টসটসে লিচু এবং একজন লাকীর আম্মা
লিখেছেন লিখেছেন সুন্দরের আহবান ০৪ জুন, ২০১৩, ০৬:৫১:৫৭ সন্ধ্যা
লাকীর আম্মা, হ্যা তার নাম লাকীর আম্মা, ছোট বেলা মা বাবা আদর করে তার একটি নাম রেখেছিল। সে নামেই তিনি বড় হয়েছেন্ এ নামে আত্মীয়, প্রতিবেশী, বান্ধবীরা তাকে ডাকতো। তার বয়স যখন ১৬-১৭ বছর তখন বিয়ে হয়ে যায় এক অচেনা পুরুষের সাথে। পরবর্তীতে সে পুরুষটিই হয়ে যায় তার জীবনের সবচেয়ে আপন। এ আপন পুরুষটিও তাকে কিছু দিন তার মা বাবার দেয়া নাম ধরে ডেকেছে। কিন্ত বিয়ের দের বছরের মাথায় যখন তার ঘরে একটি সন্তান আসলো সে মেয়ের নাম রাখা হলো লাকী। এরপর থেকে ১৮ বচরের কিশোরী হয়ে গেলো পূর্ণ বয়সের নারী। তার নতুন নাম লাকীর মা। লাকীর মায়ের সংসার জীবন প্রথম ৪-৫ বছর ভালোই কেটেছে। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস। সংসার জীবনের চাকা ঘুরে, সময় বয়ে চলে যায় এক এক করে চারটি সন্তানের মা হলেন লাকীর মা। চির চেনা চির আপন মানুষটির কাছে লাকীর মায়ের আদর সোহাগ কমতে লাগলো। সংসারের উপার্জনের দায়িত্ব এস বর্তালো লাকীর বাবার পরিবর্তে লাকীর মায়ের উপর। লাকীর দু বোন গার্মেন্সে এ চাকুরী করে, লাকীর মা এ বাড়ী ও বাড়ী কাজ করেন। তিন জন মিলে যা আয় করেন তা দিয়ে ঘর ভাড়া, এবং সংসার খরচ নির্বাহ করেন। লাকীর বাবা ঘরে বসে স্ত্রী আর সন্তানের খরচে মূখে আহার পুরেন। লাকীর মায়ের সখ একশত লিচু কিনে সন্তানেদের নিয়ে খাবেন। কিন্তু নুন আনতে যাদের পান্তা ফুরোয় তাদের কি সে সাধ্য আছে? বাজারে একশত লিচুর দাম তিনশত থেকে চারমত টাকা্। রাস্তা দিয়ে তিনি যখন হাটেন মৌসুমী সব ফলের গন্ধে জিভে পানি এসে যায়। কিন্ত কতটুকু সাধ্য তার এ ফল কিনে খাবার? বাজারে এখন মৌসুমী ফলের সয়লাব, আম, জাম, কাঠাল, লিচুর দাম যা ই হোক না কেন অনেকেই এমন আছেন যিনি প্রতিদিন কোননা কোন ফল কিনে বাসায় নিয়ে যান। পরম তৃপ্তি সহকারে সন্তানেদের নিয়ে মৌসুমী ফল খান। তারা যেন একবারের জন্য হলেও লাকীর মায়েদের কথা মনে করেন। যারা বসবাস করেন আমাদের প্রত্যেকের খূব কাছাকাছি।
বিষয়: বিবিধ
১৪১৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন