আওয়ামিলীগের ভরাডুবির প্রধান তিন কারণ
লিখেছেন লিখেছেন সিকদারমোহাম্মদ ১৬ জুন, ২০১৩, ০৪:২৬:৪১ বিকাল
সিটি করপোরেশনের ফলাফল আগামী জাতীয় নির্বাচনেও প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটার,পর্যবেক্ষক মহল, নাগরিক সংগঠন । তারা মনে করছেন- সদ্যবিদায়ী মেয়রদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি,আয় বর্হিভূত সম্পদের মালিক বনে যা্ওয়া, জনবিচ্ছিন্নতা, স্বজনপ্রীতির অভিযোগ, মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে যৌথবাহিনীর অভিযান, বিভিন্ন স্তরের আওয়ামীনেতাদের অযাচিত মন্তব্য, বিভিন্ন আলোচিত জাতীয় ইস্যূ সরকার সমর্থিত প্রার্থীদের পরাজয়ের অন্যতম কারণ।
এবারের সিটি নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে স্হানীয় ইস্যূর চাইতে জাতীয় ইস্যূ গুলোকে অনেক গুরুত্বের সাথে ভোটাররা বিবেচনায় নিয়েছেন বলেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন । কারন ফলাফলের গতিপ্রকৃতি প্রমাণ করেছে সরকার জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে, সরকারের জনপ্রিয়তা ধ্বসের কারনেই স্হানীয় সরকার নির্বাচন হওয়া সত্বেও সরকার সমর্থক প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন ।এ ক্ষেত্রে এলাকার উন্নয়ন বিষয়টি ভোটাররা বিবেচনায় নিয়েছেন বলে দৃশ্যতঃ মনে হচ্ছে না, বাস্তবিক অর্থে সব এলাকায় কিছুনা কিছু উন্নয়ন যেমন হয়, তেমনি স্থানীয় সমস্যা সব সময়ই থাকে এগুলো আসলে গতানুগতিক, যা ভবিৎষতেও ব্যতিক্রম হবে বলে সহজেই মনে হয়না ।ফলে ভোটের বাজারে এগুলোর চেয়ে জাতীয় ইস্যূ নিয়ামক শক্তি হিসেবে ভূমিকা পালন করে ।
‘শেয়ার বাজার’ সদ্য সমাপ্ত সিটি নির্বাচনে নিঃসন্দেহে প্রভাব রেখেছে এবং ভবিৎষতেও যে কোন নির্বাচনে প্রভাব রাখবে । শেয়ার বাজার তাই সরকার সমর্থকদের পরাজয়ের কমন কারণ, বিশেষ করে চারটি সিটিতেই বাস করে দেশের সবচেয়ে শিক্ষিত ও সচেতন জনগণ আর এ সিটি করপোরেশন গুলো একাধিক সংসদীয় আসনের সমন্বয়ে গঠিত । শহর গুলোতে বিভিন্ন পেশা ও শ্রেনির মানুষের বাস । তবে জনসাধারণ বিভিন্ন পেশায় অবস্থান করেও পাশাপাশি শেয়ার ব্যবসায় অনেক বড় অংশ জড়িত। যারা ঢাকা, চট্টগ্রাম সহ এ চারটি সিটিতে বাস করেন ।২০১০ সাল থেকে মানুষ পুঁজি হারাতে হারাতে নিজের বলে আর কিছু অবশিষ্ট নেই, এই বিপুল সংখ্যক বিক্ষোব্ধ ভোটার ভোটের মাধ্যমে তাদের ক্ষোভ লাঘব করে করবেন এটা বিচিত্র কিছুনা ।
রক্তের দাগ এখনও হেফাজতের শুকায়নি, রাতের আধাঁরে যৌথবাহিনীর অভিযানের দুঃসহ স্মৃতি এখনও যাদের তাড়া করে ফেরে তারা নিশ্চই আওয়ামিলীগ সমর্থিত প্রার্থীকে ভোট দেয়নি। ভোটের ব্যবধান তা স্পষ্ট করে দিয়েছে ।এটা সরকার সমর্থকদের পরাজয়ের নগদ কারণ ।
পদ্মাসেতুর জন্য ২০০৮ সালে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ আশায় বুক বেঁধে আওয়ামিলীগকে ভোট দিয়েছিল, দীর্ঘ সাড়ে চার বছর তাদের আশা ভাঙ্গার সাথে তামাশা দেখে দেখে
ক্লান্ত হয়ে পড়েছে ।ফলাফল সরকারের প্রতি চার সিটি নির্বাচনে অনাস্থা , খুলনার ভোটের ব্যবধান তা স্পষ্ট করে তুলেছে । প্রসঙ্গত খুলনা শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকা এখানে আওয়ামীলীগ এত বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হবার কথা না,পদ্মাসেতুর ইস্যূ মূখ্য ভূমিকা রাখায় ব্যবধান এতটা প্রবল হয়েছে।
বিষয়: বিবিধ
১২৯৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন