‘বিপ্লবের মাধ্যমে নয়, ব্যালটের মাধ্যমে জামায়াত একদিন ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে’-দ্য ইকোনমিস্ট

লিখেছেন লিখেছেন সিকদারমোহাম্মদ ০৮ আগস্ট, ২০১৩, ০৩:০৮:২৫ দুপুর

সিকদার মোহাম্মদঃ বিপ্লবের মাধ্যমে নয়, ব্যালটের মাধ্যমে জামায়াত একদিন ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে বলে বুধবার ‘বাংলাদেশ’স পলিটিক্স: ডিসপেনসাবল অ্যালাইস’ শিরোনামে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ রকম পূর্বাভাস দিয়েছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট।।

জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের প্রেক্ষিতে বিষদ নিবন্ধে এ মন্তব্য করা হলো ২০১১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের পরে যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থি বুদ্ধিজীবীদের করা একটি ভবিষ্যদ্বাণীর অবতারণা করে ।

ইকোনমিস্টের নিবন্ধে বলা হয়, জামায়াত একদিন বাংলাদেশের সেক্যুলার ট্রেডিশন ধ্বংস করে দিয়ে ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে। তবে বিপ্লবের মাধ্যমে নয়, সেটা তারা করবে ব্যালটের মাধ্যমে।

এতে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে সুপ্রিমকোর্টও সেই রায়ই বহাল রাখা হতে পারে বলে মন্তব্য করেছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট।

নিবন্ধে স্পষ্ট করে বলা হয়, আওয়ামী লীগ জামায়াত নিষিদ্ধের কথা বলে যে শোরগোল তুলছে তা অন্তঃসারশূণ্য।

এতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের সঙ্গে দেশের বৃহত্তম ইসলামপন্থি দল জামায়াতের ইসলামীর ‘ইসলামী’ গঠনতন্ত্র সাংঘর্ষিক অভিযোগ করে এক বিভক্ত রায়ে গত ১ আগস্ট এর নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্ট।

ঢাকার হাইকোর্ট বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল এবং বৃহত্তম ইসলাপমপন্থি দল জামায়াতে ইসলামীকে আগামী নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করেছে। রায়টি স্থগিত চেয়ে সুপ্রিমকোর্টে করা আবেদন ৫ আগস্ট খারিজ করে দেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন বলছে, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হবে।

এই আইনি লড়াইয়ের পরিণতি হলো সুপ্রিমকোর্ট ভিন্ন কোনো অবস্থান না নিলে বাংলাদেশে তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দলটি আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তবে সুপ্রিমকোর্টের ভিন্ন অবস্থান নেয়ার সম্ভাবনা কম। অন্য একটি উপায় হচ্ছে জামায়াতের গঠনতন্ত্রের মৌলিক পরিবর্তন, যেটা জামায়াত করবে না এবং জামায়াতের পক্ষে ‘প্রায় অসম্ভব’ বলে নিবন্ধে উল্লেখ করা হয় ।

রায়টি বহাল থাকলে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি তার দীর্ঘদিনের মিত্রকে হারাবে বলে মন্তব্য করা হয়। এবং নিবন্ধে বিএনপি-জামায়াতের ঐক্য অপিরিহার্য বলে উল্লেখ করা হয়।

তবে বিএনপি জানে এখন সময় তাদের। পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তাদের প্রার্থীরা চরমভাবে ভালো করেছে। বাংলাদেশে কোনো দলই পরপর দুই মেয়াদে সরকার গঠন করতে পারেনি। এ অবস্থায় জামায়াতের সঙ্গে জোট তাদের আরো বাড়তি সুবিধা দিত।

নিবন্ধে জামায়াত নিষিদ্ধের কথা বলা কে সরকারের শোরগোল ও হুমকি বলে উল্লেখ করা হয়। এবং তাকে অন্তঃসারশূণ্য বলা হয়।

জামায়াত নিষিদ্ধকে কেন্দ্র করে সহিংস প্রতিরোধের আশঙ্কা রয়েছে সরকারের। তাছাড়া সরকার ভালো করেই জানে যে সৌদি আরবের সমর্থনপুষ্ট তার রাজনৈতিক শত্রুকে আন্ডারগ্রাউন্ডে পাঠানো যাবে না।

প্রতিবেদনে জনঅসন্তোষের কথাও তুলে ধরে বলা হয়, জনঅসন্তোষ দমন করতে হিমশিম খাচ্ছে আওয়ামী লীগ। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, শুধু গত ফেব্রুয়ারি থেকেই অন্তত ১৫০ জন বিক্ষোভকারীকে হত্যা এবং ২০০০ জনকে আহত করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।

গত সপ্তাহান্তে আওয়ামী লীগ কূটনীতিক এবং দাতাদের আশ্বস্ত করতে চেষ্টা করেছে, তারা কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করতে চায় না।

নিবন্ধে এটাও পরিস্কার করাহয় যে,ভারত চাইবে শেখ হাসিনা পরপর দুইবার ক্ষমতায় না আসা পূর্বেকার নজির উপেক্ষা করে পুননির্বাচিত হউক। নির্বাচিত হলে তিনি হবেন এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘকালীন প্রধানমন্ত্রী। হাসিনা হেরে গেলে এই রেকর্ডটি অর্জন করবেন খালেদা জিয়া।

নিবন্ধে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলা হয়, শেখ হাসিনা যদি পরাজিত হন তাহলে পেন্ডুলাম ঘুরে যাবে। ক্ষমতায় গিয়ে বিএনপি তার নির্যাতিত মিত্রকে পুনর্বাসিত করবে এবং যুদ্ধাপরাধের রায় বাতিল করবে।

বিষয়: রাজনীতি

১৩৮২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য