ব্রাদারহুডের কায়রো পদযাত্রা ঘোষণা, নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের আহ্বান তুরস্কের
লিখেছেন লিখেছেন সিকদারমোহাম্মদ ১৫ আগস্ট, ২০১৩, ০৭:১৮:০৮ সন্ধ্যা
সিকদার মোহাম্মদঃ
মুসলিম ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে গণহত্যা সংগঠিত হবার এবং দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারির একদিনের মাথায় আবার তারা নতুন করে মিশরের রাজধানী কায়রোর রাজপথে নামার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। আর এই প্রথম কোন সদস্য রাষ্ট্র থেকে মিশর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তারা কায়রোজুড়ে বিক্ষোভ পদযাত্রার ঘোষণা দিয়েছে। ব্রাদারহুড শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ব্যপারে তাদের দৃঢ় প্রতিজ্ঞার বিষয়টিও পূনর্ব্যক্ত করে ।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ব্রাদারহুডের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আজ বিকেলে আল ইমান মসজিদ থেকে গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ পদযাত্রার পরিকল্পনা করা হয়েছে।’ জরুরি অবস্থা সত্বেও তারা এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
তবে তাদের কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ থাকবে বলে জানিয়েছেন ব্রাদরহুডের মুখপাত্র গেহাদ আল হাদ্দাদ তার টুইটার বার্তায় জানান বলে আল জাজিরার খবরে জানানো হয়।
আল জাজিরা তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘আমরা সব সময়ই অহিংস এবং শান্তিপূর্ণ থাকবো। আমরা এখনও মনোবল হারাইনি। আমরা এখনো অনমনীয় এবং দুর্দমনীয়।
সেনা অভ্যুত্থানকে পরাস্ত না করা পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।’
অন্যদিকে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রজব তাইয়্যেব এরদোগান মিশর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
মিশরের হত্যাকাণ্ডকে ‘গণহত্যা’ অভিহিত করে গতকাল তুর্কি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, “শিগগিরি আন্তর্জাতিক সমাজকে বিশেষ করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও আরব লীগকে অবশ্যই গণহত্যা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।”
এরদোগানের দপ্তর থেকে বলা হয়েছে- “এটি পরিষ্কার যে, মিশরে সামরিক ক্যু’র প্রতি আন্তর্জাতিক সমাজের সমর্থন রয়েছে এবং তাদের নীরবতার কারণেই মিশরের সামরিক বাহিনী আজকের হত্যাকাণ্ড চালানোর উতসাহ পেয়েছে।”
আল জাজিরার খবরে প্রকাশ, গতকালের ক্র্যাকডাউনসহ এর পর মিশরজুড়ে বিক্ষোভ-সংঘর্ষে এ পর্যন্ত অন্তত ৪২১ জন মুরসি সমর্থক নিহত এবং ৩৫৭২ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মিশরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র খালেদ আল খাতীব।
তিনি ফরাসি বার্তা সংস্থা এপির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মুখপাত্র আরো জানান, মুরসি সমর্থকদের প্রধান বিক্ষোভ এলাকা রাবা-আল-আদাবিয়া ক্যাম্পে অভিযানে ১৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। একইভাবে নাহদা স্কোয়ারে ৫৭ জনের এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ২২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর এ সময় অন্তত ৪৩ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছে।অন্যদিকে মুসলিম ব্রাদারহুড দাবি করেছে তাদের অন্তত প্রায় আড়াই হাজার লোক নিহত এবং দশ হাজার লোক আহত হয়েছেন। তবে বিবিসি বলেছে, মিশরীয় কর্তৃপক্ষ বরাতে জানিয়েছে দেশব্যাপি নিহতের সংখ্যা অন্তত ৫২৫ ।
বুধবারের গণহত্যার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে অন্তত তিনজন সংবাদ কর্মী নিহত হবার খবর নিশ্চিত করেছে আল জাজিরা, এদের মধ্যে একজন গালফ নিউজের হাবিবা আহমেদ আবদ এলাজিজ(২৬)। অপর জন মিশরীয় সাংবাদিক আহমেদ আবদেল জাওয়াদ এবং তৃতীয় জন হলেন ব্রিটেনের স্কাই ক্যামেরাম্যান ব্রিটন মিক ডিন ।এরা সকলেই গণহত্যা খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ।
বিষয়: আন্তর্জাতিক
১১৪১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন