সময়ের গল্পঃ দশের লাঠি একের বোঝা
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আলী বিন সুলতান ২০ জুলাই, ২০১৩, ০২:০০:৫৩ দুপুর
এক গ্রামে মোঃ জামিত, বিনপি চৌধুরী ও হিফজত উল্লাহ নামে ৩ জন লোক বাস করতো।
লোকে তাদেরকে সংক্ষেপে জামিত, বিনপি ও হিফজত বলে ডাকতো। তারা খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু না হলেও মিলে মিশে থাকতো। একে অপরের বিপদে সাহয্য করতো।
একদিন তারা তিনজন ভ্রমনে বের হলো। পথে বিশ্রাম করার জন্য তারা এক পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিল। গুহার ভেতরে দুকে তারা প্রচুর স্বর্ণ মুদ্রা দেখতে পেলো। তারা সিদ্ধান্ত নিলো এই স্বর্ণ মুদ্রা গুলো তাদের গ্রামের উন্নতির কাজে ব্যবহার করবে।
যেই ভাবা সেই কাজ। তারা স্বর্ণ মুদ্রা গুলো একটা ব্যাগে ভরে নিয়ে গ্রামের উদ্দেশ্যে চললো। গ্রামের কাছাকাছি এসে তারা খুব ক্লান্ত হয়ে গেলো। তাই তারা একটা গাছতলায় বসলো।
তারা লক্ষ্য করলো আশেপাশে আরো ৩-৪ জন মানুষ আছে।
১০ - ১২ হাত দূরে একটা লোক গাছ তলে শুয়ে আছে। লোকটার নাম তফলিক উদ্দিন। বুঝা যাচ্ছে লোকটা অলস।
আরো কিছু দূরে আরেকটা লোক বসে আছে। এই লোকটার নাম চরমন আলী।
হটাৎ বন্ধুক হাতে একটা লোক জামিত, বিনবি ও হিফজতের সামনে এসে দাঁড়ালো।
এই লোকটাকে সবাই চিনে। লোকটার নাম আমলিক হাওলাদার। নেশা করে, প্রকাশ্যে অস্র হাতে ঘুরে বেড়ায়। চুরি ,ডাকাতি, দূর্নিতিতে সেরা।
আমলিক লোকটার চিন্তা করলো, বন্ধুক থাকলেও একা ৩ জনের সাথে পারা যাবেনা। তাই বিনপি ও হেফজতকে বললো," এই লোকটা (জামিত) প্রায় ৪০ বছর আগে খুব খারাপ ছিল। অনেক মানুষ হত্যা করেছে। একে সাহায্য করোনা।
দূরে থাকা চরমন আলী আমলিককে সায় দিয়ে বললো।" হাঁ… এই লোকটা খুব খারাপ (কারণ চরমন আলীর সাথে জামিতের অনেক আগে একটা সাধারন বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়েছিলো)
হেফজত উল্লাহ মনে মনে ভাবলো, চরমন যখন বলেছে জামিত খারাপ, তখন নিশ্চয় ৪০ বছর আগে জামিত অনেক মানুষ হত্যা করেছে। তাই সে চুপ থাকলো।
বিনপি ভাবলো কেউ যখন কিছু বলছেনা, আমি খামখা মাথা ঘামিয়ে কি লাভ? পরে আমাকেও এই লোকটার সহযোগি ভাবতে পারে। তাই সেও চুপ থাকলো।
এই লোকটা অপরাধী, একে মেরে ফেলা দরকার। এই বলে আমলিক লোকটা জামিতকে গুলি করে মেরে ফেললো।
কেউ কিছু বললোনা।
এবার আমলিক তার বন্ধুক তাক করলো হিফজত উল্লাহর দিকে। কেউ কিছু বুঝে উঠার আগে হিফজতকে গুলি করে মেরে ফেললো।
বিনপি চরমন ও গাছের নিছে শুয়ে থাকা তফলিক খুব অবাক হয়ে গেলো। চরমন ভয়ে কুকড়ে গেলো।
আমলিক এবার বিনপির দিকে বন্ধুক তাক করে বললো," স্বর্ণ ভর্তি ব্যাগটা আমাকে দিয়ে দাও, নইলে তোমাকেও মেরে ফেলবো।
বিনপি কোন মতেই স্বর্ণের ব্যাগটা দিতে রাজি হলো না।
সুতরাং বিনপিও আমলিকের গুলিতে মারা গেলো।
তফলিক শুধু শুয়ে শুয়ে দেখলো, কিছু বললোনা।
আমলিক এবার তফলিক উদ্দিনের দিকে তাকালো।
এই লোকটা অলস, কিন্তু অলসতা কাটিয়ে উঠতে কতক্ষন…! এই চিন্তা সে করে তফলিককেও একটা বুলেট খাইয়ে দিলো।
স্বর্ণের ব্যাগটা নিয়ে যাওয়ার আগে চরমন আলীর দিকেও কয়েকটা বুলেট ছুড়ে দিলো। শেষ একটা সাক্ষি বাঁচিয়ে রেখে রিস্ক নেয়ার কি দরকার?
অবশেষে আমলিক হাওলাদার স্বর্ণের ব্যাগটা নিয়ে খুশি মনে তার বাপের এলাকা রেন্ডিয়ার দিলে চললো। আর মনে মনে ভাবলো, কিছু দিনের মধ্যে এই এলাকাটাকে রেন্ডিয়ার অন্তর্ভুক্ত করে নেবো..
বিষয়: বিবিধ
২৫৩৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন