতেই আটক রেখেছে। বিশ্বস্ত সুত্র মতে আমরা জানতে পেরেছি তাকে ৯ আগস্ট মতিঝিল থানায় পাঠনো হয়েছিল তার নামে মামলা রুজু করার জন্য কিন্তু মতিঝিল থানা তাকে রিসিভ না করায় আবার যাত্রাবাড়ী থানায় ফেরত আনা হয়েছে গ্রেফতার করার পর আটচল্লিশ ঘন্টার বেশী পার হলেও তাকে আদালতে হাজির করা হয়নি। মাওলানা আবু হানিফ ডায়াবেটিক, বাতজর এবং ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগছেন অনেক দিন থেকে। কারাগারের যাবার পর তার এ রোগগুলো আরো বেড়েছে, কানে পচন ধরে সব সময় তার কান থেকে পানি ঝড়ছে। এখন চিকিৎসার অভাবে তার শরীরে সব সময় জ্বর থাকে। তিনি যখন গ্রেফতার হন তখন তার স্ত্রী অন্তসত্বা ছিল। তার স্ত্রীও ডায়াবেটিক রোগী। মাওলানা আবু হানিফ কারাগারে থাকা অবস্থায়ই তার একটি কন্যা সন্তান জন্মলাভ করেছে। ইতিপূর্বে যখন তাকে জেলগেট থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে তখন যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বলা হয়েছিল যে তার স্ত্রী অন্তসত্বা, এবং একজন ডায়াবেটিক রোগী । তিনি একজন অসহায় মানুষ একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, আর্থিক অনটনে পরিবার চলছে না, এমনকি তার অবর্তমানে ঋণ করে চিকিৎসা করা হচ্ছে। মাওলানা আবু হানিফ কারাগারে থাকা অবস্থায়ই ১৫ রমাযান তার ছোট ছেলে (১০) রাস্তার পাশে দাড়ানো ছিল এই অবস্থায় তার উপর একটি মোটর সাইকেল উঠিয়ে দেয়া হয়, দুর্ঘটনায় ১০ বছরের ছোট ছেলের পায়ের হাড় দু যায়গা থেকে ভেঙ্গে যায়। এক সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসার পর এখন বাড়িতে রেখে তার চিকিৎসা করানো হচ্ছে। সবকিছূ মিলিয়ে এক অমানবিক এবং মানবেতর জীবন যাপন করছে মাওলানা আবু হানিফ এবং তার পরিবার। তার পরিবারের এ করুন অবস্থার কথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানানো কিন্তু কোন কিছুতেই মন গলছে না যাত্রাবাড়ী থানার ওসি রফিকুল ইসলামের।

বিষয়: বিবিধ

১২৫০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File