প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব কার্যত অন্তরসারশূন্য প্রমানিত হল
লিখেছেন লিখেছেন সিকদারমোহাম্মদ ২০ অক্টোবর, ২০১৩, ০১:২৭:০৫ দুপুর
সিকদার মোহাম্মদঃ
জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাবে অনেকেই আশাবাদী হয়েছিলেন।আসন্ন সংকট কেটে সমাধানের উপায় বের হবে এমনটাই ধারণা করেছিলেন অনেকে।এমনকি প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে সরকার অনেক সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল, প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের পর বিএনপি কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে পড়েছিল, ছিল কিছুটা হতবিহ্বল। বুদ্ধিজীবি মহলের ভাষ্যে বিএনপির নেতৃত্ব মনস্ত্বাত্তিক চাপে ভুগছিল বলেও মনে হচ্ছিল । তবে সব চাপকে সরকার নিজেই হালকা করে দিল গতকালই- রাজধানীতে সকল প্রকার সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে । আর বিএনপির হালেও পানি আসলো, তাইতো আজ পেশাজীবি সভা চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নিলো, আর বেগম খালেদা জিয়া নিজে এতে যোগদান করবেন বলে সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে ।
বেশ আগে ভাগে নেতা কর্মি ধড়পাকড়, অফিস অবরুদ্ধ করে রাখার কাজ চলছিল; যার ফলে প্রধানমন্ত্রীর সর্বদলীয় সরকারে বেগম জিয়ার নিকট নাম প্রস্তাব নিয়ে অনেক বিশ্লেষকের মধ্যে সন্দেহ ছিল, আর এ সন্দেহ সত্য প্রমান হলো পুলিশের ঘোষণার মাধ্যমে ।এখন তাই খোদ প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আন্তরিকতা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রশ্ন উঠার কথা, তাও যে খুব কার্যকর ভাবে উঠবে তাও মনে হয়না কারণ পুলিশি ঘোষণা ২৪ ঘন্টা পার হয়ে যাচ্ছে, এরই মধ্যে তা যতটা উঠার কথা ছিল তা উঠেনি । অথচ প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের সাথে সাথে বুদ্ধিজীবী মহলসহ সকলের তরফ থেকে বিএনপি কে প্রস্তাব লুফে নেবার নসিহত গণমাধ্যমে উঠে এসেছিল ।
বাস্তবিকঅর্থে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে পর বিএনপিকে আনুষ্ঠানিকভাবে মাতামত বা প্রতিক্রিয়া জানানোর কোন সুযোগই সরকার দিলনা এর ফলে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা অবকাশ সরকার নিজেই তৈরি করে দিল ।সরকার পক্ষ যদি অন্ততঃ তাদের প্রস্তাবে আন্তরিকই হতো তবে বিএনপির সর্বশেষ আন্দোলনের চেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতো আর এতে বিএনপির এতোদিনের আন্দোলনের চেষ্টা জনগণের নিকট অপ্রয়োজনীয় বিষয় বলে প্রমানিত হতো । এতে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা দু’ভাবে বাড়তো প্রথমতঃ সরকার জনগণকে বুঝাতে সক্ষম হতো তারা জনদুর্ভোগ ও জনকল্যানের বিষয় অনুভুতিশীল, রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানে বিএনপির চেয়ে তারা বেশি আন্তরিক। দ্বিতীয়তঃ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের উদ্দেশ্য সহি বলে প্রমান করতে পারতেন । আর এর ফলে নিশ্চিতভাবে সরকারের জনসমর্থন বাড়তো ।
তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে, প্রধানমন্ত্রীর সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাবে বিএনপি ইতিবাচক সাড়া দিক তা কি সরকার চায়নি? তারা কি কেবলমাত্র কৌশলের আশ্রয় নিয়ে বিএনপিকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করেছেন ? তবে বিএনপি সত্যিই বিপদে পড়ত, সরকার যদি তাদের প্রস্তাবে আন্তরিক হতো । এক্ষেত্রে যদি পুলিশি ব্যবস্থায় সমাবেশ বন্ধ ঘোষণা না করে যদি আওয়ামী লীগ তাদের নিজেদের ২৫ অক্টোবরের সমাবেশ প্রত্যাহার করে বিএনপিকেও সমাবেশ প্রত্যহারের আহবান জানাতো, তাহলে সত্যি সত্যিই বিএনপি বেকায়দায় পড়ত ।সরকার যেভাবে চাইতো বিএনপি তাতে সাড়া না দিলে দেশে বিদেশে বিপদেই পড়ত । আর তখন যদি বিএনপি সহিংস পথে হাটতো আর সভাসমাবেশ নিষিদ্ধ করা হতো তাহলে জনমনে কোন নেতিবাচক ধারণা জন্মাতোনা ।আর এমনও হতে পারতো বিএনপি ২৫ তারিখের সমাবেশ থেকেই প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে সাড়া দিতে পারতো এতে তাদেরও মান রক্ষিত হতো দেশ থেকে ২৫ অক্টোবরের পর সব অনিশ্চয়তা কেটে যেত । কিন্তু এখন আর তা কাটবে বলে দৃশ্যমান হচ্ছে না ।
পরিস্থিতি তাই বলছে, সামনের নির্বাচন সরকার হয়ত ১৮ দলকে বাদ দিয়েই সম্পন্ন করবে আর এতে দেশ দীর্ঘস্থায়ী বিপদে আপতিত হবে। যা হবে জনগণের ইচ্ছা ও আকাংখার ব্যতিক্রম বিষয় ।
বিষয়: রাজনীতি
১০৫৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন