আলী আহসান মুজাহিদ ভাইকে যেমন দেখেছি….(অভিজ্ঞতা)

লিখেছেন লিখেছেন সুন্দরের আহবান ২২ জুলাই, ২০১৩, ১০:১৩:৩৫ রাত



নুরুল ইসলাম বুলবুল ভাই তখন শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি। সাংগঠনিক সফরে আমাদের ক্যাম্পাসে এলেন। আমার সঙ্গে দেখা হলো। একজনকে পরিচয় করিয়ে দিলেন, বললেন তোমার একটা বন্ধুকে নিয়ে এসছি, সঙ্গে রাখো, রাতে যাওয়ার সময় নিয়ে যাব। ছেলেটির সাথে সারাদিন ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ালাম। আমার হাঁটতে কষ্ট হয় তাই ভ্যান ডেকে নিলাম। একটা পিচ্চি ভ্যানঅলা এগিয়ে এলো আগ্রহের সাথে...স্যার স্যার বলে। ওদেরকে আমি আমতলা স্কুলে পড়াতাম। কিন্তু ছেলেটা এতই পিচ্চি, আমাদের দুজনকে নিয়ে ভ্যান টানতে কষ্ট হচ্ছিল ওর। আমার সঙ্গের মেহমান ছেলেটি বলল,

এত ছোট ছেলে ভ্যান চালায়?

চালায় না চালাতে বাধ্য হয়, যেদিন ৮০ থেকে ১০০টাকা যোগাড় করে বাড়িতে বাজার নিয়ে যায় সেদিন বাবা-মাসহ তিনজনের খাবার জোটে...

ভ্যানঅলা বলে, স্যার আমার কষ্ট হয় না

মেহমান ছেলেটি তবু যেন অস্বস্তি কাটাতে পারছিল না। অবশেষ সবাইকে চমকে দিয়ে সে নিজেই ভ্যান চালানোর জন্য নেমে পড়লো।

তুমি চালাবে ভ্যান?

বিস্ময় না কাটতেই ও ভ্যানে চড়ে বসলো। এবং সত্যিই পুরো ক্যাম্পাস আমরা চষে বেড়ালাম। ভ্যানঅলা তখন যাত্রী। সেই মেহমান ছেলেটির বাবা বাংলাদেশের সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী। ছেলেটির নাম আলী আহমদ মাবরুর। বৃক্ষ তোমার নাম কি? ফলে পরিচয়। এমন ছেলের বাবাকেইতো মানায় সমাজকল্যাণে...

মাবরুরের সাথে বন্ধুত্ব গাঢ় হলো সেই মুগ্ধতা থেকে।...

ক'দিন আগে মাবরুরের বাবার ফাঁসির রায় হলো...আমি জানি না মাবরুর কীভাবে এই কষ্টটা সামলেছে...কিন্তু যেই ছেলেটি একটা ভ্যানঅলা পিচ্চির কষ্ট সইতে পারছিল না, তার পক্ষে নিজের বাপের প্রতি এত বড় জুলুম সে কীভাবে সইবে? আর যে যাই বলুক সন্তানতো জানে তার বাবা কী...

এবার আসি বাপের প্রসঙ্গে....

আমার টেলিভিশন সাংবাদিকতার গুরু, যার হাতে আমার হাতে খড়ি, যার কাছ থেকে আমি শিখেছি কীভাবে উভ লিখতে হয়, কীভাবে লিংক দিতে হয়, কীভাবে প্যাকেজ বানাতে হয়...সেই মানুষটির কাছে শোনা একটি কাহিনী...

তিনি একবার মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ সাহেবের সফরসঙ্গী হয়েছিলেন। ছিলেন মন্ত্রীর গাড়িতেই। গাড়িটি গন্তব্যে পৌঁছলো (অথবা পথে কোথাও হল্ট করেছিল) লাঞ্চের সময় স্থানীয় জেলা প্রশাসক লাঞ্চের জন্য অনুরোধ জানালে তিনি বললেন আগে লাঞ্চ বিলের কাগজটা আনেন...

তাতে দেখা গেলো একবেলা লাঞ্চের জন্য আড়াই লাখ টাকার খরচ...মন্ত্রী সাহেব বললেন এসব খাবার আপনারা খান, আমি গরীব দেশের মন্ত্রী, এক বেলায় আড়াই লাখ টাকা আমি খেতে পারি না...তিনি তার টিফিনবক্স বের করলেন এবং লাঞ্চ সারলেন সফরসঙ্গীকে নিয়ে...

এই মন্ত্রীর ফাঁসি হবে নাতো হবে কার?...

এই দেশ ইতিবাচক রাজনীতির জায়গা নয়....টিকে থাকবে তারাই, যারা সব অন্যায়ের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন...

তথ্যসৃত্র ঃ ফেইজবুক পেজ বাশের কেল্লা

বিষয়: বিবিধ

১৩৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File