প্রধানমন্ত্রী ইস্তফা দিচ্ছেন!
লিখেছেন লিখেছেন সিকদারমোহাম্মদ ২৮ নভেম্বর, ২০১৩, ১০:৪৬:০৬ সকাল
সিকদার মোহাম্মদঃ প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগই পারে বর্তমান অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের অধীনে যদি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাহলে প্রধান বিরোধীজোটের কার্যত আপত্তি থাকার কোন কারণ থাকতে পারেনা। আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে দেশের মধ্যে সুস্থিরতা আনয়ন করতে পারেন।
রাষ্ট্রপতির অধীনে নির্বাচনের ব্যাপারে বিএনপি কিছুটা ছাড় দিয়ে শর্তসাপেক্ষে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে বলে দলটির এক শীর্ষ নেতা একটি অনলাইন পোর্টালকে জানিয়েছেন। বিষয়টি সাংগঠনিকভাবে এখনও না করায় বিএনপির ওই শীর্ষনেতা নামপ্রকাশে অনিচ্ছাও প্রকাশ করেছেন।তবে, এধরণের একটি গুঞ্জন রাজনৈতিক মহলে প্রচার হয়ে আছে। এইক্ষেত্রে বর্তমান রাষ্ট্রপতিকে প্রধান করে নির্বাচনের সময়ে বিএনপি ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে সমান সংখ্যক সদস্য নিয়ে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হলে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিএনপির কোনো আপত্তি থাকার কথা না। কিন্তু আমরা যত সহজেই একটি সমিকরণ দাড় করি না কেন তাতে ক্ষমতাশীনরা সব সময়ই তার উল্টোরথে যাত্রা করতে অভ্যস্ত ।
যেহেতু বিরোধী দলের নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে তার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এটা থেকে ধরে নেওয়া যায়, দেশের প্রধান বিরোধী দল প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রাষ্ট্রপতিকে মেনে নিয়েছেন। তাহলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করলে বিরোধী দলের আর কথা বলার নৈতিক অবস্থা থাকেনা। সরকার পক্ষ চাইলে এই সুযোগটা নিতে পারতেন ।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী একবারও কোথাও বলেননি তার অধীনে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। বরং বলেছেন দেশের শান্তির জন্য তিনি ‘প্রধানমন্ত্রীত্ব চান না’ বলেই আমরা সংবাদমাধ্যমে জানতে পেরেছি । তার কথা তখনই সকলের নিকট বিশ্বাসযোগ্য হতো যদি তিনি পদত্যাগ করে বিরোধীদলসহ সকল রাজনৈতিক দলকে নির্বাচন করতে আহ্বান জানাতেন। প্রধান বিরোধী জোটনেতা বেগম খালেদা জিয়া তখন এই পরিস্থিতিতে জনমতের চাপেও পড়তেন । কারণ ২০০৬ সালেও যখন নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয় তখন বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতির নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করে একধরণের সমস্যা সমাধানের পথ সৃষ্টি করেছিলেন । সেই ধারাবাহিকতায়ই বিলম্বে হলেও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়া সম্ভব হয়েছিল । আর তখন বেগম জিয়ার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে জনমনে স্বস্তি এসেছিল এবারও শেখ হাসিনার পদত্যাগই পারে জনমনে প্রশান্তি আনয়ন করতে ।
বিএনপির নেতার বলে থাকেন এবং তাদের ভাষায়, দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির দাবি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করলে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসন সম্ভব এবং এর কোন বিকল্পও নেই। তার পদত্যাগই সব সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ।কিন্তু ২০১০ থেকে আওয়ামী লীগের নির্দলীয় বা অনির্বাচিত সরকারে ঘোর আপত্তি ।সেই আপত্তি রাষ্ট্রপতি প্রতি হতে পরে না, কারণ তিনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উভয় ভাবেই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ।
তবে বর্তমান রাষ্ট্রপতির অধীনে নির্বাচনে বিএনপি যাবে কি-না এমন প্রশ্ন অনেকের মনে থাকতে পারে, তবে তার আগে সরকার পক্ষ আসলে তাদের মনোনিত এবং নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে বিশ্বাস করেন কিনা সে বিষয় ফয়সালা হওয়া জরুরী । আর এই ফয়সালা হয়ে গেলে বিএনপি যে ধরণে মনস্তাত্ত্বিক চাপের সম্মুঙ্খিন হবে তা থেকে বের হওয়া তাদের পক্ষে সহজ হবেনা ।কারণ তারা বলে থাকেন তারা আন্দোলন করেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং দেশের সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য। যে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে প্রকৃত অর্থে একটা গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। এই চাওয়ার ক্ষেত্রে শতভাগ তাদেরই চাওয়া সফল হবে তা নিশ্চই তারাও বিশ্বাস করেন না, কারণ তারাওতো ক্ষমতায় থেকে বিরোধীদলের সব চাওয়াকে তাদের মতো করে বাস্তায়ন করেননি, সে কথা নিশ্চই বিএনপি বা বেগম জিয়াও ভুলে যাননি ।
দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সমাধানের মাধ্যমে কীভাবে প্রধান বিরোধী দলকে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানো যায় সে ব্যাপারে দেশের ভেতর এবং বাহির থেকে সব সময় সব সরকারের প্রতি চাপ ছিল এবং এখনও আছে তা কেউ অস্বীকার করতে পারেননা ।তা সত্যেও সরকার যদি কারো প্ররোচনায় ১৫ ফেব্রুয়ারীর মতো আরো একটি নির্বাচন দেশে যদি ঘটিয়ে ফেলে তবে তার মাধ্যমে যে সরকার গঠিত হবে তার নৈতিক ভিত্তি কতটা শক্ত হবে তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখেনা । তাই দেশের প্রতি সামান্য মমত্ববোধ থাকার কারণেই আমরা আম জনতা মনে করি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগই চলমান সংকট সমাধানের সবচেয়ে সহজ সমাধান বাকিটা নিশ্চই রাষ্ট্রপতি এবং গণমতের চাপেই সমাধান সম্ভব হবে।তবে সবার আগে জনস্বস্তির জন্য দরকার প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফা। তিনি কি তা দিচ্ছেন ?
বিষয়: বিবিধ
১০৫০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন