আমরা মুসলমানরা ভাঙ্গা ও নষ্টের দিকে এগুচ্ছি; অথচ স্থাপন ও গড়ার অলিক স্বপ্ন দেখছি।

লিখেছেন লিখেছেন মুসলিম চ্যরিটি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ০৬ জুন, ২০১৩, ১১:১১:১৭ রাত

অত্যন্ত আফসোস ও আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, আমরা মুসলমানরা ভাঙ্গা ও নষ্টের দিকে এগুচ্ছি;

অথচ স্থাপন ও গড়ার অলিক স্বপ্ন দেখছি।

যখন শত্ররা সবাই ঐক্যবদ্ধ; চালাচ্ছে ইসলাম নির্মূলের সম্মিলিত প্রয়াস;

বাতিলচক্র নিজেদের লক্ষ্য অর্জনে এগুচ্ছে দৃঢ়গতিতে।

তখন মুসলমানরা আত্মকলহে লিপ্ত।

হালকা এবং সাধারণ জিনিসকে কেন্দ্র করে চলছে অঘোষিত লড়াই।

আত্ম-প্রতিষ্ঠার জন্য সবাই মরিয়া।

শুধু মুসলিম ব্যক্তিত্বদের মাঝেই নয়; মুসলিম রাষ্ট্র সমূহেও চলছে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব-সংঘাতের খেলা।

খুব বড় বিষয় নিয়ে নয়; মামুলি বিষয় নিয়ে। এগুলো সমাধানের জন্য তেমন কোন উদ্যোগেরও প্রয়োজন হয় না। আলোচনা-পর্যালোচনা দ্বারাই সম্ভব।

মুসলমান পরস্পরে ভাই ভাই।

সে হিসেবে পারস্পরিক সম্পর্ক হওয়া উচিত ভ্রাতৃত্বের, সম্প্রীতি ও মাধুর্যের।

প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নয়।

যিনি কাজ করেছেন তার দিকে নয়, চেয়ে দেখা উচিত কী কাজ করেছেন।

ভাল কাজ হলে তার স্বীকৃতি দেয়া। ব্যক্তি যে কেউই হোক।

ইসলাম ও গঠণমূলক সামাজিক কাজের প্রতি সর্বাত্মক সহযোগিতা বাঞ্ছণীয়।

কিন্তু যখন কাজের চেয়ে কর্তা বেশি গুরুত্ব পায়; প্রত্যেক কাজকে নিজের অবদান মনে করা হয় এবং খ্যাতির আশা থাকে, তখনই ঘটে বিপত্তি।

বর্তমানে ইসলামী কর্মীদের অভ্যাস এই দাঁড়িয়েছে যে, তাঁরা শুধু অন্যের দোষ-ত্র“টিই দেখে।

অন্যের ভুলগুলো প্রকাশ করেই শান্তি পায়।

নিজের ভুল কিছুই ধরা পড়েনা তাদের রঙ্গীন চশমায়।

নিজের মধ্যে হাজার দোষ থাকার পরও অন্যের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে মজা পায়।

নিজেরটি একমাত্র কাজ; অপরেরটি কিছুইনা; এই ধারণা তাদের ভেতর।

তাদের ভাব দেখে মনে হবে ইসলামের রক্ষক একমাত্র তারাই।

তাদের অস্তিত্ব ও পতনের মাঝে ইসলামের উত্থান-পতন নিহিত!

বর্তমানে আমাদের মধ্যে ইসলামের আদর্শ তেমন নেই।

আমাদের কাজগুলোও পূর্ণ সুন্নাত ও ইসলাম মোতাবিক হচ্ছে না।

তবুও মিথ্যা অভিনয় করার কি দরকার আছে ?

ইসলামের কৃত্রিম কান্ডারী বনে ইসলামী ঐতিহ্যকে বদনাম করার কোনো প্রয়োজন নেই।

কারণ আমাদের উদ্দেশ্য কখনো খ্যাতি ও নেতৃত্ব, কখনো নিজের দল ও মতের শ্রেষ্ঠত্ব ও প্রাধান্য, আবার কখনো নিজের জ্ঞান বা বুদ্ধির বিকাশ।

অথচ আমরা নিজেদের ভাবছি পূত-পবিত্র! আর অন্যদেরকে মনে করছি ভ্রষ্ট ও অচ্ছুত!

এটি সরাসরি ইসলামের সাথে প্রতারণা।

নিছক ব্যক্তি স্বার্থে ইসলামের অপব্যবহার।

নবীয়ে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন “মুসলমান তাঁর ভাইয়ের সম্মান করবে। প্রত্যেকের প্রাপ্য অধিকার আদায় করবে। পরস্পরে হিতকামী হবে।

সাহায্য-সহযোগিতার হাত প্রসারিত করবে। হিংসা-বিদ্বেষ, সংকীর্ণ মানসিকতা রাখবেনা।

” আল্লাহ তায়ালাও নির্দেশ করেছেন মুসলমানদের সাথে সদাচরণ করতে।

এমনকি কাফিরদের সাথেও ভাল ব্যবহার করতে বলেছেন।

আল কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে “যারা পবিত্র মসজিদ থেকে তোমাদের বাধা প্রদান করেছিল, সেই সম্প্রদায়ের শত্রুতা যেন তোমাদেরকে সীমালঙ্ঘনে প্ররোচিত না করে। সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।”

আল্লাহর এই বানী প্রমাণ করে ইসলাম একটি উদার, সহনশীল ও সার্বজনীন সম্প্রীতির ধর্ম।

বিভেদ ও সংঘাতের এখানে কোনো স্থান নেই।

এই প্রবণতা দূর করতে হলে ব্যক্তি স্বার্থ থেকে ইসলামের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে।

অপরের বিরুদ্ধে ঢালাও ভাবে মন্তব্য করা চলবে না।

নিজেকে গঠনমূলক কাজ করতে হবে।

অন্যের বিচ্যুতির পেছনে লেগে অহেতুক সময় নষ্ট করা যাবে না।

যে সকল জিনিস বিভেদ বা সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে তা থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে । সম্মান করতে হবে মহা সম্মানিত নবীর উম্মতকে ।

সব সময় সহযোগিতামূলক মনোভাব পোষণ করতে হবে।

কেননা ‘আল্লাহ— বান্দাকে সাহায্য করেন, যতক্ষণ বান্দা তার ভাইকে সাহায্য করে

বিষয়: বিবিধ

১২৮২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File